খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের প্রেক্ষাপট

ওয়াজেদুর রহমান কনক
বাংলাদেশের অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি—সবকিছুর ভিত্তি কৃষি ও খাদ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। খাদ্য শুধু মানবজীবনের মৌলিক চাহিদা নয়, বরং এটি একটি দেশের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও স্থিতিশীলতার প্রতীক। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বারবার প্রমাণ করেছে, খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণতা কোনো কল্পনা নয়, বরং এটি কঠোর পরিশ্রম, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন ও সামাজিক ন্যায্যতার ফল। কিন্তু বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষিজমির ক্রমহ্রাস, অতিরিক্ত জনসংখ্যা, পুষ্টিহীনতা এবং খাদ্যের অপচয়—এই বহুমাত্রিক সংকট আজ বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) খাদ্য নিরাপত্তাকে সংজ্ঞায়িত করেছে এমনভাবে, যেখানে প্রত্যেক মানুষ যেকোনো সময় পর্যাপ্ত, নিরাপদ, পুষ্টিকর ও সাশ্রয়ী খাদ্য প্রাপ্তিতে সক্ষম হয়, যাতে তারা সক্রিয় ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে। এই সংজ্ঞার আলোকে খাদ্য নিরাপত্তা কেবল খাদ্য উৎপাদনের বিষয় নয়, বরং এটি জড়িত প্রাপ্যতা, প্রবেশাধিকার, ব্যবহার এবং স্থিতিশীলতার সঙ্গে।
বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যশস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও এর সঙ্গে সমানভাবে বাড়ছে জলবায়ুজনিত ঝুঁকি, মাটির উর্বরতা হ্রাস, পানির সংকট এবং কৃষিজমির বাণিজ্যিক দখল। অন্যদিকে, গ্রামীণ দারিদ্র্য, শিশু ও নারী অপুষ্টি, এবং শহুরে খাদ্য বৈষম্য খাদ্যনিরাপত্তার মানচিত্রে নতুন বাস্তবতা সৃষ্টি করছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে—আমরা কি কেবল খাদ্যের পরিমাণে স্বয়ংসম্পূর্ণ, নাকি পুষ্টি ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রেও নিরাপদ?
এই গবেষণার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার বর্তমান অবস্থা, এর টেকসই কৃষি উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা। এর মাধ্যমে বোঝা যাবে, কীভাবে বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি জলবায়ু সহনশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর এক নতুন খাদ্যব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হতে পারে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ন্যায্য, নিরাপদ ও টেকসই ভিত্তি গড়ে তুলবে।
খাদ্য নিরাপত্তা মানবজীবনের অন্যতম মৌলিক অধিকার, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG-2: Zero Hunger)-এর কেন্দ্রে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের সামাজিক অগ্রগতি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদা—সবকিছুই নির্ভর করছে খাদ্যের প্রাপ্যতা, প্রবেশাধিকার, ব্যবহার ও স্থিতিশীলতার ওপর। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) ১৯৭৪ সালে খাদ্য নিরাপত্তার চারটি স্তম্ভ নির্ধারণ করে—প্রাপ্যতা (availability), প্রবেশাধিকার (accessibility), ব্যবহার (utilization) এবং স্থিতিশীলতা (stability)। এই চারটি দিকের সমন্বয়ই একটি দেশকে খাদ্যনিরাপদ করে তোলে।
বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর ভয়াবহ খাদ্য সংকট ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের মধ্য দিয়ে খাদ্য নিরাপত্তার গুরুত্ব গভীরভাবে উপলব্ধি করেছে। গত পাঁচ দশকে কৃষি প্রযুক্তির বিস্তার, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এবং নীতি সহায়তার মাধ্যমে দেশটি খাদ্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবুও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা এখনো এক জটিল চ্যালেঞ্জ, যা জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষিজমির হ্রাস, ও অপুষ্টির বৈষম্যের সঙ্গে যুক্ত।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS)-এর ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের বার্ষিক খাদ্যশস্য উৎপাদন ৪.১ কোটি টনে পৌঁছেছে, যা ২০০০ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি নির্দেশ করে (BBS, 2024)। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়, মাছ উৎপাদনে চতুর্থ এবং সবজি উৎপাদনে সপ্তম স্থানে (FAO, 2023)। কৃষিক্ষেত্রে সরকারের কৃষিঋণ, সার ভর্তুকি, ও আধুনিক বীজ প্রযুক্তির প্রসার এ প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করেছে।
তবে প্রাপ্যতার এই সফলতার পেছনে লুকিয়ে রয়েছে জমি হারানোর সংকট। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (DAE)-এর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৩ সালে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ৯৫ লাখ হেক্টর, যা ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েছে ৮০ লাখ হেক্টরে (DAE, 2023)। প্রতিবছর প্রায় ১ শতাংশ হারে কৃষিজমি আবাসিক ও শিল্পক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। এই প্রবণতা খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থার স্থায়িত্বে দীর্ঘমেয়াদে বড় হুমকি তৈরি করছে।
খাদ্যের পর্যাপ্ত উৎপাদন সত্ত্বেও বাংলাদেশে খাদ্যপ্রাপ্তির বৈষম্য এখনো বিদ্যমান। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP)-এর ২০২3 সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের প্রায় ২ কোটি মানুষ এখনো প্রতিদিন পর্যাপ্ত খাদ্য পায় না (WFP, 2023)। UNICEF-এর ২০২3 সালের তথ্য অনুযায়ী, ৫ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে ২৭.৮% অপুষ্টিতে ভুগছে, এবং ২২% শিশু বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতার (UNICEF, 2023)। নারীদের মধ্যে আয়রন ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা এখনো প্রায় ৪১%।
শহরাঞ্চলে দ্রুত নগরায়ণ ও খাদ্যের বাণিজ্যিকীকরণের ফলে পুষ্টিহীন প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রবণতা বাড়ছে। অপরদিকে, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে দরিদ্র পরিবারগুলো খাদ্যে ব্যয় করতে বাধ্য হয় তাদের মোট আয়ের ৬০% পর্যন্ত, যা আয় বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে (FAO & BBS, 2022)।
বাংলাদেশের কৃষি প্রধানত প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল—বিশেষত পানি, মাটি ও আবহাওয়ার স্থিতিশীলতা। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন এখন কৃষির সবচেয়ে বড় হুমকি। Intergovernmental Panel on Climate Change (IPCC)-এর ষষ্ঠ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে (AR6, 2023) উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা ২০০০ সালের তুলনায় ২৬% বেড়েছে, যা ধান, ডাল ও সবজি উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
এছাড়া, ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ১.৫° সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ১৫% পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে (World Bank, 2023)। এ অবস্থায় টেকসই কৃষি পদ্ধতি—যেমন জলবায়ু সহনশীল বীজ, জৈব সার, সৌরচালিত সেচ, এবং পানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন—অপরিহার্য। FAO ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রকল্প “Climate Resilient Sustainable Agriculture (CRSA)” বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলে ৩৫টি পাইলট প্রকল্প পরিচালনা করছে, যা ভবিষ্যতের কৃষি পরিকল্পনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মডেল হিসেবে কাজ করছে (FAO, 2024)।
ডিজিটাল কৃষি বাংলাদেশে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। কৃষি তথ্য অ্যাপস, স্যাটেলাইটভিত্তিক আবহাওয়া পূর্বাভাস, এবং ই-কমার্সের মাধ্যমে কৃষকরা এখন বাজারের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হচ্ছে। “A2i Smart Agriculture Initiative” এবং “Krishi Call Center (16123)” কৃষকদের রিয়েল-টাইম পরামর্শ প্রদান করছে, যা ফসলের উৎপাদন পরিকল্পনা, সংরক্ষণ ও বিপণনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে (ICT Division, 2023)।
তবে খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এখনো বড় সমস্যা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় ৩০% নষ্ট হয় সংরক্ষণের অভাবে, যা বছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক ক্ষতির সমান (MoA, 2023)। উন্নত কোল্ড চেইন অবকাঠামো, প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বিনিয়োগ, এবং গ্রামীণ খাদ্যভান্ডার নির্মাণ এই ক্ষতি কমাতে পারে।
বাংলাদেশ সরকার “National Food and Nutrition Security Policy (2023–2030)” বাস্তবায়নের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তাকে দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোয় এনেছে। এই নীতিমালায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, পুষ্টি শিক্ষা, এবং নারী কৃষকদের ক্ষমতায়নকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, SDG-2 (Zero Hunger) অর্জনের লক্ষ্যে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।
বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদন, বণ্টন, পরিবেশ ও প্রযুক্তির মধ্যে সমন্বিত ভারসাম্য আনতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা এখন আর কেবল কৃষির প্রশ্ন নয়, এটি এক মানবাধিকার, এক সামাজিক ন্যায়বিচার।
খাদ্য সংগ্রামের ইতিহাস আমাদের শেখায়—ক্ষুধা থেমে থাকে না, কৃষকের হাত থেমে থাকে না, কলম থেমে থাকে না। টেকসই কৃষি উন্নয়ন কেবল অর্থনৈতিক লক্ষ্য নয়, এটি এক নৈতিক দায়িত্ব—ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন, স্বাস্থ্য ও মানবিক মর্যাদা রক্ষার অঙ্গীকার।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং মানবিক মর্যাদার ভিত্তি হিসেবে খাদ্য নিরাপত্তা এক অনস্বীকার্য উপাদান। স্বাধীনতার পর থেকে খাদ্য অর্জন ও আত্মনির্ভরতার সংগ্রাম ছিল জাতীয় অগ্রাধিকারের অন্যতম শীর্ষ লক্ষ্য। আজ বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করলেও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষিজমির ক্রমহ্রাস, নগরায়ণ, অপুষ্টি, এবং বণ্টন ব্যবস্থার বৈষম্য—এসবই এখন নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা বলতে শুধু পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন বোঝায় না; বরং তা বোঝায় সকল মানুষের জন্য পর্যাপ্ত, পুষ্টিকর, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী খাদ্যের নিশ্চয়তা। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) খাদ্য নিরাপত্তার চারটি স্তম্ভ নির্ধারণ করেছে—প্রাপ্যতা (availability), প্রবেশাধিকার (accessibility), ব্যবহার (utilization) এবং স্থিতিশীলতা (stability)। এই চারটি দিকের প্রতিটিতেই বাংলাদেশের অগ্রগতি যেমন দৃশ্যমান, তেমনি সংকটও বহুমাত্রিক।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS)-এর ২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ৪ কোটি টন ছাড়িয়েছে। ধান, গম, ভুট্টা, সবজি ও মাছ উৎপাদনে গত দুই দশকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বাংলাদেশ এখন ধান ও মৎস্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ৫ দেশের মধ্যে অন্যতম। কৃষির আধুনিকায়নে সরকারি পদক্ষেপ—যেমন উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি ভর্তুকি, এবং ডিজিটাল কৃষি তথ্যসেবা—খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
তবে এই অগ্রগতির পাশাপাশি কৃষিজমির পরিমাণ বছরে গড়ে ১ শতাংশ হারে হ্রাস পাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (DAE) তথ্যানুযায়ী, ১৯৮৩ সালে দেশে আবাদযোগ্য জমি ছিল প্রায় ৯৫ লাখ হেক্টর, যা ২০২৩ সালে কমে ৮০ লাখ হেক্টরে নেমে এসেছে। নগরায়ণ, শিল্পায়ন এবং অবকাঠামো নির্মাণের কারণে এই জমি হারানোর প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে খাদ্য উৎপাদনের উপর চাপ বাড়ছে এবং গ্রামীণ জীবিকার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।
বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদনের বৃদ্ধি হলেও এর সুফল সবার কাছে পৌঁছায়নি সমানভাবে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP)-এর ২০২3 সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের প্রায় ২ কোটি মানুষ এখনো পর্যাপ্ত খাদ্য পায় না। UNICEF-এর তথ্য অনুযায়ী, ৫ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে ২৭.৮ শতাংশ এখনো অপুষ্টিতে ভুগছে এবং ২২ শতাংশ শিশুর উচ্চতা বয়স অনুযায়ী কম। নারীদের মধ্যে আয়রন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ঘাটতি ব্যাপক, যা মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে শহুরে খাদ্যব্যবস্থা এখন ‘ফাস্ট ফুড নির্ভরতা’-তে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রক্রিয়াজাত ও ক্যালোরি-সমৃদ্ধ খাদ্য বেশি কিন্তু পুষ্টিগুণ কম। এর ফলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের প্রবণতা বাড়ছে। গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং শহুরে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্য প্রাপ্তির পার্থক্য সামাজিক বৈষম্যকেও গভীর করছে।
