E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

শ্যামনগরে মাদ্রাসা ছাত্রকে ভারতে পাচার, পাচারকারীর যাবজ্জীবন 

২০২৫ জুলাই ১৬ ১৯:৫৯:২৩
শ্যামনগরে মাদ্রাসা ছাত্রকে ভারতে পাচার, পাচারকারীর যাবজ্জীবন 

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : নবম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রকে ভারতে পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাফরোজা পারভিন এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় প্রদান করেন। এ সময় আসামী কাঠগড়ায় ছিলেন না।

সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম আলমগীর হোসেন ওরফে আক্তার। তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ধুমঘাট তরারচক গ্রামের মোঃ আব্দুর রশীদ মোল্লার ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর উপজেলার ধুমঘাট তরারচক গ্রামের শহীদ গাজীর ছেলে শ্রীফলকাটি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্র আল মামুন (১৪) বাড়ি থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দুপুর দুটোর দিকে মাদ্রাসা ছুটির পর সে বাড়িতে না আসায় তার বাবা শহীদ গাজী ও স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে আল মামুনের সাইকেলে বসে আসামী আলমগীরকে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে দেখো গেছে মর্মে শহীদ গাজী জানতে পারেন। ওই দিন বিকেল চারটার দিকে শহীদ গাজীসহ কয়েকজন আসামী আলমগীরের বাড়িতে গেলে সে আল মামুন সম্পর্কে কিছু জানে না বলে জানায়।

প্রতিবেশী আব্দুস সাত্তারের ছেলে বাবলু গাজীর মাধ্যমে জানতে পারেন যে, আল মামুনকে সাতক্ষীরা সদরের বৈকারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। বিষয়টি শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করায় তিনি বাবলু গাজীর কাছে পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত হন। একপর্যায়ে বাবলু গাজীর সহায়তায় আল মামুনকে পরদিন ভারত থেকে দেশে আনা হয়। সীমান্ত থেকে বাড়ি আনার পথে আসামী আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন আল মামুনকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ ঘটনায় ১৪ অক্টোবর আল মামুনের বাবা শহীদ গাজী বাদি হয়ে আসামী আলমগীর হোসেন ওরফে আক্তারের নাম উল্লেখ করে মানব পাচার আইনের ৭ ও ৮ ধারায় শ্যামনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আসামি আলমগীর হোসেন ওরফে আক্তারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে আসামী জামিনে মুক্তি পায়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক মোঃ হযরত আলী ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর এজাহারভুক্ত আসামী আলমগীর হোসেন আক্তারের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার নথি ও নয় জন সাক্ষীর সাক্ষ্য পর্যালোচনা শেষে আসামী আলমগীর হোসেন আক্তারের বিরুদ্ধে পাচারের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক মাফরোজা পারভিন তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা , অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. মিজানুর রহমান বাপ্পি।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. আলমগীর আশরাফ।

(আরকে/এসপি/জুলাই ১৬, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test