ঘরে ঘরে আনন্দের বান ডেকেছে
পীযূষ সিকদার
লিখতে বসে আমার হাত কাঁপছে। হৃদপিন্ডটা কেমন জানি কষ্টে ধরফর করছে। আমি লিখতে পারছি না। কলম কেবলি থামে। লেখা এগোয় না। কী লিখবো তাও জানি না। শুধু একটি নাম জানা আছে ড. আফসার আহমদ। অনেক কিছুইতো জানি তবু লেখা এগোয় না। কষ্টে আমার বুক ধরফর করছে। কাকে নিয়ে লিখতে বসেছি। তাও মনে করতে পারিনে। তিনি আমার কী হন! তাও জানিনা। শুধু মনে পড়ে তিনি আমাদের গ্রীক সাহিত্য পড়াতেন। আকাশের দিকে মুখ তুলে। আকাশ থেকে কথা পাড়তেন। সেই কথা আমরা বিভোরভাবে শুনতাম। তাঁর বলার মধ্যে একরাশ স্নিগ্ধতা ছিলো। এতো সুন্দর করে কথা বলতেন! কথা শোনার চেয়ে তাঁর মুখের দিকে একখন্ড মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে থাকতাম। তাঁর হঠাৎ চলে যাওয়া মেনে নিতে পারি না। এখনো তাঁর চলে যাওয়া মানতে পারিনে। স্যার, চলে গেলেন! আর আসবেন না ফিরে। বলবেন না পীযূষ আমি আছি! তোর একটা কিছু হয়ে যাবে! স্যার, আমারতো কিছুই হলো না। না চাকরি না টাকা। এখন চলে আমার ক্রমাগত মানসিক বাস। এই জেল থেকে স্যঅর ছাড়া পাবো কবে? কবে থেকে আবার নাটক করতে পারবো! স্যার আকাশের তারা হয়ে কী আমাকে দেখতে পান। আপনি চলে যাবার ৪/৫ দিন আগে আপনার সাথে আমার কথা হরো কী অফুরন্ত হাসি। এই কী শেষ হাসি হেসেছিলেন!
আমি এখনো মানতে পারি না। আপনি চলে যাবেন! আপনিই বলেন মানতে কী পারি! আপনার কথা বোঝা যায় না কেবল ফ্যাস ফ্যাসে গলায় উত্তর আসে। সে উত্তর বোঝা না বোঝার মধ্যে হামাগুড়ি খায়। স্যার, আমার দেখা মানুষগুলির মধ্যে আপনি অন্যতম। কত সুন্দর করে ব্যাটা বলতেন। জানি না কী কারণে কী অভিমানে পৃথিবী নামক গ্রহ থেকে প্রস্থান করলেন। আর আমরা যারা এখনো বেঁচে আছি এক বুক ভাঙ্গা কষ্ট নিয়ে ধ্রুবতারার দিকে তাকিয়ে থাকি। যদি আপনার ঠিকানা পেয়ে যাই! কলম শুধু থামে। লেখা এগোয় না। কী লিখতে কী লিখে ফেলছি। কেনই বা লিখছি। কত মানুষই তো পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। কেউ কী মনে রাখে? স্যার, আপনি বিশেষ কী যে আপনাকে মনে রাখতে হবে। হ্যাঁ মনে রাখতেই হবে। আপনি যে আমার দেখা প্রিয় মানুষগুলির অন্যতম। স্যার, মনে আছে আপনাকে কী যমের মতো ভয় পেতাম। কথা বলতাম না। খালি কথা শুনতাম। কী সুন্দর করে আপনি কথা বলতেন। গ্রীক সাহিত্য সংস্কৃত সাহিত্য রবীন্দ্রনাথ এক লহমায় বুঝিয়ে দিতেন।
স্যার, আপনার মৃত্যুতে আমি কাঁদিনি। কাঁদতেও ভুলে গেছিলাম। চোখের জলে আমি সাগর হয়ে ছিলাম। তোমার কথা লিখ লিখতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলি। কী লিখবো। কী লেখা যায়! কলম শুধু থামে। আমার কপালের বলি রেখায় পদ্মা মেঘনা যমুনার উজান চলে। কেবলি উজানে বৈঠা মারি। স্যার আপনার সাথে তেমন কোন স্মৃতি নেই! তবুও স্মৃতির উঠান পেরিয়ে যত কাছে আসি আপনি তত সরে সরে যান। মৃত্রুতে আপনি কী লীন হয়ে আছেন জীবনের সঙ্গে! আপনার লেখায়, সুরে, নাটকে এক মহাকাব্যিক দ্যোতনা এনে দেয় আমাদের বোধে মননে মগজে। কলম থেকে থেকে কালির অক্ষরে কেবলি লাল নীল কালো হয়ে যায়। ভেতরে দহন জ্বলে। আকাশ কী বৃষ্টির আগে কালো হয়। অমন কালো মুখে কাকে খুঁজছিলেন! কবিতায় নাটকে। সুরে সুরে আপনিই হয়ে উঠেছিলেন একটা যুগের স্রষ্টা।
আপনার হাত ধরেই ১৯৮৬ সালে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ খুলেছিলেন। আপনি তো সেই ড. আফসার আহমদ। প্রিয় শিক্ষক আচার্য সেলিম আল দীন আপনার সঙ্গী হয়েছিলেন। আমি ছিলাম আপনাদের সবচেয়ে শেষে বসা ছেলে। বলতে শিখেনি। শুধু শুনেছি। এখন একটু একটু বলতে শিখেছি। লিখতে শিখেছি।
আসলে লিখতে বসেছি নাট্য দিশারী ড. আফসার আহমেদ এর কথা। কী লিখবো ছাই পাশ কিছু বুঝি না। কেবলি ভেতরটা গুমুরিয়া কাঁদে। দেখতে পাচ্ছেন স্যার, এইতো আমি! বন্ধুর দেয়া টেবিলে বসে লিখছি। সেই কবে থেকেই নিঃস্ব হয়ে আছি। আপনি চলে আসার পর। আমার পরানটা ভরে গেছে। আপনিতো মরেননি। এতো মৃত্যু মৃত্যু খেলা। আজ আপনার জন্মদিন। জন্মদিনে জুই বেল ও গন্ধরাজের শুভেচ্ছা। জন্ম ও মৃত্যু বৃত্তের এপীঠ ওপীঠ। আজ আপনার ৬৩তম জন্মদিন। স্যার, প্রতিবছর আচার্য সেলিম আল দীনের জন্ম মৃত্যু দিনে যেতাম। আপনাকে দেখে শোক ভুলতাম। একজন চলে গেছেন সীমানা ছেড়ে দূরে। আরেকজনতো আছে সীমানায়। কত যে সেলফি তুলতাম। স্যার মাথাটা একটু ঘুরিয়ে আকাশের দিকে চোখ তুলতেন।
আমি তো জেগে উঠেছি কুমার নদের পারে। মৃত্যু জীবনের সীমানা টেনে দিলেও। কেউ কেউ সীমানা ডিঙিয়ে জীবন পানেই পড়ে থাকে। তাঁর সৃষ্টি সম্ভারে অথবা জীবন আচারে। কেউ কেউ নিজেই কৃত্য হয়ে উঠে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
নাট্যদিশারি ড. আফসার আহমদ। নমি তোমায়। ঘরে ঘরে যে আজ তোমার জন্মদিনে আনন্দের বান ডেকেছে।
লেখক : শিক্ষক ও নাট্যকার।
পাঠকের মতামত:
- দুই দফা বেড়ে কমল স্বর্ণের দাম
- সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ৪ জনকে দেয়া হবে পাশাপাশি কবর
- খালের পানিতে গোসলে নেমে লাশ হয়ে ফিরলেন আবদুর রহমান
- লংগদু নানিয়ারচর সড়ক নির্মাণে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত
- কাপ্তাইয়ে ইটবোঝাই ট্রাক উল্টে ৩ জন যাত্রী গুরুতর আহত
- কক্সবাজারে পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়
- সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও বাড়ল
- ‘গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে এখনও ষড়যন্ত্র হচ্ছে’
- ‘জোড়াতালি দিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সম্ভব নয়’
- ববি ভিসির অপসারণ আন্দোলনে শিক্ষকরা
- জাল টাকা ও ছাপানোর সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক
- বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ববি কর্মকর্তার মৃত্যু
- সালথায় পুলিশের বিশেষ অভিযান, ঢাল-কাতরাসহ আটক ৪
- কানাইপুরে ইন্টারনেট কর্মীকে কোপানো রাজিবের গ্রেফতারে প্রতিবেশীদের স্বস্তি
- বোয়ালমারীতে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
- গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সাবেক আরএমও’র বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
- ‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে পদত্যাগ করবো’
- ওয়ালটনের এআই, আইওটিসহ অত্যাধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ নতুন মডেলের স্মার্ট ফ্রিজ উন্মোচন
- বাগেরহাটে বাণিজ্য মেলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন বিক্ষোভ
- সাতক্ষীরায় সাতনদী পত্রিকার সম্পাদক হাবিবুর রহমান জেল হাজতে
- চরভদ্রাসনে গণহত্যা দিবস পালিত
- গোপালগঞ্জে গাছের সাথে পিকআপের ধাক্কা, নিহত ৩
- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধ ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি কামনায় যশোরে মানববন্ধন
- রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, কাজের অগ্রগতি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- পাকিস্তানে ফের হামলার আশঙ্কা, মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ
- মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে প্রশিক্ষিত ধাত্রীর দরকার
- ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ১২
- ফরিদপুরে সেনা বাহিনীর হাতে এক ভুয়া মেজর আটক
- টুঙ্গিপাড়া কলেজের ভবন সংস্কার কাজে দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে দুদক
- নাটোরে শিশু জুঁই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জেলা জুড়ে প্রতিবাদের ঝড়
- এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে ১৫ লাখ শিক্ষার্থী
- ‘মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্ত সব দলের সঙ্গে বসে নেওয়া উচিত ছিল’
- ‘মুজিব’ সিনেমায় তিশার অভিনয় নিয়ে যা বললেন ফারুকী
- ব্রি হাইব্রিড ধানে খাদ্য নিরাপত্তার হাতছানি
- মা পদক পাচ্ছেন ডলি জহুর
- দিনাজপুরে সাবেক এমপির বাড়ি থেকে ইয়াবাসহ ১০ জন আটক
- বাড়িয়াহাটে ৬ মিষ্টি বিক্রেতার কাছ থেকে দের লাখ টাকা খাজনা আদায়
- তারা মিয়া ফকির হত্যার ঘটনায় তিনজন গ্রেফতার
- ‘বাংলাদেশ এখন আইএমএফের ওপর নির্ভরশীল নয়’
- ‘সবাই সচেতন হলেই শিশুদের জন্ম সুরক্ষিত হবে’
- রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার
- চালের মোকামে ভরপুর জোগান, তবু বেড়েছে দাম
- ‘লুট করা টাকায় নাশকতার পরিকল্পনা করছে আ.লীগ’
- গাছপালাঘেরা পরিবেশে জন্ম নেওয়া শিশু স্বাস্থ্যবান হয়
- একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম ভরিতে বাড়লো ৫৩৪২ টাকা