E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মানবতাবিরোধী অপরাধ, বাগেরহাটের সাতজনের মৃত্যুদণ্ড

২০২৩ নভেম্বর ৩০ ১৩:৩৩:৪৫
মানবতাবিরোধী অপরাধ, বাগেরহাটের সাতজনের মৃত্যুদণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাগেরহাটের খান আকরামসহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় দেন।

ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। এর আগে এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত ও রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্টার ব্যারিস্টার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।

এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন নয়জন। তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। খান আকরাম হোসেন, মকবুল মোল্লা ও শেখ মো. উকিল উদ্দিন কারাবন্দি। বাকি চারজন পলাতক। পলাতক আসামিরা হলেন খান আশরাফ আলী, রুস্তম আলী মোল্লা, শেখ ইদ্রিস ও শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল।

আসামিদের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ
প্রথম অভিযোগ:
১৯৭১ সালের ২৬ মে ১৫-২০ জন রাজাকার ও ২৫-৩০ জন পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর সদস্য বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ থানার চাপড়ী ও তেলিগাতীতে নিরীহ-নিরস্ত্র মুক্তিকামী মানুষের ওপর হামলা চলায়। এসময় ৪০-৫০টি বাড়ির মালামাল লুট, বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া দুজন নিরীহ মানুষকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে। ১০ জন নিরীহ-নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে।

দ্বিতীয় অভিযোগ:
১৯৭১ সালের ৭ জুলাই আসামিরা বাগেরহাটের কচুয়া থানার হাজরাখালী ও বৈখালী রামনগরে হামলা চালিয়ে নিরীহ চারজনকে আটক ও অপহরণ করে আবাদের খালের ব্রিজে হত্যা করে মরদেহ খালে ফেলে দেয়।

তৃতীয় অভিযোগ:
১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ থানার ঢুলিগাতী গ্রামে হামলা চালিয়ে দুজন নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাকে আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে।

চতুর্থ অভিযোগ:
১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার বিলকুল ও বিছট গ্রামে হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ-নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের লোককে আটক ও অপহরণ করে কাঠালতলা ব্রিজে এনে নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়।

পঞ্চম অভিযোগ:
১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর বাগেরহাটের কচুয়া থানার বিলকুল গ্রাম থেকে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী নকীবকে আটক ও অপহরণ করে মোড়লগঞ্জ থানার দৈবজ্ঞহাটির গরুর হাঁটির ব্রিজের ওপরে নিয়ে নির্যাতন করার পর গুলি করে হত্যা করে।

ষষ্ঠ অভিযোগ:
১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর কচুয়া থানার উদানখালী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের উকিল উদ্দিন মাঝিকে হত্যা করে এবং তার মেয়েকে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশপাশের রাজাকার ক্যাম্পে উকিল উদ্দিন মাঝির মেয়েসহ চারজনের ওপর নির্যাতন চালায়। ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ দখলদার মুক্ত হলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্প তল্লাশি করে উকিল উদ্দিন মাঝির মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেন।

সপ্তম অভিযোগ:
কচুয়া থানার গজালিয়া বাজারে হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ-নিরস্ত্র শ্রীধাম কর্মকার ও তার স্ত্রীকে নির্যাতন করে। আসামিরা শ্রীধামকে হত্যা করে তার স্ত্রীকে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে আটকে রাখে। সেখানে শ্রীধামের স্ত্রীসহ আটক চারজনকে ধর্ষণ করা হয়। এক মাস পর শ্রীধামের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ৩০, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test