খাদ্য নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় শর্ত হলো টেকসই কৃষি ব্যবস্থা। বাংলাদেশে কৃষি মূলত প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল—বিশেষ করে পানি, মাটি ও আবহাওয়ার স্থিতিশীলতার উপর। কিন্তু বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কৃষি খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। IPCC-এর ২০২3 সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বেড়েছে ২৬ শতাংশ, যা ধান ও সবজি উৎপাদনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। খরা, অতিবৃষ্টি ও বন্যা একদিকে ফসল বিনষ্ট করছে, অন্যদিকে কৃষকদের ঋণগ্রস্ত করছে।
টেকসই কৃষির পথে বাংলাদেশ এখন জলবায়ু সহনশীল বীজ, জৈব সার, সৌরশক্তিনির্ভর সেচ ব্যবস্থা ও কৃষি-প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। FAO, UNDP এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে “ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার প্রোগ্রাম” চালু হয়েছে, যার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষি উৎপাদনের কার্বন নিঃসরণ ২৫ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
টেকসই খাদ্যব্যবস্থার আরেকটি স্তম্ভ হলো ডিজিটাল উদ্ভাবন। কৃষি তথ্য অ্যাপ, স্যাটেলাইটভিত্তিক আবহাওয়া পূর্বাভাস, কৃষি মার্কেট লিংকেজ এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম কৃষকদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, “Krishi Call Center” ও “A2i Smart Agriculture Initiative” কৃষকদের তাৎক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করছে। এর ফলে কৃষি উৎপাদন পরিকল্পনা, সংরক্ষণ ও বিপণন আরও দক্ষ হচ্ছে।
এছাড়া, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বিনিয়োগ বাড়লে কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও মূল্য সংযোজন সম্ভব হবে, যা কৃষকের আয় বাড়াবে এবং খাদ্য অপচয় কমাবে। বর্তমানে দেশে উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয় বলে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এটি শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং খাদ্য নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি।
বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা এখন আর কেবল উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে না; বরং এটি একটি বহুমাত্রিক সমন্বিত প্রক্রিয়া, যেখানে কৃষি, প্রযুক্তি, বাজার, শিক্ষা এবং সামাজিক ন্যায্যতা—সবকিছুই সমান গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই কৃষি উন্নয়ন মানে এমন এক খাদ্যব্যবস্থা গঠন করা যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা পূরণে সক্ষম, একই সঙ্গে প্রাকৃতিক সম্পদের ভারসাম্য রক্ষা করে।
খাদ্য শুধু শরীরের জ্বালানি নয়, এটি জাতির মর্যাদা, ন্যায্যতা ও স্বাধীনতার প্রতীক। বাংলাদেশের খাদ্য সংগ্রাম এখন আর শুধু ফসল তোলার নয়, বরং কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর সংগ্রাম। আর এই সংগ্রামই প্রমাণ করে—কলম থেমে থাকে না, মাঠ থেমে থাকে না, বীজ থেমে থাকে না; কারণ এ লড়াই মানবজীবনের সবচেয়ে পবিত্র অধিকারের জন্য—খাদ্যের অধিকারের জন্য।
বিশ্ব খাদ্য দিবস মানবজাতির অস্তিত্ব, উন্নয়ন ও মর্যাদার সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত একটি বৈশ্বিক দিন। ১৯৪৫ সালের ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর এই দিনটি পালন করা হয়। ১৯৭৯ সালে FAO-এর ২০তম সাধারণ অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটির অনুমোদন দেওয়া হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গঠন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং টেকসই কৃষির বিকাশে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। বর্তমানে ১৫০টিরও বেশি দেশ এই দিবসটি পালন করে, যা মানবতার আহার ও বেঁচে থাকার অধিকারের প্রতীক হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো খাদ্যের প্রাপ্যতা, প্রবেশাধিকার ও পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করা, যাতে কেউ অনাহারে না থাকে। FAO-এর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পৃথিবীতে এখনো প্রায় ৭৩.৫ কোটি মানুষ প্রতিদিন পর্যাপ্ত খাদ্য পায় না, অর্থাৎ প্রতি দশ জনের মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশ বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও কৃষি উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা একসঙ্গে খাদ্য সংকট বাড়াচ্ছে।
