ভূমিকম্প ঝাঁকুনিতে কাঁপে না নীতিনির্ধারকরা
মীর আব্দুল আলীম
গভীর রাতে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, তা যেন আরেকবার আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল—আমরা কতটা ঝুঁকির মধ্যে বাস করছি। রিখটার স্কেলে মাত্র ৫.২ মাত্রার হলেও এই কম্পন আমাদের নগরের অস্থিতিশীল ভিত্তি ও ভবিষ্যৎ বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরেই বলে আসছেন, বাংলাদেশ বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ। এসব অঞ্চল ঢাকার ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে, যেখানে যদি ৭ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তবে ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
ঢাকার যে ভয়াবহতা অপেক্ষা করছে, তা আমরা নিজেরাই বাড়িয়ে তুলছি। ইমারত নির্মাণ নীতিমালা না মেনে, জলাভূমি ভরাট করে বালু ও মাটি দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন। এই শহরের ভূতাত্ত্বিক কাঠামো ও ভবনগুলোর গঠন এক বড় ভূমিকম্পে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনতে পারে। এখনই সময়, হাত-পা গুটিয়ে বসে না থেকে সচেতন ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। সরকারের যেমন দায়িত্ব রয়েছে শক্তিশালী তদারকি এবং নীতিমালা বাস্তবায়নের, তেমনি নাগরিকদেরও রয়েছে সচেতন থাকার দায়। ভূমিকম্প ঠেকানো না গেলেও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর প্রস্তুতি নেওয়া এখনই জরুরি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভূতত্ত্ববিদেরা বলছেন, ১৫০ বছর অন্তর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই অঞ্চলে একবার বড় ভূমিকম্প হয়। শেষটি হয়েছিল ১৯৩০ সালে। তাহলে কি আগামীটি কড়া নাড়ছে? আমরা জানি, ঢাকার নিচে ডাউকি ফল্ট, সীতাকুন্ড ফল্ট আর টেকনাফ ফল্ট-তিনটি ভয়ংকর টেকটোনিক রেখা কিলবিল করছে। ভূপৃষ্ঠের নিচে জমছে শক্তি। কে জানে, কোন মুহূর্তে সেই শক্তির বিস্ফোরণ হবে? এম ভুমিকম্পে পুরনো ঢাকার পুরনো ভবনগুলো কি টিকবে? ঢাকা শহরের ভগ্নপ্রায় ভবনগুলো যেন চুপ করে বসে থাকা আত্মহত্যার ফাঁদ। প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধ্বংসের ঝুঁকিতে। দুই লাখ মানুষের জীবনের ওপর ঝুলছে এক অদৃশ্য তলোয়ার। রমনা, পুরান ঢাকা, মগবাজার, মিরপুর-এই এলাকাগুলোর অধিকাংশ বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে কোনও ভূমিকম্প সহনীয় নীতিমালা না মেনেই। বাংলাদেশে এখনো “নির্মাণ কোড” মানা হয় একটি বিলাসিতা হিসেবে। ইমারতের গায়ে পলিশ আছে, কিন্তু ভিতরে কংক্রিট ফাঁকা। ভবনের ডিজাইন হয়েছে ঠিকাদারের লাভ দেখে, মানুষের জীবন নয়।
বহুদিন ধরেই আমা যেনে আসছি-ভূমিকম্পের কারণ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ তিনটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ইন্ডিয়ান প্লেট, ইউরেশিয়ান প্লেট এবং বার্মা মাইক্রোপ্লেট। এই প্লেটগুলোর মধ্যে ক্রমাগত সংঘর্ষ ও গতি ভূমিকম্পের প্রধান কারণ। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতীয় প্লেট প্রতিবছর ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে ৫ সেন্টিমিটার অগ্রসর হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ায়।বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পগুলো তুলনামূলকভাবে ছোট মাত্রার হলেও এগুলো বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে ৮.০ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষত সিলেট এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে। এটি দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
৭.৮ মাত্রার মাত্র এক মিনিটের ভূমিকম্পেই লন্ডভন্ড তুরস্কেও পরিকল্পিত গাজিয়ানতেপ শহর। বাংলাদেশে রিখটার স্কেলে যদি সাত মাত্রার ভূমিকম্প হয়, সেই ধাক্কা বাংলদেশ সামলাতে পারবে কি? ভূমিকম্প বিশ্লেষকরাতো বলছেন- কেবল ঢাকায় ধ্বসে পড়বে কয়েক হাজার ভবন, মৃত্যু হবে অন্তত দুই থেকে তিন লাখ মানুষের। গত ১৫ বছরে ছোট-বড় ভূমিকম্পে ১৪১ বার কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ। ১০০ বছরের মধ্যে এদেশে বড় ধরনের কোন ভূমিকম্প হয়নি। ভুমিকম্পবিদরা বলেন- বড় ভূমিকম্পের শত বছরের মধ্যে আরেকটি বড় ভূমিকম্প হয়। বড় ভুমিকম্পের ইতিহাস বলে শত বছর ঘনিয়ে এসেছে বাংলাদেশের।