E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

কমছে না ঈশ্বরদী ইপিজেড কর্মীদের ডায়ারিয়ার প্রকোপ, আক্রান্ত আরও ১৬০ জন

২০২৫ জুন ০১ ১৮:২৯:০১
কমছে না ঈশ্বরদী ইপিজেড কর্মীদের ডায়ারিয়ার প্রকোপ, আক্রান্ত আরও ১৬০ জন

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) ডায়ারিয়ার প্রকোপ কমছে না। আরও আক্রান্ত হয়েছে ১৬০ জন। রবিবার (১ জুন) ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত ইপিজেড কর্মী নতুন করে ৯৫ জন ভর্তি হয়েছে। ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টারে ৬৫ জন। এই আক্রান্তরা প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে বাড়িতেই চিকিৎসা গ্রহন করছিল। অবস্থার অবনতি ঘটলে তারা হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়। এদিকে ইপিজেডের বিপুল সংখ্যক রোগী ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় ঈশ্বরদীতে স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে। এই সুযোগে কোন কোন ফার্মেসি বেশী দামে স্যালাইন ও প্যামপাস বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হাসপাতালের রেকর্ড থেকে জানা যায়, গত ২৯ মে থেকে ১লা জুন পর্যন্ত ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত ইপিজেডের ২৪৩ জন কর্মি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এছাড়াও গুরুতর ১০ জন রোগীকে রাজশাহী ও পাবনা রেফার্ড করা হয়েছে। আউটডোরে চিকিৎসা গ্রহন করেছে শত শত রোগী। এরমধ্যে সুস্থ হওয়ায় ৮২ জনকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টারেও আক্রান্ত শত শত রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছে।

রবিবার (১ জুন) দুপুরে সরেজমিনে ঈশ্বরদী হাসপাতালে দেখা যায়, ৫০ শয্যার হাসপাতালে বেড সংকুলান না হওয়ায় স্যালাইন লাগিয়ে রোগীরা বারান্দায়, করিডোরে ও সিঁড়িতে শুয়ে আছে। স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে রোগীরা বলেন, কোন কোন ওষুধের দোকানে স্যালাইন মিললেও বেশী দাম নেওয়া হচ্ছে। প্যামপাসের দামও বেশী নিচ্ছে রোগীরা জানিয়েছে।

ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এবিএম শহীদুল ইসলাম বলেন, আজকের অবস্থা একটু বেটার। এখানকার মেডিকেল সেন্টারে আজ রবিবার ৬৫ জন চিকিৎসা গ্রহন করেছে। আমাদের মেডিকেল সেন্টারে এবং বিভিন্ন কোম্পানীর কাছে বিপুল খাবার স্যালাইন মজুদ আছে। যাদের প্রয়োজন তারা এখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবে। পানি পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। আশা করি আস্তে আস্তে অবস্থার উন্নতি হবে।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আলী এহসান ইপিজেডে খাবারের যে সাপ্লাই পানি রয়েছে সেখান থেকে পয়জনিং হয়েছে বলে ধারণা করছি। যেকারণে আজ ইপিজেডে বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করে পানির সোর্স ও ট্যাংকিগুলো পরীক্ষা করছি। এগুলো মোটামোটি ঠিক আছে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে আইভি স্যালাইনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ইপিজেডে যে স্যলাইন রয়েছে, তা খাবার স্যালাইন। বিপুল সংখ্যক রোগী সামাল দিতে ডাক্তার ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

প্রসংগত: গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে ইপিজেডে দুপুরে খাওয়ার পর হতে পেটব্যাথা, পাতলা পায়খানা, জ্বর,বমি ও মাথাব্যাথায় শ্রমিকরা অসুস্থ হতে শুরু করে। রেনেসাঁ, নাকানো, এ্যাবা ও রহিম আফরোজ, আইএসএ, স্টিল হেয়ার, অস্কার বাংলাসহ কয়েকটি কোম্পানির প্রায় শত শত অসুস্থ শ্রমিক ঈশ্বরদী হাসপাতাল, ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টার ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকৎসা গ্রহন করছে। এরমধ্যে কেউ কেউ সুস্থ হলেও নতুন করে অনেকের অবস্থা গুরুদর হওয়ায় তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কর্মরত শ্রমিকরা বলছেন, ইপিজেডের সাপ্লাই পানি পান করে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, ইপিজেডে ঈশ্বরদী ওয়াটার সাপ্লাই লি: পানি ট্রিটমেন্ট করে সরবরাহের দায়িত্ব পালন করছে। তারা পদ্মা নদী থেকে এবং ডিপটিউবওয়েলের পানি সংগ্রহ করে ট্রিটমেন্ট করে ইপিজেড এলাকায় পানি সাপ্লাই দেয়। কারখানার বর্জ্যও এই কোম্পানী ট্রিটমেন্টের পর আবার পদ্মা নদীতেই পাঠিয়ে দেয়।

(এসকেকে/এসপি/জুন ০১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ জুলাই ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test