জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
মীর আব্দুল আলীম
পরিবেশ নিয়ে ভাবনাটা আমাদের দেশে হয় না বললেই চলে। অন্য দেশের কার্বনের ভারে আমরা নতজানু। বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ। এখানে কার্বন নিঃসরণের যে মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে কম পরিমাণে কার্বন নির্গত হয়। আবার আমাদের দেশে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। সুন্দরবনের গাছ, লতাগুল্ম, বনের মাটির প্রকৃতি, গাছপালার পরিমাণ প্রভৃতি হিসাব করে দেখা যায়, এই বনের কার্বন শোষণের ক্ষমতা রয়েছে অত্যধিক। এরপরও আমরা উন্নত বিশ্বের নির্গত কার্বনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। কার্বনের প্রভাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধির কারণে ভূপৃষ্ঠের বরফ গলে আশঙ্কাজনক হারে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে না যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলোও। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মিয়ামি বিচ, লুইজিয়ানা ও টেক্সাস উপকূল।
সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা সামান্য বাড়লেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির উপকূলীয় অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রায় ৬৮ হাজার মানুষ। অর্থের হিসাবে ক্ষয়ক্ষতি হবে প্রায় ২শ কোটি ডলার। তবে মূল ক্ষতিটা হবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মতে, কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৪ সালে বায়ুমন্ডলে ক্ষতিকর গ্যাসের উপস্থিতি রের্কড মাত্রায় পৌঁছেছে। সংস্থাটির মতে, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর দীর্ঘস্থায়ী গ্যাসগুলোর কারণে ১৯৯০ থেকে ২০১৪ সালে আবহাওয়ায় উষ্ণায়নের হার ৩৪ শতাংশ পরিমাণে বেড়েছে। আগামী দশকে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। তাপমাত্রা বাড়ার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে।
আমরা পরিবেশ সচেতন নই। যারা দেশের পরিবেশ রক্ষার দায়িত্বে আছেন তারাও আশানুরূপ কিছু করছেন সেটাও দৃশ্যমান নয়। তাই বাংলাদেশের পরিবেশ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। দিন দিন যেভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে তাতে আমরা সত্যিই শংকিত ও হুমকির সম্মুখীন। আগামী ২০৮০ সাল নাগাদ সমুদ্রতল ৯ থেকে ৪৮ সেন্টিমিটার এবং কার্বন নির্গমনের উচ্চহারে যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে তার ফলে সমুদ্রতল ১৬ থেকে ৬৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়বে। ২০৮০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ভূমির এক-তৃতীয়াংশ পানিতে নিমজ্জিত হবে। এর ফলে সমুদ্রের কাছাকাছি অঞ্চলগুলোর মানুষ বাস্তুভিটা হারাবে। নদ-নদীতে লোনা পানির পরিমাণ বেড়ে যাবে, বাড়বে শরণার্থীর সংখ্যা। ২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে পড়বে এবং দেশে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট বেড়ে যাবে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়বে, হেপাটাইটিস-বি, সংক্রামক ব্যাধি, মেনিনজাইটির মতো গ্রীষ্মকালীন রোগগুলো বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে সূর্যের বিকিরণকৃত আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মিও অনুপ্রবেশ বৃদ্ধির কারণে ত্বক ক্যান্সার ও চোখের ছানি পড়া রোগ বৃদ্ধি পাবে। এমনকি খাদ্যশস্যে তেজস্ক্রিয়তা বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে খাদ্যাভাব দেখা দেবে।
বন্যার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে হিমালয়ের বরফগলা পানিসহ উজানের নেপাল ও ভারতের বৃষ্টিপাতের পানি, বাংলাদেশের প্রধান নদনদী হয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। এভাবে দেখা যায়, প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১০৯৪ মিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং ১৫ লাখ হেক্টর চাষের জমি বন্যা ও জলাবদ্ধতার কবলে পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন এদেশের কৃষিখাতে ব্যাপক বিরূপ প্রভাব ফেলছে। মৌসুমী বৃষ্টিপাত এবং নাতিশীতোষ্ণ তাপমাত্রার কারণে এদেশের প্রধান অর্থকারী ফসল হলো ধান। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাবে দিনে দিনে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ধানচাষ। অসময়ে বন্যা, বৃষ্টি এবং প্রবল শিলাবৃষ্টির কারণেও ধানচাষ ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশের সোনালি আঁশ, পাটের উৎপাদন কমে যাওয়ায় চাষিরা পাট চাষে বিমুখ হয়ে পড়ছেন। পাট চাষের ক্রমাবনতির জন্য বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন। শীতকালের স্থায়িত্ব কমে যাওয়ায় রবিশস্যের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা পাওয়া যাচ্ছে না। আবার শৈত্যপ্রবাহের ফলে সরিষা, মসুর, ছোলাসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসবের ফলে সারাবিশ্বে যে জলবায়ু পরিবর্তনের আলামত দেখা দিয়েছে তাতে আর কোনো সন্দেহ নেই।
