বঙ্গবন্ধু ও বীর বাঙালির বিজয় চেতনা
মোহাম্মদ ইলিয়াস
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মহান স্থপতি। বঙ্গবন্ধু কেবল একজন ব্যক্তি নন, বঙ্গবন্ধু একটি পতাকা, একটি মানচিত্র, রাষ্ট্রের স্থপতি, স্বাধীনতার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কোনো বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর সম্পদ নন। বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীন দেশ, বঙ্গবন্ধু মানে ২৩ বছরের মুক্তিসংগ্রাম- যার চূড়ান্ত পরিণতি মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু মানে ১৬ ডিসেম্বরের চূড়ান্ত বিজয়। বাঙালির চিরায়ত অবয়বে, ব্যক্তিত্বে, উচ্চতায়, উঁচু তর্জনীতে, কণ্ঠে, সাহসে, লক্ষ্য অর্জনের দৃঢ়তায়, আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক, বাংলা ও বাঙালির প্রতি চিরবিশ্বস্ত বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালির দীর্ঘকাল লালিত স্বপ্নের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সারথি। বঙ্গবন্ধু তাঁর কর্ম ত্যাগ, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, সাহসিকতা, সততা ও সাংগঠনিক দক্ষতা, সর্বোপরি বাংলাদেশ ও বাঙালির প্রতি অতুলনীয় ভালোবাসায় নেতা থেকে বাঙালির পরম আত্মীয়ে পরিণত হয়েছেন। জাতীয় জীবনে আমাদের গৌরবের, আমাদের অহঙ্কারের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার কেন্দ্রীয় নির্যাস বঙ্গবন্ধু।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন সামনে নিয়ে দীর্ঘ চব্বিশটি বছর সংগ্রাম পরিচালনা করে, নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে ধাপে ধাপে অগ্রসর হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন মানুষের হৃদয়ে মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী গৌরবগাথা অম্লান থাকবে। তিনি এমন একজন মহামানব, যার হৃদয় ছিল মানুষের প্রতি ভালোবাসায় পরিপূর্ণ।
হৃদয়ের গভীরতা থেকে ‘ভাইয়েরা আমার’ বলে যখন ডাক দিতেন; মানুষের হৃদয় প্রবলভাবে আলোড়িত হতো। রাস্তার পাশে গভীর রাতে আধো-অন্ধকারে মানুষ দাঁড়িয়ে থাকত তাকে একনজর দেখার জন্য। তিনি গাড়ি থামাতেন। মানুষটিকে বুকে টেনে নিতেন। তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করতেন, তাকে মনে রাখতেন। সেই মানুষটিও বঙ্গবন্ধুর স্পর্শ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করতেন।
তিনি ছিলেন এমন নেতা, যিনি কখনও কাউকে ছোট মনে করতেন না। কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, হেয় প্রতিপন্ন করতেন না। পরকে আপন করতেন। যে তার নীতি-আদর্শে বিশ্বাসী নয়, সেও তার সান্নিধ্যে আপন হয়ে উঠত।
ব্যক্তিত্বের অমোঘ এক মানবিক আকর্ষণ ছিল বঙ্গবন্ধুর। সাগর-মহাসাগরের গভীরতা মাপা যাবে; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে অকৃত্রিম ভালোবাসা, এটি কোনোদিনই পরিমাপ করা যাবে না। তিনি ছোটকে বড় করতেন, বড়কে করতেন আরও বড়। আওয়ামী লীগের প্রত্যেক কর্মীকে তিনি বড় করে তুলতে চাইতেন। কোনো নেতাকর্মীর নির্বাচনী এলাকায় গেলে তার নাম ধরে সম্বোধন করে মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতেন।
মনে পড়ে, ’৭০-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ভোলা সফরের স্মৃতি। বরিশাল-পটুয়াখালী-ভোলা একসঙ্গে সফরের কর্মসূচি নির্ধারণ করে একুশে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে প্রথমে ২২ তারিখ বরিশাল, ২৩ তারিখ পটুয়াখালী এবং ২৪ তারিখ ভোলার জনসভায় বক্তৃতা করেন। স্নেহমাখা ভাষায় বক্তৃতা দিয়ে আমাকে ভোলার মানুষের কাছে তুলে ধরেছিলেন।
সেই বক্তৃতার কথা বলতে আজ আমার হৃদয় ভাবাবেগে আপ্লুত হয়। আমি যা নই, তার থেকেও বেশি ঊর্ধ্বে তুলে ধরে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের কথা, কী করে কারাগার থেকে আমরা তাকে মুক্ত করেছি-ভোলার মানুষের কাছে তা বলে আমাকে বড় করার চেষ্টা করেছেন। এমন একজন মহান নেতার নেতৃত্বেই ’৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর দেশকে আমরা হানাদারমুক্ত করেছি।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরই বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন, এ পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য হয়নি। একদিন বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা বাঙালিদেরই হতে হবে। সেই লক্ষ্য সামনে নিয়েই প্রথমে নিজকে, পরে দলকে এবং বাংলার মানুষকে প্রস্তুত করে তার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। তিনি লক্ষ্য নির্ধারণ করে রাজনীতি করতেন। সেই লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য জেল-জুলুম-হুলিয়া-অত্যাচার-নির্যাতন; এমনকি ফাঁসির মঞ্চকেও তুচ্ছ করেছেন। কোনোদিন লক্ষ্যচ্যুত হননি।
দলীয় প্রয়োজনে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন; আবার জাতীয় প্রয়োজনে দলের শীর্ষ পদ ছেড়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন।
পৃথিবীতে অনেক নেতা এসেছেন, আসবেন; কিন্তু মানবদরদি এমন নেতা অতুলনীয়। আজ বিজয়ের এই দিনে হৃদয়ের সবটুকু অর্ঘ্য ঢেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে; যার স্নেহে আমার জীবন ধন্য, যার আদরে আমি বড় হয়েছি, যার সঙ্গে বিদেশ সফরে গিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রনায়কদের তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়েছি-বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করি।
১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ আর আমাদের মহান বিজয় সূচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি ছুটে গিয়েছিলাম কলকাতার থিয়েটার রোডে অবস্থিত প্রথম বাংলাদেশ সরকারের সদর দফতরে।
সেখানে অবস্থান করছিলেন শ্রদ্ধেয় নেতারা-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য সর্বজনাব ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এএইচএম কামরুজ্জামানসহ অন্য নেতারা। সবাই আনন্দে আত্মহারা!
প্রিয় মাতৃভূমিকে আমরা হানাদারমুক্ত করেছি। মনের গভীরে উচ্ছ্বাস আর আনন্দ; সে আনন্দ-অনুভূতি অনির্বচনীয়! স্বাধীন বাংলার যে ছবি জাতির পিতা হৃদয় দিয়ে অঙ্কন করে নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে সশস্ত্র করে বজ্রকণ্ঠে বলেছিলেন: ‘কেউ আমাদের দমাতে পারবে না।’
পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অদম্য বাঙালি জাতি নেতার কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে বিশ্ববাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছে জাতীয় মুক্তির ন্যায্য দাবির প্রশ্নে কেউ আমাদের ‘দমাতে’ পারে না।
’৭১-এর ডিসেম্বরের ৩ তারিখ থেকে সার্বিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ অর্জন করে। আমরা তখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। মুক্তিবাহিনীর চতুর্মুখী গেরিলা আক্রমণে বিধ্বস্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনী এদিন উপয়ান্তর না দেখে একতরফাভাবে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। পাকিস্তান বিমানবাহিনী পশ্চিম ভারতের বিমানঘাঁটিগুলো; এমনকি দিল্লির কাছে আগ্রার বিমানক্ষেত্র এবং পূর্ব ফ্রন্টের আগরতলা বিমানঘাঁটিতে অতর্কিত আক্রমণ চালায়। উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি শ্রী ভি ভি গিরি ও ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী রাত ১০টা ৩০ মিনিটে সারা ভারতে জরুরি অবস্থা জারি করেন।
রাত ১২টা ২০ মিনিটে ইন্দিরা গান্ধী বেতার ভাষণে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে সাফ জানিয়ে দেন: ‘আজ এই যুদ্ধ ভারতের যুদ্ধ হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করল।’
পরদিন ৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ যৌথভাবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি অর্জনে চিঠি লেখেন। চিঠির মূল বক্তব্য ছিল: ‘যদি আমরা পরস্পর আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্কে প্রবেশ করি, তবে পাকিস্তান সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আমাদের যৌথ অবস্থান অধিকতর সহজতর হয়। অবিলম্বে ভারত সরকার আমাদের দেশ এবং আমাদের সরকারকে স্বীকৃতি প্রদান করুক।’
এর পরপরই ভারত পাল্টা আক্রমণ চালায় এবং ৬ ডিসেম্বর সোমবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ভারত সরকার স্বাধীন ও সার্বভৌম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’কে স্বীকৃতি প্রদান করে। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ’৭১-এর ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে গৃহীত রাষ্ট্রের নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ উদ্ধৃত করে লোকসভার অধিবেশনে ইন্দিরা গান্ধী বলেন: “বাংলাদেশ ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নামে অভিহিত হবে।”
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তৃতার পর লোকসভার সব সদস্য দাঁড়িয়ে তুমুল হর্ষধ্বনির মাধ্যমে এ ঘোষণাকে অভিনন্দন জানান। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারত সরকার ও জনসাধারণের ভূমিকা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি।
স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ও মুজিববাহিনীর জন্য ৭ ডিসেম্বর ছিল একটি বিশেষ দিন। এদিন মুজিব বাহিনীর অন্যতম প্রধান হিসেবে আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত অঞ্চল যশোর হানাদারমুক্ত হয়। যশোরের সর্বত্র উত্তোলিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। সেদিন সরকারের নেতরা এবং মুজিব বাহিনীর কমান্ডাররাসহ আমরা বিজয়ীর বেশে স্বাধীন বাংলাদেশের শত্রুমুক্ত প্রথম মুক্তাঞ্চল যশোরে প্রবেশ করি। জনসাধারণ আমাদের বিজয়মাল্যে ভূষিত করে।
সে আনন্দানুভূতির কথা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। মনে পড়ে, মেজর জেনারেল ওবানের কথা। তিনি দেরাদুনে আমাদের ট্রেনিং দিতেন। আরও মনে পড়ে, মেজর জেনারেল সরকার ও ডিপি ধরের (শ্রী দুর্গাপ্রসাদ ধর, শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর উপদেষ্টা) কথা; যারা প্রতি মাসেই কলকাতার হিন্দুস্তান ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে মুজিব বাহিনীর চার প্রধানের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে ভারত সরকারের সঙ্গে আমাদের কাজের সার্বিক সমন্বয় করতেন। মুজিববাহিনীর হেডকোয়ার্টার ছিল কলকাতা। দেরাদুনের ট্রেনিং ক্যাম্পে আমরা বক্তৃতা করতাম।
ট্রেনিং শেষে মুজিব বাহিনীর সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের অভ্যন্তর ভাগে প্রবেশে সহায়তা করতেন মেজর জেনারেল সরকার। ভারত সরকার প্রদত্ত অস্ত্র, অর্থ সহায়তার সমন্বয় করতেন শ্রী ফনীন্দ্র নাথ ব্যানার্জি তথা পিএন ব্যানার্জি। তাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। তিনি ভারতের পূর্বাঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই অর্থাৎ ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের পর অক্টোবরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে লন্ডনে দেখা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভারত সরকারের ভূমিকা কী হবে, তা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আমরা তাকে ‘মিস্টার নাথ’ বলে সম্বোধন করতাম।
আমাদেরও ভিন্ন নাম ছিল। মনি ভাইয়ের নাম ‘মনি দে’, সিরাজ ভাইয়ের নাম ‘সরোজ বাবু’, রাজ্জাক ভাইয়ের নাম ‘রাজেন দে’ এবং আমার নাম ‘তপন’।
অনেকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মুজিববাহিনীর ভুল বোঝাবুঝির কথা বলেন। এটা সঠিক নয়। এখানে কারও ব্যক্তিগত খামখেয়ালির অবকাশ ছিল না। সবাই সুসংগঠিত-সুশৃঙ্খল। বাংলাদেশকে চারটি বৃহৎ অঞ্চলে বিভক্ত করে রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সংগঠিত ছিল মুজিববাহিনী। প্রধান সেনাপতি আতাউল গণি ওসমানীর নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর (এফএফ) সঙ্গে একত্রে যুদ্ধ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে মোকাবেলা করাই ছিল মূলত মুজিববাহিনীর কাজ।
মুজিববাহিনীর ট্রেনিং হতো দেরাদুনে। দেরাদুনে ট্রেনিং শেষে আমার সেক্টরের যারা, তাদের প্লেনে করে বারাকপুর ক্যাম্পে নিয়ে আসতাম। মুজিববাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের প্রাক্কালে বুকে টেনে, কপালে চুমু দিয়ে বিদায় জানাতাম। মুজিববাহিনীর ট্রেনিং ক্যাম্পে বক্তৃতায় আমরা বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ করে বলতাম: ‘প্রিয় নেতা, তুমি কোথায় আছ, কেমন আছ জানি না! যতদিন আমরা প্রিয় মাতৃভূমি তোমার স্বপ্নের বাংলাদেশকে হানাদারমুক্ত করতে না পারব, ততদিন মায়ের কোলে ফিরে যাব না।’
১৬ ডিসেম্বর যেদিন দেশ শত্রুমুক্ত হয়, সেদিন আমরা বিজয়ীর বেশে মায়ের কোলে ফিরে এলাম। ১৮ ডিসেম্বর আমি ও রাজ্জাক ভাই হেলিকপ্টারে ঢাকায় আসি। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পদার্পণ করি।
চারদিকে সে কী আনন্দ-ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। প্রথমেই ছুটে গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী পরম শ্রদ্ধেয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারকে যেখানে বন্দি করে রাখা হয়েছিল সেখানে। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের পর মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি কর্নেল ওসমানীর এডিসি ছিলেন এবং শেখ জামাল দেরাদুনে আমার সঙ্গেই ছিল।
কিন্তু বিজয়ের আনন্দ ছাপিয়ে শুধুই মনে পড়ছিল প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুর কথা। যে স্বাধীন বাংলার স্লোগান তুলেছিলাম রাজপথে, যে বাংলার জন্য বঙ্গবন্ধুর গতিশীল নেতৃত্বে কাজ করেছি, পরম কাঙ্ক্ষিত সেই বাংলাদেশ আজ হানাদারমুক্ত-স্বাধীন। বাংলাদেশ সরকারের নেতারা অপূর্ব দক্ষতায় দল-মত-শ্রেণি নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে সফলভাবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন ২২ ডিসেম্বর। বিমানবন্দরে নেতাদের বিজয়মালা দিয়ে অভ্যর্থনা জানাই। রাজপথে লাখ লাখ মানুষ।
মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে সর্বত্র মুখরিত। দিকে দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ-আনন্দ মিছিল আর চারদিক থেকে মানুষ ছুটে আসছে আমাদের দেখতে। বিজয়ের সেই সুমহান দিনগুলোয় সাধারণ মানুষের চোখে-মুখে গৌরবের যে দীপ্তি আমি দেখেছি, তা বিজয়ের গৌরবমণ্ডিত আলোয় উদ্ভাসিত। স্বজন হারানোর বেদনা সত্ত্বেও প্রত্যেক বাঙালির মুখে ছিল পরম পরিতৃপ্তির হাসি, যা আজও আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
কিন্তু বিজয়ের আনন্দ ছাপিয়ে শুধুই মনে পড়ছিল প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুর কথা। যার সঙ্গেই দেখা হয়, সবারই এক প্রশ্ন: ‘বঙ্গবন্ধু কোথায় আছেন, কেমন আছেন, কবে ফিরবেন?’ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য সর্বস্তরের মুক্তিকামী বাঙালির ঘরে ঘরে রোজা, উপবাস এবং বিশেষ দোয়ার আয়োজন চলছিল। বঙ্গবন্ধুবিহীন বিজয় অপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অক্টোবরে বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। ইয়াহিয়া খান বলেছিলেন: ‘শেখ মুজিবকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে শাস্তি পেতে হবে।’
জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের প্রতিনিধি আগা শাহী বলেছিলেন: ‘শেখ মুজিবের বিচার শুরু হয়েছে ১১ আগস্ট এবং দু’সপ্তাহের মধ্যে বিচার সমাপ্ত হবে।’ দেশ স্বাধীন না হলে ডিসেম্বরেই বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানো হতো। কিন্তু আমরা জানতাম, বীর বাঙালির ওপর নেতার আস্থার কথা। তিনি গর্ব করে বলতেন: ‘ওরা আমাকে হত্যা করতে পারে; কিন্তু বাংলার মানুষকে তারা দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
ওরা আমাকে হত্যা করলে লক্ষ মুজিবের জন্ম হবে।’ ১৬ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয়ে বিজয় অর্জন করার পরও আমরা নিজেদের স্বাধীন ভাবতে পারিনি। কারণ, বঙ্গবন্ধু তখনও পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি ভারতের মহীয়সী প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর কথা, যিনি নিরলসভাবে বিশ্বনেতাদের এবং জনমতের কাছে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। আমরা পরিপূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করেছি সেদিন, যেদিন ’৭২-এর ১০ জানুয়ারি বুকভরা আনন্দ আর স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে জাতির পিতা তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন।
ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের পূর্বপরিকল্পিত নীলনকশা অনুযায়ী নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে পাকিস্তানিদের দোসর এ দেশীয় রাজাকার-আলবদর বাহিনীর ঘাতকেরা। ডিসেম্বর মহান বিজয়ের গৌরবমণ্ডিত মাস হলেও ১৪ ডিসেম্বর বেদনার দিন। জাতির মেধাবী সন্তানদের হত্যা করার মধ্য দিয়ে ঘাতকরা আমাদের মেধাহীন জাতিতে পরিণত করতে চেয়েছিল।
মহান মুক্তিযুদ্ধের রক্তঝরা দিনগুলোতে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল দেশমাতৃকার স্বাধীনতার সূত্রে। জাতীয় ঐক্যের অভূতপূর্ব নিদর্শন ছিল সেই দিনগুলো। ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী-কৃষক-শ্রমিক-যুবক সবাই আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ অংশগ্রহণে সফল জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছি সুমহান বিজয়। আর এখানেই নিহিত আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক সাফল্য। স্বাধীনতার ডাক দিয়ে একটি নিরস্ত্র জাতিকে তিনি সশস্ত্র জাতিতে পরিণত করে স্বাধীনতার মোহনায় দাঁড় করিয়েছেন।
ভাবতে অবাক লাগে, যে পাকিস্তানের কারাগার বঙ্গবন্ধুকে আটকে রাখতে পারেনি; মৃত্যুদণ্ড দিয়েও কার্যকর করতে পারেনি, অথচ প্রধানমন্ত্রী হয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাকে যখন তিনি স্বাভাবিক করলেন, যখন অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিলেন, ঠিক তখনই ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পরাজিত শক্তির দোসর দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী খুনিচক্র বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করল!
যে স্বাধীনতাবিরোধীরা মাকে ছেলেহারা, পিতাকে পুত্রহারা, বোনকে স্বামীহারা করেছিল; জেনারেল জিয়া তাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে সংবিধান থেকে উৎপাটিত করেছিলেন।
পরাজিত শক্তির পুনরুত্থান ও দীর্ঘকাল রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে প্রতি মুহূর্তে যে বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি, তাতে শুধু মনে হয়েছে, বিজয়ের আনন্দ ক্ষণস্থায়ী আর পরাজয়ের গ্লানি দীর্ঘস্থায়ী। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি পরাজয়ের গ্লানি ভোলেনি। স্বাধীন বাংলাদেশে তারা এখনও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার দুঃসাহস দেখায়!
দুটি লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু রাজনীতি করেছেন। একটি হচ্ছে, স্বাধীনতা-যে স্বাধীনতার ডাক তিনি দিয়েছিলেন ’৭১-এর ছাব্বিশে মার্চ এবং যা পূর্ণতা লাভ করেছে ১৬ ডিসেম্বর। অন্যটি হল, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা। সেই লক্ষ্যেই তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি দিয়েছিলেন; কিন্তু বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি যদি বঙ্গবন্ধু বাস্তবায়ন করতে পারতেন, তবে বহু আগেই বাংলাদেশ মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেত। আজ বঙ্গবন্ধু নেই। টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন। আর কোনোদিন আসবেন না।
কিন্তু তার রক্তের ও চেতনার উত্তরসূরি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকা যার হাতে ’৮১ সালে আমরা তুলে দিয়েছিলাম; সেই পতাকা হাতে নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে, সততার সঙ্গে দল পরিচালনা করে চারবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছেন। তারই সুযোগ্য নেতৃত্বে সব ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে প্রমত্তা পদ্মার বুকে স্বপ্নের সেতু আজ দৃশ্যমান।
বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। সুতরাং সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সেই দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি শোষণমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।
লেখক : সহকারী পরিচালক (অর্থ ও বাজেট), অবসর সুবিধা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা।
পাঠকের মতামত:
- স্মার্ট ফোনে ভূমিকম্পের অ্যালার্ট চালু করবেন যেভাবে
- বিদ্যার মাহাত্ম্য
- ‘নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে নির্বাচনকে সুষ্ঠু করা সম্ভব নয়’
- ‘বেনজীর দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে’
- সালথায় জন্ম-মৃত্যু টাস্কফোর্স ও ইউনিয়ন আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা
- মহম্মদপুরের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে গণ সংবর্ধনা প্রদান ও আলোচনা সভা
- বরগুনায় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক সহায়তা ও খাদ্য সমাগ্রী বিতরণ
- টুঙ্গিপাড়ায় স্কুলের ২০০ শিশুকে খাওয়ানো হলো দুধ
- বাসায় বানান পটেটো ক্র্যাকার
- ‘বেনজীরকে দেশ ত্যাগে সুযোগ দিয়েছেন সরকার’
- ঈদুল আজহায় মুক্তি পাচ্ছে না ‘জংলি’
- ‘বেনজীরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ লোক-দেখানো’
- আগামী মৌসুমে রিয়ালকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাতে চান আনচেলত্তি
- যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলে পদত্যাগ করবেন ইসরায়েলি মন্ত্রীরা
- মোদির হ্যাটট্রিক বিজয়ের ইঙ্গিত
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত, আহত শতাধিক
- স্থায়ী দোকানের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি
- আজ থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
- দুদকের মামলা থেকে ইউনূসের অব্যাহতির আবেদন
- ‘তৃণমূলের ক্ষমতায়ন চায় না এক শ্রেণির মানুষ’
- পূর্ব বাংলার সাম্প্রতিক ট্রাজেডি কখনোই পাকিস্তানের ঘরোয়া বিষয় হতে পারে না
- নিরাপদ সড়ক চাই ধামরাই শাখার কমিটি গঠন, শপথ গ্রহণ ও আলোচনা সভা
- কাপ্তাইয়ে মারমা ও তঞ্চঙ্গ্যা ভাষার বর্ণমালা উদ্বোধন
- সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে আজ থেকে তিন মাস বনজীবী ও পর্যটক প্রবেশ নিষেধ
- ‘যে কোন দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রীকে পাশে পেয়েছে দুর্গত মানুষ’
- কালিগঞ্জে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে এক প্রতিষ্ঠান সিলগালা
- কালিয়াকৈরে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
- ‘বিশ্বের ৯৩টি দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আলুর দাম কম’
- জাতির পিতার সমাধিতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবের শ্রদ্ধা
- জাতির পিতার সমাধিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের শ্রদ্ধা
- নোয়াখালীতে ৭৫ হাজার চারা গাছ পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
- জাতির পিতার সমাধিতে লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রেক্টরের শ্রদ্ধা
- শ্যামনগরর জরাজীর্ণ বেঁড়িবাধ পরিদর্শন করলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সচিব
- এমপি আজীম হত্যার তদন্তে সরকারের কড়া পদক্ষেপ
- কাপ্তাইয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করলেন দীপংকর তালুকদার এমপি
- ওয়ালটন জাতীয় মহিলা দাবার পুরস্কার বিতরণ
- পাংশায় ২৬ জন কার্ডধারী জেলের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণ
- মার্সেল ফ্রিজ কিনে ১০ লাখ টাকা ক্যাশব্যাক পেল বগুড়ার হযরত আলী
- পাংশায় মাদক ব্যবসায়ীসহ ২ আসামি গ্রেফতার
- বালিয়াকান্দিতে ফেন্সিডিলসহ ৩ মাদক কারবারি গ্রেফতার
- ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন
- ভাঙ্গায় প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা, আটক ৩
- শিরোপা জিততে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন রোনালদো (ভিডিও)
- কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে : রেলমন্ত্রী
- চিনি ৭০ ও ১০০ টাকায় সয়াবিন তেল দেবে টিসিবি
- সাতক্ষীরায় জাতীয় ভিটামিন 'এ' প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন
- পাহাড়ি ঢলে ছাতকের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ভোগান্তিতে ৫ গ্রামের মানুষ
- নড়াইলে ওয়ান শুটার গান ও মোটরসাইকেলসহ ৩ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
- খামারিরাই প্রাণিসম্পদ খাতের প্রকৃত সেলিব্রিটি: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- প্রাইম ব্যাংক পিএলসি'র ২৯তম এজিএম অনুষ্ঠিত
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !