E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ কমছে, বিল-বন্ডে ঝুঁকছে মানুষ

২০২৫ আগস্ট ০৭ ১৪:৪৪:০০
সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ কমছে, বিল-বন্ডে ঝুঁকছে মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় করার সামর্থ্য কমে গেছে। একই সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদহার নিয়ে বিভ্রান্তি, নিয়মের জটিলতা এবং ব্যাংক ও সরকারি বিল-বন্ডে উচ্চ সুদের হার—এসব কারণে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। বিপরীতে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, টানা তিন অর্থবছর ধরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নিট বিক্রি কমেছে ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। এর ফলে সঞ্চয়পত্রে মোট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৮ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকায়। আগের দুই অর্থবছরেও যথাক্রমে ২১ হাজার ১২৪ কোটি এবং ৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ কমেছিল।

একসময় বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র ছিল সরকারের অন্যতম নির্ভরযোগ্য উৎস। চলতি অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র থেকে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে কমিয়ে ১৪ হাজার কোটি করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০১৯ সালে ‘জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ চালুর পর সঞ্চয়পত্র কেনার প্রক্রিয়া অনেক কঠোর হয়ে যায়। একই নামে বড় অঙ্কে সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ কমে যায়, এক লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে টিআইএন বাধ্যতামূলক হয়।

পাশাপাশি প্রতি ছয় মাস অন্তর সুদহার পরিবর্তনের নতুন নিয়মে সর্বশেষ জুলাই মাসে সুদহার ৪৭ থেকে ৫৭ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমেছে। বর্তমানে সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি ও কম বিনিয়োগে আলাদা সুদহার প্রযোজ্য হয়, যা অনেকের কাছে জটিল মনে হচ্ছে।

ফলে বিনিয়োগকারীরা এখন বেশি ঝুঁকছেন ট্রেজারি বিল ও বন্ডের দিকে। যেখানে ব্যাংক, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ফান্ড এবং ব্যক্তিপর্যায়ের বিনিয়োগ দ্রুত বাড়ছে। ২০২৩ সালের জুন শেষে এ খাতে মোট বিনিয়োগ ছিল ২৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা, যা ২০২৫ সালের জুন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ১৫৯ কোটি টাকায়—মাত্র দুই বছরে বেড়েছে প্রায় পাঁচগুণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রেজারি বিল-বন্ডে এখন ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়া যাচ্ছে, যা করমুক্ত এবং নিরাপদ। সময়মতো মুনাফা পাওয়ার নিশ্চয়তা ও সেকেন্ডারি বাজারে বিক্রির সুযোগ থাকায় এটি এখন ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় খাতে পরিণত হয়েছে।

(ওএস/এএস/আগস্ট ০৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৭ আগস্ট ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test