E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

১২ ঘন্টার মধ্যে নড়াইলের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৫ ০১:০৩:৩৯
১২ ঘন্টার মধ্যে নড়াইলের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের নড়াগাতী থানার দক্ষিণ নলামারা গ্রামের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ মুন্নী খানম হত্যার ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যে হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে (পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন) পিবিআই, যশোর ইউনিট।

এ সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত মূলহোতা সোহেল সরদারকে গ্রেফতার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে , গত ২৯ আগষ্ট বিকালে নিহত মুন্নি খানম (২০) শ্বশুর বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়ি নড়াইলের নড়াগাতী থানার নলামারা গ্রামে বেড়াতে আসে এবং ঐদিনই তার শ্বশুর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সে আর শ্বশুর বাড়িতে ফিরে যায়নি। ওই দিন সন্ধ্যার পর হতে মুন্নী খানমকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজা খুঁজি করে মেয়েকে না পেয়ে স্থানীয় থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন।

পরর্তীতে নড়াগাতী থানা পুলিশ গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে নড়াগাতী থানাধীন দক্ষিণ নলামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে পরিত্যক্ত পুকুরের উত্তর পশ্চিম কোণে পানির মধ্য হতে একজন অজ্ঞাতনামা মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

লাশ উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে মুন্নি খানমের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উক্ত মৃতদেহ তাদের মেয়ের মর্মে সনাক্ত করে।এরপর নড়াগাতী থানা পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য ময়না তদন্ত করার নিমিত্তে মৃতদেহ নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।

গৃহবধূ মুন্নী খানম হত্যার ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে জেলার নড়াগাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

চাঞ্চল্যকর মুন্নী খানম হত্যাকাণ্ডের পর উক্ত ঘটনা উদঘাটন করার জন্য পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ছায়া তদন্ত শুরু করে।

ছায়া তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পিবিআই প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ মো: মোস্তফা কামাল এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্ত্বে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাইদুর রহমান পিপিএম-সেবা, এসআই আলমগীর সহ পিবিআই, যশোর জেলার চৌকস দল কর্তৃক গত ৩রা সেপ্টেম্বর পুলিশি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে মুন্নী খানম হত্যা মামলার মূলহোতা আসামী নড়াগাতী থানার ডুমুরিয়া পশ্চিমপাড়ার সামাদ সরদারের ছেলে সোহেল সরদারকে ( ২১) ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন মশিউর সরদারের মেস হতে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। ধৃত আসামীর দেখানো ও দেয়া তথ্য মতে ভিকটিমের গলায় থাকা স্বর্ণের লুন্ঠিত চেইনটি আসামীর নিজ বাড়ির পিছন থেকে উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মুন্নি খানমের সাথে আসামী সোহেল সরদার (২০) এর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৯ আগষ্ট শ্বশর বাড়ি থেকে তার পিতার বাড়িতে আসে এবং প্রেমের টানে তারা ঐদিনই রাত অনুমান সাড়ে ৯ টার সময় নলামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে একে অপরের সাথে দেখা করে।

একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিলে আসামী ভিকটিমকে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী ডোবায় কচুরিপানার মধ্যে মৃতদেহ ফেলে চলে যায়। যাওয়ার সময় ভিকটিমের গলায় থাকা চেইন নিয়ে যায়। আসামী বাড়ীতে যাওয়ার পরে উক্ত চেইনটি ইমিটেশন মনে করে নিজ বাড়ীর পিছনে বাঁশবাগানে ফেলে দেয় মর্মে স্বীকার করেছে অভিযুক্ত সোহেল।

সোহেল সরদারকে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

(আরএম/এএস/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৫)


পাঠকের মতামত:

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test