প্রবীণদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা: বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ ও বাংলাদেশ
.jpg)
ওয়াজেদুর রহমান কনক
আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস প্রতি বছর ১ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়, যার উদ্দেশ্য বয়স্ক জনগোষ্ঠীর অবদান, অভিজ্ঞতা এবং সমাজে তাদের ভূমিকা স্বীকৃতি দেওয়া ও তাদের অধিকার রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (UN General Assembly) 45/106 নং প্রস্তাব অনুযায়ী দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। বিশ্বজুড়ে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এই দিবসের গুরুত্ব দিন দিন আরও বেড়ে চলেছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে বৃদ্ধ জনগোষ্ঠী দ্রুত বাড়ছে। ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। প্রবীণদের স্বাস্থ্য, পেনশন, সামাজিক সুরক্ষা এবং মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা এখন এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা, জ্ঞান এবং সমাজে তাদের নৈতিক ভূমিকা জাতির জন্য অমূল্য। কিন্তু অনেকে আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন, সামাজিক নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস প্রবীণদের মর্যাদা রক্ষা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নীতি-প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় তাদের চাহিদা ও অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য অপরিহার্য।
এই দিবস শুধু স্মরণে রাখার জন্য নয়, বরং সমাজ ও সরকারের নীতি নির্ধারকরা প্রবীণদের জন্য কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সহায়তা, নিরাপদ জীবন ও সম্মানজনক অবস্থান নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিতে প্ররোচিত করে। বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ সমাজের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার গুরুত্ব, মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখা এবং সামগ্রিক উন্নয়নে তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়াই দিবসটির মূল প্রয়োজনীয়তা।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (UNFPA) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রবীণ মানুষের সংখ্যা ১.১ বিলিয়নের বেশি। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ২.১ বিলিয়ন। অর্থাৎ, তখন পৃথিবীর প্রতি ছয়জন মানুষের মধ্যে একজন প্রবীণ হবেন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর হার দ্রুত বাড়ছে, যা স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সামাজিক সুরক্ষার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে এশিয়া মহাদেশেই বিশ্ব প্রবীণ জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬০ শতাংশ বসবাস করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ২০% মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভোগেন, যার মধ্যে বিষণ্নতা, একাকিত্ব ও ডিমেনশিয়া উল্লেখযোগ্য। ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্রবীণ জনগোষ্ঠীর ৪৬% কোনো না কোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত, যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস বা শ্বাসযন্ত্রজনিত জটিলতা। উন্নত দেশগুলোতে গড় আয়ু বর্তমানে ৮০ বছরের কাছাকাছি, যেখানে নিম্ন আয়ের দেশে এটি ৬৫ বছরের নিচে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) ২০২২ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯.২ শতাংশ। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এ হার বেড়ে ২২ শতাংশে পৌঁছাবে। বাংলাদেশের গড় আয়ু বর্তমানে ৭২.৪ বছর। তবে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬২% মানুষ কোনো না কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এবং ৩৭% মানুষ একাকিত্বে ভোগেন। প্রবীণ নারীদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার তুলনামূলকভাবে বেশি, কারণ তাদের অধিকাংশেরই কোনো আর্থিক নিরাপত্তা বা পেনশন সুবিধা নেই।
জাতীয় প্রবীণ নীতি ২০১৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকার প্রবীণদের জন্য ভাতা, স্বাস্থ্যসেবা, আশ্রয়ন প্রকল্প ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বর্তমানে ৫০ লাখেরও বেশি প্রবীণ নাগরিক মাসিক ভাতা পান, যা বার্ষিক প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকার সরকারি ব্যয়ে পরিচালিত।
এই দিবসের বার্তা হলো— “বয়স কোনো সীমাবদ্ধতা নয়, বরং অভিজ্ঞতার এক মহামূল্যবান সম্পদ।” সমাজে প্রবীণদের প্রতি সম্মান, যত্ন ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা মানবিক দায়িত্বের অংশ। ২০২৫ সালের থিম “Older Persons in a Changing World: Resilience and Inclusion” প্রবীণ জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি, সক্রিয়তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।
বিশ্বব্যাপী এই দিবস উপলক্ষে সেমিনার, সম্মেলন, নীতি সংলাপ, স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প এবং সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। উন্নত দেশগুলোতে প্রবীণদের জন্য ‘Active Aging Program’ চালু রয়েছে, যেখানে তারা স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, শখের চর্চা ও মানসিক প্রশান্তির সুযোগ পান। বাংলাদেশেও এই দিবসটিতে সরকার, এনজিও ও সামাজিক সংগঠনগুলো প্রবীণ নাগরিকদের সম্মাননা প্রদান, চিকিৎসাসেবা ও সচেতনতা কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে।
এই দিবস মানবতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের এক প্রতীক, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়— প্রতিটি প্রবীণ মানুষ সমাজের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার এবং তাদের মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।
নিচে *বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবসের গুরুত্ব* তুলে ধরা হলো — আধুনিক চলমান প্রেক্ষাপট, সমস্যাবলী ও বাস্তব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে:
বাংলাদেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ১৫.৩ মিলিয়ন মানুষ রয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯.২৮ %। ২০১১ সালের আদমশুমারিতে এই হার ছিল প্রায় ৭.৪৮ %, অর্থাৎ মাত্র এক দশকে প্রবীণ মানুষের অংশ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
অন্যান্য উৎস অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে ৬০ বছর ও তার অধিক বয়সের মানুষের অংশ প্রায় ৯.৫ %–এ পৌঁছেছে। এই বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে, ২০৫০ সালের মধ্যেই ৬০+ বয়সের মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩৬ মিলিয়ন বা মোট জনসংখ্যার ~২২ % হতে পারে। সাধারণভাবে, বৃদ্ধির সঙ্গে জীবন-উমের চাপ, দীর্ঘমেয়াদী রোগ, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসহ স্বাস্থ্যব্যবস্থার চাহিদা বাড়বে। একটি বিশ্বব্যাংক নিবন্ধ জানায়, ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রতি ১০ জনে ১ জন ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীর হবে, অর্থাৎ প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত জনসংখ্যার অংশ হয়ে উঠছে।
সরকার ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ‘বয়স্কভাতা’ কর্মসূচি চালু করে প্রবীণদের সামাজিক সুরক্ষা দিতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে, প্রতিটি ইউনিয়নের প্রত্যেক ওয়ার্ডে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলা — মোট ১০ জন দরিদ্র বয়োজ্যেষ্ঠকে মাসে ১০০ টাকা ভাতা দেওয়া হতো। ধীরে ধীরে এই কর্মসূচি সম্প্রসারিত হয়েছে এবং বর্তমানে শহর ও পৌরসভাগুলোও এতে অন্তর্ভুক্ত।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই ভাতা কর্মসূচির আওতায় ৫৮ লাখ ০১ হাজার বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে মাসিক ৬০০ টাকা ভাতা প্রদান করা হচ্ছে এবং এ খাতে বাজেট বরাদ্দ রয়েছে ৪,২০৫.৯৬ কোটি টাকা। ভবিষ্যতে প্রকল্প অনুযায়ী ভাতাধারীর সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। নির্ধারিত শর্ত অনুযায়ী, পুরুষদের ক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে ৬৫ বছর ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬২ বছর হতে হবে ভাতা প্রাপ্তির জন্য, এবং প্রার্থীর আয় সর্বোচ্চ একটি নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকতে হবে। সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় থেকে ডাটাবেস গঠনের প্রচেষ্টা চলছে এবং G2P (Government-to-Person) পদ্ধতির মাধ্যমে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ও এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবহৃত হচ্ছে।
