হাঁপানি রোগ নিয়ে আতঙ্ক নয় প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতা
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
বিশ্ব হাঁপানি দিবস ২০২৫। প্রতিবছর মে মাসের প্রথম মঙ্গলবার পালিত হয় দিনটি। অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা ও রোগ সম্পর্ক সচেতনতা বৃদ্ধি করাই হলো দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য।
গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ফর অ্যাজমা (জিআইএনএ) রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ১৯৯৮ সালে প্রথম বিশ্ব হাঁপানি দিবস পালন করে। দিনটি পালনের জন্য মে মাসকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ এই সময়ে হাঁপানির লক্ষণ বেড়ে যায়। গরমে এই সমস্যা অনেক প্রবল হয়। সমস্যা প্রবল আকার নিলে শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। নিশ্বাসে কষ্ট, কাশি, বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ দেখা দেয় হাঁপানি হলে।
জিআইএনএ হাঁপানির প্রকোপ কমাতে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কাজ করে। রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির জন্য পালিত হয় দিবসটি। প্রথম বিশ্ব হাঁপানি দিবস স্পেনে পালিত হয়েছিল। এ সময় ৩৫টি দেশ অংশ নেয়। সেই থেকে প্রতি বছর মে মাসের প্রথম মঙ্গলবার পালিত হয় বিশ্ব হাঁপানি দিবস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বে ২৬ কোটির বেশি মানুষ অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকদের মতে, একটা সময় জন্মগত অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল। এখন পরিবেশদূষণ, বায়ুদূষণ ও রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারের কারণে অ্যাজমা রোগী বাড়ছে। বা অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে আছেন ঘরে। কারণ হাঁপানি রোগীকে ইনহেলার ব্যবহার করতে হয়। জেনে নেওয়া যাক ইনহেলার ব্যবহার না করে কি ভাবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় হাঁপানী থেকে মুক্ত থাকা যায়,শ্বাসকষ্ট খুবই যন্ত্রণাদায়ক পুরনো রোগ। আমাদের দেশে অসংখ্য মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। ইনহেলার নিলে শ্বাসকষ্ট কমবে, এই কথা প্রচলন আছে। শ্বাসকষ্ট না কমলে রোগীর জীবনের প্রতি হুমকি দেখা দেবে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে, যদি চিকিৎসা যথাসময়ে শুরু করা না হয়। অনেকের ধারণা, হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগ নিরাময়ে নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। এমন ধারণা মোটেও ঠিক নয়। কারণ বাংলাদেশে এ রোগ নিরাময়ে অত্যাধুনিক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে; যদিও এ রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় এ্যালোপ্যাথিতে সম্ভব নয়, তবে যথোপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায় হোমিওপ্যাথিতে হাঁপানি রোগীদের সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থার আওতায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়।
আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় অ্যাজমা রোগীদের মুখে খাবার ওষুধের চেয়ে ইনহেলার বেশি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। কারণ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, কম পরিমাণ ওষুধ লাগে আর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটা সঠিক নিয়মে চিকিৎসা গ্রহন করলে খুব দ্রুত শ্বাসকষ্টের পরিমাণ কমে যায়। ইনহেলার অ্যাজমা রোগীর জন্য এক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা রোগী শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে টেনে নেয় এবং ওষুধ শ্বাসনালিতে পৌঁছায়। অনেকেই মনে করেন, ইনহেলার হাঁপানির সর্বশেষ চিকিৎসা। হাঁপানী এমন একটি দুরারোগ্য ব্যাধি যাতে একবার আক্রান্ত হলে দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে রোগীকে সারা জীবন কাটাতে হয়, হাঁপানী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কখনো সামাজিক বা পারিবারিক আনন্দ উল্লাসে যোগদান করতে পারে না, পারে না কোন পরিশ্রমের কাজে অংশ নিতে, তাকে অনেক সময় গৃহবন্দী অবস্থা দিন কাটাতে হয়। অধিকাংশ রোগীর ক্ষেএেই ঠান্ডা আবহাওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। বর্ষার ঠান্ডায়, শীতের ঠান্ডায় রোগ বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ব্রংকিয়াল হাঁপানী শীতকালে বাড়ে। শীতের ঠান্ডা রোগীর অসহ্য। শীতকালে নাকে একটুখানি ঠান্ডা বাতাস বা কুয়াশা প্রবেশ করলেই প্রথমে হাঁচি নাকঝরা ও পরে শ্বাসকষ্ট দেয়া দেয়।বর্ষা কালে দু এক ফোটা বৃষ্টির পানি গায়ে পড়লে, খোলা জানালার পাশে রাতে ঘুমালে, ভেজা বাতাসে ভ্রমণ করলে রোগ ল ক্ষণ বৃদ্ধি পায়
এ্যাজমার ২ প্রকার
১. একিউট এ্যাজমা: তীব্রতা অনুসারে এ্যাজমা- তীব্র হাঁপানি এতে ফুসফুসের বায়ুবাহী নালীসমূহ আকস্মিকভাবে সংকুচিত হয় ও শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্টের সৃষ্টি করে।
২. ক্রনিক এ্যাজমা: দীর্ঘমেয়াদী হাঁপানি এতে ঘন ঘন এ্যাজমায় আক্রান্ত হয় এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে ও প্রতিরোধে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
কারণ
এলার্জিক এ্যাজমা সাধারণত কোন এলার্জেন বা এন্টিজেন নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকলে আমাদের ইমিউন সিস্টেম-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। যেমন- ফুলের রেণু, বিভিন্ন প্রাণীর লোম, মাইট ও ধুলাবালি ইত্যাদি। ফলশ্রুতিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয় ও হাপানী দেখা দেয়। একে এটোপিক এ্যাজমা বা এলার্জিক এ্যাজমাও বলা হয়।
* নন এলার্জিক এ্যাজমা এ ধরনের এ্যাজমা এলার্জি ঘটিত নয় বরং ধূমপান, রাসায়নিক দ্রব্য, জীবাণুর সংক্রমণ, মানসিক চাপ, অট্টহাসি, অধিক ব্যায়াম, এস্পিরিন জাতীয় ঔষধ সেবন, খাদ্য সংরক্ষণকারী উপাদান, পারফিউম, অত্যাধিক ঠান্ডা, গরম, আর্দ্র ও শুষ্ক বাতাসের কারণে দেখা দেয়।
বিভিন্ন প্রকারের এ্যাজমা
১. মিশ্র এ্যাজমা: এক্ষেত্রে রোগী পূর্বোক্ত এলার্জিক এলার্জিক ও নন-এলার্জিক দু'ধরনের এ্যাজমাতেই ভোগেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রকোপ বেড়ে যায়।
২. রাত্রিকালীন এ্যাজমা: এ ধরনের হাঁপানি রাতের বেলা, বিশেষতঃ রাত ২ টা থেকে ৪ টার মধ্যে আক্রমণ করে। রোগীর শারীরিক দুর্বলতার জন্য রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে। এমনকি দিনের বেলায় স্বল্পকালীন নিদ্রা যায়। রাত্রিকালীন এ্যাজমা গুরুত্বের সহিত নেয়া উচিত কারণ এ ক্ষেত্রে রেসপিরেটরী এরেস্ট হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
