E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ঈশ্বরদীতে মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ

২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি কমে ৯.২ ডিগ্রি

২০২৫ ডিসেম্বর ৩১ ১৭:৪৯:৫২
২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি কমে ৯.২ ডিগ্রি

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীতে শুরু হয়েছে চলতি মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ। গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ২ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে। মঙ্গলবার এ উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ায় তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত চার দিন সূর্যের দেখা না মিললেও বুধবার সকাল ৯টার পর সূর্যের দেখা মেলে। তবে সূর্যের তাপ না থাকায় শীতের প্রকোপ কমেনি। দিনের বেলায় কুয়াশার প্রভাব কিছুটা কমলেও প্রচণ্ড ঠান্ডায় স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ।

পদ্মা নদী তীরবর্তী ঈশ্বরদী উপজেলায় শীতের তীব্রতা তুলনামূলকভাবে বেশি অনুভূত হচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় পদ্মার চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। চরাঞ্চলে শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত কয়েক দিন ধরে বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

তীব্র শীত মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের রাত কাটছে নির্ঘুম। কাঠ ও খড় জ্বালিয়ে আগুন পোহানোই তাদের একমাত্র ভরসা। অন্যান্য বছর শীতের শুরুতেই দানশীল ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কম্বল ও গরম কাপড় বিতরণ করা হলেও এ বছর এখনো তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। তবে সোমবার ও মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান সরকারি উদ্যোগে শহরের কয়েকটি এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন।

হিমেল আবহাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষদের অনেকেই কাজ হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। শীতে কাবু হয়ে পড়েছে গৃহপালিত পশু-পাখিও। ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। অনেক কৃষক পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখছেন। প্রচণ্ড শীতে শিশু ও বয়স্কদের দুর্ভোগ বেড়েছে; শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে।

শীতের দাপটে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট অবর্ণনীয়। শীত থেকে বাঁচতে অনেকেই রাস্তার পাশে বা খোলা স্থানে খড়কুটো ও কাঠ জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন। তীব্র শীতে কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বের হতে না পারায় অনেকের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে।

লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের চর এলাকার বাসিন্দা রায়হান জানান, নদীর পাড়ে বসবাস করার কারণে ঠান্ডা বাতাসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং কাজ করতে পারছেন না।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার ছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে রবিবার ও সোমবার টানা দুই দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি আরও জানান, উত্তরের হিমেল বাতাসের গতি বেড়েছে এবং কুয়াশা কেটে যাওয়ায় তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ৩১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test