তবে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে: প্রায় ৩০ % বয়োজ্যেষ্ঠ ও ৩৩ % বিধবা ভাতা প্রাপকেরাই প্রকৃত প্রাপ্যতা অর্জন করতে পারছেন না। অনেক ভাতা প্রাপক তাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্বলতা, স্থানীয় প্রশাসনিক জটিলতা ও আর্থ-সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ভাতা গ্রহণে অসুবিধা অনুভব করেন। কিছু অঞ্চল বিশেষভাবে উন্নতি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, চাঁদপুর জেলার সমাজসেবা অফিস জানায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জেলা জুড়ে ~১,১৬,৭৪২ প্রবীণকে ভাতা দেওয়া হয়েছে। শেরপুর জেলা ভর্তি প্রকল্পে ৯৯.৯৫ % তহবিল সফলভাবে বিতরণ করা হয়েছে।
বয়োজ্যেষ্ঠদের স্বাস্থ্য ও বর্তমান রোগের প্রেক্ষিতে, অধিকাংশ প্রবীণরা দীর্ঘমেয়াদী রোগে ভুগে থাকেন এবং তাদের চিকিৎসার জন্য খরচ সীমিত। একটি সামীক্ষায় দেখা গেছে, ভাতা প্রাপকের মধ্যে ৬০.৬ % মানুষ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগেছেন এবং ৯৬.১ % ভাতা তাদের চিকিৎসায় ব্যয় করেছেন।
এই পরিসংখ্যান ও বাস্তবতার আলোকে বলা যায়, আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস বাংলাদেশের জন্য কেবল একটি কর্মসূচি নয় — এটি জনসচেতনতা ও নীতিমূলক সংস্কারের এক প্রয়োজনীয় মাইলফলক। বৃদ্ধির ধারায় সমাজ ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে অভিযোজিত করতে হবে — স্বাস্থ্যসেবা, পেনশন ও সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। প্রবীণদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করাই হবে জাতির নৈতিক দায়িত্ব। তাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সমাজের একটি অমূল্য সম্পদ, যা সঠিক সমর্থন পেলে প্রজন্ম-পরবর্তী উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে।
বাংলাদেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৫.৩ মিলিয়ন, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯.২৮ %। ২০১১ সালের তুলনায় এই হার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ৬০+ বয়সী মানুষের সংখ্যা ৩৬ মিলিয়ন বা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২২ % হতে পারে। প্রবীণদের স্বাস্থ্য, দীর্ঘমেয়াদী রোগ, সামাজিক নিরাপত্তা এবং জীবনযাত্রার মান নিশ্চিত করা এখন গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।
এছাড়া, বৃদ্ধির সঙ্গে জীবন-উমের চাপ, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও আর্থসামাজিক দুর্বলতা প্রবীণদের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। সরকারের বয়স্কভাতা কর্মসূচি ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা উদ্যোগ সহায়তা দিচ্ছে, তবে এখনও অনেক প্রবীণ প্রাপ্য সুবিধা পাচ্ছেন না। এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস কেবল একটি স্মরণীয় দিন নয়, বরং এটি সমাজ ও নীতিনির্ধারকদের কাছে আহ্বান যে, প্রবীণদের মর্যাদা, স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সুরক্ষা এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা দেশের সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব। বিশ্বব্যাপী অনেক দেশ প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। জাপান, যা বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ জনসংখ্যার দেশ, সেখানে প্রবীণদের জন্য সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা, বৃদ্ধাশ্রম, এবং কমিউনিটি-ভিত্তিক সহায়তা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলিতে যেমন জার্মানি, সুইডেন ও নেদারল্যান্ডসে পেনশন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা হয়েছে এবং বাড়িতে বৃদ্ধদের যত্ন দেওয়ার জন্য সরকারি ভর্তুকি, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সহায়তা প্রদান করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে হেল্থ কেয়ার ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন মেডিকেয়ার ও সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা বৃদ্ধদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অস্ট্রেলিয়া, ক্যানাডা ও নরওয়েতে প্রবীণদের জন্য কমিউনিটি সেন্টার, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা, ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ এবং চাকরি পুনঃপ্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়, যাতে তারা সমাজে সক্রিয় থাকতে পারে। এছাড়া ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশ প্রবীণ ভাতা, স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা, বিশেষ খাদ্য ও সেবা বিতরণ, এবং প্রবীণদের জন্য আইনগত সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে।
