জাতিসংঘ অফিস: মানবাধিকার না কূটনৈতিক নজরদারি?

মীর আব্দুল আলীম
ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের (OHCHR) অফিস খোলার খবর নেহাতই কোনো সাধারণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়। এটি একাধারে একটি কূটনৈতিক বার্তা, আবার একইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের একটি নতুন মাত্রা। সরকার একে উন্নয়ন সহযোগিতার অংশ বললেও, বিরোধী পক্ষ এটিকে দেখছে আন্তর্জাতিকীকরণ বা ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ সূচনা হিসেবে। সাধারণ নাগরিক, সুশীল সমাজ এবং মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক কৌতূহল—এই অফিস কি সত্যিই দেশে মানবাধিকার সুরক্ষার পথ দেখাবে, নাকি এটি হয়ে উঠবে আরেকটি ‘রাজনৈতিক মঞ্চ’? যে দেশে রাজনৈতিক বিভাজন গভীর, সেখানে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সরাসরি উপস্থিতি নিঃসন্দেহে নানা প্রতিক্রিয়া ও সম্ভাবনার জন্ম দেয়। তাই এই ঘটনা কেবল মানবাধিকার নয়, বরং সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক স্বার্থ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আস্থার প্রশ্নকেও সামনে এনে দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন ওঠে-এই অফিস কি এক আশাব্যঞ্জক সহযোগী, নাকি ভবিষ্যতের কোনো অস্বস্তিকর কূটনৈতিক জটিলতার সূচনা?
সামনে প্রশ্ন আসে এটি সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নয়তো? জাতিসংঘের উপস্থিতিকে অনেকেই দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর এক ধরনের চোখ রাঙানি হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে এমন একটি সংস্থা, যার কাজ মানবাধিকারের লঙ্ঘন খুঁজে বের করে তা আন্তর্জাতিক মহলে উপস্থাপন করা, সেটি যদি স্থানীয়ভাবে থেকে কাজ করে—তাহলে দেশের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত ও নীতিমালায় বিদেশি প্রভাব অনিবার্য হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি ভবিষ্যতে দেশে এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে সরকারের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড কিংবা বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতাও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে জাতিসংঘের তরফ থেকে। এর ফলে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণে আত্মবিশ্বাস ও ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার শঙ্কা থেকেই যায়।
ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো জাতিসংঘের উপস্থিতিকে শুধু একটি মানবাধিকার তদারকির বিষয় হিসেবে না দেখে বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও ধর্মীয় অনুপ্রবেশ বলেই চিহ্নিত করছে। তাদের প্রধান আশঙ্কা হলো, জাতিসংঘের মানবাধিকার এজেন্ডার অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে এলজিবিটিকিউ অধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতা, নারীবাদ, এবং ধর্মীয় সমালোচনার স্বেচ্ছাচার রয়েছে, যা বাংলাদেশের ধর্মীয় সমাজব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইসলামপন্থীরা মনে করে, এসব ইস্যুতে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের মূল্যবোধ ও সামাজিক গঠনকে নড়বড়ে করার চেষ্টা চলবে। ফলে এটি রাজনৈতিক নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দ্বন্দ্বেও রূপ নিতে পারে।
আশ্চর্যের বিষয়, বামপন্থীরা যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার, তারাও এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। তাদের মতে, দেশের সমস্যার সমাধান দেশের ভেতর থেকেই হওয়া উচিত; কোনো আন্তর্জাতিক সংগঠন এসে দিনের পর দিন তদারকি করে যাবে, এটি একধরনের উপনিবেশিক পদ্ধতির আধুনিক রূপ। অনেক বামপন্থী নেতা বলেছেন, জাতিসংঘ যে দেশে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারেনি, সেই জাতিসংঘ এখন বাংলাদেশে ‘পাহারাদার’ হয়ে বসতে চায়। তারা একে ‘সাদা চামড়ার আধিপত্য’ বলেও আখ্যা দিয়েছে। এই আপত্তি থেকে বোঝা যায়, রাজনৈতিক অবস্থান নির্বিশেষে জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে এখনও একটি সম্মিলিত স্পর্ধা কাজ করছে।
