E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

১৫ মাসেও পরিচয় মেলেনি একজনের 

গৌরনদীর আলোচিত দুই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়নি

২০২৫ অক্টোবর ২১ ১৯:৪২:২৮
গৌরনদীর আলোচিত দুই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়নি

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের গৌরনদীতে বহুল আলোচিত দুইটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এরমধ্যে হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক মামুন রাঢ়ী উপজেলার বাটাজোর বন্দর থেকে নিজের ইজিবাইক সহ নিখোঁজ হয়েছিলেন। সে উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের উত্তর মোড়াকাঠী গ্রামের আব্দুস সালাম রাঢ়ীর ছেলে ছিলো। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের শিকার পয়ত্রিশোর্ধ অজ্ঞাতনামা অপর যুবকের পরিচয় গত ১৫ মাসেও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। 

হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক মামুনের স্বজনরা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট রাতে গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বন্দর থেকে নিজের ইজিবাইকসহ নিখোঁজ হয় যুবক মামুন রাঢ়ী। নিখোঁজের সাতদিন পর (২৬ আগস্ট) সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশ্ববর্তী বার্থী বাজার সংলগ্ন খালের মধ্যে ভেসে ওঠে মামুনের মুখ থেতলানো গলাকাটা ক্ষতবিক্ষত লাশ। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই নিহতের পিতা আব্দুস সালাম রাঢ়ী বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহতের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুরুতেই গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশ হত্যার কোন ক্লু-উদঘাটন করতে না পারায় বাদি মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। কয়েকদফা সিআইডি’র কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলসহ নিহতের নিজ গ্রাম পরিদর্শন করে সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলেছেন। তবে ঘটনার ৫ বছর অতিবাহিত হলেও অদ্যবর্ধি হত্যাকান্ডের কোন ক্লু-উদঘাটন, নিহতের ব্যবহৃত ইজিবাইক উদ্ধার কিংবা কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন হত্যাকান্ডের শিকার যুবক মামুনের স্বজনরা।

অপরদিকে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই সকাল নয়টার দিকে উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মো. গোলাম নবি হাওলাদারের পাট ক্ষেতের আইলে এক ব্যক্তির (পুরুষের) লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরবর্তীতে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাশের গায়ে নেভী ব্লু রংয়ের একটি টি-শার্ট ও পড়নে জলপাই রংয়ের একটি গ্যাভাডিং প্যান্ট ছিলো। লাশের গায়ের রং কালো, উচ্চতা- ৫ ফুট, কোকড়ানো দাড়ি, মোচ ও চুল, মুখমন্ডল লম্বাটে ও নাক ছোট। লাশটি ফুলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকা ও পছন ধরেছে। লাশের দুই পায়ের হাটুর নিচে গোড়ালির উপরে মাংসপেশি বিচ্ছিন অবস্থায় দেখা যায়। সে সময় পুলিশের ধারনা ছিলো কোন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যক্তিরা ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই থেকে ২০ জুলাই মাসের যে কোন সময়ে ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য ওই পাট ক্ষেতের আইলের উপর ফেলে রেখে গিয়েছে।

মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের চৌকিদার মো. মাহবুব মৃধা বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে লাশ উদ্ধারের দিন রাতেই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তিকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা এখন পর্যন্ত অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। লাশের পরিচয় না পাওয়ায় হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারনে হত্যাকারীরা পার পেয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ২১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২১ অক্টোবর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test