E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে ভর্তিতে বাড়তি টাকা আদায়

২০২৫ নভেম্বর ২৫ ১৮:৫৬:১৮
সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে ভর্তিতে বাড়তি টাকা আদায়

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (পাস) ও সার্টিফিকেট কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও বাড়তি টাকা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশের পর ৯ নভেম্বর থেকে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (পাস) ও সার্টিফিকেট কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রম গত ১৬ নভেম্বরে শেষ হয়েছে।

এ শিক্ষাবর্ষে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে বিএ/বিবিএস শাখায় ৪ হাজার ৩০৫ টাকা ও বিএসসিতে ৪ হাজার ৪০৫ টাকা ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ১৪ সেপ্টম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আশেক কবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় আবেদনকারী প্রতি প্রাথমিক আবেদন ফি ৪০০/ টাকা (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ ২৫০/ টাকা ও কলেজের অংশ ১৫০/ টাকা)।

এছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তি সময় প্রতি রেজিস্ট্রশন ফি ৬৫০ টাকা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ফি ৫০ টাকা, বিএনসিসি ফি ১০ টাকা রোভার স্কাউট ফি ১০ টাকা সর্বমোট ৭২০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কলেজকে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি’র জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত অংশ (শিক্ষার্থী প্রতি ৭২০/-টাকা হারে) যে কোনো সোনালী ব্যাংক শাখায় জমা দিতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, নতুন অধ্যক্ষ এসেই ভর্তি ফি বাড়িয়ে দিয়েছেন। এবার স্নাতক ভর্তিতে বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে। গতবছর বিএ/বিবিএস শাখায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ৩ হাজার ৫১০ টাকা ও বিএসসি শাখায় ৩ হাজার ৫৬০ টাকা দিতে হয়েছে। এবার তা বাড়িয়ে ৪ হাজার ৩০৫ টাকা ও ৪ হাজার ৪০৫ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এখানে সেশনচার্জের নামে ২ হাজার ৪৯০ টাকা আদায় করা হয়েছে। এই সেশনচার্জ কোন খাতে কত টাকা তা উল্লেখ করা হয়নি।

এ বিষয়ে কথা হয় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি আফরিন জান্নাত আঁখির সাথে। তিনি বলেন, ‘এতো বেশি আদায় যৌক্তিক নয়। আমার কথা একটাই, কলেজ যদি অযৌক্তিক দাবি জানায় তাহলে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ করা উচিত। আর এই প্রতিবাদে আমি শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবো।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আফসানা তাসলিম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এই ধরনের কোনো অভিযোগ পাই নাই। কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক অভিযোগ করেন নাই। যদিও সরকারি কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। তারপরেও অভিযোগ পেলে প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে খতিয়ে দেখবো।’

এ বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি কলেজে যেতে বলেন। কলেজে গেলে তিনি বলেন, ‘বাড়তি টাকা নেওয়া হয়নি। গতবছর ছাত্রদের আন্দোলনে সেশনচার্জ কমানো হয়েছিল। এছাড়াও কলেজে বিভিন্ন সময় ছাত্রদের অনেক আবদার মেটাতে হয়।’

এ প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শওকত আলম মীর মোবাইল ফোনে বলেন, ‘অফিস যেভাবে করে আসছে অতীতে সেই ধারাবাহিকতায় নিয়ে আসছে। আমার সম্পাদক সাহেব দেখছেন, উনি আমাকে বলছেন, তাকে বলেছি গতবারের সাথে ঠিক আছে কি না। কোনো ভুলভাল আছে কি না। ছাত্র সংসদের যে ফি এটা নেওয়া যাবে না। যেহেতু কোনো কলেজে নেয় না। ওটা বাদ দিতে বলেছি। সেটা বাদ দেওয়া হয়েছে। পরে তিনি বলেন, আপনি কলেজে আসেন। কলেজে গেলে তিনি বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তিতে খরচ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও কলেজে অনেক বেসরকারি কর্মচারী রয়েছে। যাদের বেতন কলেজ থেকে দিতে হয়।’

প্রসঙ্গত, জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রায় ৬৩ একর জমির উপর নির্মিত এই কলেজে ১৪ বিষয়ে অনার্স ও ১২বিষয়ে মার্স্টস রয়েছে।

(আরআর/এসপি/নভেম্বর ২৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৫ নভেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test