জলবায়ু যে এতটা ভয়ঙ্কর, কী করছি আমরা? অশুভ কিছু ঘটার আগেই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। বেঁচে থাকার উপযোগী বিশ্ব গঠনে গাফিলতির অবকাশ নেই। আর সময়ক্ষেপণ নয়, এবার কিছু একটা করতে হবে। কারণ, দ্বিতীয় কোনো বিশ্ব নেই, যাকে আমরা নিরাপদ ভাবতে পারি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার যে, জলবায়ু আমাদের হত্যা করছে। আমাদের আগামী প্রজন্ম একটা সুন্দর পৃথিবী পাক, সেজন্য আমাদের এখনই ভাবতে হবে। আমরা যখন পরিবেশ নিয়ে ভাবনায় পরে গেছি ঠিক তখনই কার্বন-ডাই-অক্সাইডের খনি তৈরি হচ্ছে বাগেরহাটের রামপালে। নির্মাণাধীন ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটিই বলে দিচ্ছে পরিবেশ নিয়ে কতটা সচেতন আমরা। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ নিয়ে দেশে যথেষ্ট হৈ চৈ হয়েছে। কে শোনে কার কথা। এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ব্যবহার করা হবে। এজন্য বছরে ৪ মিলিয়ন টন কয়লা আমদানি করতে হবে। বিদ্যুৎ আমাদের দরকার সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু কয়লা পুড়িয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে তাতে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। এ বিষয়টি আমরা মোটেও বিবেচনায় নিচ্ছি না। ভারতীয় ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ারের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে। কিন্তু নিয়মানুসারে পরিবেশের প্রভাব নিরূপণের জন্য ইআইএ সমীক্ষা তা কি করা হয়েছে? হয়নি। রামপালের গৌরম্ভর কৈকরদশকাঠি ও সাতমারী মৌজায় ১ হাজার ৮৪৭ একর জমিতে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মিত হবে, যা সুন্দরবন থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে। কয়লা পোড়ানো হলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, সালফার, নাইট্রিক এসিড বায়ুম-লে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। এতে করে এসিড বৃষ্টি হবে। কি পরিমাণ পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে তা এখনি ভেবে দেখা দরকার। গাছপালা মরে যাবে। সুন্দরবন উজাড় হবে। পশু-পাখির প্রজনন বাধাগ্রস্ত হবে। ধ্বংস হয়ে যাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আজ যেখানে বিশ্ববাসীকে ভাবিয়ে তুলছে সেখানে আমরা এতটা অসচেতন হই কি করে?
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে কোন দেশের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ বনভূমি প্রয়োজন। অথচ আমাদের দেশে সরকারী হিসাব মতে মাত্র ১৯ শতাংশ বনভূমি রয়েছে। আর বেসরকারী হিসেবে এর পরিমাণ ৯ শতাংশের বেশি নেই। বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার বিপুল খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য কৃষি জমির পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে বাসগৃহ ও আসবাবপত্র তৈরিতে এবং জ্বালানির চাহিদা মেটাতে সংগ্রহ করা হয় কাঠ। এ জন্যে ব্যাপকহারে বন উজাড় করা হচ্ছে। পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখতে বৃক্ষের অপরিহার্যতা অসামান্য। বৃক্ষ প্রতিনিয়ত বাতাস থেকে কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। অর্থাৎ গাছের মূল থেকে সংগৃহীত পানি ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে অক্সিজেন ও গ্লু-কোজ উৎপন্ন করে। গাছের আর একটি বিশেষ গুণ হল নিজের খাদ্য নিজে প্রস্তুত করতে পারে। প্রাণী তা পারে না। বরং উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে আছে। কিন্তু গভীর পরিতাপের বিষয় যে, মানুষ এই কল্যাণময় পরিবেশ ও বনভূমির উপর অত্যাচার করে চলেছে। নির্বিচারে উজাড় করা হচ্ছে বৃক্ষরাজি। ২০০০ সালে জাতিসংঘের এক জরিপে বনজ সম্পদের উপর জরিপ উল্লেখ করা হয়েছিল যে, ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে আমাদের দেশের সবচেয়ে উন্নত বনাঞ্চলের পরিমাণ ৪৫০ হেক্টর থেকে ২০০ হাজার হেক্টরে এসে দাঁড়িয়েছে। এভাবে বৃক্ষ নিধন চলতে থাকলে পরিবেশের অবস্থা খুবই ভয়াবহরূপ ধারণ করবে। ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা এবং এ কারণে অতিমাত্রায় অনাবৃষ্টি ও খরার কবলে পড়তে হচ্ছে।
