E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

৩ মাসের মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় করার নির্দেশ 

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১৫:১৭:০৭
৩ মাসের মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় করার নির্দেশ 

স্টাফ রিপোর্টার : তিন মাসের মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে, ১৩ আগস্ট শুনানি শেষে ২ সেপ্টেম্বর রায় দেওয়ার জন্য দিন ধার্য রেখেছিলেন আদালত।

আদালতে রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। অ্যামিকাস কিউরি ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট শরীফ ভূঁইয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

রায়ের পর আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া বলেন, রায়ের তিনটি অংশ ছিল। প্রথম অংশ হলো-১৯৭২ সালের ১১৬ অনুচ্ছেদ পরে যে সংশোধন করা হয়েছে, সেটা বাতিল করা হয়েছে। ১৯৭২ সালে অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিম কোর্টের হাতে ছিল। পরে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা হয়।

তিনি বলেন, ১৫তম সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা হয়। আজকের আদেশের পরে ১১৬ অনুচ্ছেদ ১৯৭২ সালের সংবিধানে ফিরে গেছে। ফলে অধস্তন আদালতের কর্তৃত্ব- নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় অংশ হলো-যেহেতু ১১৬ অনুচ্ছেদ পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেল, সেহেতু পরিবর্তিত ১১৬ অনুচ্ছেদের আলোকে করা শৃঙ্খলাবিধি বাতিল করা হয়েছে। তৃতীয় অংশ হলো-সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় তিন মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বছরের ২৫ আগস্ট সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ, ২০১৭ সালের জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবী রিটটি করেন। পরে ২৭ অক্টোবর হাইকোর্ট ‍রুল জারি করেন।

সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার-কর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল-নির্ধারণ, পদোন্নতি ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলা বিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি তা প্রয়োগ করে থাকেন।

রিটকারীদের আইনজীবীর মতে, ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতিদান ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত রয়েছে।

একই অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রপতি এ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করবেন বলে উল্লেখ রয়েছে। মূলত রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত এ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের সরাসরি হস্তক্ষেপ দেখা যায়, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করে।

১৯৭২ সালের সংবিধানে অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতিদান ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) শৃঙ্খলা বিধানের এ দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত ছিল।

১৯৭৪ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতিদান ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত করা হয়। পরে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে এবং ‘সুপ্রিমকোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তাহা প্রযুক্ত হইবে’ শব্দগুলো সন্নিবেশিত করা হয়।

এরপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পঞ্চম সংশোধনী আইন অসাংবিধানিক মর্মে ঘোষণা করলে পঞ্চদশ সংশোধন আইন, ২০১১ এর মাধ্যমে ১১৬ অনুচ্ছেদের বর্তমান একই বিধানটি প্রতিস্থাপন করা হয়। বর্তমানে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে এ বিধানটিই বিদ্যমান রয়েছে।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test