E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করছে ঝাউগ্রাম শিববাড়ির শিবলিঙ্গ

২০২৫ আগস্ট ২০ ১৮:১৩:৩১
ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করছে ঝাউগ্রাম শিববাড়ির শিবলিঙ্গ

একে আজাদ, রাজবাড়ী : সনাতন ধর্মালম্বী ভক্তদের পূর্ণ বিশ্বাস ও ভক্তির মাধ্যমে এখনো পূজিত হয়ে আসছে শিববাড়ি সার্বজনীন শিব মন্দিরের শিব লিঙ্গটি। শত শত বছরের পুরানো এই শিব লিঙ্গটি ঘিরে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে রয়েছে  অনেক লোককথা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের পৌরাণিক উপাখ্যান। 

রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলাধীন কালিকাপুর ইউনিয়নের ঝাউ গ্রামে এই শিব মন্দিরটি অবস্থিত। স্থানীয়দের মাঝে মন্দিরটি শিববাড়ি নামে পরিচিত। শিববাড়ির শিব মন্দিরের গর্ভ গৃহে শিবলিঙ্গটি কবে, কখন, কত সনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার কোন সুনির্দিষ্ট প্রামানিক তথ্য নেই। তবে এ অঞ্চলের জনশ্রুতিতে পাওয়া যায়, এটি একটি স্বয়ম্ভ শিবলিঙ্গ। যা কিনা প্রাকৃতিকভাবেই শিবলিঙ্গের আকার লাভ করেছে।

অনেক কাল আগে এই শিবলিঙ্গের চারিদিকে গহীন বনে আচ্ছাদিত ছিল। রাখাল বালকেরা এখানে গরু চড়াতেন। একদিন এক রাখাল বালক লক্ষ্য করেন গভীর জঙ্গলে গিয়ে একটি গাভী শিলা পাথরের উপর বান রেখে দুধ ঢালছে। সেই থেকেই রাখাল বালকের মাধ্যমে স্থানীয়রা জানতে পারেন এখানে একটি শিবলিঙ্গ আছে। সেই সময় এই অঞ্চলটি ছিল মাগুরা মোহাম্মদপুরের রাজা সীতারাম রায়ের রাজ্যের অধীনে। তার বদান্যতায় আনুমানিক১০৯৩ বঙ্গাব্দ / ১৬৮৭ ইং সনে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মন্দিরের নামে তিনি প্রচুর পরিমাণ ভূমি দান করেন।

রাজা সীতারাম রায়ের শাসন ব্যবস্থার সময় থেকেই এখানে শিব চতুর্দশীতে শিব পূজা ও একদিনের ঐতিহ্যবাহী মেলা চলে আসছে।সময়ের পরিক্রমার সাথে সাথে মন্দিরের অনেক জায়গা বেহাত হয়ে যায়। পরবর্তীতে পাংশা জর্জ হাই ইংলিশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণচন্দ্র রায় ১৩২২ বঙ্গাব্দ /১৯১৬ ইং সনে মন্দিরটি সংস্কার করেন।

প্রতিবছর শিবচতুর্দশীতে শিব পূজা এবং শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার ভক্তরা মনস্কামনা পূরণের লক্ষ্যে শিবলিঙ্গে দুধ, ঘি, মধু, জল, ফুল, বেলপাতা সাথে মোমবাতি, ধূপকাঠি জ্বালিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণে ভীড় করেন। তবে বর্তমানে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মন্দির স্থাপন, ভক্তদের জন্য টয়লেট এবং একটি টিউবয়েলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিববাড়ি সার্বজনীন শিব মন্দিরের সভাপতি বিদ্যুৎ কর্মকার জানান যে, এখন শিব মন্দিরের নামে ৩১ শতাংশ জায়গা আছে, যেটার চারপাশে সীমানা প্রাচীর দেওয়া অতীব জরুরী। তাছাড়াও একটি রন্ধনশালা, ভক্তদের বিশ্রাম কক্ষ, অফিস কক্ষ, আসবাবপত্র রাখার একটি আলাদা কক্ষ, রাস্তা থেকে মন্দির পর্যন্ত আধাপাকা রাস্তা খুবই প্রয়োজন।

(একে/এসপি/আগস্ট ২০, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২০ আগস্ট ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test