E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ডেভিড বার্গমেনের বিশ্লেষণে সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর আইসিটি মামলা নিয়ে বিতর্ক

২০২৫ নভেম্বর ২১ ১৭:২৮:৫৯
ডেভিড বার্গমেনের বিশ্লেষণে সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর আইসিটি মামলা নিয়ে বিতর্ক

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) সম্পর্কিত সাম্প্রতিক রায় ও তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এটি হয়েছে বিখ্যাত অনুসন্ধানী সাংবাদিক ডেভিড বার্গমেনের সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্লেষণের পর।

তার প্রবন্ধে উঠে এসেছে আইসিটির কিছু মামলায় প্রক্রিয়াগত ত্রুটি এবং প্রমাণ মূল্যায়নের সম্ভাব্য দুর্বলতা, যার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ফজলে করিম চৌধুরীর ৯ মাসের আটকাদেশ।

বার্গমেন বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা ‘হত্যার নির্দেশ’ অভিযোগের ভিত্তি দুর্বল এবং ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। প্রসিকিউশন ১৪ জুলাইয়ের একটি ফোনালাপকে হত্যা নির্দেশ হিসেবে দেখিয়েছিলো। কিন্তু বার্গমেনের বিশ্লেষণে তা মূলত বিচারিক পদক্ষেপের প্রসঙ্গ ছিল, প্রাণঘাতী নির্দেশ নয়।

তিনি যুক্তি তোলেন, “যদি ১৪ জুলাই হত্যার নির্দেশের কোনো প্রমাণ না থাকে, তাহলে রংপুর ও চট্টগ্রামে ১৬ জুলাইয়ের ঘটনাকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে দেখানো প্রশ্নবিদ্ধ। বিশেষ করে সেই মামলায় ফজলে করিম চৌধুরীর ৯ মাস ধরে আটক রাখা হলো।”

আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, ফজলে করিমের নাম ঘটনার প্রথম এফআইআরে নেই। তিনি ঘটনার স্থান থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে থাকলেও তার নির্বাচনী এলাকা রাউজান সম্পূর্ণ শান্ত ছিল। কোনো ভুক্তভোগী বা সাক্ষী তার নাম উল্লেখ করেননি। ফজলে করিম চৌধুরী ছয়টি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত, পরপর চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং মানবিক কার্যক্রমের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত।

এছাড়াও, ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (IPU), পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গ্লোবাল অ্যাসোসিয়েশন (PGA) এবং যুক্তরাজ্যের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (APPG) ইতিমধ্যে তার আটক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাগুলো দ্রুত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

একজন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেছেন, “যদি বার্গমেনের বিশ্লেষণ সঠিক হয়, তাহলে ১৬ জুলাইয়ের ঘটনার তদন্তের ভিত্তি দুর্বল। এর ওপর ভিত্তি করে একজন নির্বাচিত এমপিকে মাসের পর মাস আটক রাখা গণতান্ত্রিক ন্যায়বিচারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”

পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, ফজলে করিম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন এবং স্থানীয় উগ্রপন্থী চাপের কারণে তার নাম মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। বার্গমেনের বিশ্লেষণ দেশ-বিদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এখন প্রশ্ন হলো: আইসিটি কি নিরপেক্ষভাবে প্রমাণ মূল্যায়ন করেছে, নাকি রাজনৈতিক চাপ বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে?

মানবাধিকার সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংসদীয় গ্রুপ এবং স্বাধীন সাংবাদিকদের প্রশ্ন একটাই: সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর আটক আইনসম্মত এবং ন্যায়সংগত ছিল কি না।

(জেজে/এসপি/নভেম্বর ২১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২১ নভেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test