E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ঝিনাইদহে সংবাদ সংগ্রহে বাধা, ৩ সাংবাদিককে হুমকি-লাঞ্ছিত করলেন আওয়ামী লীগ নেতা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৫ ১৯:৪৩:১১
ঝিনাইদহে সংবাদ সংগ্রহে বাধা, ৩ সাংবাদিককে হুমকি-লাঞ্ছিত করলেন আওয়ামী লীগ নেতা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহে চাকরিরত স্ত্রীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহে বাধা ও ৩ সাংবাদিককে হুমকি, লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে শৈলকুপা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে শৈলকুপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন- বাংলাদেশ পোস্টে’র রোভিং করেসপন্ডেন্ট দেলোয়ার কবীর, বাংলাদেশের খবর’র ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি এম বুরহান উদ্দীন ও ভোরের আকাশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সুজন বিপ্লব।

ভুক্তভোগী সংবাদকর্মীরা জানান, শৈলকুপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরিচ্ছন্নতার জন্য টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য বিদ্যালয়টিতে যান ভুক্তভোগী ওই তিন সাংবাদিক। অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহারের বক্তব্য শেষে বের হওয়ার সময় তার স্বামী পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনায়েত হোসেন হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হন। এসময় তিনি ওই তিন সংবাদকর্মীদের মারধরের হুমকি দিয়ে কেনো তারা সংবাদ সংগ্রহের জন্য বিদ্যালয়ে ঢুকেছেন বলে জবাবদিহিতা চান। এছাড়া নিষিদ্ধঘোষিত ওই আওয়ামী লীগ নেতা চঁড়াও হয়ে নানা অশালীন ব্যবহার, হুমকি-ধামকি ও লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিকদের।

জানা গেছে, অভিযুক্ত এনায়েত হোসেন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে টেন্ডারবাজি, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি শৈলকুপা মহিলা কলেজের শিক্ষক হলেও নিজের রাজনৈতিক প্রভাব ও কথিত সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থাকেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের মধ্যে সিনিয়র সাংবাদিক দেলোয়ার কবীর বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্যগ্রহণ শেষে বিদ্যালয়টির অফিসকক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েত হোসেন এসে আমাদের উপর চড়াও হন। এসময় তিনি হুমকি দিয়ে কেনো সংবাদ সংগ্রহের জন্য গিয়েছি তার জবাবদিহিতা চান তিনি। এছাড়া ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্যও তিনি হুঁশিয়ারী দেন।’

বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষক বিপুল চক্রবর্তী জানান, ‘তিন সাংবাদিক বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন সেসময় প্রধান শিক্ষকের স্বামী এনায়েত হোসেন এসে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।’

অভিযোগের বিষয়টি জানতে আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েত হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘সম্পর্ককের খাতিরে এমন ব্যবহার হয়েছে।’

এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস বলেন, ‘সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে।’

শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান জানান, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে, সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সংগঠন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরে প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

‎(এসআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test