বাগেরহাটে প্রচন্ড তাপদাহে মরছে ঘেরের চিংড়ি, দিশেহারা চাষী
বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে প্রচন্ড তাপদাহে বাগদা চিংড়ি ও সাদা মাছের চাষে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
বাগেরহাট জেলা সদরসহ সকল উপজেলার চিংড়ি ঘেরগুলোতে মাস খানেক ধরে ব্যাপক হারে মাছ মরে যাচ্ছে। তার ওপর এবার রপ্তানি বাজারে বাগদার দাম গত বারের তুলনায় কিছুটা কম।
প্রচন্ড তাপদাহ, পর্যাপ্ত পানির অভাব, অতিরিক্ত লবণ ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানাবিধ কারণে ঘেরের বাগদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে বলে মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে।
এদিকে অধিকাংশ ঘেরে মাছ মরে যাবার কারণে এবার এ অঞ্চলে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম বাগদা চিংড়ি উৎপাদন হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া মাছ মরার কারণে চিংড়ি চাষীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দারুণ হতাশা। এ অবস্থায় বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন চিংড়ি চাষী ও মৎস্য ঘের মালিকরা।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, লবণ পানি অধ্যুষিত বাগেরহাটে প্রায় আড়াই যুগ আগ থেকে ধানের পরিবর্তে বছরের প্রায় ৮ মাসই বাগদা চিংড়ি চাষ হয়ে আসছে। ৭১ হাজার ৪৭ হেক্টর জমিতে বাগদা, গলদা ও সাদা মাছের চাষ হয়। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে ঘেরের সংখ্যা ৭৪ হাজার ৯৯২টি।
বাগেরহাট সদরের উপজেলার পশ্চিমভাগ গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর শেখ জানান, ফেব্রুয়ারী মাসে ঘেরে পোনা মাছ ছাড়ার পর এপ্রিল মাস থেকে বিরতিহীনভাবে ঘেরে মাছ মরে ভেসে উঠছে। ঘেরের ভেড়ীর পাশে লালচে আকার ধারণ করে মরা মাছ পড়ে থাকছে। আবার যে সামান্য পরিমান জীবিত মাছ পাওয়া যাচ্ছে তার অধিকাংশই দুর্বল। এগুলো নড়াচড়া করতে না পেরে মাটির সাথে মিশে থাকছে।
মংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামের চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ী আনিস ও চিলা গ্রামের মাহবুবুর রহমান টুটুল জানান, শতাধিক বিঘা জমি লিজ নিয়ে তিনি এবার বাগদা চাষে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা লগ্নি করেছেন। এবারের চলতি মৌসুমের মাঝামাঝি এ ঘের থেকে যে পরিমান মাছ পাওয়ার আশা ছিল তাতে তার এ খাতে লগ্নি করা টাকার অধিকাংশই উঠে আসার কথা। কিন্তু মাছ মরে যাওয়ায় তিনি এখন পর্যন্ত এক লক্ষ টাকার বেশী মাছ পাননি।
এদিকে ব্যাপক হারে চিংড়ি মাছ মরার কারণে চিংড়ি চাষীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দারুণ হতাশা। মাছ মরে যাওয়ায় ইতোমধ্যে অনেক চাষীর সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
চাষীরা জানায়, মহাজন, ব্যাংক ও ধারদেনা করে তারা এবার ঘেরে পোনা ছেড়েছেন। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে বেশী হারে মাছ মরে যাচ্ছে। তার উপর যাও পাওয়া যাচ্ছে তার দাম গতবারের তুলনায় অনেক কম। কিভাবে এ দেনা পরিশোধ করবেন তা নিয়ে হা-হুতাশে রয়েছেন। ইতোমধ্যে দেনা পরিশোধ করতে না পেরে অনেকের অর্থনৈতিকভাবে সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার গোড়াপাড়া, পশ্চিমভাগসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েকজন চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, সরকার চিংড়ি মাছ রপ্তানী করে শত শত কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করলেও চিংড়ি উৎপাদনকারীদের সমস্যা সমাধানে কোন পদক্ষেপ নেয় না। উপজেলা মৎস্য অফিসও চিংড়ি চাষীদের সচেতন করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেয় না।
কয়েকজন চিংড়ি চাষী জানান, এ পর্যন্ত কোন ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি ঘেরে গিয়ে কি কারণে মাছ মারা যাচ্ছে বা আমাদের কি করা উচিত সে বিষযে তাদের কোন দিক নির্দেশনা আমরা পাইনি। ফলে আমাদের একমাত্র জীবিকা- চিংড়ী চাষ নিয়ে আমরা খুবই সমস্যার মধ্যে আছি।
ব্যাপকহারে মাছ মরে যাওয়ার কারণে উপজেলার চিংড়ি উৎপাদন গতবারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক বলে দাবী করেছেন চিংড়ি চাষী ও ডিপো মালিকরা।
