আজ জালালপুর গণহত্যা দিবস
-12.07.25.jpg)
রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুর গ্রামের পূর্বপাশ দিয়ে প্রবহমান কপোতাক্ষ নদ। পশ্চিমে খাল-বিল, উত্তরে শ্রীমন্তকাটি ও দক্ষিণে জেঠুয়া গ্রাম। গ্রামের অধিকাংশ অধিবাসীই মুসলমান সম্প্রদায়ের। তবে কিছু হিন্দু পরিবারও সেখানে বসবাস করছে। ১৯৭১ সালের ১২ জুলাই জালালপুরের টি করিমের বাড়িতে বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধা দুপুরের খাওয়ার পর বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা দুপুরের পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখে কপোতাক্ষ নদ দিয়ে গানবোটে কিছু রাজাকার ও মিলিশিয়ারা যাচ্ছিল। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা গানবোটটির দিকে গুলি ছোঁড়ে। বোটের চালক দ্রুত লঞ্চটি চালিয়ে কপিলমুনির দিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই সময় শত্রুপক্ষের চারজন মিলিশিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বিকেলে কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্প থেকে নতুন শক্তি নিয়ে রাজাকার ও মিলিশিয়ার সম্মিলিত বাহিনী পুর্নগঠিত হয়ে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ফিরে আসে। তারা শ্রীমন্তকাটি মোড়ল বাড়িতে আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দেয়। রাজাকার ও মিলিশিয়ারা জালালপুর শাঁখারিপাড়ায় প্রবেশ করে। এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন জালালপুর গ্রামের ৮৫ বছরের বৃদ্ধ অন্নদা সেন, অনিমা দাস (২৫), তার কোলে স্তন্যপানরত এক বছর বয়সী শিশু দীপংকর দাস। এই সময় আরও যারা গুলিতে মারা যান তারা হলেন দুলাল চন্দ্র বর্ধন (৯৫), হরিপদ ঘোষ (৬৫), সাহেব সেন (৩০), উমাপদ দত্ত (৪০), অশোক (৩৫), বাদল প্রামানিক (২৮), সুনীল (৪৫), মোবারক মোড়ল (২৫), শ্রীমন্তকাটি গ্রামের আবদুল বারি মোড়ল (৫০), আবদুল মান্নান মোড়ল (৪৫) এবং কৃষ্ণকাটি গ্রামের বদির শেখসহ ১৭ জন। এরমধ্যে মোবারক মোড়ল ছিলেন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী।
এ সময় সুনীল, অন্নদা সেন, অশোক প্রামানিক, বাদলসহ সাতজন হতভাগ্যকে এক সাথে বেঁধে গুলি করে হত্যা করা হয়। আনন্দ দাশের বাড়ির কাজের লোক ছিল মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রিতুল কারিগর ও তার এক বোন। তারা কাজের সাহায্যকারী হিসেবে আনন্দ দাশদের বাড়িতে এসেছিল। তারাও গোলাগুলিতে আহত হন। হরিপদ ঘোষকে মাঠে যাওয়ার পথে রাজাকাররা ধরে নিয়ে গিয়ে সরকারি পুকুরের পাশে ‘কুড়ির মাঠে’ গুলি করে হত্যা করে। তার সাথে হত্যা করা হয় অধীর ঘোষকেও। এসব কথা জানান, সেই সময়ের সম্মুখযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ময়নুল ইসলামসহ অনেকেই।
এছাড়া শ্রীমন্তকাটি থেকে রাজাকার ও মিলিশিয়ারা ধরে নিয়ে যায় আবদুল বারী মোড়ল, আবদুল মান্নান মোড়ল, আবদুস সাত্তার মোড়ল, আবদুর রাজ্জাক মোড়ল, রশিদ মোড়ল, মোমিন মোড়ল, ইউনুস মোড়ল, ইউসুফ মোড়ল, মোকছেদ আলী সরদার, শওকত আলী মোড়ল ও আবদুল আজিজ মোড়লসহ ১৬ জনকে। এদেরকে কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে আটকে রেখে তারা অমানবিক নির্যাতন করে। এদের মধ্যে আত্মীয়-স্বজনদের দাবি ও চাপের মুখে আবদুল বারী মোড়লকে ছেড়ে দিলেও একজন প্রহরী তাকে রাইফেল দিয়ে পেটে আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার মরদেহ বেয়নেট দিয়ে ফেড়ে রাজাকাররা কপোতাক্ষে ভাসিয়ে দেয়। তার মরদেহ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আটককৃতদের মধ্যে আর সকলকে ছেড়ে দিলেও তাদের উপর নৃশংস অত্যাচার করা হয়। এদের মধ্যে আবদুল মান্নান মোড়ল সম্পূর্ণভাবে যৌনশক্তি হারিয়ে ফেলেন এবং কয়েক বছর বেঁচে থাকার পর ঘাতক ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাক্তন কমান্ডার মোঃ মফিজ উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন গ্রামে বিভিন্নভাবে রাজাকাররা অসংখ্য নারী-পুরুষকে হত্যা করে। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে শহীদদের স্মরণে জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে কপোতাক্ষ নদের পাশে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।
