E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

সমঝোতায় রাজি পুতিন, জেলেনস্কিকে আলোচনায় চান ট্রাম্প

২০২৫ আগস্ট ১৫ ১১:০৬:১৯
সমঝোতায় রাজি পুতিন, জেলেনস্কিকে আলোচনায় চান ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে তার যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত।  

শুক্রবার তাদের মধ্যে হতে যাওয়া শীর্ষ বৈঠকের আগের দিন এ মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তবে তিনি মনে করেন, শান্তি আনতে হলে অন্তত আরেকটি বৈঠক লাগবে যেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও থাকবেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা এই সপ্তাহে তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছেন যেন আলাস্কায় শুক্রবারের যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া বৈঠক থেকে এমন কোনো চুক্তি না বেরিয়ে আসে যা ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে নতুন হামলার মুখে ফেলে দেয়।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি পুতিনও শান্তি চান, জেলেনস্কিও চান। দেখা যাক, তারা একে অপরের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন কি না।

তিনি যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত জল্পনাকে হালকাভাবে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, হয়তো ভবিষ্যতে আরও বড় একটি বৈঠক হবে, যেখানে বেশি সংখ্যক নেতা থাকবেন।

ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি এটা ভালো বৈঠক হবে, কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে দ্বিতীয় বৈঠক। সেখানে থাকবেন প্রেসিডেন্ট পুতিন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি, আমি এবং হয়তো কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা। আবার নাও থাকতে পারেন। আমি নিশ্চিত নই।

এদিকে, পুতিন আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে তার শীর্ষ মন্ত্রী ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই বৈঠক ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় যুদ্ধের সমাপ্তির পথ নির্ধারণ করতে পারে।

টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমার মতে, বেশ সক্রিয় ও আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুদ্ধ থামাতে, সংকট নিরসন করতে এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের স্বার্থে চুক্তি করতে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দুই দেশ, ইউরোপ ও সারা বিশ্বে স্থায়ী শান্তি গড়তে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পরবর্তী ধাপে কৌশলগত আক্রমণাত্মক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে একমত হলেই এই উদ্যোগ সফল হতে পারে।

তার মন্তব্যে ইঙ্গিত মেলে যে রাশিয়া নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিস্তৃত আলোচনার অংশ হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইস্যু তুলবে। ক্রেমলিনের এক উপদেষ্টা বলেন, পুতিন ও ট্রাম্প রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক সম্পর্কের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করবেন।

নাম প্রকাশ না করে পূর্ব ইউরোপের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, পুতিন ইউক্রেন ইস্যু থেকে ট্রাম্পের মনোযোগ সরাতে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বা ব্যবসা সম্পর্কিত প্রস্তাব দিতে পারেন।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি ট্রাম্প রাশিয়ার ফাঁদে পা দেবেন না; তিনি এসব বিপজ্জনক বিষয় বোঝেন। তার মতে, রাশিয়ার মূল লক্ষ্য হলো নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা এড়ানো এবং বর্তমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।

ট্রাম্প বলেন, বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলন হবে, তবে সেটা যৌথ হবে কি না তিনি জানেন না। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সীমান্ত ও ভূখণ্ড বিনিময় হতে পারে।

ট্রাম্প বলেন, এই বৈঠক দাবার মতো সাজানো। এই (প্রথম) বৈঠক দ্বিতীয় বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে, তবে ২৫ শতাংশ শঙ্কা আছে যে প্রথম বৈঠক সফল নাও হতে পারে।

ট্রাম্প বলেন, চুক্তি করা হবে পুতিন ও জেলেনস্কির দায়িত্ব, তিনি তাদের হয়ে সমঝোতা করবেন না।

বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় পাঁচভাগের একভাগ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের আশঙ্কা, কোনো চুক্তি হলে তা এসব দখল পাকাপোক্ত করে দেবে, যা পুতিনকে ইউক্রেন দখলের ১১ বছরের প্রচেষ্টায় পুরস্কৃত করবে এবং তাকে ইউরোপে আরও আগ্রাসী হতে উসকে দেবে।

এক ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, আগামী কয়েক ঘণ্টায় কী ঘটে তা দেখা ভয়ের বিষয় হবে। ট্রাম্প গতকাল ইউরোপের সঙ্গে ভালোভাবেই কথা বলেছিলেন, কিন্তু সেটা ছিল গতকাল।

২০২১ সালের পর প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া।

বুধবারের আলাপচারিতা শেষে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ট্রাম্প জানিয়েছেন ন্যাটো জোট যেন যুদ্ধোত্তর ইউক্রেনকে সুরক্ষা দেওয়ার কোনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তার অংশ না হয়। তবে তিনি এও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য ইচ্ছুক মিত্র দেশ যেন এই নিশ্চয়তার অংশ হয়।

এ বিষয়ে এক ইউরোপীয় কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ফোনালাপে ট্রাম্প ইউরোপের জন্য কিছু নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, যদিও সেগুলোর বিস্তারিত জানাননি।

ওই কর্মকর্তা বলেন, এটা বড় ধরনের অগ্রগতি মনে হয়েছে। তবে বাস্তবে এই নিশ্চয়তা কেমন হবে, তা পরিষ্কার নয়।

বুধবার ট্রাম্প হুমকি দেন, পুতিন যদি ইউক্রেনে শান্তিতে রাজি না হন তবে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে, আর শুক্রবারের বৈঠক ব্যর্থ হলে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

(ওএস/এএস/আগস্ট ১৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ আগস্ট ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test