২০২৫ সালের থিম “Water is Life, Water is Food. Leave No One Behind” অর্থাৎ “পানি জীবন, পানি খাদ্য—কাউকে পিছনে ফেলে নয়”—এই স্লোগানটি জলসম্পদ ও খাদ্য উৎপাদনের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে তৈরি। বিশ্বের ৭০ শতাংশ মিঠা পানি ব্যবহৃত হয় কৃষিক্ষেত্রে, অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান খরা, বন্যা ও পানি দূষণ কৃষি উৎপাদনে বিপর্যয় ডেকে আনছে। FAO-এর গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি না পেলে পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যচাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি আরও তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাধীনতার পর কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা ছিল জাতির অগ্রাধিকারের বিষয়। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আমাদের শেখায়—খাদ্য শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং সামাজিক স্থিতিশীলতা ও ন্যায়বিচারেরও ভিত্তি। বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগিয়েছে। ধান, সবজি, মাছ ও পোলট্রি উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তথাপি, খাদ্যের সুষম বণ্টন, অপচয় রোধ ও নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি এখনো চ্যালেঞ্জ। FAO ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়।
অন্যদিকে, শহর ও গ্রামীণ এলাকায় পুষ্টির বৈষম্যও ক্রমেই বাড়ছে। গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিশু অপুষ্টি এখনো ২৮ শতাংশের কাছাকাছি, আর নারী ও কিশোরীদের মধ্যে আয়রন ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা ব্যাপক। এ অবস্থায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের অভিযাত্রায় খাদ্যব্যবস্থা আধুনিকায়ন, কৃষিপণ্যের সঠিক মূল্য নিশ্চিতকরণ এবং খাদ্যশৃঙ্খলে ডিজিটাল উদ্ভাবন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব খাদ্য দিবস কেবল একটি সচেতনতা দিবস নয়, বরং এটি একটি নৈতিক আহ্বান। কৃষক, ভোক্তা, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও উদ্যোক্তা—সবাইকে একই স্রোতে আনাই এই দিবসের লক্ষ্য। টেকসই কৃষি, মাটির উর্বরতা সংরক্ষণ, পানি ব্যবস্থাপনা, খাদ্যপ্রক্রিয়াজাত শিল্প ও স্থানীয় খাদ্য বৈচিত্র্য রক্ষার মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ খাদ্যভিত্তি গড়ে তুলতে পারি।
খাদ্য দিবসের বার্তা হলো—খাদ্য কেবল ভাত বা রুটি নয়; এটি জীবনের অধিকার, মানবতার ভিত্তি এবং বৈশ্বিক শান্তির পূর্বশর্ত। যতদিন পৃথিবীতে একজন মানুষও অনাহারে থাকবে, ততদিন এই দিবসের তাৎপর্য অব্যাহত থাকবে। কলম থেমে থাকে না—যেমন ক্ষুধা থেমে থাকে না, তেমনি লড়াইও থেমে থাকে না মানবমর্যাদা ও ন্যায্য খাদ্যের অধিকারের জন্য।
বাংলাদেশ আজ খাদ্য উৎপাদনে আত্মনির্ভরতার এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে, তবে এই সাফল্য ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন উদ্ভাবননির্ভর, পরিবেশবান্ধব ও প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত কৃষি ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় এলাকা ও নদীবিধৌত অঞ্চলে লবণাক্ততা, বন্যা এবং খরার যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে—তা মোকাবেলায় সরকার “Climate Smart Agriculture Strategy 2023–2040” বাস্তবায়নে কাজ করছে (FAO, 2024)।
বর্তমানে দেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ (BBS, 2023) বসবাস করছে, এবং আগামী ২০৫০ সালে এই সংখ্যা ২০ কোটির বেশি হতে পারে। খাদ্য চাহিদা মেটাতে কৃষিজমির পরিমাণ বছরে প্রায় ১ শতাংশ হারে কমলেও প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন বৃদ্ধির হার সেই ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। উদাহরণস্বরূপ, ড্রোন ব্যবহার করে বীজ ও সার ছিটানো, আইওটি (IoT) নির্ভর স্মার্ট সেচব্যবস্থা, এবং কৃষক পর্যায়ে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বাজার সংযোগ—এই উদ্যোগগুলো “Digital Agriculture Ecosystem” গড়ে তুলছে।
এছাড়া জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG-2: Zero Hunger) অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। FAO ও World Food Programme-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২4 সালে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা সূচক ৬৬.৫—যা দক্ষিণ এশিয়ার গড়ের চেয়ে এগিয়ে। পাশাপাশি, নারী কৃষকের অংশগ্রহণ ২০১০ সালের ৩.৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে (BIDS, 2024), যা কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করছে।
