E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বাংলাদেশে হিন্দুদের ভবিষ্যৎ

২০২৫ জুলাই ১৫ ১৬:৪৬:৪৯
বাংলাদেশে হিন্দুদের ভবিষ্যৎ

শিতাংশু গুহ


বাংলাদেশে হিন্দুদের ভবিষ্যৎ আসলে কি? প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে নিকট ভবিষ্যৎ না সুদূর ভবিষ্যৎ? ভবিষ্যৎ এমন একটি শব্দ, যা কেউ জানেনা, তবে বর্তমান কর্মকান্ডের আলোকে ভবিষ্যৎ কল্পনা করা যায়। শ্রীগীতা বলেছেন, মানুষ তাঁর আদি ও অন্ত (ভবিষ্যৎ) জানেনা, শুধু বর্তমান বা মধ্যটা জানে। যদিও এর অর্থ ব্যাপক, ক্ষুদ্র অর্থে এটি হচ্ছে, মানুষ তাঁর ভবিষ্যৎ জানেনা, নিকট ভবিষ্যৎ আন্দাজ করতে পারে, সুদূর ভবিষ্যৎ কল্পনা মাত্র। প্রকৃতি তা নির্ধারণ করে। আমার পোষ্টে একজন মন্তব্য করেছেন যে, ৪শ’ বছর আগে বাংলায় কোন মুসলমান ছিলোনা? সুদূর ভবিষ্যতে কি হবে তা কি কেউ বলতে পারে? আজকের প্রেক্ষাপটে এটুকু বলা যায়, বাংলাদেশের হিন্দুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন। 

আশার আলোর ঝলকানি কি নাই? আছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু সেই আলোর বর্তিকা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। বলা হয়, অন্ধকার যত ঘনীভূত হয়, দিনের আলো ততই সন্নিকটবর্তী হয়ে ওঠে। ভয় নেই, জাগো বাহে..। একটা সময় ছিলো যখন হিন্দুদের গন্তব্য ভারত ছিলো। এটি আমার জীবনে ঘটেছে, পাকিস্তান আমলের একেবারে শেষদিকে এসএসসি/এইচএসসি-তে ভালো রেজাল্ট করলে সবাই বলাবলি করতে থাকলো যে, আমি ডাক্তারী পড়বো (যদিও আমি ভাবিনি), এতে জল ঢেলে দেন আমার বাবা, তিনি বলেন, এতদিন পাকিস্তানে থাকতে পারবে না? এর দেড়-দুই বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যায়? অর্থাৎ আমার বাবাও ভবিষ্যৎ জানতেন না? কেউ জানতো না, ওপরের তলায় কিছু লোক হয়তো জানতো?

এ সময়ে বাংলাদেশে হিন্দুরা ভীষণভাবে অত্যাচারিত, অসহায়, তাঁদের পাশে কেউ নেই, কিন্তু এরমানে এই নয় যে, দুই কোটি হিন্দু হারিয়ে যাবে। বিশেষত: এই ইন্টারনেটের যুগে সেটি অসম্ভব। সাত দশক আগে পাকিস্তান পেরেছিলো প্রায় পুরো হিন্দু জনগোষ্ঠীকে মেরেকেটে ভাগিয়ে দিতে, কারণ মানুষ জানতো না কি হচ্ছে সেখানে। এখন সবাই সবকিছু জানে, মুহূর্তে বিশ্বের কাছে পৌঁছে যায় বাংলাদেশে হিন্দু বা সংখ্যালঘু নির্যাতনের খবর। বর্তমান পুরো বিশ্বে বিশাল সংখ্যক বাংলাদেশী হিন্দু-বৌদ্ধ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, এঁরা সবাই সোচ্চার। সুতরাং ভয় নাই? আপনি হয়তো ভাবছেন, কিচ্ছু হবেনা? হবে, ধৈর্য্য ধরুন। কোথা দিয়ে কি হবে আমি জানিনা, শুধু এটুকু জানি, প্রকৃতি সবকিছু সুদে-আসলে আদায় করে।

বাংলাদেশে নারী, বিশেষত: হিন্দু নারীর অবমাননা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। দ্রৌপদী’র সন্মান রক্ষায় কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ হয়েছিলো, হেলেন-র জন্যে ট্রয় নগরী ধ্বংস হয়েছিলো, কেজানে কোন ‘সাবিত্রী’র জন্যে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়ে যাবে? এর মানে কি আপনি চুপ করে বসে থাকবেন, যা হবার প্রকৃতি করবে? না, দেশে-বিদেশে হিন্দুরা এখন আর বসে নেই, যে যার মত কাজ করছে। হয়তো সেসব এখন অপ্রতুল, কিছুই ফেলনা নয়, ‘বিন্দু বিন্দু জল’ একদিন হয়তো সিন্ধুর রূপ নিতেও পারে। কেজানে আপনাদের মধ্যে থেকে একজন সুভাষ বোস হবেনা, সূর্য সেন বা প্রীতিলতা জন্ম নেবেনা? তাই হিন্দুদের উঠে দাঁড়াতে হবে, ভয়কে জয় করে ‘সারভাইভাল অফ দি ফিটেষ্ট’ স্মরনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test