৩. ব্রঙ্কিয়াল এ্যাজমা: এটি মূলত: এক ধরনের এলার্জিক রিএ্যাকশন যাতে শ্বাসকষ্ট ও বুকে সাঁই সাঁই শব্দ হয়। শ্বাসনালীর চারপাশের পেশী ও মিউকাস মেমব্রেনসমূহের সংকোচন দেখা দেয়। শ্বাসনালীর সংক্রমণ, বায়ুবাহিত এলার্জেন, খাদ্যের এলার্জেন ও অত্যধিক মানসিক চাপ এর প্রধান কারণ।
৪. কার্ডিয়াক এ্যাজমাঃ-হৃদপিন্ড যখন তার স্বাভাবিক রক্ত সংবহন হারিয়ে ফেলে তখন পালমোনারি ইডিমা বা ফুসফুসে পানি জমে বায়ুনালীকে সংকুচিত করে ফেলে এবং হাঁপানি সৃষ্টি হয়। এটি অত্যন্ত মারাত্মক। ঘুমানোর কয়েক ঘণ্টা পর এটি আক্রমণ করে কারণ শুয়ে থাকলেই ফুসফুসে পানি জমে। শ্বাসকষ্টে রোগীর ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং কিছুক্ষণ বসে থাকার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।
৫. ব্যায়ামজনিত এ্যাজমা: এ ধরনের এ্যাজমা ব্যায়ামকালীন সময়ে অথবা ব্যায়ামের কিছুক্ষণ পর থেকে শুরু হয়। বিশেষতঃ শীতকালে এ ধরণের সমস্যা বেশি হয়।
৬. পেশাগত এ্যাজমা: অকুপেশনাল বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এ্যাজমা সাধারণত: চাকরি নেবার কয়েক মাস থেকে শুরু করে কয়েক বছরের মধ্যে দেখা দেয়। সাধারণত কর্মস্থল ত্যাগ করার সাথে সাথে বা ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে লক্ষণসমূহ কমে যায়। ‘স' মিলের গুড়া, রাসায়নিক ধোঁয়া, সর্বদা ধুলাবালিযুক্ত পরিবেশ, সিমেন্ট কারখানা, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী, আটা ও মসলার মিল, রাইস মিল, জুট মিল, স্পিনিং মিল, রংয়ের কারখানা, রাসায়নিক সার কারখানা, ফটোকপি মেশিন, ড্রাইভিং, পোল্ট্রি ফার্ম, বেডিং স্টোর ইত্যাদিতে কর্মরত শ্রমিকরা এ ধরনের হাপানিতে বেশি আক্রান্ত হন।
৭. মওসুমি এ্যাজমা: মওসুমি এ্যাজমা সাধারণত: বিশেষ ঋতুতে দেখা দেয়। যেমন- কারো কারো গরমে এ্যাজমা বাড়ে, কারো ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফুল বাগানে এ্যাজমা বাড়ে। গাছ, ঘাস, ফুলের রেণু ইত্যাদিতেও এ্যাজমা বাড়ে।
৮. নীরব এ্যাজমা: এ ধরনের হাঁপানির আক্রমণ অত্যন্ত ভয়াবহ ও জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। কোনরূপ পূর্ব লক্ষণ ছাড়াই বা বুকে হালকা শব্দ করেই আক্রমণ করে।
৯. কফ ভেরিয়েন্ট এ্যাজমাঃ-এ ধরনের এ্যাজমা দীর্ঘমেয়াদী ও বিরক্তিকর কাশিযুক্ত হয়ে থাকে।
এ্যাজমা রোগীর প্রাথমিক লক্ষণ
১. বুকে সাঁই সাঁই বা বাঁশির মত শব্দ হওয়া।
২. শ্বাস কষ্ট হওয়া।
৩. বুকে চাপ অনুভব করা।
৪. দীর্ঘ মেয়াদী কাশিতে ভুগতে থাকা।
৫. ব্যায়াম করলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া।
সাধারণ লক্ষণসমূহ
১. শীতকালে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া। ২. ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া। ৩. কাশির সাথে কফ নির্গত হওয়া। ৪. গলায় খুসখুস করা ও শুষ্কতা অনুভব করা। ৫. রাতে কাশি বেড়ে যাওয়ানাড়ীর গতি দ্রুত হওয়া। ৬. কথা বলতে সমস্যা হওয়া। ৭. সর্বদা দুর্বলতা অনুভব করা। ৮. দেহ নীল বর্ণ ধারণ করা।
এ্যাজমা রোগীকে কিছু পরামর্শ মেনে চলতে হবে
১. বিছানা ও বালিশ প্লাস্টিকের সিট দিয়ে ঢেকে নিতে হবে বা বালিশে বিশেষ ধরনের কভার লাগিয়ে নিতে হবে।
২. ধুলো ঝাড়াঝাড়ি করা চলবে না।
৩. ধোঁয়াযুক্ত বা খুব কড়া গন্ধওয়ালা পরিবেশে থাকা চলবে না।
৪. আলো-হাওয়া যুক্ত, দূষণমুক্ত খোলামেলা পরিবেশ থাকা দরকার।
৫. কারণ স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় ফাঙ্গাল স্পোর অনেক সময় হাঁপানির কারণ হয়।
৬. হাঁপানি রোগীর আশেপাশে ধূমপান বর্জনীয় ও মশার কয়েল জ্বালানো যাবে না।
