E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

হোয়াইট হাউসের ঐতিহাসিক বৈঠকে ‘যুক্তিবাদী’ মামদানির প্রশংসা ট্রাম্পের

২০২৫ নভেম্বর ২৪ ১৭:৫৩:১৭
হোয়াইট হাউসের ঐতিহাসিক বৈঠকে ‘যুক্তিবাদী’ মামদানির প্রশংসা ট্রাম্পের

ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক : শুক্রবার হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক উল্লেখযোগ্য বৈঠকে নিউ ইয়র্ক সিটির নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে (ডি) প্রকাশ্যে প্রশংসা করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক নাটকীয় পরিবর্তন, যিনি এতদিন তাকে বারবার 'কমিউনিস্ট' বলে আক্রমণ করে আসছিলেন।

ওভাল অফিসে মামদানিকে পাশে নিয়ে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি আপনি একজন সত্যিই অসাধারণ মেয়র পেতে যাচ্ছেন। তিনি যত ভালো করবেন, আমি তত খুশি হব। এখানে কোনো দলের ভেদাভেদ নেই, অন্য কোনো ভেদাভেদও নেই। আমরা তাকে সহায়তা করব সবাইয়ের স্বপ্নকে বাস্তব করতে। নিউ ইয়র্ককে শক্তিশালী ও খুব নিরাপদ শহর বানাতে।

ট্রাম্প পরে মামদানিকে 'যুক্তিবাদী' বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর তার জন্য সমর্থন জানাবেন।

ট্রাম্প জানান, তাদের আলোচনায় আবাসন সংকট ও খাদ্য–জ্বালানির দাম কমানোর বিষয় ছিল মূল এজেন্ডায়।

মামদানি বলেন, বৈঠকে শহরে অভিবাসন আইন প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি নিউ ইয়র্ক জুড়ে আইসিই মোতায়েন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন।

অতীতে মামদানিকে 'কমিউনিস্ট' বলাসহ নানা আক্রমণের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন যে, মেয়র–নির্বাচিতের মতাদর্শ বদলাতে পারে—এমনকি কিছু রক্ষণশীলকেও তিনি চমকে দিতে পারেন।

ট্রাম্প বলেন, 'তার কিছু মতামত একটু ভিন্ন রকম, কিন্তু কে জানে। আমরা দেখে নেব কোনটা কাজ করে। সেও বদলাবে। আমিও অনেক বদলেছি। আমি আত্মবিশ্বাসী, সে খুব ভালো কাজ করতে পারবে। আমার মনে হয় সে কিছু রক্ষণশীল মানুষকেও অবাক করবে।'

মামদানিকে ট্রাম্পকে 'স্বৈরাচারী' বলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, মতাদর্শগত ভিন্নতা থাকলেও জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো ও নাগরিকদের স্বস্তি দেওয়ার বিষয়টিতে দুজনই একমত।
ট্রাম্প হেসে বলেন, 'আমাকে এর চেয়েও খারাপ নামে ডাকা হয়েছে।'

দু’জনের অতীতের তীব্র বাকযুদ্ধ সবারই জানা। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট মামদানিকে 'কমিউনিস্ট' বলে আক্রমণ করেছেন এবং কিছু নীতি নিলে নিউ ইয়র্ক সিটির ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। এমনকি নির্বাচনের শেষ দিকে তিনি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে সমর্থন দিতে ভোটারদের আহ্বান জানান।

অন্যদিকে মামদানি তার পুরো প্রচারজুড়ে জীবনযাত্রার ব্যয়–সংকট ও খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখেছেন যা ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সির নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ফেডারেল চাপ বা তহবিল কাটছাঁটের যেকোনো প্রচেষ্টা তিনি মোকাবিলা করবেন।

প্রায় ৩০ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা বারবার দুই নেতাকে একে অপরের বিরুদ্ধে কিছু বলানোর চেষ্টা করলেও তারা দুজনই স্পষ্ট করে বলেন যে, রাজনৈতিক পার্থক্য নয়, নিউ ইয়র্কের উন্নতিই তাদের অগ্রাধিকার।

এক সাংবাদিক মামদানিকে জিজ্ঞেস করেন তিনি কি এখনো ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট মনে করেন কি না, ট্রাম্প দ্রুত হস্তক্ষেপ করে মামদানির হাতে চাপড় দিয়ে বলেন, 'সে চাইলে ‘হ্যাঁ’ বলেই দিতে পারে।'
ট্রাম্প যোগ করেন, 'ব্যাখ্যা করার চেয়ে এটা সহজ।'

আরেকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নিউ ইয়র্কবাসী কি ট্রাম্পকে ভালোবাসে? মামদানি উত্তরে বলেন, নিউ ইয়র্কবাসী এখন চায় একটি সাশ্রয়ী শহর।

এক পর্যায়ে সাংবাদিক ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি কি তার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিকে 'জিহাদিস্ট' মনে করেন যে শব্দটি রিপাবলিকান কংগ্রেসওমেন এলিস স্টেফানিক মামদানিকে বর্ণনা করতে ব্যবহার করেছেন।

ট্রাম্প উত্তর দেন, 'না, একেবারেই না… আমি এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছি যিনি অত্যন্ত যুক্তিসংগত। আমি এমন একজন মানুষের সঙ্গে দেখা করেছি যিনি সত্যিই চান নিউ ইয়র্ক আবার মহান হয়ে উঠুক।'

(আইএ/এসপি/নভেম্বর ২৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৪ নভেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test