E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

দুই মেয়ের পর আবারো খুকির জন্ম

কলারোয়ায় ৫ দিনের মেয়ে শিশুকে খালের পানিতে ফেলে হত্যা করেছে মা

২০২৫ অক্টোবর ২১ ১৮:২১:৪৬
কলারোয়ায় ৫ দিনের মেয়ে শিশুকে খালের পানিতে ফেলে হত্যা করেছে মা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : দুই মেয়ের জন্মের পর ছেলে সন্তান না হয়ে আবারো মেয়ে জন্ম দেওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মানসিক নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে ৫ দিনের শিশুকে খালের পানিতে ফেলে হত্যা করেছে মা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘাতক মা শারমিন খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃত শারমিন খাতুন (৩২) কলারোয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের স্ত্রী। তিনি সন্তান হত্যার দায় স্বীকার করে মঙ্গলবার বিকেলে বিচারিক হাকিম মেহেদী হাসানের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃত শারমিন খাতুন তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, তার ৫ বছর ও দেড় বছর বয়সী দুই কন্যা শিশু সন্তান রয়েছে। পরপর মেয়ে হওয়ায় তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি তালাক দেওয়ার ভয় দেখাতো। এরই মাঝে গত বুধবার রাতে তিনি আবারো মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এতে বেজায় রেগে যান তার স্বামী। এক পর্যায়ে তার উপর চলতে থাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। তাকে আবারো তালাক দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে অন্য দুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সোমবার সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশে খালের পানিতে ফেলে দিয়ে ৫ দিনের শিশুকে হত্যা করেন।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাইফুল ইসলাম জানান, ‘সোমবার রাতে শিশুটির পিতা ইব্রাহিম খলিল থানায় এসে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করতে চান। নিখোঁজ ডায়েরি এন্ট্রি করার কারণ হিসেবে ইব্রাহিম বলেন- তাদের মেয়েকে নিয়ে মা শারমিন বিকেলে ঘুমিয়ে ছিলো। এরপর থেকে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না।’

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও জানান, ‘ইব্রাহীম খলিলের কথা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শারমিন স্বীকার করে। দুই কণ্যা থাকা স্বত্বেও তৃতীয় কন্যা শিশু জন্ম হওয়ায় তাকে বাড়ির পাশের একটি খালে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। এরপর শারমিনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খালের কচুরিপনার মধ্য থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

এ ঘটনায় শিশুর দাদি খাদিজা খাতুন বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। খাদিজা খাতুন মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম মেহেদী হাসানের কাছে নিজের সন্তান পানিতে ফেলে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ২১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২১ অক্টোবর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test