সে দিক থেকেও আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের আশংকা’র কথাও শুনছি আমরা। আমাদের পত্রিকাগুলো এমন সংবাদই ছাপছে। তাতে করে ভূমিকম্প নিয়ে দেশে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে অনেক। যদি হয় ৯ মাত্রারর ভুমিকম্প বাংলাদেশের কি হবে ভাবা কি যায়? যে দেশটার ইট বালি রড সিম্টে সব কিছুতেই দুইনাম্বারী সেখানে অপরিকল্পিত বিল্ডিংগুলোর কি হবে? কি হবে জনগনের? এতো কিছুর পরেও বাংলাদেশ মোটেও প্রস্তুত নয়। ভুমিকম্প পরবর্তি উদ্ধার কাজের তেমন প্রস্তুতি নেই বাংলাদেশের। এ বিষয়ে বাজেটেও থাকে দুর্বল বরাদ্ধ। এ অবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় দেখছি না।দেশের ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে ঢাকা ও তার আশেপাশের এলাকা।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন এরকম হলে ঢাকা শহরটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের ১৪ কোটি মানুষ। কোনো কোনো পত্রিকায় বলা হয়েছে এ জাতীয় ভূমিকম্পে ৬ থেকে ২০ ফুট উপরে উঠে যাবে মাটি। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-তুরস্কে যে ভূমিকম্প হয়েছে, এর চেয়ে ছোট, অর্থাৎ, রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও শুধু ভবন ধস নয়, ঢাকার অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও গ্যাসলাইন এ নগরকে একটি অগ্নিকূপে পরিণত করতে পারে। কয়েক হাজার ভবন ধ্বসে পড়বে। মৃত্যু হতে পারে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের। কারণ, আমাদের ভবনগুলো এখনও নিরাপদভাবে তৈরি হচ্ছে না।বুয়েটের বিভিন্ন সময়ে করা জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় ১৩ লাখ, চট্টগ্রামে ৩ লাখ ও সিলেটে ১ লাখ বহুতল ভবন রয়েছে। এসব ভবনের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে ছয়তলা বা তার চেয়েও উঁচু। ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে এই ভবনগুলো ও এর বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সরকারের সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির সমীক্ষাতেই বলা হয়েছে, ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে রাজধানীতে প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা তাদের গবেষণা থেকে বলেছেন এখনই ভূমিকম্প হবে তা বলা যাবে না তা পাঁচশ’ বছর পরেও হতে পারে। দেশে কোথায় কবে কত মাত্রার ভূমিকম্প হবে কেউ আগে-ভাগে তা বলতে পারে না। সবই ধারণাপ্রসূ। হতেও পারে নাও হতে পারে। ভূমিকম্প কখন হবে, কবে হবে এবং ভূমিকম্প যেহেতু প্রতিরোধ করা যাবে না তাই এ নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশের মানুষকে অসুস্থ করে দেয়ার কোনো মানে হয় না। ভূমিকম্পের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে উদ্ধারে প্রস্তুতি থাকতে হবে। জনমনে আতঙ্ক তৈরি না করে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। জাপানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। জাপান ভয়কে জয় করেছে। তাই তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম।
আমাদের সরকার আমাদের জনগণ ভূমিকম্পের ব্যাপারে সচেতন নয়। ঢাকা শহরে যতগুলো স্থাপনা থাকা দরকার তার চেয়ে ৫০ গুণ স্থাপনা তৈরি হলেও সরকারে এ ব্যাপারে মাথাব্যথা নেই। এখনও এ শহরে স্থাপনা নির্মাণের হরেদরে অনুমতি দেয়া হচ্ছে। শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, বাণিজ্যিক কার্যালয়, সচিবালয়সহ অন্যান্য অফিস শহরের বাইরে করার পরিকল্পনা সেই বহু আগে নেয়া হয়েছে কিন্তু তার বাস্তবায়নের কোনোই লক্ষণ নেই। উল্লেখিত অফিস-আদালতগুলো শহরের বাইরে হলে ঢাকার চাপ অর্ধেক কমে যাবে। মানুষ আর ঢাকামুখী হবে না। ঢাকা শহরে লোকজনের বসবাস কমে যাবে। তাতে ঢাকার চাপ কমবে। তখন ভূমিকম্প হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিচে নেমে আসবে।
সরকারের তরফ হতে যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণের কথা বলা হলেও ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয় সামাল দেয়ার ন্যূনতম প্রস্তুতিও যে আমাদের নেই তা স্পষ্ট। ব্যাপক অভাব রয়েছে জনসচেতনতারও। ভূমিকম্পের ব্যাপারে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার কোনোটাই সরকারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে না। ইতোমধ্যে অনেক মূল্যবান সময় অপচয় হয়েছে। আর বিলম্ব করা সমীচীন হবে না। ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের প্রকৃত সময় এখনই।
