ইউরোপীয় নেতাদের ‘দুর্বল’ বলে তীব্র সমালোচনা ট্রাম্পের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের ‘দুর্বল’ বলে সমালোচনা করেছেন এবং ইউক্রেনকে দেওয়া দেশটির সমর্থন কমিয়ে দিতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি বিষয়ক পত্রিকা পলিটিকোর সঙ্গে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘ক্ষয়িষ্ণু’ ইউরোপীয় দেশগুলো অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করতে অথবা রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের যুদ্ধ অবসানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। খবর বিবিসির।
ইউরোপীয় দেশগুলো কিয়েভের ‘পতন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করতে’ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। যুদ্ধের অবসানে যুক্তরাষ্ট্র যে উদ্যোগ নিয়েছে সেখানে নিজেদের ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছেন ইউরোপীয় নেতারা। তারা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে গৃহীত এসব পদক্ষেপ এই মহাদেশের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলেন, ইউরোপে তিনি দুর্বলতা নয় বরং ‘শক্তি’ই দেখতে পান। সেই সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলোর প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা এবং কিয়েভকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া তার উদাহরণ বলে বর্ণনা করেছেন।
ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কথা উল্লেখ করে কুপার বলেন, এই দুই প্রেসিডেন্ট ‘শান্তির জন্য কাজ করছেন।’
তিনি আরও বলেন, আরেকজন প্রেসিডেন্ট, প্রেসিডেন্ট পুতিন বারবার ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত কেবল এই সংঘাতকে আরও বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছেন।
শান্তি চুক্তিতে রাজী হওয়ার জন্য জেলেনস্কির ওপর চাপ বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছেন ট্রাম্প এবং মস্কোর কাছে কিছু ভূখণ্ড বা অঞ্চল ছেড়ে দিয়ে ‘সহযোগিতা’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে রাশিয়া।
গত মঙ্গলবার ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ইউক্রেন এবং ইউরোপ ‘যুদ্ধ অবসানের সম্ভাব্য পদক্ষেপের সব উপাদান’ নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। একই সঙ্গে পরিকল্পনায় ইউক্রেনের এবং ইউরোপের অংশগুলো এখন আরও পরিপক্ক হয়েছে।
এরপর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পরিকল্পনাগুলো বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে জমা দেওয়া হবে বলে তার ধারণা। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের জন্য যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার বিষয়ে আলোচনা করতে ইউরোপীয় নেতারা লন্ডনে যেদিন একত্রিত হয়েছিলেন, তার ঠিক একদিন পর ইউরোপ সম্পর্কে প্রকাশ্যে সর্বশেষ সমালোচনা করলেন ট্রাম্প।
যুদ্ধের অবসানে ইউরোপ সাহায্য করতে পারে কি না এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, তারা কথা বলে কিন্তু কোনো ফলাফল আসে না এবং এই যুদ্ধ কেবল চলছেই এবং চলছেই।
গত কয়েক সপ্তাহে মার্কিন কর্মকর্তারা যুদ্ধের ইতি টানতে ইউক্রেনীয় ও রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় এবং ন্যাটো নেতাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের আশঙ্কা অনুযায়ী ভবিষ্যতে ঝুঁকিতে পড়তে পারে এমন কোনো চুক্তিতে সমর্থন করা থেকে বিরত থাকে।
কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই রোববার ট্রাম্প বলেছিলেন, জেলেনস্কিই শান্তির পথে প্রধান বাধা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, উভয় পক্ষের কাছে যুক্তরাষ্ট্র যে শান্তি পরিকল্পনা দিয়েছে সেটি ‘ঠিক আছে’।
এতে ইউক্রেনের জন্য বড় ধরনের ছাড় ছিল বলে তিনি দাবি করেছেন, যদিও ভবিষ্যতে ইউক্রেন আবার রাশিয়ার হামলার ঝুঁকিতে থাকবে বলে আশঙ্কা করেছিল তাদের মিত্ররা।
পলিটিকোর সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, ইউক্রেনের আলোচক বা সমঝোতাকারীরা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত প্রস্তাবকে ‘পছন্দ করেছে’। কিন্তু জেলেনস্কি এখনো সেটা পড়েও দেখেননি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
নির্বাচন আয়োজনের জন্য কিয়েভের প্রতি আহ্বান পুনরাবৃত্তি করে ট্রাম্প দাবি করেছেন, নির্বাচন না করার কারণ হিসেবে ‘যুদ্ধকে ব্যবহার করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, আপনি জানেন, তারা গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু তা এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে তা আর গণতন্ত্র থাকে না।
২০২৪ সালের মে মাসে জেলেনস্কির পাঁচ বছরের প্রেসিডেন্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু রাশিয়ার হামলা কারণে মার্শাল ল জারির পর থেকে ইউক্রেনে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।
ট্রাম্পের মন্তব্যের পর জেলেনস্কি সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি ‘নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত’ এবং আইন পরিবর্তনের জন্য প্রস্তাবনা তৈরি করতে বলবেন। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্রদের সহায়তায় নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়, তাহলে আগামী ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
পলিটিকোর সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেন, মতাদর্শগত বিভাজন এখন ইউরোপের সঙ্গে ওয়াশিংটনের জোটকে ভাঙার হুমকির মুখে ফেলেছে।
যেসব নেতাদের ট্রাম্প দুর্বল বলে মনে করেন, তারা এখনো মিত্র হতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নির্ভর করে। আমি মনে করি তারা দুর্বল কিন্তু আমি এটাও মনে করি যে তারা রাজনৈতিকভাবে সঠিক হতে চান। আমার মনে হয় তারা জানেন না কী করতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের ৩৩ পৃষ্ঠার নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রকাশের পরই প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য এসেছে। এতে ইউরোপের সম্ভাব্য ‘সভ্যতাগত বিলুপ্তি’ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে এবং কিছু দেশ এখনো নির্ভরযোগ্য মিত্র হিসাবে থাকতে পারেন কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হুমকি হিসেবে চিহ্নিত না করায় এই কৌশলকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। যা মস্কোর দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ‘অনেকাংশই সামঞ্জস্যপূণ।’
মঙ্গলবার ট্রাম্প সতর্ক করেছেন যে, যদি এই পথে চলতে থাকে তাহলে ইউরোপের অনেক দেশ আর টিকে থাকার মতো অবস্থায় থাকবে না। তিনি আরও বলেন, অভিবাসন নিয়ে তারা যা করছে তা এক বিপর্যয়।
তবে অভিবাসন নিয়ে ‘খুব ভালো কাজ করছে’ বলে হাঙ্গেরি এবং পোল্যান্ডের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। কিন্তু বেশির ভাগ ইউরোপীয় জাতি ‘তলানির’ দিকে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ট্রাম্প।
মঙ্গলবার এই কৌশলের প্রতিক্রিয়ায় জার্মান চ্যান্সেলন ফ্রেডরিখ মার্জ বলেন, এর কিছু অংশ যুক্তিসঙ্গত এবং কিছু অংশ বোধগম্য কিন্তু ইউরোপীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অন্যান্য অংশ অগ্রহণযোগ্য।
ইউরোপে ‘গণতন্ত্র রক্ষায়’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন আছে, এমন ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, ইউরোপীয়রা নিজেরাই এ ধরনের প্রশ্নগুলোর সমাধান করতে পারে। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প জাতিসংঘে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, এই কৌশলটিও প্রায় সেটারই অনুরূপ। সে সময় তিনি পশ্চিম ইউরোপের অভিবাসন ও ক্লিন এনার্জি নীতির কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।
(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ১০, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- ইউরোপীয় নেতাদের ‘দুর্বল’ বলে তীব্র সমালোচনা ট্রাম্পের
- ‘নতুন দলগুলো প্রকৃত সংস্কার বোঝে না’
- জয়কে ট্রাইব্যুনালে হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
- টাঙ্গাইলে কাভার্ড ভ্যানে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ২
- ১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস
- ফরিদপুরে এনসিপির ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি, আহ্বায়ক অপু ও সদস্যসচিব সাকিব
- ‘দেশের চলচ্চিত্রকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে পারলে নিজেরাই সম্মানিত হবো’
- ‘হাবিবুুর সোহানকে ফ্রিডম দেওয়া হবে, সে তার মতোই খেলবে’
- ‘আমাদের রাজস্ব-ডিডিপি অনুপাত উগান্ডার চেয়েও খারাপ’
- ‘১৬টা বছর বাংলাদেশ যেন একটা কালো মেঘের নিচে চাপা পড়ে ছিল’
- বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচির চতুর্থ দিনের আলোচনা শুরু
- ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলো এনসিপি
- মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় সেই গৃহকর্মী গ্রেপ্তার
- রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে সিইসি
- দেশের বাইরে যেতে চান না খালেদা জিয়া
- খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় শেখ হাসিনার ‘উদ্বেগ’
- বরিশালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শপথ বাক্য পাঠ
- বরিশালের অদম্য নারীরা পেল সম্মাননা
- সড়ক দুর্ঘটনায় আহত পাবনার বিএনপি প্রার্থী শিমুল বিশ্বাস ও হাবিবুর রহমান হাবিব
- জলদস্যুদের দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত আট জেলে
- রাশেদ খাঁনকে মুখে লাগাম দেওয়ার হুঁশিয়ারি বিএনপি নেতা মুকুলের
- নিরপেক্ষ দেশের পতাকা উড়িয়ে পাকবাহিনী পালাবার পথে ধরা পড়ে
- বাংলাদেশে কি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন সম্ভব?
- ঈশ্বরগঞ্জে রোকেয়া দিবস পালিত
- দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা নেই : মোমিন মেহেদী
- কক্সবাজারে পাহাড় ধসে শিশুসহ ৪ মৃত্যু
- পঞ্চগড়ে ভাষা সৈনিক সুলতান বইমেলায় নতুন তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
- বই পড়ার অভ্যাসে তলানিতে বাংলাদেশ, বছরে পড়ে ৩টিরও কম
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- একদিনে ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু
- আবদুল হামিদ মাহবুব'র একগুচ্ছ লিমেরিক
- চুয়াডাঙ্গায় দুই আলমসাধুর মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক নিহত
- বরগুনায় আওয়ামীলীগের ২৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা
- সিলেটে কমছে বন্যার পানি, দেখা মিলেছে রোদের
- নোয়াখালীর বানভাসিদের পাশে শরীয়তপুরের শিক্ষার্থীরা
- শেখ হাসিনার সাথে মুঠোফোনে কথা বলায় গ্রেফতার আ.নেতা জাহাঙ্গীর
- মহম্মদপুরে শহীদ আবীর পাঠাগারসহ মুক্তিযোদ্ধাদের স্থাপনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি
- উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে জবাই করে হত্যা
- সন্ত্রাসীদের ঠাঁই নাই
- অনলাইন সাংবাদিকতায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল ‘চট্টগ্রাম জার্নাল’
- নবীনগরে নতুন করে আবারও রিপোর্টার্স ক্লাবের আত্মপ্রকাশ
- নবীনগরে একই পরিবারের চারজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
- অমলকান্তি
- 'নির্লজ্জ বেহায়া হতেই কী আমরা তোমাকে খুন করেছি কিংবা তোমাকে রক্ষা করিনি?'
- 'তোমার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম যে ব্যক্তিটি খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তিনি মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, যাকে তুমি পিতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতে'
-1.gif)








