E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

‘পাবনা-৩ এর জনগণ আপনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে আপনার উচিত সম্মানের সাথে চলে যাওয়া’

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১৯:১৯:৫৪
‘পাবনা-৩ এর জনগণ আপনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে আপনার উচিত সম্মানের সাথে চলে যাওয়া’

শামীম হাসান মিলন, চাটমোহর : পাবনার চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও পাবনা-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেছেন, আজকের জনসমুদ্র থেকেই আপনাদের বুঝতে হবে পাবনা-৩ এলাকার মানুষ কি চায়। আমি কোন জেলার নেতা নই, আমি কোন কেন্দ্রীয় নেতা নই। আজকের এই মঞ্চে আমি কোন জেলার নেতাকে দাওয়াত করে আনিনি, কোন কেন্দ্রীয় নেতাকেও আনিনি। আজকে আমি এই মাঠটি বরাদ্দ নিয়েছিলাম সারাদিনের জন্য। অনেক চাপ দিয়ে অনেক অনুরোধ করে কৃষকদলের সভাপতি এই মাঠে আজকে একটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করেছে। আমি উনাকে সুযোগ দিয়েছিলাম। কারণ চাটমোহর ভাঙ্গুড়া ফরিদপুরের মানুষের বোঝার জন্য, তার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু, তার জনগণ কতটুকু, তার ক্ষমতাটুকু। উনাকে পাবনা-৩ এর মানুষ কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছে সেটা প্রমাণ করার জন্যই আমি এতোটুকু করেছিলাম। আপনারা দেখেছেন বালুচর মাঠে ৭ থেকে ৮শ চেয়ার দেয়া হয়েছিল। সেই চেয়ারগুলোও ভরতে পারেননি তিনি। কয়েকদিন আগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, ম্যাডাম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত হাজার হাজার মাথার ক্যাপ বাসস্ট্যান্ডে পড়েছিল পায়ের নিচে। এই ক্যাপও ওনারা প্রত্যাখ্যান করেছে।

এসময় পাবনা-৩ আসনের বিএনপি'র মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন কে উদ্দেশ্য করে হীরা বলেন, তাই বলছি এখনো সময় আছে, চাটমোহর ভাঙ্গুরা ও ফরিদপুরের মানুষ আপনাকে যেভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে, আপনার উচিত সম্মানের সাথে এখান থেকে চলে যাওয়া।

বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাটমোহর বালুচর খেলার মাঠে বিএনপি’র ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হীরা বলেন, জালিম সরকারের সময় আমার দলের নেতা কর্মীরা ব্যবসা করতে পারেনি, দোকানপাট বন্ধ করে মাসের পর মাস পালিয়ে বেরিয়েছে, জেল জুলুম খেটেছে। অন্য কোন নেতার কর্মীরা পলাতক থাকেনি। তারা আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলেছে। আমি দীর্ঘদিন আমার মাসুম বাচ্চাকে বাসায় রেখে ঢাকায় পালিয়ে বেরিয়েছি, তাদের সাথে দেখা করতে পারিনি। ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শেষ করে ফেলেছি। ৫ আগস্ট এর পর অনেক নেতাকর্মী মাঠে নেমেছে, দলের জন্য প্রাণ দিচ্ছে। দীর্ঘ ১৭ বছর এই চাটমোহর ভাঙ্গুরা ফরিদপুরে মাঠে কারা ছিল কারা আন্দোলন সংগ্রাম করেছে তা সবাই জানে। আমার নেতা জনাব তারেক রহমানকে বলবো পাবনা-৩ এর তথ্য নেন, পাবনা-৩ এর চিত্র দেখেন। যাচাই বাছাই করে যার জনসমর্থণ বেশি, যার জনপ্রিয়তা গ্রহণযোগ্যতা বেশি তাকেই আপনি মনোনয়ন দেন।

পাবনা-৩ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন প্রসঙ্গে হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, পাবনা-৩ আসনে যে নাটক হয়েছে। জনাব তারেক রহমান পাবনা-৩ এ প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছেন, আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, এই কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভুয়া। তারেক রহমানের নাম ভাঙ্গিয়ে পাবনা-৩ দখল করার চেষ্টা করছে। এটা কোন চর নয়, দখল করার জায়গা নয়। আমি প্রমাণ করতে চেয়েছি পাবনা-৩ এর মানুষ কাকে ভালবাসে। সেটা প্রমাণ করার জন্যই আজকে আমি এই মঞ্চে বিএনপি'র কোন নেতাকে রাখিনি। আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের বলবো, জেলার নেতাদের বলবো আপনারা পাবনা-৩ এর চিত্র দেখে নেন, আমার মতো একজন পা ফাটা কর্মীর জনসমর্থন কতটুকু। তাই বলবো যারা ফন্দি ফিকির করছেন তারা পাবনা-৩ ছেড়ে চলে যান। আপনাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হীরা আরও বলেন, অনেকে উন্নয়নের বুলি উড়িয়েছেন। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি আগামী দুই মাসের মধ্যে চাটমোহরে কমপক্ষে ১০০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা হবে। ৮৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় হবে৷ যদি না হয় আপনারা আমার কথার সাথে মিলিয়ে নিবেন। অনেকে বুলি ওড়াচ্ছেন উন্নয়ন করবো৷ উন্নয়ন করবো এটা নয়, আমি উন্নয়ন করে দেখিয়ে দেবো এমপি হওয়ার আগেই কিভাবে উন্নয়ন করা যায়। আগামী এক বছরের মধ্যে চাটমোহরে আড়াইশো কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হবে। যদি কাজ না হয় আমাকে বলবেন আমি শাড়ি চুড়ি পরে রাজনীতি বন্ধ করে দেবো। আমি শুধু এটুকুই প্রমাণ করবো একজনের ক্ষমতা থাকলেই সে পারে না, ক্ষমতা না থাকলেও অনেকে অনেক উন্নয়ন কাজ করতে পারে।

এর আগে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বাদ্য বাজনা সহ আনন্দ মিছিল নিয়ে জনসভায় যোগদান হাজার হাজার নেতাকর্মী। এক পর্যায়ে জনসভা রুপ নেয় জনসমুদ্রে।

চাটমোহর পৌর বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাইজুলের সভাপতিত্বে ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম হৃদয়ের সঞ্চালনায় জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আল মামুন, গুনাইগাছা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা, হান্ডিয়াল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক পালন, মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ইয়াসিন আলী, বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আফসার আলী, হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মহসিন আলী, ছাত্রদল নেতা আরিফ, ইমরান, আকাশ, শরিফ প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে হাসাদুল ইসলাম হীরার নেতৃত্বে বের করা হয় বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালী। র‌্যালীটি পৌর সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসট্যান্ডে শেষ হয়।

(এসএইচ/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test