আরও একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, শিল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোর অযাচিত ও অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রমের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা বেড়েছে আরও প্রকটভাবে। পুঁজিবাদী স্বার্থান্বেষী শিল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলো করপোরেট সমাজের স্বার্থের কাছে পরাজিত হয়ে জলবাযু পরিবর্তন ও দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হচ্ছে। আর এর কুফল ভোগ করতে হচ্ছে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে আছে এমন আভাস আমরা অনেক আগেই পেয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় মারাত্মকভাবে ভুগবে বাংলাদেশসহ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলো। অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় ভোগান্তির শিকার হবে এসব অঞ্চলের দুই বিলিয়ন মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে খারাপ মৌসুমী আবহাওয়ার মধ্যে পড়বে। ইতিমধ্যে এ অঞ্চলের দেশগুলোয় অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অদূরভবিষ্যতে এর প্রভাব দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু থেকে কৃষিসহ সব ক্ষেত্রে পড়তে শুরু করবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর ‘বিজনেস আজ ইউজুয়াল’ পটভূমিতে হিসাব করে দেখিয়েছে যে ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর উষ্ণতা ৪.২ ডিগ্রি বাড়বে। জলবায়ুর পরিবর্তন এর নেতিবাচক দিক ভেবে মানবসভ্যতা তার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। ওচঈঈ-এর দাবি অনুসারে বর্তমান সময়টি হলো গত ১০০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ। উন্নত বিশ্বের জীবাশ্ম জ্বালানির ফলে বায়ুদূষণ প্রতিক্রিয়ার ফলে ২০৬০ সালের পরে হড়হ সবষধহড়সধ ংশরহ ক্যান্সারের ঘটনা সংখ্যা শতকরা ৬ থেকে ৩৫ ভাগ বৃদ্ধি পাবে। সমুদ্র সমতল বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বৃহৎ শহর ও উপকূলের উর্বর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করে লাখ লাখ জনসাধারণকে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য করবে। এটি তৈরি করবে খাদ্য ঘাটতি এবং তার প্রেক্ষিতে কিছু কিছু অঞ্চলে দুর্ভিক্ষও দেখা দিতে পারে। অপেক্ষাকৃত উষ্ণ ও আর্দ্র অবস্থা ইধপঃবত্রধ এবং অন্যান্য বিষাক্ত উৎপাদক, যেমন- ফাঙ্গাস থেকে নিসৃত বিষাক্ত পদার্থ (অভষধঃড়ীরহং) বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তার ফলে খাদ্য দূষিত হয়ে নষ্ট হওয়ার পরিমাণ সম্ভবত বৃদ্ধি পাবে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে চাষাবাদের সময়কাল সঙ্কুচিত হতে পারে এবং উৎপাদনশীলতা কমে যেতে পারে। পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ার নেতিবাচক প্রভাব বনাঞ্চলে পড়লে প্রাকৃতিক ভারসাম্যে পরিবর্তন আসতে পারে। প্রাণিকুল, ভূমি, পানি ইত্যাদির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত প্রায় দুই কোটি মানুষ বাস্তুহারা হবে। খরা, বন্যা ও লবণাক্ততার ফলে ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাবে।
পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। জলবায়ুর পরিবর্তনে বাংলাদেশের দক্ষিণের বিরাট অংশ তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে প্রতি বছর মে-জুন এবং অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ধ্বংসাত্মক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানছে। এ দুর্যোগ থেকে আমাদের পরিত্রাণের উপায় কি? পরিবেশ দূষণ নিজেদের মুক্ত রাখা; বিপন্ন পরিবেশের ব্যাপারে আওয়াজ তোলা; বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করা। বিগত দিনে আমরা দেখেছি, বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশগুলো উলিখিত বিষয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবতা হচ্ছে, এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে শিল্পোন্নত দেশগুলো তেমন আন্তরিক নয়। কোনো কোনো প্রতিশ্রুতি প্রায় আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এবারও বিশ্ব নেতাদের মুখে নানা প্রতিশ্রুতির বাণী শোনা যাচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চলতি সম্মেলনে বাংলাদেশের বিপন্ন পরিবেশ নিয়ে জোরাল বক্তব্য দিয়েছেন। এদিকে বিশ্ব নেতারা কতটুকু নজর দেবেন এটাই এখন দেখার বিষয়।
