সুন্দরবনের দুবলার চরে ঐতিহাসিক রাস উৎসব
সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দররবনের শরণখোলা রেঞ্জের সাগর পাড়ে দুবলার চরে সোমবার (৩ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহাসিক রাস উৎসব। বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী দুবলা জেলে পল্লীর আলোরকোলে ২০০ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় উৎসব। রাস পূর্ণিমার তিথিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সনাতনীরা মনোবাঞ্ছা পুরণের আশায় সেখানে গিয়ে রাধা-কৃষ্ণের মন্দিরে পূজা-আর্চনা ও মানতের ভোগ উৎসর্গ করার পাশাপাশি সাগরের লোণা জলে স্নান করে পাপ মোচন করেন। রাস পূজায় যাওয়ার জন্য সোমবার সকাল ৮টা থেকে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা, চাঁদপাই ও ঢাংমারী স্টেশন থেকে পূণ্যার্থীদের অনুমতিপত্র (পাসপারমিট) প্রদান করা হবে। এদিন সন্ধ্যার পর থেকেই আলোরকোলে অস্থায়ীভাবে নির্মিত মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবেন। ৫ নভেম্বর প্রত্যুষে সাগরের প্রথম জোয়ারের লোণা জলে পূণ্যস্নানের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই ঐতিহাসিক মিলন মেলা।
সুন্দরবন বিভাগ জানিয়েছে, এবছর রাস পূজাকে ঘিরে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী পূণ্যার্থী ছাড়া কোনো ট্যুরিস্ট বা মুসলিম ধর্মের কেউ যেতে পারবেন না সেখানে। এজন্য ২৭ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেলে, পর্যটক ও সাধারণের প্রবেশে পাসপারমিট দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা, হরিণ শিকার ও প্লাস্টিক বর্জ্য দূষণরোধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূন্যার্থীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫টি নৌপথ। উৎসবকে কেন্দ্র করে বনবিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।
ইতিহাস খুঁজে জানা যায়, ২০০ বছর আগে অর্থাত ১৮শ শতকের শেষভাগে সুন্দরবনের দুবলার চরে রাস পূজা শুরু হয়। হরভজন দাস নামে এক হিন্দু সন্ন্যাসী এই রাস পূজার গোড়াপত্তন করেন। তিনি তার ভক্তদের নিয়ে রাস পূর্ণিমার তিথিতে দুবলার চরে পূজা-আর্চনা ও সাগরের লোণা জলে স্নান করতেন। সেই ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকেই ধীরে ধীরে ‘দুবলার চরের রাস মেলা’র প্রচল ঘটে। এর পর থেকে দুবলা ফিমারমেন গ্রুপের আয়োজনে সাগরদীপ আলোরকোলে রাস পূর্ণিমা সনাতনীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও পর্যটন উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। কিন্ত পরবর্তীতে এই রাস উৎসব কেন্দ্র করে লাখো মানুষের লোকসমাগ ঘটে সংরক্ষিত বনে। সনাতন ধর্মের মানুষের পাশপাশি উৎসবে যোগ হয় দেশি-বিদেশি পর্যটকও। ভক্ত ও পর্যটকদের ভীড়ে চাপ বাড়তে থাকে বন্যপ্রাণীর আবাস্থলের ওপর। মেলাকে কেন্দ্র করে শব্দ দূষণ ও প্লাস্টিক বর্জ্যে ক্ষতির মুখে পড়ে বনের পরিবেশ। এছাড়া বাড়তে থাকে পূণ্যার্থীর ছদ্মবেশে আসা হরিণ শিকারী চক্রের অপতৎপরতা। এর ফলে জীববৈচিত্র রক্ষা ও দূষণরোধে ২০১৭ সালে সীতিম করা হয় মেলার কার্যক্রম। এর পর থেকে রাস উৎসব শুধু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ও স্নান উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়।
দুবলার চরের রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি ও দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সন্ধ্যার (৩ নভেম্বর) পর থেকেই শুরু হবে রাসপূজার আনুষ্ঠানিকতা। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে মূল পূজাস্থল আলোরকোলে রাধা-কৃষ্ণের অস্থায়ী মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। এই মন্দিরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হিন্দু ধর্মের ভক্তবৃন্দরা এসে তাদের মনবাসনা পুরণের আশায় পূজা-আর্চনা করবেন। ৫নভেম্বর প্রত্যুষে সাগরের প্রথম জোয়ারে পূণ্যস্নান শেষে যে যার গন্তব্যে ফিরে যাবেন পূণ্যার্থীরা। উৎসবকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে সেব্যাপারে সতর্ক রয়েছে কমিটি।