E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ডাকসু থেকে জাতীয় নির্বাচন: তরুণদের বার্তা ও ক্ষমতার সংকট

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১৭:৫০:২০
ডাকসু থেকে জাতীয় নির্বাচন: তরুণদের বার্তা ও ক্ষমতার সংকট

মীর আব্দুল আলীম


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে ইতিহাস আবারও নতুন মোড় নিল। ডাকসুর নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের অপ্রত্যাশিত জয় যেন শুধু ছাত্ররাজনীতির নয়, গোটা জাতীয় রাজনীতিরও সঙ্কেত। ঠিক এ সময়েই ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে, যেখানে সরকার আর বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা মিলেমিশে তৈরি করছে অনিশ্চয়তার দিগন্ত। এর মধ্যেই উঠেছে পিয়ার পদ্ধতির দাবি যা বলছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার খেলায় নয়, বরং ভোটের আসল অংশীদারিত্বে গণতন্ত্রের মানদণ্ড গড়তে হবে। তিনটি বিষয় আলাদা মনে হলেও, আসলে এগুলো একসুত্রে বাঁধা বাংলাদেশের গণতন্ত্র কোন পথে হাঁটবে, সেই প্রশ্নের উত্তরে এখন খোঁজার পালা। ইতিহাস বলে, বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতি বহুবার জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করেছে। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে নব্বইয়ের সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন সবকিছুর কেন্দ্রে ছিল ছাত্রসমাজ। তাই আজ ডাকসুর এই পরিবর্তন শুধু একটি শিক্ষাঙ্গনের ঘটনা নয়, বরং জাতীয় রাজনীতির দিকদর্শনও বটে।

ডাকসুর নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের উত্থান বাংলাদেশে এক নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মতো প্রভাবশালী সংগঠনগুলো এত বছর ধরে নিজেদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে ডাকসুকে ব্যবহার করেছে। কিন্তু এবার ফলাফল দেখিয়ে দিল, তরুণ প্রজন্ম আর কেবল পুরোনো মুখ ও স্লোগান দিয়ে তুষ্ট হতে চাইছে না। অনেক শিক্ষার্থী ভোট দিল শিবিরকে কেবল মতাদর্শের কারণে নয়, বরং বিদ্যমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিকল্প খুঁজে পাওয়ার ব্যর্থতার কারণে। এটি এক ধরনের ‘প্রতিবাদী ভোট’, যা বাংলাদেশের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সবসময় ডাকসুর মতো সংগঠনকে ব্যবহার করেছে ক্ষমতার প্রদর্শনী হিসেবে। ১৯৭৩ সালের প্রথম ডাকসু নির্বাচন থেকে শুরু করে ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন সব ক্ষেত্রেই এই দুই সংগঠন একচ্ছত্র আধিপত্য করেছে। কিন্তু এখন শিবিরের উত্থান তাদের জন্য বড় ধাক্কা। প্রশ্ন উঠছে, কেন এত বছর ক্ষমতা ভোগ করার পরও তারা তরুণ সমাজকে ধরে রাখতে পারল না? এটি মূলত ব্যর্থতার ফল যেখানে ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেদের স্বার্থকেন্দ্রিক রাজনীতিতে ব্যস্ত থেকেছে, অথচ শিক্ষার্থীদের প্রকৃত সমস্যাকে উপেক্ষা করেছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে পিয়ার পদ্ধতির প্রশ্ন উঠেছে। প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন বা ‘পিয়ার পদ্ধতি’ বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় বহুদিন ধরেই আলোচনায় আছে। ভারত, নেপাল, জার্মানি অন্য অনেক দেশে এ পদ্ধতি চালু আছে, যেখানে ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন করা হয়। বাংলাদেশে বারবার অভিযোগ উঠেছে বড় দুই দলের বাইরে ছোট দলগুলোর কোনো অস্তিত্ব টিকে থাকে না। ডাকসুর ফলাফল সেই দাবিকে নতুন করে সামনে এনেছে। তরুণরা মনে করছে, ভোটের অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হলে অন্তত সত্যিকারের গণতন্ত্রের পথ খুলবে। বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাস বিতর্কে ভরা। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালের ‘রাতের ভোট’ অভিযোগ সবকিছু মিলিয়ে সাধারণ মানুষ এখন ভোটের প্রতি আস্থাহীন। তাই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মনে তীব্র সংশয়। মানুষ ভাবছে, এবার কি সত্যিই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে, নাকি আবারও ক্ষমতার দাপটে একতরফা ফল বেরিয়ে আসবে? ভোটকেন্দ্রে মানুষের উপস্থিতি, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা সবকিছু মিলিয়েই এখন জাতির সামনে এক বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন।

শিক্ষার্থীরা শিবিরকে ভোট দিয়ে আসলে একটি বড় বার্তা দিয়েছে তারা পুরোনো শক্তিগুলির প্রতি আস্থা হারিয়েছে। অনেকে বলছে, এটি মতাদর্শের ভোট নয়, বরং পরিবর্তনের ডাক। এই প্রবণতা যদি জাতীয় নির্বাচনে প্রতিফলিত হয়, তবে দুই বড় দলের প্রভাব ক্রমশ ভেঙে পড়বে। তরুণ প্রজন্ম যেভাবে বিকল্প খুঁজছে, তা ভবিষ্যতে নতুন রাজনৈতিক শক্তির জন্ম দিতে পারে। শিবিরের উত্থান ক্ষমতাসীনদের জন্য নিছক একটি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং গভীর আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে। কারণ তারা জানে—শিক্ষাঙ্গনের বাতাস একদিন জাতীয় রাজনীতির ঝড়ে পরিণত হয়।

বাংলাদেশের ইতিহাসই বলে, ছাত্ররাজনীতি সবসময় বড় পরিবর্তনের সূতিকাগার। ১৯৮০-এর দশকে এরশাদের পতনের সময় যেমন ছাত্ররা রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল, ঠিক তেমনি আজকের শিক্ষাঙ্গনও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক মোড় ঘোরানোর ইঙ্গিত বহন করছে। এখন যদি তরুণ প্রজন্মের অসন্তোষ আরও বাড়তে থাকে, তাহলে শুধু ডাকসুর নির্বাচনের বার্তাই নয়, আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন থেকে শুরু করে আগামী বছরগুলোতেও সরকারকে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সরকার বুঝে গেছে যে এ আন্দোলন দমন করার মতো সহজ হবে না, কারণ এর পেছনে আছে বেকারত্ব, দুর্নীতি, ন্যায়বিচারের অভাব এবং পুরোনো রাজনীতির প্রতি ক্ষোভ।

বিরোধীরা শিবিরের অপ্রত্যাশিত সাফল্যকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার শুরু করেছে। তারা দাবি করছে এটি শুধু একটি শিক্ষার্থী সংগঠনের বিজয় নয়, বরং জনতার পরিবর্তনের ইচ্ছার প্রতিফলন। বিরোধী দলগুলোর যুক্তি, ডাকসুর নির্বাচনে শিবিরকে ভোট দেওয়া আসলে এক ধরনের ‘প্রতীকী বিদ্রোহ’। শিক্ষার্থীরা পুরানো রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে দেখিয়েছে তারা বিকল্প খুঁজছে। বিরোধীরা বলছে, যদি তরুণরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আস্থা হারিয়ে বিকল্প শক্তিকে বেছে নিতে পারে, তবে সাধারণ মানুষও ফেব্রুয়ারিতে একই পথে হাঁটতে পারে। এই বার্তা বিরোধীদের রাজনৈতিক প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তারা এখন রাস্তায় ও মিডিয়ায় বলছে, ‘যুবসমাজের এই পরিবর্তনই জাতীয় পরিবর্তনের পূর্বাভাস’। ফলে সরকারের জন্য শুধু ক্যাম্পাস নয়, জাতীয় পর্যায়েও চাপ বাড়ছে।

প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তোলা হয়েছে প্রশ্ন। বাংলাদেশের প্রতিটি নির্বাচনে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। ডাকসুর ভোটেও সেই অভিযোগ থেকে রেহাই মেলেনি। অনেক শিক্ষার্থী মনে করে, প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব ছাড়া শিবির এত বড় ফলাফল করতে পারত না। তবে এ ধারণা বিপরীত দিকেও কাজ করছে—সরকারপক্ষ বলছে প্রশাসন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছে বলেই নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পেরেছে। কিন্তু ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—প্রশাসন কি সত্যিই নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে? যদি প্রশাসন ব্যর্থ হয় বা কোনো পক্ষকে সুবিধা দেয়, তবে তার বৈধতা আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। জনগণের আস্থা ফেরানো এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রশাসন পক্ষপাতিত্ব করলে, যতই ভোটে অংশগ্রহণ হোক না কেন, তা গ্রহণযোগ্যতা হারাবে এবং রাজনৈতিক সঙ্কট আরও গভীর হবে।

বাংলাদেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ তরুণ। তারা মূলত কাজের সুযোগ, শিক্ষার মানোন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার ও অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি চায়। কিন্তু গত কয়েকটি নির্বাচনে তারা দেখেছে—প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়, ফলাফল আগেই নির্ধারিত, তাদের ভোটের কোনো মূল্য নেই। এ কারণে তরুণ সমাজ ধীরে ধীরে হতাশ হয়ে পড়েছে। ডাকসুর নির্বাচনে শিবিরের সাফল্য আসলে তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তারা জানিয়ে দিল—পুরোনো রাজনীতির ব্যর্থতায় তারা ক্লান্ত। বিকল্প শক্তিকে ভোট দিয়ে তারা বার্তা দিয়েছে যে, পরিবর্তনের দাবি এখন অগ্রাহ্য করা যাবে না। এই হতাশা যদি ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আরও বড় আকার ধারণ করে, তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন শক্তির উত্থান ঘটতে পারে, যা বাংলাদেশের রাজনীতির চিরাচরিত রূপকাঠামো ভেঙে দিতে পারে।

