E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সাতক্ষীরায় মুক্তি সাউথ এশিয়া প্র জেলা পর্যায়ের অন্তর্ভুক্তিকরণ অ্যাডভোকেসি সভা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১৯:৩৩:০৩
সাতক্ষীরায় মুক্তি সাউথ এশিয়া প্র জেলা পর্যায়ের অন্তর্ভুক্তিকরণ অ্যাডভোকেসি সভা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধ, উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে জেলাস্তরে সমন্বিত উদ্যোগ জোরদার করার লক্ষ্যে সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত হয়েছে মুক্তি সাউথ এশিয়া প্রজেক্টের জেলা পর্যায়ের অন্তর্ভুক্তিকরণ অ্যাডভোকেসি সভা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরা শহরের টাইগার প্লাস হলরুমে রাইটস যশোরের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

রাইটস যশোরের পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শোয়াইব আহমাদ এবং কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্তভাবে পরিচালনা করেন রাইটস যশোরের ডেপুটি ডিরেক্টর এসএম আজহারুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজমুন নাহার, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক সঞ্জীত কুমার দাস, টিটিসি সাতক্ষীরার অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপপরিচালক মোস্তফা জামান, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল খায়ের, এনসমিটিএফ এর সিট এডভাইজার ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর জেলা সমন্বয়ক শেখ মিফতাহুল জান্নাত।

এছাড়া সমাজসেবা অফিস, নারী ও শিশু সুরক্ষা সেল, বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও উপকারভোগীরা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন রাইটস যশোরের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর প্রদীপ দত্ত।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেপুটি ডিরেক্টর এসএম আজহারুল ইসলাম। তিনি মুক্তি সাউথ এশিয়া প্রজেক্টের কার্যক্রম ও অর্জন তুলে ধরে বলেন, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সমন্বয় অপরিহার্য। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পাচার হওয়া ভিকটিমদের উদ্ধার করে পুনর্বাসন এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সভায় জানানো হয়, মুক্তি সাউথ এশিয়া প্রজেক্টের আওতায় এখন পর্যন্ত- ৯৩ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের বয়স ২৫ বছরের মধ্যে। ৯০ জন ভিকটিমকে কাউন্সেলিং প্রদান করা হয়েছে। পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে কয়েকজনকে ছাগল প্রদান, দর্জি প্রশিক্ষণ, কোয়েল পাখি পালনের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

অতিথিরা নারী ও শিশু পাচারের ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, পাচার প্রতিরোধে কেবল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নয়, পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সচেতন হতে হবে। তারা আরো উল্লেখ করেন, পাচার প্রতিরোধে স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে এবং ভিকটিমদের পুনর্বাসনে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব জোরদার করতে হবে।

সাতক্ষীরা সদর ইউএনও মো. শোয়াইব আহমাদ তার বক্তব্যে বলেন, মানব পাচার একটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। এটি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একইসাথে ভিকটিমদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা নতুন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

কলারোয়া ইউএনও জহুরুল ইসলাম বলেন, মানব পাচার প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন সবসময় সহযোগিতা করবে। সরকারি সেবা ও প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বয় করে এ কাজ এগিয়ে নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা সমাজসেবা অফিসের উপপরিচালক সন্তোষ কুমার নাথ, সদর থানার শিশু সেল অফিসার এএসআই ফারহানা, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শরিফুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা, রাইটস যশোরের এম এস এ তিশা মাখাল প্রমুখ।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা একমত হন যে, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি ভিকটিমদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা আবারও পাচারের ঝুঁকিতে না পড়ে।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test