১৫ ডিসেম্বর, ১৯৭১
ফরিদপুরে যৌথবাহিনী কামারখালীর পাকঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালায়
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : জেনারেল নিয়াজির যুদ্ধ-বিরতির প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ভোর পাঁচটা থেকে ঢাকার ওপর বিমান হামলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। পাশাপাশি ভারতীয় ও বাংলাদেশ বাহিনীর তরফ থেকে জেনারেল নিয়াজিকে জানিয়ে দেয়া হয়, পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত কোনো যুদ্ধ-বিরতি হতে পারে না। ১৬ ডিসেম্বর সকাল ন’টার মধ্যে শর্তহীন আত্মসমর্পণ না করা হলে আবার বিমান হামলা শুরু করা হবে।
বিকেলে যৌথবাহিনী বিনা প্রতিরোধে সাভার প্রবেশ করে। সাভারের পাকিস্তানী বাহিনী পিছু হটে এসে রাজধানীর প্রবেশ-পথ মীরপুর ব্রীজের ওপর প্রতিবন্ধক গড়ে তোলে।
রাতে যৌথ বাহিনী সাভার থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। পথে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কাদেরীয়া বাহিনী ভারতীয় ও বাংলাদেশ বাহিনীর সাথে যোগ দেয়। রাত দু’টায় মীরপুর ব্রিজের কাছে যৌথবাহিনী পাক সৈন্যের মুখোমুখি হয়। যৌথবাহিনী ব্রিজ দখলের জন্য প্রথমে কমান্ডো পদ্ধতিতে আক্রমণ শুরু করে। ব্রিজের ওপাশ থেকে পাকবাহিনী মুহুর্মূহু গোলাবর্ষণ করতে থাকে। এ সময় যৌথবাহিনীর আরেকটি দল এসে পশ্চিম পাড় দিয়ে আক্রমণ চালায়। সারারাত তুমুল যুদ্ধ চলে।
চট্টগ্রাম রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনী কুমিরার দক্ষিণে আরো কয়েকটি স্থান হানাদার মুক্ত করে। সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধারা চট্টগ্রাম শহরের প্রথম রক্ষাব্যুহ ভাটিয়ারীতে আক্রমণ চালায়। সারারাত মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ চলে। ভাটিয়ারি থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত রাস্তার রাস্তার যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
যৌথবাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে রংপুরের দিকে অগ্রসর হয়। রাতে তাঁরা চারদিক থেকে রংপুর শহর ঘিরে ফেলে। যৌথবাহিনীর পরের দিন রংপুর সেনানিবাসে আক্রমণ করার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধ-বিরতির ঘোষনা হওয়ায় তার আর প্রয়োজন হয়নি।
ফরিদপুর অঞ্চলে যৌথবাহিনী কামারখালীর পাকঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালায়। পাকবাহিনীর সাঁড়াশী আক্রমণের মুখে অবস্থান ছেড়ে ফরিদপুরের দিকে পালাতে থাকে। যৌথবাহিনী তাদের পিছু ধাওয়া করে। পথে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়ে স্বেচ্ছায় শত্রুসৈন্য যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণকারী অফিসারদের মধ্যে একজন মেজর জেনারেল ছিলেন।
১৯৩৫ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার খয়েরপুর গ্রামে ডা. আলীম চৌধুরীর জন্ম। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে ডা. আলীম ছিলেন দ্বিতীয়। নিজের জীবন তুচ্ছ করে তিনি মুক্তিযেদ্ধাদের সাহায্য করেছিলেন। ১৫ ডিসেম্বর হানাদারদের সহযোগী সংগঠন আলবদররা তাঁকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। চক্ষু চিকিৎসক আলীম চৌধুরীর দুই চোখ তারা উপরে ফেলে। তাঁর বাড়িতে আশ্রিত মাওলানা মান্নান তাঁকে ধরিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল।
ক’দিন বিরতির পর সকালে ঢাকার আকাশে আবার দেখাদেয় ভারতীয় বিমান বাহিনীর বোমারু বিমানগুলো। বেলা ১১টায় গভর্নর ডা. মালিক তাঁর মন্ত্রিপরিষদ ও সামরিক বেসামরিক উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠক করার মুহূর্তে ভারতীয় বোমারু বিমানগুলো উড়ে এসে গভর্নর হাউজের ওপর রকেট হামলা করে। ডা. মালিক প্রাণ বাঁচাবার জন্য ট্রেঞ্চে গিয়ে আশ্রয় নেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মানেকশ পাকিস্তানী কমান্ডারদের আত্মসমর্পণের জন্য শেষবারের মত নির্দেশ দেন। জেনারেল মানেকশ তাঁর নির্দেশে বলেন, ‘আমি আবার বলছি, আর প্রতিরোধ করা নিরর্থক। ঢাকা গ্যারিসন এখন সম্পূর্ণভাবে আমাদের কামানের আওতায়।”
রণাঙ্গনে পাকিস্তানী সৈন্যরা দলে দলে অস্ত্রসম্বরণ করতে থাকে। দুপুরের দিকে বগুড়ার পাকিস্তানী ডিভিশন হেড-কোয়ার্টার ও ব্রিগেড হেড কোয়ার্টারের পতন হয়। আত্মসমর্পণ করে পরাজিত বাহিনীর ১৭০০সৈন্য ও অফিসার। এখানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলা-বারুদ যৌথবাহিনীর হস্তগত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিবাহিনীর ৭নং সেক্টরে যোগ দেন। শৃঙ্খলা, কর্তব্যনিষ্ঠা এবং সংগঠন- ক্ষমতার কারণে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর অচিরেই সকলের শ্রদ্ধা ও বিস্ময় জাগিয়ে তোলেন। তিনি কোন বিরাম না নিয়ে দিনের বেলা অপারেশনের পরিকল্পনা করতেন এবং প্রতি রাতেই গেরিলাদের সঙ্গে অপারেশনে যেতেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ দখলের যুদ্ধে তিনি সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। মহানন্দা নদী পেরিয়ে তিনি একের পর এক শত্রু বাংকার দখল করে যখন প্রবল বিপদ উপেক্ষা করে এগুচ্ছিলেন তখন হঠাৎ মাথায় গুলি লাগে তাঁর। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধীতে ভূষিত করেন।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- সুদানে শান্তিরক্ষী নিহত, জাতিসংঘ মহাসচিবের শোক প্রকাশ
- সোমবার সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে ওসমান হাদিকে
- ক্রিকেট কিংবদন্তি ও ফুটবল রাজার মহামিলন
- ‘বিপদে আমার দরজা সবার জন্য খোলা থাকে’
- ফরিদপুরে যৌথবাহিনী কামারখালীর পাকঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালায়
- আগৈলঝাড়ায় প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধীজীবী দিবস পালিত
- কলম যাদের শাণিত অস্ত্র: শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক ও আলোর পথযাত্রী
- জাতিসংঘ মিশনে নিহত শান্ত ও মমিনুলের পরিবারে শোকের মাতম
- এক মাস আগে মিশনে যান সৈনিক শামীম, নিমিষেই শেষ সব স্বপ্ন
- বাগেরহাটে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস পালিত
- হরিণের ১০২ কেজি মাংসসহ শিকারী আটক, এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড
- সাতক্ষীরায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন
- কানাইপুরে সরকারি জায়গায় অবৈধ দোকান, স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয়
- ১৩৫ শহীদের বদ্ধভূমিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী
- জলবায়ু সংকটে টিকে থাকতে স্থানীয় জাতবৈচিত্র্য ও বীজ সংরক্ষণ
- সোনাতলায় কচুরী পানার নিচ থেকে অজ্ঞাত বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার
- সাতক্ষীরা জেলা আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- কাপ্তাইয়ে ১৮৬তম স্কাউট পারদর্শিতা ব্যাজ কোর্স সমাপ্ত
- নড়াইলে নাশকতা মামলার আসামি ইউপি সদস্য গ্রেফতার
- কাপ্তাইয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা
- ‘মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধা এখন দু’টোই পণ্য, পরিচয় দিতেও লজ্জা লাগে’
- নড়াইলে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন
- গোপালগঞ্জে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
- পাংশায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
- কাপাসিয়ায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
- নোয়াখালীর বানভাসিদের পাশে শরীয়তপুরের শিক্ষার্থীরা
- সিলেটে কমছে বন্যার পানি, দেখা মিলেছে রোদের
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- বরগুনায় আওয়ামীলীগের ২৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা
- শেখ হাসিনার সাথে মুঠোফোনে কথা বলায় গ্রেফতার আ.নেতা জাহাঙ্গীর
- উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে জবাই করে হত্যা
- অনলাইন সাংবাদিকতায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল ‘চট্টগ্রাম জার্নাল’
- মহম্মদপুরে শহীদ আবীর পাঠাগারসহ মুক্তিযোদ্ধাদের স্থাপনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি
- সন্ত্রাসীদের ঠাঁই নাই
- নবীনগরে নতুন করে আবারও রিপোর্টার্স ক্লাবের আত্মপ্রকাশ
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
- অমলকান্তি
- নবীনগরে একই পরিবারের চারজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
- নবীনগরে তৃতীয়বারের মতো ইংরেজী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
- স্বাধীনতার সুখ
- 'নির্লজ্জ বেহায়া হতেই কী আমরা তোমাকে খুন করেছি কিংবা তোমাকে রক্ষা করিনি?'
- তৃতীয় দিনের মতো খাগড়াছড়িতে চলছে অবরোধ
- চা শ্রমিকদের কেউ হামলার শিকার হয়নি, জানালেন বাগান পঞ্চায়েত
- ‘আয়নাঘরসহ সব গোপন বন্দিশালা বন্ধ করতে হবে’
- 'তোমার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম যে ব্যক্তিটি খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তিনি মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, যাকে তুমি পিতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতে'
-1.gif)








