E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ফেনসিডিল ওষুধ নয়, মাদক

২০২২ মে ২৪ ১২:০৭:৩১
ফেনসিডিল ওষুধ নয়, মাদক

স্টাফ রিপোর্টার : কাশির সিরাপ হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হলেও এখন সামান্য পরিমাণ ফেনসিডিল মাদক হিসেবেই গণ্য হবে বলে জানিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের লিখিত রায়ে বলা হয়, পরিমাণ যতটুকুই থাকুক না কেন তা মাদক হিসেবে গণ্য হবে।

আদালত বলেন, ফেনসিডিল ওষুধ নয়, এটি মাদকদ্রব্য হিসেবে গণ্য হবে। তাই ফেনসিডিল বহন করা বা নিজের দখলে রাখা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ অপরাধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর ধারা ১৯(১) সিরিয়াল ৩ এর অধীনে বর্ণিত শাস্তি পেতে হবে।

রাষ্ট্র বনাম বাদল কুমার পালের এক মামলার রায়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২২ পৃষ্ঠার ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আপিল বিভাগ বলেছেন, আমরা মনে করি যেহেতু কোডাইন ফসফেট (codeine phosphate) কোডাইনের একটি উৎপন্ন বস্তু বা পদার্থ, তাই এটিকে মাদকদ্রব্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে এবং অন্য কোনো তরল পদার্থের সঙ্গে কোডিন ফসফেটের মিশ্রণের যে কোনো অংশ তরল পদার্থের মোট পরিমাণকে মাদকদ্রব্যে পরিণত করে। এ ধরনের সংমিশ্রণের মোট পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে শাস্তি আরোপ করতে হবে।

আদালত আরও বলেছেন, এটা খুব স্পষ্ট যে, কোডাইন ফসফেটের অস্তিত্ব থেকে ফেনসিডিল একটি মাদকের সংমিশ্রণে পরিণত হয়। তাই ফেনসিডিল দখলে রাখা বা বহন করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর ধারা ১৯(১) সিরিয়াল ৩ এর অধীনে বর্ণিত শাস্তি পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবে।

আপিল বিভাগ রায়ে বলেছেন, এ বিষয়ে সব বিষয় বিবেচনা করে আমরা একমত পোষণ করছি যে, হাইকোর্ট বিভাগ ফেনসিডিলকে মাদকদ্রব্য হিসেবে বিবেচনা না করে ভুল করেছেন। এ ব্যাপারে আমরা হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী। তাই ফেনসিডিলকে মাদকদ্রব্য হিসেবে গণ্য করে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় ও আদেশ (আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড) বহাল করা হলো।

গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ হাইকোর্টের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল মঞ্জুর করে রায় দেন। অর্থাৎ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আসামিকে বিচারিক আদালতে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখেন।

ওইদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে যশোরের চৌগাছায় ২৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক হন বাদল কুমার পাল। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পরে ২০০০ সালে ওই মামলায় বিচারিক আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০০৩ সালে হাইকোর্ট বাদলকে খালাস দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ সেই খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে বিচারিক আদালতের দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন।

এরপর সম্প্রতি সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

(ওএস/এএস/মে ২৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

৩১ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test