পরিবেশ সচেতন হওয়ার সময় এখনই। আমাদের জনগণ আমাদের পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। কেবল সরকারের পক্ষেই পরিবেশ রক্ষা সম্ভব নয়; জনগণকেও এ বিষয়ে সচেতন হয়ে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে। এমনিতেই জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে নদীভাঙন, জলোচ্ছ্বাস, দীর্ঘমেয়াদি বন্যা, জলাবদ্ধতা, খরা, অতিরিক্ত লবণাক্ততা এসব সমস্যা এখন প্রকট। এসব সমস্যার কারণে প্রতিবছর দেশের লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হচ্ছে। এ অবস্থায় জলবায়ু ও দেশে পরিবেশ রক্ষায় সরকার আরো বেশি সচেষ্ট হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
পাঠকের মতামত:
- সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের কোটি টাকা পুরস্কার দেবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
- ছাত্রদের অভিযোগে রেলওয়ের পাকশী বিভাগের ২ কর্মচারী বরখাস্ত
- চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা মাসুদ আলী খান
- সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে ঢাকা সফর করবেন মার্কিন কর্মকর্তারা
- নতুন দায়িত্ব পেলেন আইন উপদেষ্টা
- গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
- আরও ৫ সংস্কার কমিশন গঠন করছে সরকার
- বিসিএস পরীক্ষায় ৪ বার অংশ নেওয়া যাবে
- সোনারগাঁয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- বাগেরহাটে সরকারি প্রজনন খামারে ১৮ মহিষের রহস্যজনক মৃত্যু
- যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে মুকুট চুরি মামলায় সঞ্জয়-পারুলের জামিন নামঞ্জুর
- কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা প্রতারক আব্দুল গাফ্ফার
- রাজবাড়ীতে ডিসি ও ২ উপজেলায় ইউএনও নেই
- মহম্মদপুরে যুবদল নেতাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন
- খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির দুই ডিলারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
- পাখিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় গড়ছে 'বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার'
- মোহাম্মদপুরে বাড়ির ছাদে জবাই করে হত্যার ভাইরাল ভিডিওটি সত্য নয়
- সালথায় অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের মানববন্ধন
- চীন সফরে যাচ্ছেন রিজভীসহ বিএনপির ৪ নেতা
- সুবর্ণচরের কৃষি প্রণোদনার উদ্বোধন
- ময়মনসিংহে ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- জামিনে বাড়ি ফিরে দুই বংশের সংঘর্ষে আহত অর্ধ শতাধিক, নিহত ১
- ইঁদুর বিভিন্ন রোগের বাহক : কৃষিবিদ তিলক ঘোষ
- যৌথ বাহিনীর হাতে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি বোরহান উদ্দিন ও লুৎফর রহমান সানি গ্রেফতার
- নদী বেষ্টিত টাঙ্গাইলে পানের সফল ফলন
- মুক্তিবাহিনীর সেক্টর কমান্ডারদের প্রথম সম্মেলন শুরু
- মুক্তিবাহিনীর সেক্টর কমান্ডারদের প্রথম সম্মেলন শুরু
- ৭ই মার্চ উপলক্ষে সুবর্ণচর উপজেলা প্রশাসনের আলোচনা সভা
- শিবপুরে মার্সেলের এক্সক্লুসিভ শো-রুম উদ্বোধন
- চকরিয়ায় শেখ হাসিনা বই মেলা শুরু হচ্ছে কাল
- বাইডেনের হাত ধরে দরিদ্র দেশের ভ্যাকসিন সহায়তায় নামছে যুক্তরাষ্ট্র
- সালথায় জাকের পার্টির কর্মী সভা
- গণতন্ত্র বিকাশে সবচেয়ে বড় বাধা বিএনপি : কাদের
- ‘অ্যাভাটার’ ট্রেন্ডে পুরো ফেসবুক সয়লাব
- ভারতে রেকর্ড সংক্রমণের দিনে ১০২১ মৃত্যু
- ফরিদপুরের কারাগার ও আদালতে নিরাপদ নয় সত্যজিৎ
- বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কেনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক
- জেমকন সাহিত্য পুরস্কার ২০২০ ঘোষণা
- সিংগাইরে ৭২ মন্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি সম্পন্ন
- নড়াইলে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাই খুন
- সিঁধ কেটে নবজাতক চুরি
- শীতলা প্রতিমার স্বর্ণের চোখসহ দান বাক্সের টাকা চুরি
- সংকটে বন্ধ চিকিৎসা
- ডুব দেরে মন কালী বলে
- গৌরনদীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা