E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

১৭ বিয়ে করা বন কর্মকর্তা কবিরের সাময়িক বরখাস্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৩:০৯:৪২
১৭ বিয়ে করা বন কর্মকর্তা কবিরের সাময়িক বরখাস্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট

স্টাফ রিপোর্টার : প্রতারণা করে ১৭ নারীকে বিয়ের অভিযোগে বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কবির হোসেন পাটোয়ারীকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) কবিরের পক্ষে আইনজীবী জিয়াউর রহমান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন। একই সঙ্গে আবেদনে কবিরের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে থাকা সব ভিডিও অপসারণ চাওয়া হয়েছে।

রিট আবেদনটির ব্যাপারে আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টে শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন কবিরের পক্ষের আরেক আইনজীবী ফয়জুল্লাহ ফয়েজ।

এর আগে ডিএফও কবিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ স্বাক্ষরিত আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

পরদিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল উপকূলীয় অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছেন। বরিশালের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও হিসেবে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপ-বন সংরক্ষক) মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান মিঞাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ১৬ সেপ্টেম্বর ডিএফও কবিরের বিরুদ্ধে ১৭ নারীকে বিয়ে ও প্রতারণার অভিযোগে বরিশাল মহানগর প্রথম আমলি আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক সাদিক আহম্মেদ আবেদনটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজিব মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগামী ২০ নভেম্বর মামলার শুনানির পরবর্তী দিন ঠিক করা হয়েছে।

মামলার বাদী বরিশাল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) হাফিজ আহম্মেদ। তিনি বলেন, চাঁদপুরের মতলবের বাসিন্দা কবির একে একে ১৭টি বিয়ে করেছেন। প্রতিটি বিয়েতে তিনি মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১ সালের অধ্যাদেশের ৬ ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছেন। প্রথম বিয়ে গোপন রেখে ধারাবাহিকভাবে একাধিক বিয়ে করে তিনি শুধু আইনই ভঙ্গ করেননি; ধর্মীয় মূল্যবোধ, সমাজব্যবস্থা ও সংস্কৃতির প্রতি চরম চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, কবির ডিএফও হিসেবে ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর বরিশালে যোগদান করেন। এর আগে তিনি খুলনায় কর্মরত ছিলেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর বরিশাল নগরের কাশীপুরে বিভাগীয় বন সংরক্ষকের কার্যালয়ের সামনে তার বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেন কয়েকজন নারী ও তাদের স্বজনরা। ওই নারীরা নিজেদের ওই কর্মকর্তার স্ত্রী দাবি করে অভিযোগ করেন, ওই কর্মকর্তা প্রলোভন দেখিয়ে তাদের বিয়ে করেছেন। এরপর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়।

কর্মসূচিতে ঢাকার নাজনীন আক্তার, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার, খুলনার নাসরিন আক্তারসহ প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন নারী উপস্থিত ছিলেন। তাদের অভিযোগ, কবির আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ছিলেন। বিদেশে পড়াশোনা, সরকারি চাকরি, বিমানবালা হিসেবে কাজের সুযোগ বা সম্পত্তি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তিনি অন্তত ১৭ নারীকে বিয়ে করেন। আগের বিয়ের বিষয়গুলো গোপন রেখেই তিনি ওই নারীদের বিয়ে করেন। বিয়ের অল্প সময়ের মধ্যে যৌতুক দাবি ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে কয়েকজনের সংসার ভেঙে যায়।

সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি খাদিজা আক্তারকে বিয়ে করেন কবির। বিয়ের দ্বিতীয় দিনই খাদিজার বাবার বাড়ির জমির অংশ লিখে দিতে বললে রাজি না হওয়ায় তাকে বরিশালে বন কর্মকর্তার সরকারি বাসভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়।

খাদিজা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কবির হোসেন বিয়ে করেছেন। পরে বাবার বাড়িতে পাওয়া সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় তিনি আমাকে নির্যাতন করে বের করে দেন।’

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test