ভবিষ্যতের টেকসই কৃষি হবে জলবায়ু সহনশীল ফসল, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার, এবং কৃষিজ পণ্যের মূল্য সংযোজনের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে বায়োটেকনোলজি, মাইক্রোবায়োলজি এবং মাটিবিজ্ঞান গবেষণার সম্প্রসারণ ইতিমধ্যে নতুন প্রজাতির ফসল উদ্ভাবনে সহায়ক হয়েছে—যেমন BRRI dhan100, যা লবণাক্ত অঞ্চলেও উৎপাদন সক্ষম।
অতএব, খাদ্য নিরাপত্তা কেবল উৎপাদনের বিষয় নয়, এটি একটি বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া—যার সঙ্গে জড়িত প্রযুক্তি, নীতি, পরিবেশ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, সীমিত সম্পদেও যদি উদ্ভাবন, দক্ষতা ও সমন্বিত পরিকল্পনা থাকে, তবে খাদ্যনিরাপত্তা শুধু সম্ভব নয়—বরং তা হতে পারে জাতীয় মর্যাদা ও বৈশ্বিক অনুপ্রেরণার প্রতীক।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী।
পাঠকের মতামত:
- ‘ধানের শীষ জিতলে চক্রান্তকারীরা চলে যেতে বাধ্য হবে’
- ধেয়ে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড়, বন্যার শঙ্কা
- সাতক্ষীরায় বাড়ির সবাইকে অজ্ঞান করে নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি
- ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন শহিদুল আলম
- শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই
- শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রথম ব্যর্থ রাষ্ট্রপ্রধান ইউনূস : মোমিন মেহেদী
- ‘যশোরকে শ্রেষ্ঠ শহর হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা একযোগে কাজ করব’
- টুনিরহাট গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচে বিজয়ী সৈয়দপুর
- বাগেরহাটে নিহত সাংবাদিক হায়াতের পরিবারের পাশে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান
- সাতক্ষীরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মোটর মিস্ত্রীর মৃত্যু
- ফরিদপুরে ১৯৭১ আমরা শহীদ পরিবার ও শহীদ স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির আলোচনা সভা
- সাভারে চার মণ ওজনের প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার
- ফরিদপুরে ভেজাল মাংস বিক্রির দায়ে ব্যবসায়ীর কারাদণ্ড, জরিমানা
- মহম্মদপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের চার শতাধিক নারী-পুরুষের বিএনপিতে যোগদান
- ঝিনাইদহে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক তালিকায় নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান
- সালথায় মসজিদের চাবি চাওয়া নিয়ে দুই দলের সংঘর্ষে আহত ৪০, বাড়িঘর ভাঙচুর
- গোপালগঞ্জে পিকআপের ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যু
- ‘সেফ এক্সিট’
- ‘অপূর্ব পাল নয়, আহমদ’
- খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের প্রেক্ষাপট
- কাপ্তাইয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
- নিউজিল্যান্ডকে হারাতে আত্মবিশ্বাসী টাইগ্রেসরা
- ‘আসবে নতুন দিন, বদলে যাবে বাংলাদেশ’
- শান্তিতে নোবেল জিতলেন ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদো
- ‘জবাবদিহিতা-অংশগ্রহণমূলক সংসদ গঠনে বিএনপি বদ্ধপরিকর’
- নারী ব্যালন ডি’অরে হ্যাটট্রিক স্পেনের বোনমাতির
- আগুনে পুড়ে গেলে তাৎক্ষণিক যা করবেন
- অবশেষে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল
- বৈঠকের জন্য সামরিক কর্মকর্তাদের ডেকেছে যুক্তরাষ্ট্র, কারণ অস্পষ্ট
- জাতীয় নারী ক্রিকেট দলকে ভারতীয় হাইকমিশনের সংবর্ধনা
- বিসিবি নির্বাচনে পরিচালক প্রার্থী আসিফ
- একদিনে ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু
- টাইমস স্কয়ারে দুর্গাপূজা
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- আফগানিস্তানের বিদায়, বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা
- যে পানি মেটাতে পারে চুল ও ত্বকের সমস্যা
- ‘যশোরকে শ্রেষ্ঠ শহর হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা একযোগে কাজ করব’
- ছাত্রছাত্রীদের এআই শেখাতে এগিয়ে আসলো রবি ও টেন মিনিট স্কুল
- জিটি ৩০ ৫জি উন্মোচন করলো ইনফিনিক্স
- অমলকান্তি
- কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সরকারি সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের
- ঘুণে ধরা সমাজের গল্প বলবে ‘খেলার পুতুল’
- আফরোজা রূপার কণ্ঠে এলো ‘শ্রাবণের ধারার মতো’
- চিঠি দিও
- ‘আমার বাবার কাছেও এমন ঘটনা কখনও শুনিনি’