E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ফুলের রাজনীতির নেতারা এখন বিএনপির অনুসারী

২০২৫ নভেম্বর ১০ ১৯:০৪:৫৮
ফুলের রাজনীতির নেতারা এখন বিএনপির অনুসারী

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের শাসনামলে যারা প্রভাব খাটিয়েছেন, তাদের প্রভাবেই এখনও কোণঠাসা বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাধারণ স্টাফরা। এমনকি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার একবছর পার হলেও সরাসরি আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুসারীদের হাতেই রয়েছে হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ। যারা এখন নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে খোলস পাল্টে বিএনপির ওপর ভর করেছে। সেক্ষেত্রে তারা ফুল দিয়ে সব ভুল মুছে ফেলতে চাচ্ছেন। বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে এখন তারা বিএনপির অনুসারী হয়েছেন। যেকারণে তাদের দাপটের কারণে ভয়ে কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না।

হাসপাতালের সাধারণ কর্মচারীরা জানিয়েছেন, কারাগারে থাকা বরিশাল সদর আসনের সাবেক সাংসদ ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এবং বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র পলাতক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা এখনও হাসপাতালের শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওইসব নেতাদের অনুসারীরা সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজে করে রয়েছেন। সেক্ষেত্রে পলাতক যুবলীগ নেতা ও হাসপাতালের স্টাফ ইউসুফ আলী মিলনের সহযোগিরা এখনও চতুর্থ শ্রেণির স্টাফদের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলেও রহস্যজনক কারণে কোনধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আর সে সুযোগে তারা এখন বিএনপির কাঁধে ভর করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একাধিক স্টাফরা জানিয়েছেন, কখনো সিটি মেয়র আবার কখনও সদর আসনের সাংসদের ঘনিষ্ঠ সহযোগি হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হাসপাতালের স্টাফ ইউসুফ আলী মিলন সর্বদা দাপটের সাথে ছিলেন। আর ছেলে আব্দুল্লাহ আল প্রিন্স ১২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক হওয়ায় তার ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন ওয়ার্ড মাস্টার ফেরদৌস। তখন তাদের সহযোগি ছিলো আল মামুন রাব্বি, তারিকুল ইসলাম রনি, ফয়সাল রাব্বিসহ ১০/১২ জন। যারা পুরো হাসপাতালে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জারি রাখতেন।

তারা আরও জানিয়েছেন-সরকার পতনের পর নানান অভিযোগে ও বিভিন্ন মামলায় আসামি হওয়ায় মিলন আত্মগোপনে চলে গেলেও কৌশলে হাসপাতালে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখেন মিলনের অন্যান্য অনুসারীরা। অথচ তারাই মিলনের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছিল ক্যাম্পাসে। এছাড়াও তারা দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন, তাদের হয়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন। যার অসংখ্য ছবিসহ বিভিন্ন প্রমাণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রয়েছে।

হাসপাতালের একাধিক নারী স্টাফরা বলেন, ফুলের রাজনীতিতে বর্তমানে মিলনের সহযোগিরাই বিএনপির কাঁধে ভর করেছে। ইতোমধ্যে তারা ভোল পাল্টে কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে নিজেদের অবস্থান পাল্টানোর ঘোষণা দিয়েছেন। একইসাথে মেডিক্যাল কলেজে যারা বিগত সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন তাদের সাথেও তারা সখ্যতা ধরে রেখেছেন।

সূত্রমতে, মিলনের অনুসারীদের কারণে বিগত বছরগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের যে সকল অনুসারীরা হয়রানি ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন, তারা এখনও কোণঠাসা হয়ে রয়েছেন। এ অবস্থায় মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শ্রমিক সংগঠনগুলোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ফ্যাসিস্ট বিরোধী রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ স্টাফরা।

ফ্যাসিস্ট কিংবা তাদের অনুসারীদের দলে জায়গা না দেয়ার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে দেয়া নির্দেশনা প্রতিটি নেতাকর্মীদের কাছে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন সিকদার। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টের পক্ষে যারা ছিল তাদের দলে ভেরানোর কোন প্রশ্নই আসেনা। আর কেউ যাতে সুযোগে সদ ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ছবি তোলা কিংবা ফুল নেয়ার বিষয়েও সতর্ক থাকা বাঞ্চনীয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১০ নভেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test