পিআর পদ্ধতি না এলে সংকট তৈরি করবে এমনটা অনেক রাজণীতিবীদ দাবী করছেন। বাংলাদেশে বর্তমানে চালু আছে ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট (ঋচঞচ) পদ্ধতি, যেখানে এক ভোট বেশি পেলেই প্রার্থী পুরো আসন জিতে যায়। এর ফলে ভোটের প্রকৃত অনুপাত সংসদে প্রতিফলিত হয় না। যেমন ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিরোধীরা লাখ লাখ ভোট পেয়েছিল, কিন্তু আসন পেয়েছিল হাতে গোনা কয়েকটি। এই ব্যবস্থাকে তরুণরা অন্যায্য মনে করছে। তারা বলছে—এটি জনগণের আসল ইচ্ছাকে বিকৃত করে। তাদের দাবি, যদি প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (চজ) বা অনুপাতে আসন বণ্টনের ব্যবস্থা চালু করা হয়, তবে প্রতিটি ভোটের মূল্য থাকবে এবং কোনো দল একচেটিয়া ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে পারবে না। কিন্তু সরকার যদি এ দাবিকে অগ্রাহ্য করে, তাহলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনও বিতর্কিত হবে এবং রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হবে।

বাংলাদেশের রাজনীতি মানেই রাস্তায় উত্তাপ। নির্বাচন এলেই সমাবেশ, মিছিল, অবরোধ, হরতাল শুরু হয়। এতে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে। ডাকসুর ফলাফল বিরোধী শিবিরকে নতুন আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। তারা রাস্তায় শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বড় রাজনৈতিক দলগুলোও পাল্টা কর্মসূচি দিতে প্রস্তুত। এর ফলে ফেব্রুয়ারির আগে সারা দেশে উত্তেজনা বাড়বে এবং সহিংসতার ঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষাঙ্গনের ছাত্ররা রাস্তায় নামলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। এই অস্থিরতা শুধু রাজনৈতিক পরিবেশ নয়, অর্থনৈতিক কার্যক্রম, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ককেও গভীরভাবে প্রভাবিত করবে।

বাংলাদেশের নির্বাচন সবসময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, যেখানে বলা হয়েছে—গণতন্ত্র নষ্ট করার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। জাতিসংঘও বারবার বলছে—বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রয়োজন। ডাকসুর নির্বাচনের ফল এখন আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনার খোরাক। বিদেশি কূটনীতিকরা বলছে—যদি শিক্ষার্থীরা বিকল্পকে বেছে নিতে পারে, তবে জাতীয় পর্যায়েও ভোটাররা তা-ই করবে। এর ফলে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়বে। আর যদি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে আবারও বিতর্ক তৈরি হয়, তবে বৈধতার সংকটের পাশাপাশি কূটনৈতিক সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহায়তাও ঝুঁকিতে পড়বে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বহু চাপের মুখে। মুদ্রাস্ফীতি লাগামছাড়া, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট তীব্র, রিজার্ভ পড়ছে প্রতিনিয়ত। সাধারণ মানুষ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় দিশেহারা। এর মধ্যে যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা যোগ হয়, তবে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিশ্চয়ই পিছিয়ে যাবে। ২০১৩-১৪ সালের রাজনৈতিক সহিংসতায় দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছিল কয়েক বিলিয়ন ডলার। শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়েছিল, রপ্তানি ব্যাহত হয়েছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে যদি সহিংসতা ছড়ায়, তবে সেই দৃশ্য আবারও ফিরে আসার প্রবল ঝুঁকি রয়েছে। অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব পড়লে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষই।

প্রশ্ন একটাই বাংলাদেশ সামনে কোন পথে হাঁটবে? ডাকসুর নির্বাচনে তরুণ প্রজন্ম স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে তারা পরিবর্তন চায়। এখন জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলো কি সেই বার্তা শুনবে? নাকি আবারও পুরোনো দখলদার রাজনীতির পুনরাবৃত্তি হবে? ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সেই প্রশ্নের উত্তর দেবে। যদি নির্বাচন স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হয়, তবে গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা ফিরতে শুরু করবে। কিন্তু যদি আবারও কারচুপি, প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্ব ও সহিংসতা দেখা দেয়, তবে বাংলাদেশ আরও অনিশ্চয়তায় ডুবে যাবে। বৈধতার সংকট বাড়বে, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে এবং দেশের ভেতরে জনগণের ক্ষোভ আরও উসকে উঠবে।

ডাকসুর ফল কেবল ক্যাম্পাসের ভোট নয়, বরং জাতীয় রাজনীতির আগাম ইঙ্গিত। তরুণরা যে পরিবর্তনের ডাক দিচ্ছে, তা উপেক্ষা করলে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অস্তিত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। ইতিহাস সাক্ষী, ছাত্ররাজনীতি বহুবার জাতীয় আন্দোলনের সূচনা করেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। এই ইস্যুগুলো আলাদা হলেও, মূল প্রশ্ন আসলে একটাই বাংলাদেশ কোন পথে হাঁটছে?

লেখক: সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।

পাঠকের মতামত:

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test