এ বিষয়ে বিএনপি সরাসরি কোনো বিবৃতি না দিলেও, দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা বেসরকারিভাবে জানিয়েছেন যে, তারা এই সিদ্ধান্তকে ন্যায্য ও সময়োপযোগী মনে করছেন। তাঁদের মতে, সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো এতদিন দেশে দমন করা হতো বা অস্বীকার করা হতো। কিন্তু জাতিসংঘের অফিস থাকলে সেগুলো আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশ পাবে, যা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তবে দলের ভেতরে একটি অংশ এটিকে দ্বৈত নীতির উদাহরণ হিসেবেও দেখছেন—একদিকে জাতীয়তাবাদ, অন্যদিকে বিদেশি হস্তক্ষেপের আশ্রয়। ফলে বিএনপির অবস্থান এখনো পরিপূর্ণভাবে স্পষ্ট নয়, কিন্তু এটাও সত্যি যে তারা পরিস্থিতিকে নিজেদের রাজনৈতিক সুযোগে পরিণত করতে চাইছে।
সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘকে অফিস স্থাপনের অনুমতি দিলেও, দলীয় নেতাকর্মী ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। কেউ এটিকে সরকারের উদারতা ও আত্মবিশ্বাসের নিদর্শন হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে জাতীয় নিয়ন্ত্রণহীনতার দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন। সরকার যদি সত্যিই আত্মবিশ্বাসী হয় যে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নেই, তাহলে জাতিসংঘের উপস্থিতি তার পক্ষে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগ জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ফলে সরকারি মহলে একটা চাপা উদ্বেগ রয়েছে-জাতিসংঘের দপ্তর দেশের ভাবমূর্তিকে বিশ্বমঞ্চে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের দপ্তর গুম-খুনের তদন্তে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে কি? বাংলাদেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ বহুদিন ধরেই আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত। কিন্তু এসব ঘটনায় বিচার প্রায় অনুপস্থিত। জাতিসংঘের অফিস স্থাপিত হলে, নিরপেক্ষ তথ্য সংগ্রহ, সাক্ষ্য প্রক্রিয়া এবং তথ্য যাচাইয়ের পদ্ধতি আন্তর্জাতিকভাবে নিরীক্ষিত হতে পারে। এতে একদিকে যেমন সরকারের ওপর চাপ তৈরি হবে, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোও একটি আশার আলো দেখবে। তবে এই প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করবে জাতিসংঘের দপ্তরের কাঠামো, ক্ষমতা এবং স্বাধীনতার ওপর। যদি দপ্তরটি কেবল কাগুজে রিপোর্ট তৈরি করে, তবে তাতে লাভ হবে না; কিন্তু যদি সত্যিকারের অনুসন্ধানী কাজ শুরু করে, তবে এটি বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাকে পরিপূরক করতে পারে।
জাতিসংঘের অফিস যদি স্থানীয় বিচার প্রক্রিয়ায় পর্যবেক্ষণমূলক ভূমিকা রাখতে শুরু করে, তাহলে প্রশ্ন উঠবে-এটি কি বিচারব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, নাকি সহায়তা দিচ্ছে? বাংলাদেশের আদালত স্বাধীন হলেও অনেক সময় রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক চাপ এবং বিচারপ্রার্থী নাগরিকের অসহায়ত্ব বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। জাতিসংঘ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলা, বিচার বিলম্ব, জামিন বঞ্চনা বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত মামলা নিয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চালায়, তবে আদালতের ওপরও একটি আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। একইসঙ্গে এটি বিচারিক স্বচ্ছতার পথে কিছুটা হলেও সহায়ক হতে পারে। তবে আদালত যদি জাতিসংঘের উপস্থিতিকে হস্তক্ষেপ মনে করে, তাহলে তা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য এক সংকট তৈরি করতে পারে।
জাতিসংঘের অফিস সুশীল সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন এবং স্বাধীন মিডিয়ার জন্য একদিকে হতে পারে আন্তর্জাতিক সহায়তার দরজা; অন্যদিকে হতে পারে নতুন পর্যবেক্ষণ ও সন্দেহের কারণ। যারা সত্যিকার অর্থে মানবাধিকারের জন্য কাজ করেন, তাঁদের জন্য জাতিসংঘ একটি প্ল্যাটফর্ম দিতে পারে যেখান থেকে তারা আন্তর্জাতিক মহলে বক্তব্য তুলে ধরতে পারবেন। কিন্তু একইসঙ্গে ক্ষমতাসীন মহল তাদেরকে ‘বিদেশি এজেন্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে, যা তাঁদের উপর রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক চাপ বাড়াবে। বিশেষত মিডিয়াকে যেভাবে বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সেখানে জাতিসংঘ-সমর্থিত সংবাদ বা বিশ্লেষণকে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’ হিসেবে তিরস্কার করা হতে পারে। ফলে সুবিধা ও ঝুঁকি দুই-ই থাকবে।
জাতিসংঘের অফিস স্থাপনের ফলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অর্থায়নের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক সিগন্যাল দিতে পারে যে, বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় আন্তরিক। এতে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, কানাডা, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রকল্পে সহায়তা পেতে বাংলাদেশ বাড়তি সুবিধা পেতে পারে। আবার অন্যদিকে, যদি জাতিসংঘের রিপোর্টে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ধারাবাহিক প্রমাণ উঠে আসে, তাহলে সেইসব সহযোগী দেশ অনুদান বা বাণিজ্য চুক্তিতে শর্তারোপ করতে পারে। অর্থাৎ এটিকে একসঙ্গে সুযোগ এবং চাপ দুই-ই হিসেবে দেখা যায়।
মানবাধিকার দপ্তর থাকলে যেকোনো নিপীড়িত, গুমের শিকার পরিবার বা নির্যাতিত নাগরিক আন্তর্জাতিক ফোরামে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ পাবে। বিশেষ করে যেসব নাগরিক দমন-পীড়নের শিকার হয়ে জাতীয়ভাবে ন্যায়বিচার পায় না, তারা জাতিসংঘের কাছে সরাসরি অভিযোগ করতে পারবেন। এটি রাজনৈতিক আন্দোলনকারীদের জন্য একপ্রকার মনস্তাত্ত্বিক শক্তি হবে। ফলে সরকার বিরোধী রাজনীতির একটি পরোক্ষ ব্যাকআপ হিসেবে জাতিসংঘ অফিস কার্যকর হতে পারে। তবে এ কারণেই ক্ষমতাসীন মহল এর কার্যক্রমকে সন্দেহের চোখে দেখবে, যা রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে।
২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্ত আসা নিছক কাকতালীয় নয়-এমন ধারণা অনেক বিশ্লেষকের। অতীতের নির্বাচনে গুম-খুন, ভোট ডাকাতি, প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব ইত্যাদি অভিযোগ যেভাবে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিধ্বনি তুলেছে, এবার জাতিসংঘ অফিস সরাসরি মাঠে থাকলে ওইসব অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ এবং অনুসন্ধান আরও বেশি দৃশ্যমান হতে পারে। সুতরাং এটি নিছক মানবাধিকার নয়, বরং বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থার প্রতি আন্তর্জাতিক আগ্রহ ও মনিটরিংয়ের ইঙ্গিতবাহী বার্তা। নতুন প্রজন্ম, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজের তরুণ সদস্যদের মধ্যে একটি বিশাল অংশ গণতন্ত্র, অধিকার ও স্বচ্ছতার বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন।
জাতিসংঘের অফিস তাদেরকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামো ও চর্চার সঙ্গে যুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করতে পারে। তরুণদের মধ্যে যারা মানবাধিকার ও কূটনীতিতে আগ্রহী, তারা এই অফিসের মাধ্যমে ইন্টার্নশিপ, কর্মসূচি বা নেটওয়ার্কিং-এর সুযোগ পেতে পারেন। তবে একইসঙ্গে এটি তরুণদের মধ্যে একটি ‘বিদেশমুখী’ বা ‘আন্তর্জাতিক নির্ভরতামূলক’ চেতনা গড়ে তুলতে পারে, যা জাতীয় রাজনীতির জন্য জটিলতা তৈরি করতে পারে।
এদিকে ভারত, চীন ও রাশিয়া—এই তিন দেশের মধ্যে মানবাধিকারের প্রশ্নে জাতিসংঘকে নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বৈতনীতি রয়েছে। ভারত নিজেই জাতিসংঘের এমন পর্যবেক্ষণ অনেক সময় প্রত্যাখ্যান করে, চীন তো একে ‘পশ্চিমা আধিপত্যবাদ’ বলে খারিজ করে দেয়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে জাতিসংঘের অফিস স্থাপন ভারত বা চীনের কাছে কেমন বার্তা পাঠাবে? যদি তারা মনে করে, এ অঞ্চলে পশ্চিমা প্রভাব বাড়ছে, তাহলে বাংলাদেশ তাদের কূটনৈতিক চাপ বা সন্দেহের মুখে পড়তে পারে। বিশেষ করে চীন-পাকিস্তান জোটের দিক থেকেও এটি একটি রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। যদি জাতিসংঘের এই অফিস নিরপেক্ষতা হারায়, পক্ষপাতিত্ব করে বা নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে অতিরিক্ত মেলামেশা করে—তাহলে সেটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ‘বুমেরাং’ হয়ে ফিরে আসবে। এমনকি জনগণের মধ্যেও জাতিসংঘের প্রতি আস্থা কমে যাবে। অতীতে আফগানিস্তান, ইরাক বা সিরিয়ায় জাতিসংঘ যেভাবে বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছে, সেসব অভিজ্ঞতা বাংলাদেশেও তুলনা টানতে পারে। কাজেই জাতিসংঘের নিজেদের ভূমিকা হতে হবে অত্যন্ত পেশাদার, ভারসাম্যপূর্ণ ও প্রমাণনির্ভর। অন্যথায় এটিকে সরকারও ব্যবহার করতে পারে একটি ব্যর্থ আন্তর্জাতিক উদ্যোগ হিসেবে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের অফিস খোলাকে কেন্দ্র করে যে উত্তাপ, তা অনিবার্যভাবেই দেশি-বিদেশি অঙ্গনে নানা ব্যাখ্যার জন্ম দিচ্ছে। তবে ভুললে চলবে না-এই অফিসের উপস্থিতি যদি সত্যিকারের মানবাধিকারের উন্নয়ন ও সুরক্ষায় সহায়ক হয়, তবে তা অবশ্যই সময়োচিত ও ইতিবাচক। কিন্তু কোনো পক্ষ যদি এটিকে রাজনৈতিক লাভের যন্ত্র বানাতে চায়, তবে সেটি হবে আত্মঘাতী। তাই প্রয়োজন উন্মুক্ত মঞ্চে স্বচ্ছ আচরণ, প্রয়োজন পরস্পরের প্রতি আস্থার জায়গা গড়ে তোলা। সরকারকে দেখাতে হবে তারা ভয় পায় না-বরং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডে নিজেদের স্থাপন করতেই আগ্রহী। বিরোধীদলকে বুঝতে হবে, এই অফিস কোনো কৌশলগত আশ্রয় নয়, বরং মানবাধিকারের মাপকাঠিতে সকলে সমানভাবে পড়বে। আর জাতিসংঘকে বুঝতে হবে-বাংলাদেশ কারো উপনিবেশ নয়, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যার আছে নিজস্ব রাজনৈতিক বাস্তবতা।