মংলা উপজেলা চিংড়ি বনিক সমবায় সমিতির সভাপতি মো: মাহে আলম জানান, এবারে মাছ মরে যাওয়ার কারণে মাছের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। গতবারের তুলনায় মংলার মাছের আড়তগুলোতে মাছের আনা-গোনা প্রায় অর্ধেক। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, চিংড়ি ঘেরে ভয়াবহ আকারে মাছ মরে গেলেও উপজেলা মৎস্য কর্মকতাসহ সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে রহস্যজনক কারণে চাষীদের কোন খোঁজ খবর নিচ্ছেন না।
বাগেরহাট জেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র মন্ডল বলেন, বিভিন্ন কারণে বাগদা চিংড়ি মারা যায়। অতিরিক্ত লবণের কারণে বেশী সাদা মাছ মারা যাচ্ছে। তবে এবারে প্রচন্ড তাপদাহ, পর্যাপ্ত পানি না থাকায় চিংড়ি মারা পড়ছে। কিছু কিছু ঘেরে এই সমস্যা হচ্ছে। তবে যেভাবে বলা হচ্ছে তেমন না। কারণ এখনও পুরাপুরি মাছ চাষের মৌসুম শুরুই হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন কারণে চিংড়ি মাছের মধ্যে এক ধরনের ‘পীড়ন’ তৈরী হয় আর যার শেষ পরিণতি মৃত্যু। চিংড়ী চাষীদের সচেতনতা তৈরীতে আমরা চিংড়ি চাষীদের ট্রেনিং-র ব্যবস্থা করেছি ও সেমিনারের মাধ্যমে তাদের সচেতন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর কোন এলাকায় মড়ক লাগার খবর পেলে আমরা সাথে সাথেই সেখানে গিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করি-বলে তিনি দাবি করেন।
(একে/পিএস/জুন ০৯, ২০১৫)
পাঠকের মতামত:
- চামড়ার ভালো দাম পেয়ে খুশি মৌসুমি ব্যবসায়ীরা
- ৫ দিনে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ১৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা টোল আদায়
- ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি খেলবে যে ১২ দল
- যে কারণে অলিম্পিকে খেলবেন না এমবাপ্পে
- সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির
- ঈদের দিনও থেমে নেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- কোরবানির মাংস গলায় আটকে যুবকের মৃত্যু
- দেশ ছেড়েছেন সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়লেন তানজিম সাকিব
- ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ৫ সিনেমা
- ধামরাইয়ে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
- মাগুরায় বিভিন্নস্থানে গঙ্গা পূজা ও স্নান উৎসব
- ঈদের দিন জলে ভাসছে সিলেট
- বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত
- বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন
- দিনাজপুরে ৩ লাখ মুসল্লির সমাগমে সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত
- কোরবানির গরু নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না দোহার
- ‘কাদেরের কথার জবাব দিতে রুচিতে বাধে’
- রাজধানীতে কোরবানি দিতে গিয়ে ৫৫ জন আহত
- কুড়িগ্রামে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা
- দেশবাসীকে ভয় ভীতি কোরবানি দেওয়ার আহ্বান মির্জা আব্বাসের
- গোপালগঞ্জে ঈদুল আযহার প্রধান জামাত
- দার্জিলিংয়ে ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৮
- ইতিহাস গড়ে সুপার এইটে বাংলাদেশ
- গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়
- বান্দরবানে ডায়রিয়ায় পাঁচদিনে ১০ জনের মৃত্যু
- সাভারের ২৩ কিলোমিটার সড়কে থেমে থেমে যানজট
- ঈদে আগৈলঝাড়ায় খাদ্য সহায়তা পাবেন ১৩ হাজার ২৩৫ পরিবার
- বঙ্গবন্ধু সেতুতে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় তিন কোটি টাকার টোল আদায়
- সফলতার পথ
- তিস্তায় পানি বেড়েছে, বন্যার আশঙ্কা
- বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রশ্নে আমৃত্যু আপসহীন ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- ফুলপুরে কোরবানির পশুর গাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগ
- নিষিদ্ধ জাল জব্দ, গ্রাম পুলিশের ছেলেকে মারধর
- কুমড়ার বড়ি তৈরি করে স্বাবলম্বী ব্রাহ্মনডাঙা গ্রামের নারীরা
- পরিচয় গোপন করে একাধিক বিয়ে করে উধাও কারারক্ষী ইস্রাফিল
- আজ শেরপুরের সূর্য্যদী গণহত্যা দিবস
- আজ শেরপুরের সূর্য্যদী গণহত্যা দিবস
- সুবর্ণচরে কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন
- সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের চেয়ার ছাড়তে হচ্ছে দখলদার কমিটিকে
- লোহাগড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার উদ্যোগে মাস্ক বিতরণ
- একদিনে সর্বোচ্চ ৭৭ জনের মৃত্যুর রেকর্ড
- মদনে হত্যার জেরে অর্ধশতাধিক বসত বাড়ি ভাংচুর-লুটপাট