E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

লিবিয়ার উপকূলে নৌকাডুবি, নিহত ১৮, বাংলাদেশিসহ উদ্ধার ৯০

২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১২:৫৬:৪৪
লিবিয়ার উপকূলে নৌকাডুবি, নিহত ১৮, বাংলাদেশিসহ উদ্ধার ৯০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লিবিয়ার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টারত একটি অভিবাসীবাহী নৌকা উল্টে ১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন।

মঙ্গলবার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, এ ঘটনায় বাংলাদেশিসহ অন্তত ৯০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ৭৬ কিলোমিটার পশ্চিমে উপকূলীয় শহর সাবরাথার রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, সোমবার রাতে অভিবাসীবাহী নৌকাটি উল্টে যাওয়ার খবর পাওয়ার পরই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চলে উদ্ধার কাজ।

সংস্থাটি জানিয়েছে, মরদেহগুলো সুরমান বন্দরের কাছাকাছি উপকূল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

রেড ক্রিসেন্ট প্রকাশিত কিছু ছবিতে দেখা গেছে, স্বেচ্ছাসেবীরা মরদেহগুলো উদ্ধারের পর সাদা প্লাস্টিক ব্যাগে রাখছেন এবং অ্যাম্বুলেন্সে তুলছেন। জীবিত উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, লিবিয়ার আল জাওইয়া থেকে যাত্রা করা কাঠের নৌকাটি সমুদ্রে ভাসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উচ্চ ঢেউয়ের কারণে উল্টে যায়। এতে ১৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন।

বেঁচে ফিরেছেন ১৮ বাংলাদেশি
রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, জীবিত উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ৯০ জন। কিন্তু আইওএম বলেছে, জীবিত উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ৬৪। এই ৬৪ জনের মধ্যে ১৮ জন হলেন বাংলাদেশি। সুদানের নাগরিক রয়েছেন ৩১ জন, তাদের একজন নারী ও এক শিশু। অন্যদের মধ্যে ১২ জন পাকিস্তানি ও তিন জন সোমালিয়ান বলেও জানিয়েছে আইওএম।

যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক আছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আইওএম জানিয়েছে, নিহতদের জাতীয়তা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সংস্থাটি আরও বলেছে, ‘এই নৌকাডুবি আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়, নিরাপত্তা ও সুযোগের খোঁজে বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় নামা মানুষদের কতটা ভয়াবহ ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয়।’

এই মাসের শুরুতে লিবিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিচালিত একটি চিকিৎসাকেন্দ্র জানায়, তিউনিশিয়ার সীমান্তের কাছে লিবিয়ার জুওয়ারা ও রাস ইজদির শহরের মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকা থেকে দুই সপ্তাহে অন্তত ৬১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় পথটি বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী অভিবাসন রুট হিসেবে পরিচিত৷ আইওএম বলেছে, চলতি বছর সংস্থাটির ‘মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রজেক্ট’ অনুযায়ী এই রুটে এক হাজার ৪৬ অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫২৭ জন মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন লিবিয়ার উপকূলে।

উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে লিবিয়ার স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানিয়েছে আইওএম।

ভূমধ্যসাগরে মৃত্যু ঠেকাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের মধ্য দিয়ে নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন পথ প্রসারিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়ায় অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। দেশটি এখনও ত্রিপোলি ও বেনগাজির প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারে বিভক্ত। এই অস্থির অবস্থার সুযোগ নিয়েছে মানবপাচারকারী চক্র। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে আফ্রিকা, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সংঘাত ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা অভিবাসীরা ভিড় করেন উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায়। সেখান থেকেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে উন্নত জীবনের খোঁজে ইউরোপে আশ্রয় নেয়ার স্বপ্ন দেখেন তারা।

তথ্যসূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস

(ওএস/এএস/অক্টোবর ৩০, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ অক্টোবর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test