অত্র অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা নিয়ে গবেষণাকারী বিশিষ্ট লেখক বদরু মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, তালা ও তার আশেপাশে হত্যাযজ্ঞের ধরণ ও পরিসংখ্যানে প্রমাণিত হয় যে, যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তাদের সিংহভাগই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের। যে সকল মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই হয় মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক না হয় নিরিহ মানুষ। এর বাইরেও অসংখ্য মানুষকে খানসেনা ও তাদের দোসররা নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে জানা গেছে।
(আরকে/এসপি/জুলাই ১২, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- জুতার গণতন্ত্র বনাম ডিমতন্ত্র: প্রতিবাদের নতুন ইতিহাস
- সত্য ও মিথ্যা: প্রকৃতির বৈপরীত্য
- মহম্মদপুরে বন্ধুত্বের টানে বিবাহহীন জীবন দুই বন্ধুর
- দুর্গাপূজা: কেউ মূর্তি ভাঙ্গে, কেউ চুপ থাকে!
- সাতক্ষীরা সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকসহ ১০ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর
- প্রেসক্লাব মহম্মদপুরের সাধারণ সভা সম্পন্ন
- সাতক্ষীরায় জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- ‘নির্বাচিত হলে কাপাসিয়ার সাধারণ মানুষের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করবো’
- কুড়িগ্রামে ঐতিহ্যবাহী বউ-শাশুড়ি মেলা
- জাতিসংঘ মিশন রাজনীতি: ইউনুসের বগলতলে বিএনপি জামায়াত এনসিপি
- ফার্মাসিস্টদের হাতে স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যত
- ফিরিঙ্গিবাজারে সড়ক দখল করে ‘ওরশ বিরিয়ানি’র দোকান
- সালথা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- আফরোজা রূপার কণ্ঠে এলো ‘শ্রাবণের ধারার মতো’
- রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ১৯৯৯ মামলা
- প্রধান উপদেষ্টাকে ক্লাব ডি মাদ্রিদে যোগদানের প্রস্তাব
- রাজবাড়ীতে নসিমন চাপায় মেকানিক্যাল মিস্ত্রির মৃত্যু
- ‘বাংলাদেশ ভালো দল, সব বিভাগেই আমাদের ভালো খেলতে হবে’
- শাপলা প্রতীক চেয়ে আবারও এনসিপির আবেদন
- সরবরাহ সংকট তৈরি করে তেলের দাম বাড়াচ্ছে কোম্পানিগুলো
- কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ-ওমানের মধ্যে সমঝোতা সই
- মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
- ‘আমি যতদিন আছি সারের দাম বাড়বে না’
- শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো ভেনেজুয়েলা
- ‘দ্রুতই বিএনপির মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে’
- এবার 'আন্ধার'-এ আফসানা মিমি
- সালথায় সাদা শাপলার সৌন্দর্যে মন কেড়েছে সবার
- সর্বধর্ম সমন্বয় ও ধর্মনিরপেক্ষতা
- একাত্তরের কথা
- জাতিসংঘ মিশন রাজনীতি: ইউনুসের বগলতলে বিএনপি জামায়াত এনসিপি
- বুধবার সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বিক্ষোভ
- রাহুল রাজের প্রেমের কবিতা
- আটলান্টায় ফোবানা সম্মেলন পরিণত হলো পারিবারিক অনুষ্ঠানে
- মজাদার তালের বড়া বানাবেন যেভাবে
- মে দিবসের কবিতা
- বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস : লক্ষণ ও প্রতিরোধে করণীয়
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- গোলমরিচ ও তেজপাতার গল্প
- বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশন শুরু আজ
- ফার্মাসিস্টদের হাতে স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যত
- আগুনে পুড়ে গেলে তাৎক্ষণিক যা করবেন
- কুড়িগ্রামে ঐতিহ্যবাহী বউ-শাশুড়ি মেলা
- অবশেষে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল
- জাতীয় নারী ক্রিকেট দলকে ভারতীয় হাইকমিশনের সংবর্ধনা
- টানা ৮ দিন স্যাটেলাইট সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা