E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

‘কিছু মানুষ বাংলাদেশকে বনসাই বানিয়ে রাখতে চায়’

২০২৫ আগস্ট ২৪ ১৪:৩৯:৫৮
‘কিছু মানুষ বাংলাদেশকে বনসাই বানিয়ে রাখতে চায়’

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের পথে এখন প্রধান বাধা সীমাবদ্ধ সক্ষমতার চট্টগ্রাম বন্দর। বিনিয়োগকারীরা এসে প্রথমেই বন্দরের খোঁজ-খবর নেয়।

উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাজারে পৌঁছতে না পারার মতো বন্দর সুবিধা না থাকার কারণে বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, কিছু মানুষ বাংলাদেশকে বনসাই বানিয়ে রাখতে চায়।

শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘ট্রাম্প ট্যারিফ পরবর্তী বিশ্ববাণিজ্য ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তার বক্তব্যে শফিকুল আলম এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (রেইন)।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর যারা বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বাংলাদেশে তাদের ‘কি’ ফাইন্ডিং ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা। এটা একটি লো-হ্যাঙ্গিং পোর্ট। এর সক্ষমতা যদি বাড়াতে না পারি তাহলে আমাদের দেশ থেকে উচ্চমূল্যের ফ্যাশন আইটেম রপ্তানি করা যাবে না। উচ্চমূল্যের ফ্যাশন আইটেমের কার্যাদেশ দেওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে শোরুমে উঠতে হয়। বাংলাদেশে উৎপাদন করে এটা সম্ভব নয়। গ্যাপ, পিভিএইচ-এর মতো বিশ্বের বড় বড় বায়ার এ কথা বলেছে। তারা চট্টগ্রামের বন্দর সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেছে।

তিনি আরও বলেন, গ্লোবাল কনসেসাস হচ্ছে—এক্সপোর্ট লিড ইকোনমি করতে চাইলে প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে লজিস্টিকস সম্পর্কিত যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে, এগুলো সমাধান করতে হবে। আর লজিস্টিকের মেইন চ্যালেঞ্জই হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরের ইন্প্রুভ করা যায়নি; আমরা যে জায়গায় যেতে চাচ্ছি সেই জায়গা যায়নি। যখনই চট্টগ্রাম বন্দর সক্ষম হবে, তখন বৈদেশিক বিনিয়োগ আটকিয়ে রাখা যাবে না। বৈদেশিক বিনিয়োগের আলোচনাতে কর ব্যবস্থার কথা আসছে, রেগুলেটরি ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ হচ্ছে। বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলতে আমরা চীন বা জাতিসংঘে যেখানেই গেছি চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার কথা উঠেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্দর বিদেশিরা এক্সপার্টরা চালাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে কিছু লোক বনসাই করে রাখতে চায়। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করাতে হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতেই হবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ব্যাংকগুলোকে পাইকারি হারে (হোলসেল) চুরি করেছিল। অন্যান্য ক্ষেত্রে লুটপাটের মূল বন্দোবস্ত ছিল এনার্জি বা পাওয়ার সেক্টরে। পুরো এনার্জি সেক্টরে যে ট্যারিফ নিয়ে আসা হলো, এটা প্রাইভেট সেক্টরের জন্য এখন ঝামেলা। যে কোনো সরকার দায়িত্বে এসে কাঠামোগত কাজ করে বিদ্যুতের দাম একটা জায়গায় নিয়ে আসা খুবই দরকার। অনেকে বলছে, এখানে এনার্জির দাম অনেক বেশি, এখানে বিনিয়োগ করবো কেন? এখানে তো শুধু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেখে না, প্রাইজ রেটিংগুলোও দেখে। এই জায়গায় বর্তমান সরকার কাজ করছে।

একটি অভ্যুত্থানের পর ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতির জন্য যা কিছু করেছে, এটা যথেষ্ট। সরকার মূল্যস্ফীতি কমিয়েছে, রিজার্ভ বাড়িয়েছে এবং সবচেয়ে বড় কাজটি হয়েছে অর্থনীতির। অভ্যুত্থানের পর এটা কোনো দেশে সম্ভব হয়নি।

রুবাইয়াৎ সারোয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল তিতুমীর, অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান, জিয়া হাসান, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ ইস্রাফিল খসরু, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাডমাস গ্রুপের পরিচালক শামারুখ মহিউদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

(ওএস/এএস/আগস্ট ২৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৪ আগস্ট ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test