অন্যান্য উদাহরণ হিসেবে, ব্রিটেন ও ফ্রান্সে বৃদ্ধদের সামাজিক একাকীত্ব কমাতে কমিউনিটি প্রোগ্রাম, স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ বৃদ্ধদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা নিশ্চিত করে এবং তাদের জীবনের মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ইতোমধ্যেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
সরকার ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ‘বয়স্কভাতা’ কর্মসূচি চালু করে প্রবীণদের সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের উদ্যোগ নেয়। প্রাথমিকভাবে প্রতি ইউনিয়নের নির্দিষ্ট সংখ্যক দরিদ্র প্রবীণ মাসিক ভাতা পান। ধীরে ধীরে এই কর্মসূচি সম্প্রসারিত হয়ে শহর ও পৌরসভায়ও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বর্তমানে ৫৮ লাখের বেশি বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে মাসিক ৬০০ টাকা ভাতা প্রদান করা হচ্ছে এবং এ খাতে বাজেট বরাদ্দ রয়েছে ৪,২০৫.৯৬ কোটি টাকা।
শর্ত অনুযায়ী, পুরুষদের জন্য ন্যূনতম বয়স ৬৫ এবং মহিলাদের ৬২ বছর হতে হবে, এবং প্রার্থীর আয় নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকতে হবে। ভাতা বিতরণ G2P (Government-to-Person) পদ্ধতির মাধ্যমে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ও এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবহার করে কার্যকর করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা খাতে কিছু উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রবীণদের জন্য বিশেষ চিকিৎসা সুবিধা, মেডিকেল চেকআপ ও দীর্ঘমেয়াদী রোগ ব্যবস্থাপনা শুরু হয়েছে। এছাড়া, কিছু এনজিও ও সামাজিক সংগঠন প্রবীণদের জন্য কমিউনিটি-ভিত্তিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করছে।
এছাড়া প্রবীণদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে কমিউনিটি সেন্টার ও সামাজিক কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। কিছু জেলা, যেমন চাঁদপুর ও শেরপুর, ভাতা বিতরণ ও স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে কার্যকর মডেল স্থাপন করেছে।
সব মিলিয়ে, বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীর সামাজিক, আর্থিক, স্বাস্থ্যগত এবং মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে, যদিও আরও বিস্তৃত পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের প্রয়োজন আছে।
আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, প্রবীণরা কেবল অতীতের অভিজ্ঞতার ধারক নয়, তারা সমাজের অমূল্য সম্পদ। তাদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা শুধুমাত্র নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও অপরিহার্য। বিশ্বব্যাপী দেশগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি ও নীতিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রবীণদের কল্যাণ নিশ্চিত করছে—যেমন স্বাস্থ্যসেবা, পেনশন, সামাজিক সহায়তা, মানসিক ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি।
বাংলাদেশে বয়স্কভাতা, সামাজিক সেবা ও কমিউনিটি ভিত্তিক উদ্যোগ এই ধারাকে অনুসরণ করছে, তবে আরও ব্যাপক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন প্রয়োজন। প্রবীণদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা হল তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা, স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করা, আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সামাজিক মর্যাদা রক্ষা করা। প্রবীণরা সমাজের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ভাণ্ডার, এবং তাদের প্রতি সঠিক সহায়তা ও সম্মান প্রদানের মাধ্যমে আমরা একটি মানবিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উন্নত সমাজ গঠন করতে পারি।
আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস প্রতি বছর ১ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়, যার উদ্দেশ্য বয়স্ক জনগোষ্ঠীর অবদান, অভিজ্ঞতা এবং সমাজে তাদের ভূমিকা স্বীকৃতি দেওয়া ও তাদের অধিকার রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (UN General Assembly) 45/106 নং প্রস্তাব অনুযায়ী দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। বিশ্বজুড়ে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এই দিবসের গুরুত্ব দিন দিন আরও বেড়ে চলেছে।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (UNFPA) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রবীণ মানুষের সংখ্যা ১.১ বিলিয়নের বেশি। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ২.১ বিলিয়ন। অর্থাৎ, তখন পৃথিবীর প্রতি ছয়জন মানুষের মধ্যে একজন প্রবীণ হবেন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর হার দ্রুত বাড়ছে, যা স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সামাজিক সুরক্ষার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে এশিয়া মহাদেশেই বিশ্ব প্রবীণ জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬০ শতাংশ বসবাস করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ২০% মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভোগেন, যার মধ্যে বিষণ্নতা, একাকিত্ব ও ডিমেনশিয়া উল্লেখযোগ্য। ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্রবীণ জনগোষ্ঠীর ৪৬% কোনো না কোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত, যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস বা শ্বাসযন্ত্রজনিত জটিলতা। উন্নত দেশগুলোতে গড় আয়ু বর্তমানে ৮০ বছরের কাছাকাছি, যেখানে নিম্ন আয়ের দেশে এটি ৬৫ বছরের নিচে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) ২০২২ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯.২ শতাংশ। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এ হার বেড়ে ২২ শতাংশে পৌঁছাবে। বাংলাদেশের গড় আয়ু বর্তমানে ৭২.৪ বছর। তবে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬২% মানুষ কোনো না কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এবং ৩৭% মানুষ একাকিত্বে ভোগেন। প্রবীণ নারীদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার তুলনামূলকভাবে বেশি, কারণ তাদের অধিকাংশেরই কোনো আর্থিক নিরাপত্তা বা পেনশন সুবিধা নেই।
জাতীয় প্রবীণ নীতি ২০১৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকার প্রবীণদের জন্য ভাতা, স্বাস্থ্যসেবা, আশ্রয়ন প্রকল্প ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বর্তমানে ৫০ লাখেরও বেশি প্রবীণ নাগরিক মাসিক ভাতা পান, যা বার্ষিক প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকার সরকারি ব্যয়ে পরিচালিত।
এই দিবসের বার্তা হলো— “বয়স কোনো সীমাবদ্ধতা নয়, বরং অভিজ্ঞতার এক মহামূল্যবান সম্পদ।” সমাজে প্রবীণদের প্রতি সম্মান, যত্ন ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা মানবিক দায়িত্বের অংশ। ২০২৫ সালের থিম “Older Persons in a Changing World: Resilience and Inclusion” প্রবীণ জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি, সক্রিয়তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।
বিশ্বব্যাপী এই দিবস উপলক্ষে সেমিনার, সম্মেলন, নীতি সংলাপ, স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প এবং সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। উন্নত দেশগুলোতে প্রবীণদের জন্য ‘Active Aging Program’ চালু রয়েছে, যেখানে তারা স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, শখের চর্চা ও মানসিক প্রশান্তির সুযোগ পান।
বাংলাদেশেও এই দিবসটিতে সরকার, এনজিও ও সামাজিক সংগঠনগুলো প্রবীণ নাগরিকদের সম্মাননা প্রদান, চিকিৎসাসেবা ও সচেতনতা কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে। এই দিবস মানবতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের এক প্রতীক, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়— প্রতিটি প্রবীণ মানুষ সমাজের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার এবং তাদের মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।
বাংলাদেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ১৫.৩ কোটি (১৫.৩ মিলিয়ন) মানুষ রয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯.২৮ % (বা ০.০৯২৮ অংশ)। The Daily Star ২০১১ সালের আদমশুমারিতে এই হার ছিল ৭.৪৮ %, অর্থাৎ মাত্র এক দশকে প্রবীণ মানুষের অংশ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। The Daily Star
যৌথভাবে অন্যান্য উৎস অনুযায়ী বলা হয়, ২০২৩ সালে দেশে ৬০ বছর ও তার অধিক বয়সের মানুষের অংশ ৯.৫ %–এ পৌঁছেছে।
population-trends-asiapacific.org এই বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে, ২০৫০ সালের মধ্যেই ৬০+ বয়সের মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩৬ মিলিয়ন বা দেশে মোট জনসংখ্যার ২২ % হতে পারে। The Daily Star সাধারণভাবে, বৃদ্ধির সঙ্গে জীবন-উমের চাপ, দীর্ঘমেয়াদী রোগ (non-communicable diseases), শারীরিক ও মানসিক রোগসহ স্বাস্থ্যব্যবস্থার চাহিদা বাড়বে। একটি বিশ্বব্যাংক নিবন্ধ জানায়: “২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রতি ১০ জনে ১ জন ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীর হবে” — অর্থাৎ প্রবীণ জনগোষ্ঠী দ্রুত জনসংখ্যার অংশ হয়ে উঠবে। World Bank সরকার ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে ‘বয়স্কভাতা’ কর্মসূচি চালু করে প্রবীণদের সামাজিক সুরক্ষা দিতে শুরু করে।
প্রাথমিকভাবে, প্রতিটি ইউনিয়নের প্রত্যেক ওয়ার্ডে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলা — মোট ১০ জন দরিদ্র বয়োজ্যেষ্ঠকে মাসে ১০০ টাকা ভাতা দেওয়া হতো। ধীরে ধীরে এই কর্মসূচি সম্প্রসারিত হয়েছে এবং বর্তমানে শহর ও পৌরসভাগুলোও এতে অন্তর্ভুক্ত।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই ভাতা কর্মসূচির আওতায় ৫৮ লাখ ০১ হাজার বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে মাসিক ৬০০ টাকা ভাতা প্রদান করা হচ্ছে এবং এ খাতে বাজেট বরাদ্দ রয়েছে ৪,২০৫.৯৬ কোটি টাকা।
ভবিষ্যতে প্রকল্প অনুযায়ী ভাতাধারীর সংখ্যা আরও বাড়িয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। The Financial Express
নির্ধারিত শর্ত অনুযায়ী, পুরুষদের ক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে ৬৫ বছর ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬২ বছর হতে হবে ভাতা প্রাপ্তির জন্য, এবং প্রার্থীর আয় সর্বোচ্চ একটি নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকতে হবে।
সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় থেকে ডাটাবেস গঠনের প্রচেষ্টা চলছে এবং G2P (Government-to-Person) পদ্ধতির মাধ্যমে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ও এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবহৃত হচ্ছে।
তবে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে: CPD-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৩০ % বয়োজ্যেষ্ঠ ও ৩৩ % বিধবা ভাতা প্রাপকেরাই প্রকৃত প্রাপ্যতা অর্জন করতে পারছেন না। অনেক ভাতা প্রাপক তাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্বলতা, স্থানীয় প্রশাসনিক জটিলতা ও আর্থ-সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ভাতা গ্রহণে অসুবিধা অনুভব করেন। কিছু অঞ্চল বিশেষভাবে উন্নতি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, চাঁদপুর জেলার সমাজসেবা অফিস জানায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জেলা জুড়ে ~১,১৬,৭৪২ প্রবীণকে ভাতা দেওয়া হয়েছে।
সৌদর্যপূর্ণ হিসেবে, শেরপুর জেলা ভর্তি প্রকল্পে ৯৯.৯৫ % তহবিল সফলভাবে বিতরণ করা হয়েছে।
বয়োজ্যেষ্ঠদের স্বাস্থ্য ও বর্তমান রোগের প্রেক্ষিতে, একটি সমাজগত বাস্তবতা হলো — অধিকাংশ প্রবীণরা দীর্ঘমেয়াদী রোগে ভুগে থাকেন এবং তাদের চিকিৎসার জন্য খরচ স্বল্প থাকে। একটি সামীক্ষায় দেখা গেছে, ভাতা প্রাপকের মধ্যে ৬০.৬ % মানুষ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগেছেন এবং ৯৬.১ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি তাদের প্রাপ্ত ভাতার বেশিরভাগই চিকিৎসা খরচে ব্যয় করেছেন।
এই পরিসংখ্যান ও বাস্তবতার আলোকে বলা যায়, আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস বাংলাদেশের জন্য কেবল একটি কর্মসূচি নয় — এটি জনসচেতনতা ও নীতিমূলক সংস্কারের এক প্রয়োজনীয় মাইলফলক। বৃদ্ধির ধারায় সমাজ ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে অভিযোজিত করতে হবে — স্বাস্থ্যসেবা, পেনশন ও সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। প্রবীণদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করাই হবে জাতির নৈতিক দায়িত্ব। তাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সমাজের একটি অমূল্য সম্পদ, যা সঠিক সমর্থন পেলে প্রজন্ম-পরবর্তী উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী।
