E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বিবিসির বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ট্রাম্পের

২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৪:০১:২২
বিবিসির বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তার এক ভাষণের সম্পাদিত ভিডিও প্রচার করে বিবিসি এমনভাবে উপস্থাপন করেছে, যেন তিনি সমর্থকদের যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে হামলা চালাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

মামলার দুটি অভিযোগের প্রতিটির জন্য ট্রাম্প ৫ বিলিয়ন ডলার করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।

ট্রাম্পের অভিযোগ, ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্প্রচার সংস্থাটি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ভাষণের বিভিন্ন অংশ জোড়া লাগিয়ে তার মানহানি করেছে। সেখানে একটি অংশে তিনি সমর্থকদের ক্যাপিটলের দিকে মার্চ করতে বলেছিলেন এবং আরেক অংশে ‘ফাইট লাইক হেল’ (জোরালোভাবে লড়াই করো) কথাটি বলেন। তবে যে অংশে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান করেছিলেন, সেটি বাদ দেওয়া হয়।

বিবিসি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল হয়েছিল বলে স্বীকার করেছে এবং স্বীকার করেছে যে, ওই সম্পাদনার কারণে এমন ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে, যেন তিনি সরাসরি সহিংসতার ডাক দিয়েছিলেন। তবে সংস্থাটি বলেছে, মামলার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।

বিবিসি টিভি লাইসেন্স ফি থেকে অর্থায়ন পায়, যা যুক্তরাজ্যের সব টিভি দর্শকের জন্য বাধ্যতামূলক। ব্রিটিশ আইনজীবীরা বলছেন, এ কারণে ট্রাম্পকে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হলে তা রাজনৈতিকভাবে জটিল হয়ে উঠতে পারে।

১০৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর একটির মুখে পড়ে বিবিসি জানিয়েছে, তারা তাদের কোনো প্ল্যাটফর্মে ওই তথ্যচিত্রটি আর পুনঃপ্রচার করবে না।

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে বিবিসির ‘প্যানোরামা’ তথ্যচিত্র অনুষ্ঠানে ওই ক্লিপটি প্রচারিত হয়। এটি নিয়ে বিতর্কের জেরে বিবিসির দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতে হয়।

ট্রাম্পের আইনজীবীদের দাবি, বিবিসির কারণে তার সুনাম ও আর্থিক অবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

বিবিসির বাইরে থাকা এক মাননিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞের একটি অভ্যন্তরীণ মেমো ফাঁস হওয়ার পর তথ্যচিত্রটি নিয়ে ব্যাপক নজরদারি ও সমালোচনা শুরু হয়। ওই মেমোতে তথ্যচিত্রটি যেভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে, তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত বিবিসিতে রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ ঘিরে চলমান বৃহত্তর তদন্তের অংশ।

এই তথ্যচিত্রটি যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রচার করা হয়নি।

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে মামলা করেছেন, কারণ ব্রিটেনে মানহানির মামলা প্রকাশের এক বছরের মধ্যে করতে হয়। তবে ‘প্যানোরামা’ অনুষ্ঠানের এই পর্বটির ক্ষেত্রে সেই সময়সীমা ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে।

মার্কিন সংবিধানের বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সুরক্ষা অতিক্রম করতে হলে ট্রাম্পকে প্রমাণ করতে হবে যে, সম্পাদনাটি শুধু মিথ্যা ও মানহানিকরই ছিল না, বরং বিবিসি জেনেশুনে দর্শকদের বিভ্রান্ত করেছে অথবা বেপরোয়াভাবে আচরণ করেছে।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, বিবিসি যুক্তি দিতে পারে যে, তথ্যচিত্রটি মোটাদাগে সত্য ছিল এবং সম্পাদনার সিদ্ধান্তগুলো কোনো মিথ্যা ধারণা তৈরি করেনি। তারা এটাও দাবি করতে পারে এতে ট্রাম্পের সুনামের ক্ষতি হয়নি।

এর আগে সিবিএস ও এবিসিসহ কয়েকটি গণমাধ্যম ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে প্রত্যাবর্তনমূলক জয়ের পর এসব মামলাগুলো করা হয়েছিল।

ট্রাম্প নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং আইওয়ার একটি পত্রিকার বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন। তিনটি সংবাদমাধ্যমই কোনো অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে হামলার উদ্দেশ্য ছিল ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জো বাইডেনের জয়কে কংগ্রেসের স্বীকৃতি দেওয়া ঠেকানো।

তথ্যসূত্র : সিএনএন

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test