E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

‘উন্নয়ন দৃশ্যমান তবে মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ’

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ২২ ১৫:৫৯:৪৪
‘উন্নয়ন দৃশ্যমান তবে মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : ৩১ দলীয় জাতীয় জোটের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেছেন, বর্তমান সরকারের আমলে উন্নয়ন দৃশ্যমান হলেও মানবাধিকারের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।

সোমবার দুপুরে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ‘আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির তিনি বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করা হয়।

নাজমুল হুদা বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে ‘রাষ্ট্রের ক্ষমতার মালিক হবে জনগণ’। ভোট হচ্ছে জনগণের শক্তি। ভোট দিতে না পারলে জনগণ শক্তিহীন। বিদেশি শক্তি, সন্ত্রাসীরা যদি কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয় সেই সরকার কেন জনগণের দিকে তাকাবে? অতীতে দেখেছেন, আপনার ভোট অন্যজন দিয়ে দিয়েছে। ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়েছে। কেন্দ্র দখল করে ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমি তখন বলি, ‘জনগণ সকল অক্ষমতার মালিক’।

তিনি বলেন, আগে আমি বলেছিলাম দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসা দরকার। সদিচ্ছা থাকলে এ দুই নেত্রী বাংলাদেশকে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে পারেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উদ্দেশে নাজমুল হুদা বলেন, আপনি কেন অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে রেখেছিলেন? কেন প্রথম দিনের পরই প্রত্যাহার করে নিলেন না? তখন যে জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে তার দায় আপনাকে নিতে হবে। অবরোধ কর্মসূচি যেহেতু হিংসাত্মক, ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছিল তার দায় নিতে হবে।

নাজমুল হুদা বলেন, ভালো থেকে মন্দ সব ক্ষমতা এখন এক হাতে। এক হাতের এ ক্ষমতাকে প্রশংসা না করে পারছি না। এখন রাস্তাঘাটে অপকর্ম হয় না। পেট্রোল বোমা নেই। প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাবো, রাস্তায় তিনি শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। আমাদের তার ওপর নির্ভর করতে হবে। তার হাতেই সমস্ত ক্ষমতা। আমরা ভোটাধিকার, মানবাধিকারের বিষয়ে জনগণের ঐক্যের মাধ্যমে জনমত গড়ে তুলে প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি উপলব্ধি করাতে হবে।

বিএনপি ছাড়ার প্রসঙ্গে নাজমুল হুদা বলেন, আমি সহিংস রাজনীতিতে ইস্তফা দিয়ে চলে এসেছি। আমি বলেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর উচিত সংলাপে ডাকা। কিন্তু তিনি যখন ডাকেননি, দ্বিতীয় জননেত্রী হিসেবে আপনি (বিএনপি নেত্রী) প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপে ডাকুন। বিএনপির নয়জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের একজন আমি, ১২ সদস্যের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমি, ২০ বছর এমপি ছিলাম, ১১ বছর মন্ত্রী ছিলাম, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলাম। তারপরও কেন বিএনপি ছাড়লাম? কারণ আমি বলেছিলাম, ৫ জুন প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপে আহ্বান করুন, না করলে ৬ জুন আমি পার্টি থেকে পদত্যাগ করবো। আমি কথা রেখেছি।

তিনি বলেন, কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমি সরাসরি বলেছি, উন্নয়নের দিক থেকে আপনি অনেক কিছু করেছেন যা দৃশ্যমান। কিন্তু মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আপনার সরকার প্রশ্নবিদ্ধ। বিশেষ করে ক্রসফায়ারের ক্ষেত্রে।

তিনি বলেন, আমি রাজনীতিবিদ। বিএনপি ছেড়েছি। কিন্তু রাজনীতি আমি ছাড়তে পারবো না। সুস্থ রাজনীতির মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৩১ দলের জোট গড়েছি। এ জোটের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে মাঠে নেমেছি। এমপি, মন্ত্রী হওয়া আমার জন্যে বড় কিছু নয়। ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র আমাদের জোটের অনুষ্ঠানে এসেছেন। আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে, এটি বিরাট সম্ভাবনা। ইতিমধ্যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা ৭ দফা তুলে ধরেছি জাতির সামনে। যা পুস্তিকা আকারে বের হয়েছে। বইমেলায় সমাদৃত হয়েছে।

নাজমুল হুদা একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের পাশাপাশি প্রতিবছর ৮ই ফাল্গুনকে রাষ্ট্রীয় ভাষা দিবস হিসেবে উদযাপনের দাবি জানান।

সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী এম নাজিমুদ্দিন আল আজাদ। আলোচনায় অংশ নেন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লায়ন জাফর উল্লাহ, মহাসচিব মাওলানা আবেদ আলী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী মুক্তিযোদ্ধা এসএম মর্তুজা হোসেন, নগর মহিলা শাখার সভাপতি মনোয়ারা বেগম হেনা, মো. ইকবাল হোসেন, মিজানুর রহমান মজুমদার, সৈয়দ মো. আমান উল্লাহ, আজিম উদ্দিন অভি, এসএম আলী, তৃষা সেনগুপ্ত, কোব্বাত আলী, অ্যাডভোকেট সেলিনা আকতার, আক্কাস আলী খান প্রমুখ।

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৪ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test