৭. অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্যও হাঁপানি রোগীরা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
৮. তাই নিজের শরীরের অবস্থা বুঝে পরিশ্রমের ঝুঁকি নেয়া উচিত।
৯. হালকা খাওয়া-দাওয়া করা উচিত যাতে হজমের কোনও অসুবিধে না হয়।
১০. কারণ, বদহজম এবং অম্বল থেকেও হাঁপানি হতে পারে। যে খাবারে এ্যালার্জি আছে তা বর্জন করে চলতে হবে। প্রয়োজনে স্থান ও পেশা পরিবর্তন করতে হবে। শুধু নিয়ম মেনে চললেই এই ধরনের রোগীর শতকরা পঞ্চাশ ভাগ ভাল থাকেন।হাঁপানি রোগীর খাদ্য ও পথ্য
এ্যাজমা রোগীর খাবার
১. কুসুম গরম খাবার। ২. মওসুমি ফলমূল। ৩. ছাগলের দুধ (তেজপাতা, পুদিনা ও কালোজিরা সহ)। ৪. আয়োডিন যুক্ত লবণ ও সৈন্ধব লবণ। ৫. মধু, স্যুপ, জুস। ৬. কালোজিরার তেল ৭. আদা পুদিনার চা।
হাপানী রোগীর জন্য যেই সব খাবার নিষিদ্ধ
১. ডিম: ডিমে অ্যালার্জি হাঁপানি রোগীদের জন্য খুব সাধারণ ব্যাপার। ডিমের সাদা অংশে প্রোটিন থাকে। এই প্রোটিনই অ্যালার্জির উদ্রেগ করে হাঁপানির সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
২. দুধ: দুধে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম যা হাড় ও দাঁতকে শক্তিশালী করে তোলে। তবে এতে থাকা প্রোটিন হাঁপানির সমস্যাকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।
৩. বাদাম: বাদাম খেলেও হাঁপানির সমস্যা অনেকটাই বেড়ে যায় বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই বাদাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৪. গম: গমে থাকা গ্লুটেন নামক প্রোটিন হাঁপানিকে বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে ঠিকভাবে শ্বাস নিতেও সমস্যা হয়।
৫. চিংড়ি মাছ: চিংড়ি মাছে সালফাইটের পরিমাণ বেশি বলে এটি অনেকেরই অ্যালার্জির কারণ হয়।শ্বাসকষ্টের রোগীদের এমনিতেই মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্ট হয়। করোনা মহামারির এই সময় এ সমস্যার সঙ্গে যোগ হয়েছে উদ্বেগ। কারণ, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝা কঠিন যে কী কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হলো, করোনার সংক্রমণ, নাকি শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগ।ফ্রিজের কোমল পানীয়, আইসক্রীম, ফ্রিজে রাখা খাবা।
৬. ইসুবগুল ও গ্রেবী জাতীয় খাবার। ৭. কচুর লতি, তিতা জাতীয় খাবারপালং শাক ও পুই শাক, মাসকলাই, মাটির নীচের সবজি। ৬. অধিক আয়রনযুক্ত টিউবঅয়েলের পানি।
এ্যাজমা রোগী যেই সব জামা কাপড় পরিধানও ব্যবহার করবে
১. কটন জাতীয় নরম ঢিলে-ঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে। ২. সিল্ক, সিনথেটিক, পশমি কাপড় পরিধান না করাই উত্তম। ৩. পাতলা বালিশ ও নরম বিছানায় শোয়া উচিত। ৪. বাসস্থান শুষ্ক ও পর্যাপ্ত সূর্যের আলো-বাতাস সম্পন্ন হওয়া উচিত।
এ্যাজমা কারণ-তত্ত্ব
অত্যন্ত শুষ্ক, উত্তপ্ত বা কলুষিত এবং জলীয় বাষ্পপূর্ণ আবহাওয়া ইহার কারণ মধ্যে গণ্য। বংশগত অর্থাৎ পূর্বপুরুষগণের এ ই ব্যাধি, এই রোগৎপত্তির একটি প্রধান কারণ। ধুলা, অশ্বগবাদির দেহের গন্ধ বা পুস্পের রেনুযুক্ত বায়ু অথবা খাদ্য বিশেষের সংক্ষুব্ধতাবশতঃ তদ্বারা এই রোগের উদ্ভব হইতে পারে। নাসিকামধ্যস্থ ঝিল্লির প্রদাহ, নাসিকামধ্যস্থ অর্বুদ টনসিলের বিবৃদ্ধি, এডিনয়েড, রোগের আক্রমণ প্রবণতা বৃদ্ধি করে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
* স্পাইরোমেট্রি বা পিক ফ্লো মেট্রি পরীক্ষা: রোগীর শ্বাসনালিতে শ্বাস গ্রহণে বাধা আছে কি না, তা নির্ণয়ের জন্য এটি করা হয় * মেথাকলিন চ্যালেঞ্জ পরীক্ষা: এর মাধ্যমে শ্বাসনালির অতি সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা হয়। * রক্ত পরীক্ষা: রক্ত ও কফে ইয়োসিনোফিল সিরাম আইজিইয়ের মাত্রা বেশি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। * স্কিন প্রিক টেস্ট: অ্যালার্জেন বা ট্রিগার পরীক্ষার জন্য এ টেস্ট করা হয়।
হোমিও সমাধান
হোমিওপ্যাথি মতে তিনটি রোগ-বীজ হল সব রকম অসুস্থতার কারণ। সোরা, সাইকোসি, সিফিলিস, সোরা -সাইকোসিস বা সোরা -সাইকোসিস-সিফিলিস মিশ্রভাবে এ্যাজমা রোগের জন্য দায়ী। বর্তমান যুগের এই মিশ্র রোগ -বীজকে অনেকে টিউবারকুলার মায়াজম নামে নামকরণ করে থাকে, এই জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক কে ডা. হানেমানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে সঠিক রোগীলিপি করণের মাধ্যমে যদি চিকিৎসা করা যায় তাহলে এ্যাজমা সহ যে কোন জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য ভিওিক লক্ষণ সমষ্টি নির্ভর ও ধাতুগত ভাবে চিকিৎসা দিলে আল্লাহর রহমতে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। চিকিৎসা বিজ্ঞানে চিরন্তন সত্য বলে কিছুই নেই। কেননা একসময় আমরা শুনতাম যক্ষা হলে রক্ষা নেই, বর্তমানে শুনতে পাই যক্ষা ভাল হয়। এ সবকিছু বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও উন্নয়নের ফসল। এজমা চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। সামগ্রিক উপসর্গের ভিত্তিতে ওষুধ নির্বাচনের মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয়। এটিই একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে রোগীর কষ্টের সমস্ত চিহ্ন এবং উপসর্গগুলি দূর করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের অবস্থা পুনরুদ্ধার করা যায়। আবার ইদানিং অনেক নামদারি হোমিও চিকিৎসক বের হইছে,তাঁরা এজমা রোগীকে কে পেটেন্ট টনিক, মিশ্র প্যাথি দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে তাদের কে ডা.হানেমান শংকর জাতের হোমিওপ্যাথ বলে থাকেন।
পরিশেষে বলতে চাই, শহরে দূষিত বায়ুর কারণে হাঁপানি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যাঁদের ধুলোর কারণে শ্বাসকষ্ট অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়, তাঁদের কতগুলো বিষয়ের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। এমন পরিবেশে চলা যাবে না, যেখানে ধুলোর পরিমাণ বেশি। ঘর পরিষ্কার এবং বিছানাপত্র ঝাড়ু দেওয়ার সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আর যেসব পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও খাদ্যদ্রব্য অ্যাজমা বা হাঁপানি সৃষ্টি করতে পারে, তা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।তাই রোগীদের কে মনে রাখতে হবে, হাঁপানী কোন সাধারণ রোগ না, কাজেই এ সময় শ্বাসকষ্টের রোগীদের কিছু বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
লেখক: চিকিৎসক, কলাম লেখক ও গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান,জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।
পাঠকের মতামত:
- পাংশায় সাংবাদিক মাসুদ রানা বাদশার মৃত্যু
- রাজবাড়ীতে হেরোইনসহ নারী মাদক কারবারি আটক
- সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের পর কাশ্মীরে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প শুরু ভারতের
- রাজবাড়ীতে বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের কর্মবিরতি
- পাপনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- ‘ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থও দেখতে হবে’
- রোহিঙ্গা ও বিদেশিদের এনআইডি ডাটাবেজে ঢুকতে দেবে না ইসি
- এপ্রিলে রফতানি আয় সর্বনিম্ন, পোশাক খাতেও ধাক্কা
- বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার পূর্ণাঙ্গ সিরিজের সূচি প্রকাশ
- ইতালি যেতে আগ্রহীদের সুখবর দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ‘চিকিৎসা ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া সমস্যা নিরসন সম্ভব না’
- পৃথক সচিবালয়ের দাবিতে জামালপুরে আদালত কর্মচারীদের কলম বিরতি
- লুমিনাস গ্রুপের উদ্যোগে চাটমোহরে আদর্শ কৃষক সংবর্ধনা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত
- তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাগেরহাটে যুবদলের প্রস্তুতি সভা
- সেলিমাবাদ কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
- সুন্দরবনে মহাবিপন্ন বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৬৫ বাচ্চার জন্ম
- কাপ্তাইয়ে চার দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলার উদ্বোধন
- বোয়ালমারীতে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্রমিকের আত্মহত্যা
- ‘আদালত আমাদের সেকেন্ড হোম হয়ে গেছে’
- বোয়ালমারীতে ফেনসিডিল-ইয়াবাসহ ‘বিন্দু মাসি’ গ্রেপ্তার
- ববিতে ভিসির অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
- নড়াইলে বিদ্যালয়ের দোকান ভাড়ার টাকা আত্মসাত করলেন প্রধান শিক্ষক, এলাকায় তোলপাড়
- যশোরে বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের কর্মবিরতি
- ঈশ্বরগঞ্জে ১৫ কেজি গাঁজাসহ আটক ২
- ইইউ রাষ্ট্রদূত: সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যথেষ্ট সময় দিতে হবে
- সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন কানাডার বাণিজ্য প্রতিনিধি
- পিএসজির অপরাজিত থাকার গর্ব কেড়ে নিলো নিসে
- ১৯ বছরের আকালু ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতে দিতে পাকিস্তানী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ দিল
- হোটেল বয় থেকে কোটি টাকার মালিক সাইজদ্দিন মাতাবর
- সাতক্ষীরায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহি বাস ধান ক্ষেতে, পথচারী নারীর মৃত্যু
- ধামরাইয়ে চরক পূজার মধ্য দিয়ে শেষ হলো চৈত্র সংক্রান্তি
- বিশ্ববাজারে সোনার দাম ৩৩০০ ডলার ছাড়াল
- কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত, আহত ১
- ‘সৌরবিদ্যুতে ব্যাপক বিনিয়োগ পরিকল্পনা করছি’
- ৩য় প্রান্তিক শেষে ওয়ালটনের মুনাফা ৬৯৬.৪৪ কোটি টাকা
- বিদেশের ৪০ শহরে মুক্তি পাচ্ছে ‘জংলি’
- সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ
- বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম
- কর্ণফুলীতে ক্রীড়া সংগঠকের বিরুদ্ধে বিতর্কিত অভিযোগ, অনুসন্ধানে অসঙ্গতি
- ইউক্রেনকে ৪৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাজ্য
- উদ্ভাবন ও সৃষ্টিশীলতার বৈশ্বিক স্বীকৃতি
- কাশ্মীরে হামলায় শোক আর ক্ষোভে উত্তাল বলিউড
- ‘সকার লিগের দলগুলো আরও শক্তিশালী হয়েছে’
- চালের দাম কিছুটা বাড়বে: খাদ্য উপদেষ্টা
- ‘আর্জেন্টিনার সঙ্গে তো মেক্সিকোর তুলনাই চলে না’