বিশ্বব্যাপী সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনাগুলো, যেমন নেপালের ভূমিকম্প এবং তুরস্ক-সিরিয়ার সাম্প্রতিক বিপর্যয়, আমাদের সতর্কতার বার্তা দেয়। এই বিপর্যয়গুলো দেখায় যে, ভূমিকম্প না শুধু অবকাঠামোগত ধ্বংস ডেকে আনে, বরং মানবিক সংকটও তৈরি করে।ভূমিকম্পের সম্ভাব্য প্রভাব হিসেবে বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং দুর্বল ভবনের কারণে, ভূমিকম্প হলে প্রাণহানির সংখ্যা ব্যাপক হতে পারে। ঢাকাসহ প্রধান শহরের অবকাঠামো ধসে পড়লে শিল্পক্ষেত্রে বিশাল ক্ষতি হবে। ভূমিধস, নদীর গতিপথ পরিবর্তন এবং মাটির উর্বরতা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা ব্যাপক আকার দেখা দিবে। পানি, বিদ্যুৎ এবং স্বাস্থ্যসেবার অভাবে ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে মহামারি দেখা দিতে পারে। ভূমিকম্প একটি বিপর্যয়কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা মানুষের জীবন, সম্পদ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ভূমিকম্পের কারণে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সরাসরি এর তীব্রতা, ভূমিকেন্দ্রের গভীরতা এবং প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে। একটি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো যত দুর্বল, ভূমিকম্পের প্রভাব তত বেশি মারাত্মক।
বড় ভূমিকম্প হলে আমরা কতটা প্রস্তুতি?
বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তবে ভূমিকম্পের জন্য আমরা এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নই। ভবনের স্থাপত্য দুর্বলতা: অধিকাংশ ভবন ভূমিকম্প প্রতিরোধী নয়। নগর পরিকল্পনার ব্যাপক অভাব রয়েছে। ঢাকার মতো শহরে ভবন ও রাস্তার ঘনত্ব উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। প্রযুক্তির অভাব রয়েছে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস ও তথ্য বিশ্লেষণে উন্নত প্রযুক্তি নেই। জরুরি সেবার ঘাটতি ব্যাপক। উদ্ধারকাজ এবং চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী ও সরঞ্জাম নেই।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (ডিএমএ) এবং অন্যান্য সংস্থা গুলোকে আরো বেশি ভাবতে হবে। সঠিক উদ্যোগ নিতে হবে।স্কুল-কলেজে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালাতে হবে। ভবনে ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশার বাস্তবায়ন করতে হবে।
একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা ভূমিকম্পের সম্ভাবনা মোকাবিলায় আমাদের একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন, যা অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে জনসচেতনতা পর্যন্ত বিস্তৃত। নতুন ভবন নির্মাণে ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশা বাধ্যতামূলক করা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন গুলো ভেঙে ফেলা কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পুনর্গঠন করা জরুরী। পুরোনো এবং দুর্বল ভবনগুলো চিহ্নিত করে মেরামত বা পুনর্র্নিমাণ করা নাহলে ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা বাড়বে। শহরে খোলা স্থান এবং জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ভিত্তি করতে হবে যা বাংলাদেশে অপ্রত্যূল।
পূর্বাভাসের জন্য আধুনিক সিসমোগ্রাফ এবং মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা জরুরী। ভূমিকম্পের তথ্য ও সতর্কতা প্রচারের জন্য মোবাইল অ্যাপ এবং অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার বাড়াতে হবে। শিক্ষা কার্যক্রম, স্কুল, কলেজ এবং কর্মস্থলে ভূমিকম্প পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাপক করতে হবে। গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভূমিকম্পের ঝুঁকি এবং প্রস্তুতি নিয়ে প্রচারণা বাড়াতে হবে। প্রশিক্ষিত কর্মী, দমকল বাহিনী, পুলিশ, এবং সেনাবাহিনীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমিক ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে।
উদ্ধারকাজে ব্যবহারের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করা জরুরী।জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত করতে হবে। যা এখনো অভ্যুতুল বলা যায়। বাংলাদেশ প্রবল ভূমিকম্পের দেশ হলেও আমাদের এই ভাবনাটা অনেক বেশি আছে বলে মনে হয় না। ভূমিকম্প-পরবর্তী সময় উদ্ধার কার্যক্রম যত দ্রুত সম্ভব জীবিতদের উদ্ধার করা। জরুরি চিকিৎসার মাধ্যমে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করা। গৃহহীনদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা। জরুরি খাদ্য, পানি, এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনঃস্থাপন করার পূর্ব প্রস্তুতি থাকতে হবে।
সরকারের দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা নেই বললেই চলে। তবে ভূমিকম্প প্রতিরোধে সরকারের কাজ কিছুটা হলেও শুরু হয়েছে, তা খণ্ড খণ্ড। বাজেটের আগে পরিকল্পনা আসে, বাজেটের পরে চাপা পড়ে যায়। একটি জরুরি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা দরকার-যেখানে থাকবে: (১) দুর্বল ভবন পুনর্গঠনের সময়সীমা, (২) নির্মাণ কোডের কঠোর প্রয়োগ, (৩) প্রশিক্ষিত উদ্ধার কর্মী তৈরি, (৪) ঢাকায় খোলা জায়গা সংরক্ষণ, (৫) নাগরিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন।
ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধ করা সম্ভব নয়-কিন্তু প্রস্তুতির মাধ্যমে আমরা প্রাণ বাঁচাতে পারি, ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারি। আমাদের এখনই দরকার একটি জাতীয় জাগরণ-যেখানে সরকার, নাগরিক, প্রতিষ্ঠান সবাই একসাথে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় একযোগে কাজ করবে। প্রতিটি নাগরিকের সচেতনতা, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতি, প্রতিটি স্কুলের মহড়া-এসবই মিলে গড়ে উঠবে একটি সহনশীল দেশ।
লেখক: সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।
পাঠকের মতামত:
- হাসিনাকে দেশে ফেরাতে আ.লীগের নতুন পরিকল্পনা
- ‘গাজীপুরে আসন বাড়বে, কমবে বাগেরহাটে’
- ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৮৬ জন
- ১০২ এসিল্যান্ড প্রত্যাহার
- জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি ঐক্য পরিষদের
- ‘তিন মাসে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন হয়েছে, এক বছরেও না হওয়ার কারণ দেখছিনা’
- পাংশায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ
- স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে শাহীন গ্রেপ্তার
- জামালপুরে দুই টিকিট কালোবাজারি আটক
- গোপালগঞ্জে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
- সোনাতলায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
- ফুলপুরে পরিষ্কার পরিছন্নতার বিশেষ অভিযান
- স্বাধীনতা ও জাতিসত্তা রক্ষার লড়াইয়ে চাই জাতীয় ঐক্য
- নিউ ইয়র্কে বন্দুক হামলার সময় কর্মরত ছিলেন না নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল
- সেরা দূরপাল্লার এয়ারলাইনের স্বীকৃতি পেলো এমিরেটস
- ডিসকভারির সাথে পার্টনারশিপে উদ্বোধন হলো অপো রেনো ১৪ সিরিজ ৫জি স্মার্টফোন
- কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে গেছে রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত সেতু
- কালা জাহাঙ্গীরের চরিত্রে অভিনয় করবেন না শাকিব
- ৪২ মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফিরছেন টেইলর
- ‘বিচার নিয়ে আমাদের আন্তরিকতায় সন্দেহ রাখবেন না’
- ‘তাবলিগের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে কমিটি হচ্ছে’
- ঝিনাইদহের জাকির হোসেনের ম্যাজিক তেল! পোড়া ক্ষতে কাজ করে জাদুর মতো
- সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনের দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন
- ঝিনাইদহে ২ আগস্ট পর্দা উঠছে রেডিয়েন্ট প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগের
- ১০টির বেশি সিম থাকলে ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেবে বিটিআরসি
- শীত আসতেই মুখ-হাত-পায়ে চামড়া উঠছে, কী করবেন?
- কমলনগরে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আটক
- হিমেল হাওয়ায় কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ
- ‘কোন মানুষ অর্থের কাছে চিকিৎসায় হেরে যাবে না, সবাই বাঁচবে’
- ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর
- প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা
- মা
- প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
- পারিবো না
- ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মৃত দুই কৃষক পরিবারকে তারেক রহমানের মানবিক সহায়তা প্রদান
- ডিসকভারির সাথে পার্টনারশিপে উদ্বোধন হলো অপো রেনো ১৪ সিরিজ ৫জি স্মার্টফোন
- অতিরিক্ত ঠান্ডায় ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা
- লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
- রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করছে জান্তা
- লক্ষ্মীপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
- নৌকার পক্ষে সমর্থন জানানেল এডভোকেট আব্দুল মতিন
- সেরা দূরপাল্লার এয়ারলাইনের স্বীকৃতি পেলো এমিরেটস
- লক্ষ্মীপুরে দোকান ঘর বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা
- মহুয়া বনে