E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বর্ষার মৌসুমে শিশুদের ডেঙ্গু, আতঙ্ক নয় প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসা 

২০২৫ জুলাই ১৩ ১৮:২৭:৩৭
বর্ষার মৌসুমে শিশুদের ডেঙ্গু, আতঙ্ক নয় প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসা 

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ


দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তদের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক রোগীর সংখ্যাটা তুলনামূলক বেশি হলেও শিশু রোগীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। ইতিমধ্যে ডেঙ্গু  রাজধানীর সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে গেছে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল বিভাগে। রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

ডেঙ্গুর এই অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিকে ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে সেটিকে পুরোপুরি মহামারী বলা না হলেও এর দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে।চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৫৫ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৪৬০ জন।চলতি বছরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ১২ হাজার ৭৪৪ জন।তাদের মধ্যে ৫৯ দশমিক এক শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক নয় শতাংশ নারী।

২০২৩ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুতে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫৭৫ জনের এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন।

আর এবার সময়ের আগে থেকেই দেশে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা। এতে মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু প্রায় সময়েই বেশ গুরুতর হয়ে ওঠে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।শিশুদের জ্বর বা কোন অসুস্থতা বেশ হুটহাটই হয়। ঠান্ডা লাগা বা জ্বরের প্রকোপ তাদের মধ্যে দেখা দেয় বেশি। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ছোট শিশুরা উপসর্গের বিষয়টিও সেভাবে বোঝাতে পারে না বাবা-মাকে। ফলে শিশুর ডেঙ্গুজ্বর হয়েছে কিনা সেটা বুঝতে হলে বাবা-মায়ের সতর্ক থাকার বিকল্প নেই।

আর ডেঙ্গুর এ জ্বরকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়-১. ফেব্রাইলফেজ : শিশুর ডেঙ্গুজ্বর দুই থেকে তিন দিন বা এর চেয়ে বেশি সময় স্থায়ী হলে। ২. অ্যাফেব্রাইল ফেজ : এ সময় শিশুর আর জ্বর থাকে না। সাধারণত এর সময়কাল থাকে দুই-তিন দিন। ৩. কনভালসেন্ট ফেজ : যখন শিশুর শরীরে র‌্যাশ দেখা যায়। এর সময়কাল থাকে চার-পাঁচ দিন। অ্যাফেব্রাইল ফেজে অভিভাবকদের সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, এ ক্রিটিক্যাল ফেজে শিশুর জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পর শিশু সংকটপূর্ণ অবস্থায় চলে যেতে পারে। এ সময়ে শিশুর শরীরে প্লাজমা লিকেজ হয় এবং তা শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয়ে থাকে। এ কারণে রোগীর পেট ফুলে যায় বা রক্তক্ষরণের মতো সমস্যা দেখা দেয়; যার কারণে শিশুর ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হতে পারে। তাই জ্বর সেরে যাওয়ার দুই থেকে তিন দিন শিশুকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা প্রয়োজন।

কীভাবে বুঝবেন শিশুর ডেঙ্গু কিনা?

১. ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ জ্বর, সাধারণত ১০৩ বা ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর উঠে যেতে পারে শিশুর।

২. জ্বরের পাশাপাশি শিশুর শরীর ব্যথা থাকতে পারে। তবে ব্যথার কথাও অনেক শিশু বোঝাতে পারে না। এ ক্ষেত্রে অনেকে শিশুর খাওয়া কমে যায়। দেখলেই বোঝা যায়, সে কোনো অস্বস্তিতে ভুগছে। অনেক সময় কান্না করে অনবরত। চারপাশের পরিবেশের প্রতি বিরক্ত থাকতে পারে।

৩. আরেকটি বড় লক্ষণ হচ্ছে এই জ্বরে কোনও ধরনের ঠান্ডা লাগা কিংবা কাশি থাকে না।

৪. জ্বরের পাশাপাশি বমি বমি ভাব, পাতলা পায়খানা থাকতে পারে শিশুর।

৫. জ্বর পরবর্তী সময়ে শিশুর শরীরে লালচে র‍্যাশ ওঠাও ডেঙ্গুর অন্যতম লক্ষণ।

৬. ৬-৮ ঘণ্টার মধ্যে শিশুর প্রস্রাব না হওয়া ডেঙ্গুর মারাত্মক লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি।

৭. শিশুর মধ্যে স্বাভাবিক চঞ্চলতা থাকে না - শিশু নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং ঝিমাতে থাকে। অযথা কান্নাকাটি করে।

দ্রুত শিশুর পরীক্ষা করুন

শিশুর জ্বর হলে শুরুতেই ডেঙ্গু অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো উচিত। তবে জ্বর যদি পাঁচ দিনের বেশি থাকে, তাহলে ডেঙ্গু অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আনুষঙ্গিক অন্যান্য পরীক্ষা করাতে হবে।

এ ছাড়া কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট অবশ্যই করানো উচিত। এই পরীক্ষায় প্লাটিলেট পরিমাণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তবে শিশুর ক্ষেত্রে প্লাটিলেটের পরিমাণ কিছুদিন পর পর পরীক্ষা করানো উচিত।

বাবা-মায়ের করণীয়

১. শিশুর জ্বর হওয়ার প্রথম দিনেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। ‘মৌসুমি জ্বর’ ভেবে অবহেলা করা মোটেই উচিত নয়। দেরি হলেই লক্ষণগুলো প্রকট হয়ে শিশু সংকটজনক পরিস্থিতিতে পড়ে যায়। চিকিৎসকের সন্দেহ হলে প্রথম বা দ্বিতীয় দিনেই ডেঙ্গু এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে ডেঙ্গু শনাক্ত করানো যায়।

২. জ্বর থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাওয়ানো উচিত। জ্বর যেনো বাড়তে না পারে সে ব্যবস্থা করা উচিত। এ সময় প্রায় প্রতিদিন রক্তের অণুচক্রিকার পরিমাণ দেখা উচিত।

৩. এ সময় শিশুকে বিশ্রামে রাখুন, প্রচুর পানি বা তরল খেতে দিন। রক্ত বাড়ায় যেসব খাবার সেসব খাবার শিশুকে প্রচুর পরিমাণে খাওয়াতে হবে।

৪. শিশু খেতে না চাইলে তাকে অল্প অল্প করে বার বার খাওয়ান। শক্ত খাবার খেতে না পারলে তা নরম করে দিন। বিভিন্ন ফলমূলের জুস করে খাওয়াতে পারেন।

৫. শিশুর মা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলেও সেই ভাইরাসের কোন প্রভাব মায়ের বুকের দুধে পড়ে না। কাজেই আক্রান্ত অবস্থায় মা তার বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন।

৬. জ্বর কমে যাওয়ার পরও যদি শিশু বেশি অসুস্থতা অনুভব করে, তবে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা জরুরি। প্রয়োজনে রক্ত বা প্লাজমা সঞ্চালন এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের বিশেষ চিকিৎসা নিতে হবে।

৭. মনে রাখতে হবে, জ্বর নেমে যাওয়ার পরই আসলে জটিলতা শুরু হয়। তাই জ্বর সেরে যাওয়ার দুই থেকে তিন দিন শিশুকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা প্রয়োজন।

শিশুর ডেঙ্গু হয়েছে নাকি সাধারণ সর্দিজ্বর—কীভাবে বুঝবো?

এখন শিশুরা দুই ধরনের রোগেই অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ডেঙ্গু তো আছেই। সঙ্গে বাচ্চাদের ঠান্ডা, কাশি, সর্দিজ্বর যেটাকে আমরা 'ফ্লু' বলি সেটাতেও আক্রান্ত হচ্ছে। সাধারণত ডেঙ্গুতে আগে জ্বর আসে, শিশুর শরীর দুর্বল হয়ে যায়, খেতে পারে না, গা-হাত-পা ব্যথা করে। ডেঙ্গু হলে শুরুতেই ঠান্ডা-সর্দি-কাশি থাকে না। প্রথমে প্রচণ্ড জ্বর হবে, ১০২-১০৩ ডিগ্রির মতো। জ্বর নামতে চাইবে না। তার সঙ্গে দুর্বলতা, চোখে ব্যথা, হাত পা ব্যথা হয়।'

'অন্যদিকে মৌসুমী জ্বরে আগে হাঁচি-কাশি-সর্দি শুরু হয়। তারপর জ্বর আসে। সর্দি-জ্বর হলেও শিশুর হাত-পা ব্যথা করে কিন্তু সেটা হয় মূলত জ্বরের কারণে। জ্বর মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এলে শিশুও সুস্থবোধ করতে থাকে। সর্দি জ্বর হলে জ্বরটা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। কিন্তু ডেঙ্গু হলে শিশু অসুস্থবোধ করে অনেক বেশি। ফ্লু হলে শিশুর চোখ খুব একটা লাল হয় না। কিন্তু ডেঙ্গুতে শিশুর চোখ লাল হয়ে যায়। সাধারণত ফ্লু হলে বাসার সবার একসাথে হয়,' বলেন তিনি।