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এবছর রাস উৎসবে শুধুমাত্র সানতন ধর্মাবলম্বী পূণ্যার্থীরা যেতে পারবেন। এর বাইরে রাস উৎসবের উদ্দেশে কোনো পর্যটক এবং মুসলিম ধর্মের কোনো ব্যক্তি যেতে পারবেন না। রাসপূজায় ট্যুরিস্টদের নেওয়ার জন্য কোনো ট্যুর অপারেটকেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তা এবং দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করতে সুন্দরনের প্রবেশমুখ, বনের অভ্যন্তর এবং নির্ধারিত রুটগুলোতে কোস্টগার্ড ও বনবিভাগের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। বিগত বছরগুলোতে রাস উৎসবে অবাধ যাতায়াতের কারণে পূন্যার্থীদের ছদ্মবেশে হরিণ শিকারীরা প্রবেশ করতো। এছাড়া ব্যাপক লোক সমাগমের ফলে প্লাষ্টিক দূণষসহ সংরক্ষিত বনের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। যে কারণে এবার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
(এস/এসপি/নভেম্বর ০২, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- মুক্তিবাহিনীর নৌ-কমান্ডোদের পাতা মাইনে একটি তেলবাহী জাহাজ নিমজ্জিত হয়
- দিনাজপুরে গুড়িয়ে দেওয়া হলো পাঁচ শতাধিক স্থাপনা
- শ্যামনগরের জেলেখালির বিষ্টু পরমান্যের ছেলে ও পুত্রবধু আবারো জহির বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত
- এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ
- ‘আমরা আর ত্রাণ চাই না, পরিত্রাণ চাই’
- অবশেষে শাপলা কলিতেই রাজি এনসিপি
- গৌরনদীতে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচীর অবহিতকরণ সভা
- ট্রাকের চাকায় প্রাণ গেল কলেজ ছাত্রের
- বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
- ঈশ্বরগঞ্জে ভ্রাম্যমান কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন
- টাঙ্গাইলে অসময়ের বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজি চাষে ক্ষতির শঙ্কা
- কাপাসিয়ায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়
- ঝিনাইদহে আফতাব ফিড প্রোডাক্টস লিমিটেডের আঞ্চলিক বিতরণ কেন্দ্রের উদ্বোধন
- সুন্দরবনের দুবলার চরে ঐতিহাসিক রাস উৎসব
- রাজবাড়ীর সাবেক ওসির পদোন্নতি বাতিল ও গ্রেপ্তার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান
- সুন্দরবন থেকে ৭ হরিণ শিকারী আটক
- বাগেরহাটে বজ্রপাতে মৎস্য খামারির মৃত্যু
- রাজবাড়ীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা, নিহত ১
- চাটমোহরে অবৈধ সোঁতিবাধ অপসারণ
- ঈশ্বরদীতে ২০১ আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে মামলা, নেসকোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ
- কাপাসিয়ার রবি সাধুর শ্রাদ্ধ সম্পন্ন
- ফুসফুস ক্যান্সারের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি
- কার্তিকের বৃষ্টিতে ডুবে গেছে আমন ধান, দিশেহারা কৃষক
- মাদারীপুরে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ, স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক
- যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঈশ্বরদীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
- ‘শিল্পের প্রতি টান থেকেই কলকাতায় যাওয়া’
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কা, নিহত ৫
- দিনাজপুরে গুড়িয়ে দেওয়া হলো পাঁচ শতাধিক স্থাপনা
- ঋণের শর্ত যাচাইয়ে আইএমএফ মিশনের বৈঠক শুরু আজ
- চুয়াডাঙ্গায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ
- আলবার্টার স্বাধীনতার দাবি কানাডিয়ান ফেডারেলিজমের মূল পরীক্ষা- জনমত কোথায়?
- ফেক আইডি থেকে উস্কানিমূলক সাম্প্রদায়িক পোস্ট, পাথরঘাটায় সংবাদ সম্মেলন
- ‘দর্শক মনে রেখেছেন, এটাই বড় প্রাপ্তি’
- র্যাংকিংয়েও আফগানিস্তানকে টপকে গেল বাংলাদেশ
- পাকিস্তানের মাটিতে শেখ মুজিবের ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি টিকবে না
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- ফোবানার নতুন সভাপতি বেলাল, নির্বাহী সচিব রউফ
- ২০২৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল মাদ্রিদে
- ‘বাংলাদেশের জার্সি আর গায়ে দেওয়া হলো না’
- নিমে নিরাময় হয় যে সব রোগের
- ‘যতদিন জীবিত থাকবো সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার হতে দিবো না’
- আষাঢ়
- বাড়লো সোনার দাম ভরি ২ লাখ ২ হাজার ৭০৯ টাকা
- ‘ভারত নোংরা খেলা খেলতে পারে, দ্বিমুখী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত পাকিস্তান’
- মেক্সিকোতে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪
-1.gif)







