E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

টুঙ্গিপাড়ায় মাদ্রাসার শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, চড় থাপ্পড়ে মীমাংসা

২০২৫ নভেম্বর ১২ ১৮:২২:১৯
টুঙ্গিপাড়ায় মাদ্রাসার শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, চড় থাপ্পড়ে মীমাংসা

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের ৫ বছর বয়সী এক মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর বিচার করতে সালিস বৈঠক করেন গ্রামের মাতুব্বরেরা। সালিসে সেই মাতুব্বরেরা ধর্ষণের চেষ্টাকারী যুবককে কয়েকটি চড় থাপ্পড় ও দ্রুত বিয়ে দেয়ার আদেশ দিয়ে ঘটনার মীমাংসা করে দেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।

গত ৮ নভেম্বর রাতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের পাড়-ঝনঝনিয়া গ্রামে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিশুটি স্থানীয় দারুস সুন্না মডেল একাডেমীর প্লে শ্রেনির ছাত্রী।

পাঁচ বছর বয়সী মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পাশ্ববর্তী একজন হুজুরের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায় । আমরা একটু ব্যস্ত থাকায় শনিবার (৮ নভেম্বর) রাত ৮ টায় মেয়েকে প্রাইভেট থেকে নিয়ে আসতে বলি আমার ভাই কুল্লু শেখের ছেলে ভাতিজা রহমত শেখকে (২২)। কিন্তু বাড়ি ফেরার পথে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় সে। তখন হঠাৎকরে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে বিপ্লব মাতুব্বর নামের এক ব্যক্তি সেখানে গেলে পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে ফেলে পালিয়ে যায় রহমত। পরে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে দিয়ে যায় বিপ্লব। রাতেই বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন ৯ নভেম্বর সালিস বৈঠকে বসেন স্থানীয় কয়েকজন মাতুব্বর। তারা ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত রহমতকে কয়েকটি চড় থাপ্পড় মারে ও আগামীতে এমন কাজ না করার জন্য শ্বাসিয়ে দেয়। এছাড়া রহমতকে দ্রুত বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন মাতবররা। এ সময় রহমতের বাবা কুল্লু শেখ সেখানে উপস্থিত ছিলেন । বিয়ে না দিলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে বলে সালিস শেষ করে দেন তারা। আর বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্যও বলেন শিশুর পরিবারকে।

মাদ্রাসাছাত্রীর বাবা আরও বলেন, স্থানীয় মুরব্বিদের চাপে ও মেয়েটির ভবিষ্যতের চিন্তায় থানায় লিখিত অভিযোগ করিনি। তবে এঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই। যদি রহমতের উপযুক্ত বিচার না হয় তাহলে আগামীতে এরকম আরো ঘটনা ঘটাতে পারে।

সালিসে অংশ নেয়া পাড়-ঝনঝনিয়া গ্রামের মাতুব্বর রেজাউল করিম ও হানিফ মুন্সি প্রথমে ধর্ষন চেষ্টার বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে বলেন, ঘটনাটি নিজেদের মধ্যে ঘটেছে। তাই সালিশের মাধ্যমে অভিযুক্ত রহমতকে শাসন করা হয়েছে। আর গ্রাম থেকেও তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের বিষয়ে থানায় কেন অভিযোগ করতে বাঁধা দিয়েছেন এমন প্রশ্নে কোন উত্তর দেননি ওই মাতুব্বরেরা।

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে শুনেছি। কিন্তু এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা কোন বিষয় স্থানীয় মাতব্বরেরা এভাবে সালিস দিতে পারেন না।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ১২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১২ নভেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test