সুতরাং সবাইকে নিয়ে, স্বচ্ছতা-দায়বদ্ধতা আর সমতা রেখে এই নতুন অধ্যায় শুরু হোক। তা না হলে, মানবাধিকার উন্নয়নের যে স্বপ্ন, তা ভেসে যাবে রাজনৈতিক সন্দেহ আর কূটনৈতিক টানাপোড়েনের ঝড়েই।।
লেখক : সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।
পাঠকের মতামত:
- কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে গেছে রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত সেতু
- কালা জাহাঙ্গীরের চরিত্রে অভিনয় করবেন না শাকিব
- ৪২ মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফিরছেন টেইলর
- ‘বিচার নিয়ে আমাদের আন্তরিকতায় সন্দেহ রাখবেন না’
- ‘তাবলিগের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে কমিটি হচ্ছে’
- ঝিনাইদহের জাকির হোসেনের ম্যাজিক তেল! পোড়া ক্ষতে কাজ করে জাদুর মতো
- সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনের দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন
- ঝিনাইদহে ২ আগস্ট পর্দা উঠছে রেডিয়েন্ট প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগের
- ১০টির বেশি সিম থাকলে ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেবে বিটিআরসি
- স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সভা
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল
- বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদের বাসা থেকে সোয়া ২ কোটি টাকার চেক উদ্ধার
- ইসরায়েল পদক্ষেপ না নিলে সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য
- রাশিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প, দেশে দেশে সুনামি সতর্কতা
- গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় মামলা
- ফরিদপুরে রাতের অন্ধকারে একটি সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ভাঙচুর
- ‘শুল্ক কমানোর সবুজ সংকেত পেয়েছে বাংলাদেশ’
- বৃহস্পতিবার নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা
- ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জরুরি সংস্কার চায় বিএনপি’
- ‘জুলাই সনদের খসড়া বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচক’
- ‘সরকার অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করছে’
- লংগদুতে সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহত
- সাতক্ষীরা সদরের ডিবি সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু
- সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধি সভা অনুষ্ঠিত
- ফরিদপুরে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার, ইয়াবা উদ্ধার
- শীত আসতেই মুখ-হাত-পায়ে চামড়া উঠছে, কী করবেন?
- বেলকুচিতে জনমত জরিপে এগিয়ে বদিউজ্জামানের মোটরসাইকেল
- কমলনগরে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আটক
- হিমেল হাওয়ায় কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ
- ‘কোন মানুষ অর্থের কাছে চিকিৎসায় হেরে যাবে না, সবাই বাঁচবে’
- ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর
- প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা
- মা
- প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
- পারিবো না
- ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মৃত দুই কৃষক পরিবারকে তারেক রহমানের মানবিক সহায়তা প্রদান
- লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
- অতিরিক্ত ঠান্ডায় ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা
- লক্ষ্মীপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
- রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করছে জান্তা
- নৌকার পক্ষে সমর্থন জানানেল এডভোকেট আব্দুল মতিন
- লক্ষ্মীপুরে দোকান ঘর বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা
- মহুয়া বনে
- বিজনেস সামিটের পর্দা নামছে আজ