পাঠকের মতামত:
- ৩০০ টাকা ছাড়াল মরিচ, স্বস্তি নেই মাছ-মুরগি-সবজিতে
- ‘সমঝোতা হলে ১০০ আসনও ছাড়তে পারে জামায়াত’
- পাংশায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর আত্মহত্যা
- গানেই তাঁদের অমরত্ব: উপমহাদেশের চার বাঙালি
- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ধর্মভাবনা
- উৎসবের দিনে সড়কে প্রাণ হারালো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী
- সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ী নিহত
- প্রবীণদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা: বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ ও বাংলাদেশ
- লাইসেন্সবিহীন এফ.ভি. কোহিনুর-২ বারবার সাগরে, নীরব মৎস্য দপ্তর
- সুন্দরবনে বনদস্যু বাহিনীর আন্তানা থেকে অপহৃত ৪ জেলে উদ্ধার
- রাষ্ট্রপতির সাথে হিন্দু মহাজোটের শুভেচ্ছা বিনিময়
- সাতক্ষীরা শহরে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তিন বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি
- আশাশুনিতে পূজা মন্ডপে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু
- ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনগত কোন বাধা নেই’
- কাপাসিয়ায় মন্দির ও শ্মশান ঘাটের জমিদাতাকে সংর্বধনা
- ‘ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা পাশে থাকব’
- এক সপ্তাহে ডেঙ্গুতে ১৪ জনের মৃত্যু
- দশমীতে অশ্রুসিক্ত নয়নে ভক্তরা বিদায় জানালেন দেবীদুর্গাকে
- দেশীয় মাছের অস্তিত্ব সংকটে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী চারান বিল
- ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই
- পাকিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে নারী বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের
- ধামরাইয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ২০৪টি পূজামন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন
- পাংশায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শান্তি পূর্ণ ভাবে শারদীয় দুর্গা পুজা সম্পন্ন
- মুক্তিবাহিনী ধনবাড়ীতে অবস্থানরত পাকসেনাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়
- চোখের জলে প্রতিমা বিসর্জন, শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
- রাহুল রাজের প্রেমের কবিতা
- বরিশালে ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
- আটলান্টায় ফোবানা সম্মেলন পরিণত হলো পারিবারিক অনুষ্ঠানে
- মজাদার তালের বড়া বানাবেন যেভাবে
- মে দিবসের কবিতা
- বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস : লক্ষণ ও প্রতিরোধে করণীয়
- লাইসেন্সবিহীন এফ.ভি. কোহিনুর-২ বারবার সাগরে, নীরব মৎস্য দপ্তর
- সাতক্ষীরা শহরে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তিন বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি
- অস্কারের মঞ্চে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
- বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশন শুরু আজ
- গোলমরিচ ও তেজপাতার গল্প
- সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যবসায়ী নিহত
- আশাশুনিতে পূজা মন্ডপে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু
- টানা ৮ দিন স্যাটেলাইট সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা
- নারী ব্যালন ডি’অরে হ্যাটট্রিক স্পেনের বোনমাতির
- নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ: নির্বাচন, অভ্যন্তরীণ সংকট ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতি
- আগুনে পুড়ে গেলে তাৎক্ষণিক যা করবেন
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- সুন্দরবনে বনদস্যু বাহিনীর আন্তানা থেকে অপহৃত ৪ জেলে উদ্ধার
- অবশেষে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল
০৩ অক্টোবর ২০২৫
- গানেই তাঁদের অমরত্ব: উপমহাদেশের চার বাঙালি
- প্রবীণদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা: বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ ও বাংলাদেশ