E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

৮ নভেম্বর, ১৯৭১

'ভারতীয় টেনিং প্রাপ্ত বিদ্রোহীরা পূর্ব-পাকিস্তানের নাশকতা মূলক কাজে লিপ্ত'

২০২৫ নভেম্বর ০৮ ০০:০৬:৪১
'ভারতীয় টেনিং প্রাপ্ত বিদ্রোহীরা পূর্ব-পাকিস্তানের নাশকতা মূলক কাজে লিপ্ত'

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : পাবনায় পাকহানাদাররা মুক্তিবাহিনীর শাহবাজপুর ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালালে পাকবাহিনীর ৩ জন সৈন্য নিহত ও ৩ জনআহত হয়।

৮নং সেক্টরে হানাদার দল মুক্তিবাহিনীর কায়খালী অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে ২ জন পাকসৈন্য নিহত ও অনেক আহত হয়।

যশোরের মসল্লা নামক স্থানে মুক্তিবাহিনীর একটি এ্যামবুশ দল পাকসেনাদের একটি জীপকে এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে মাইন বিস্ফোরণে পাকসেনাদের জীপটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয় এবং গাড়ীর আরোহী ৩ জনই ঘটনাস্থলে নিহত হন।

১নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী রামগড়-করেরহাট সড়কে পাকবাহিনীর একটি টহলদার দলকে এ্যামবুশ করে। মুক্তিযোদ্ধারা এল.এম.জি, কারবাইন ও হাত বোমার সাহায্যে পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালালে ৪ জন পাকসৈন্য নিহত ও ২ জন আহত হয়।

ফেনীতে মুক্তিবাহিনীর ১নং সেক্টর হেড কোয়ার্টারের যোদ্ধা,২নং সেক্টরের ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের একদল যোদ্ধা এবং মিত্রবাহিনীর ২য় রাজপুত্র ও ৩য় ভোগবার ২টি কোম্পানী সম্মিলিতভাবে পরশুরামে পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে পাকহানাদাররা পালিয়ে যায় এবং পরশুরাম মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে।

চট্টগ্রামে মুক্তিবাহিনীর ৪র্থ বেঙ্গল ও ‘মুজিব’ ব্যাটারীর যোদ্ধারা পাকবাহিনীর হিয়াকু অগ্রবর্তী ঘাঁটিতে অবস্থানরত ৪০/৫০ জন সৈন্যের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা গোলন্দাজ বাহিনীর সাহায্যে আক্রমণ চালালে পাকসেনারা টিকতে না পেরে ফটিকছড়ির দিকে পালিয়ে যায়। এতে হিয়াকু বাজার মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে আসে ।

মার্কিন সাময়িকী ‘নিউজ উইক’-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান বলেন, ভারত বিদ্রোহীদের পূর্ব-পাকিস্তানে অনুপ্রবেশে সাহায্য করে চলেছে। ভারতীয় টেনিং প্রাপ্ত বিদ্রোহীরা পূর্ব-পাকিস্তানের নাশকতা মূলক কাজে লিপ্ত। আমি এ ব্যাপারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।

তিনি আরো বলেন, ভারত যদি বকাংলাদেশের ধুঁয়া তুলে পূর্বপাকিস্তান দখলের চেষ্টা করে তাহলে যুদ্ধ বাধবেই। সে যুদ্ধ কেবল পূর্বাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকবে না এবং সে যুদ্ধে নিশ্চয়ই আমি পরাজিত হবো না। যুদ্ধ বাধলে চীন আমাকে অস্ত্র দেবে সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।

চীন সফর শেষে করাচী ফিরে জুলফিকার আলী ভুট্টো প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেন।

প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান পাকিস্তান সরকারের অর্থনৈতিক সমন্বয় ও বৈদেশিক সাহায্য বিভাগের যুগ্মসচিব এম.এ. রশীদ, পরিকল্পনা বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার, নয়াদিল্লীস্থ পাকিস্তান ডেপুটি হাই কমিশনের সহকারী প্রেস এ্যাটাচি মাকসুদ আলীকে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষনার জন্যে চাকরি থেকে বহিষ্কার করেন।

জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মিয়া তোফায়েল জানান, দেশের গোলযোগপূর্ণ বা যুদ্ধাবস্থায় জামায়াতে ইসলামী যে কোনো দলের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি মন্ত্রীসভায় জামায়াতের অংশগ্রহণ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা ক্ষমতা লাভের জন্যে নয়, বরং দেশের অখন্ডতা রক্ষার জন্যেই সরকারের দায়িত্বে অংশগ্রহণ করেছি।’

জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম (হাজারভী গ্রুপ)-এর সম্পাদক মওলানা মুফতী মাহমুদ পাকিস্তানবাদী সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ‘জেহাদ’ ঘোষণার আহ্বান জানান।
তিনি জানান, যুদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/এএস/নভেম্বর ৮, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৮ নভেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test