E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বাগেরহাটে পাউবো’র জমি দখলের মহোৎসব

২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১৮:৫৬:০৪
বাগেরহাটে পাউবো’র জমি দখলের মহোৎসব

সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : সড়কের দুই পাশে সাড়ি সাড়ি ভবন, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ভবনসহ কাঠের তৈরি বসত ঘর। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদরে ৩৬/১ পোল্ডারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি দখল করে এসব ইমারত নির্মান করেছেন। বিভিন্ন সময় এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে তালিকা ও চিঠি চালাচালি হলেও দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি পাউবো। সর্বশেষ ২৭ অক্টোবর ১৭২টি অবৈধ স্থাপনার মালিককে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে চিঠি দিয়েছে পাউবো। এখনো সরকারি এ জমি দখলমুক্ত হয়নি। উপজেলা সদর বাজার সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের দুই পাশে সরকারি জমিতে প্রভাবশালীদের ইমারত। এখানে রয়েছে চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল খানের তিন তলা বাড়ি। তার বিপরীত পাশে মাস্টার দ্বীন  মোহাম্মাদের দুই তলা বাড়ি ও মার্কেট। ইসলামী আন্দোলন নেতা জাহাঙ্গীর আলম মুন্সির তিনতলা ভবন, ডা. কাজী মফিদুল ইসলাম বাবুলের দুই তলা ভবনসহ অসংখ্য পাকা, আধাপাকা ও কাঁচা ভবন রয়েছে এই সড়কের দুই পাশে।

অসতিপর বৃদ্ধ আব্দুল গফফারের সড়কের দুই পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি বালু ভরাট করে এই ভবন করেছে। ক্ষমতাবানরাই এই ভবন নির্মান করেছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, এসব ভবন ও ইমারত পানি উন্নয়ন বোর্ডের অজানা নয়। একটা তিন তলা ভবন করতে কমপক্ষে এক বছর লাগে, যখন নির্মান করেছে তখন বাঁধা দেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। এই চিঠি দিয়েছে। সরকারি জায়গায় সরকারি লোকের সম্মতি ছাড়া আমরা ভবন করি নাই। কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে ভবন করেছি। সবার অভিযোগের তীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব সার্ভেয়ার মো. নাইমুল হককের দিকে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নাইমুল হক বলেন, দখলদ্বারদের উচ্ছেদে চিঠি দেওয়ায়, এখন তারা এই প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন।

বড় দখলদার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল হোসেন খান কারাগারে রয়েছেন। আরও কয়েকজনকে ফোন করলে এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। ইসলামী আন্দোলন নেতা জাহাঙ্গীর আলম মুন্সি বলেন, যে জমিতে তার ভবন রয়েছে ওই জমি তিনি পৈত্রিক সূত্রে পেয়েছেন। উপজেলা পরিষদ থেকে ভবনের নকশার অনুমোদন নিয়ে তিনি এই ভবন করেছেন।

চিতলমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুমিনুল হক টুলু বিশ্বাস বলেন, তার দলের কেউ এই দখল প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত নয়। আর দখলদার যতই শক্তিশালি হোক তাকে উচ্ছেদ করে সরকারি জমি সাধারণ মানুষের কল্যানে কাজে ব্যবহারের অনুরোধ করেন তিনি।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বাগেরহাটের ৯টি উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহনকৃত ৩ হাজার ৬০০ একর জমি রয়েছে, এসব জমিতে ২ হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এরমধ্যে চিতলমারীতে ১৭২টি অবৈধ স্থাপনার মালিককে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। নতুন করে কেউ যাতে অবৈধ দখল করতে না পারে সেজন্য কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। আর নোটিশ জারির পরে নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। সেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে। একই সাথে পাউবোর কোন কর্মচারী-কর্মকর্তা দকল কাজে যুক্ত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।

(এস/এসপি/নভেম্বর ১৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ নভেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test