শিশুদের ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে করণীয়

১. এডিস মশার উৎস ধ্বংস করতে হবে। এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিতে পারে এমন স্থানগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো নষ্ট করে ফেলতে হবে। বাড়ি-ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

২. শিশুদের দিনে ও রাতে মশারির ভেতরে রাখতে হবে। বিশেষ করে নবজাতক শিশুকে সার্বক্ষণিক মশারির ভেতরে রাখা জরুরি।

৩. শিশুদের সাদা বা হালকা রঙের ফুলহাতা পোশাক পরান। হাতে–পায়ে মশা নিরোধক মলম লাগাতে পারেন। নিয়মিত বাসার আশপাশে স্প্রে করুন।

শিশুর ডেঙ্গু হলে কি ধরণের খাবার খাবে আর কি খাবেনা?

ডেঙ্গু হলে আপনি প্রচুর পানি খাবেন, শিশুর হলে তাকেও বেশি পরিমাণে পানি খাওয়ান। আপনি জানেন ভাইরাসের কোনো ঔষুধ নেই তবে টক জাতীয় ফল যেমন- লেবু, কমলা, মাল্টা, আঙুর এগুলো ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি কমায়। তাই এ সময়ে টক জাতীয় ফল খাওয়ান বেশি করে। যতটা সময় পারবেন শিশুকে বিশ্রামে রাখবেন। যদিও শিশুদের ক্ষেত্রে এটা একটু কষ্টকর। সেই সাথে বাবুদের হাত পা ব্যাথা করলে হালকা করে টিপে দিতে পারেন।

হোমিও প্রতিবিধান

রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয় এই জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক কে ডা.হানেমানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে ডেঙ্গুরোগ সহ যে কোন জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য ভিওিক লক্ষণ সমষ্টি নির্ভর ও ধাতুগত ভাবে চিকিৎসা দিলে আল্লাহর রহমতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা সম্ভব। অভিজ্ঞ চিকিৎসক গন যেই সব মেডিসিন প্রাথমিক ভাবে নির্বাচন করে থাকেন, একোনাইট, বেলেডোনা, ব্রায়োনিয়া, রাসটক্স, ইউপেটেরিয়াম পার্ফ, আর্সেনিক এলবাম, কার্বোভেজ, ইপিকাক,সালফার সহ আরো অনেক ঔষুধ লক্ষণের উপর আসতে পারে, তাই মনে রাখবেন হোমিওপ্যাথি একটি লক্ষণ নির্ভর চিকিৎসা ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে মানুষভেদে ওষুধ বদলে যায়। তাই রোগের তীব্রতা খুব বেশি থাকলে নিজে থেকে ওষুধ না খেয়ে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পরিশেষে বলতে, বর্ষাকালে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। এখন ডেঙ্গুর মৌসুম। সতর্ক না হলে শিশু থেকে সব বয়সি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারেন। ডেঙ্গুর সবচেয়ে ঝুঁকি হচ্ছে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া। শিশুসহ যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের এতে মৃত্যুঝুঁকি আছে।

ডেঙ্গু রোগ মশার কামড়ে ছড়ায়। তাই এগুলো সাধারণত বর্ষাকালে হয়, যা মশার বেঁচে থাকা এবং প্রজনন উভয়কেই সাহায্য করে। অন্য সব জ্বরের বিপরীতে যেখানে জ্বরের সময় বিপদ, ডেঙ্গুর বিপদের সময় জ্বর কমে যাওয়ার সময়। বমি, পেট ব্যথা, অস্থিরতা বা অলসতা এবং যেকোনো স্থান থেকে রক্তপাতের মতো সতর্কতা চিহ্নসহ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশুদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন।তাই বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের একটি বড় অংশই শিশু। শিশুরা সাধারণত তাদের শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন বা সতর্ক না হওয়ার কারণে তাদের ওপর এই রোগের প্রভাব বড়দের চাইতে আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ অবস্থায়, শিশুদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষায় মা-বাবা বা অভিভাবকদেরকেই সচেতনতার সাথে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। আর চারিদিকে যেহেতু ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব তাই এই সময়ে শিশুর জ্বর এলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবং ডেঙ্গুর চিকিৎসায় সচেতনতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি সচেতন থাকি তাহলে ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।আর আপনার সচেতনতাই পারে শিশুদের সুস্থ রাখতে। মনে রাখবেন আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যত, তাই শিশুদের সুস্থ থাকলে সুস্থ থাকবে আমাদের আগামীর পৃথিবী।

লেখক : কলাম লেখক ও গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test