E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

‘নতুন বিনিয়োগ আনতে সুদের হার কমাতে হবে’

২০২৫ জুলাই ১৭ ১৬:১১:৩১
‘নতুন বিনিয়োগ আনতে সুদের হার কমাতে হবে’

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নের বিকাশ ঘটাতে দ্রুত ব্যাংক ঋণের বিপরীতে সুদের হার কমাতে হবে বলে মনে করেন আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে সহ-সভাপতি প্রার্থী ও ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাকিফ শামীম। তিনি বলেন, উচ্চসুদের কারণে নতুন বিনিয়োগ না হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বুধবার আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচন, ব্যাংক ঋণের সুদ, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান নিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি এ সব কথা বলেন৷

এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি প্রার্থী সাকিফ শামীম বলেন, নতুন বিনিয়োগ আনতে হলে ব্যাংক ঋণের সুদ কমাতেই হবে। অন্যথায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে অগ্রাধিকার খাত বিশেষ করে কৃষি, এসএমই (ছোট ও মাঝারি শিল্প), স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আবাসন, গার্মেন্টস এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্পসুদে সহজ শর্তের ঋণ পাওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অনেক ব্যবসায়ী ৯ শতাংশের কম সুদ বিবেচনায় ঋণ নিয়ে ইতোমধ্যে শিল্প স্থাপন করেছেন। কিন্তু এখন সুদ গুনতে হচ্ছে ১৪- ১৫ শতাংশ। সুদহার এভাবে বাড়তে থাকলে আগামীতে ঋণের খরচ আরও বেড়ে সামগ্রিকভাবে সংকট তৈরি হবে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে বাংলাদেশ। যারা উচ্চসুদে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন, তারা ঋণের ভারে খেলাপি হয়ে পড়বেন। সোজা কথায় বলা চলে, সুদহার বৃদ্ধি মানেই ব্যবসায়ীদের গলাটিপে হত্যা করার শামিল। এছাড়া বর্তমানে, ব্যাংকগুলো কর্তৃক নির্ধারিত সুদের হার অনেক বেশি, যা এই খাতগুলোর বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। তাই, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদহার কমানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।

সহ-সভাপতি প্রার্থী বলেন, খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত কৃষি, এসএমই (ছোট ও মাঝারি শিল্প), জ্বালানি এবং স্বাস্থ্যের মত খাতগুলোতে ঋণের সুদ কমানো জরুরি। এই খাতগুলোতে সুদের হার বেশি থাকার কারণে, ঋণগ্রহীতারা ঋণ নিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে। সরকারের উচিত, এই খাতগুলোতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সুদের হার যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এতে করে, ঋণ গ্রহণকারীরা সহজে ঋণ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দিতে পারবেন এবং দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।

তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ নিশ্চিত করা গেলে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে। আবার দেশের কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এসএমইখাত। হাসপাতাল নির্মাণ, ওষুধ উৎপাদন, রোগ নির্নয় কেন্দ্র ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠায় ঋণের ওপর উচ্চহারে সুদ নিচ্ছ ব্যাংকগুলো। ফলে এ খাতে নতুন বিনিয়োগ আসছে না, স্বাস্থ্য সেবায় খরচ বেড়ে যাচ্ছ। অথচ স্বাস্থ্য মানুষের মৌলিক অধিকার। এসব বাস্তবতায় ব্যাংক ঋণের বিপরীতে উচ্চহারের সুদ হার নামিয়ে আনতে হবে। উচ্চসুদের কারণে নতুন বিনিয়োগ না হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ।

এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ বেড়ে যাচ্ছে এবং একটি নির্দিষ্ট সীমা ছাড়িয়ে গেলে ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগ করবে না। তাই আসন্ন নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হতে পারলে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। বর্তমান সরকারের উচিত, বাজারভিত্তিক সুদহার নীতিমালার পাশাপাশি, অগ্রাধিকার খাতগুলোর জন্য বিশেষ সুদহার নির্ধারণ করা। এতে করে, এই খাতগুলোতে ঋণ প্রবাহ বাড়বে এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সম্প্রতি স্ট্যার্টআপ বিনিয়োগে ৪ শতাংশ সুদহারে ঋণ পাওয়ার উদ্যোগটির প্রশংসা করে সাকিফ শামীম বলেন, অগ্রাধিকার খাতগুলোর জন্যও এই হার নির্ধারণ করা যেতে পারে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে আসায় সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের সুদ কমানো হয়েছে। এখন ব্যাংক ঋণের সুদ কমানো প্রয়োজন।

তিনি বলেন, স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণের জন্য ব্যাংকগুলোকে উৎসাহিত করা এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। সুদ ভর্তুকি এবং অন্যান্য প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করে অগ্রাধিকার খাতকে আরও শক্তিশালী করা যেতে পারে। অন্যদিকে, ব্যাংকগুলোর উচিত, তাদের পরিচালন ব্যয় কমিয়ে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঋণের সুদ হার হ্রাস করা।

এতে করে, ঋণগ্রহীতারা সহজে ঋণ নিতে পারবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরও বেশি অবদান রাখতে পারবে। বিশেষ করে, কৃষি খাতে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গঠিত ৫০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম খুবই প্রশংসনীয়। এই ধরনের উদ্যোগ আরও বেশি করে গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
(ওএস/এএস/জুলাই ১৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test