নারী দিবসের প্রত্যাশা নারীর অগ্রগামিতা

নীলকন্ঠ আইচ মজুমদার
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। আলোচনার শুরুতেই প্রথম এ দিবসের আয়োজন সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যেতে পারে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন শুরু করে। যাকে আন্তর্জাতিক নারী বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে "তাদের ঐতিহাসিক এবং জাতীয় ঐতিহ্য এবং রীতিনীতি অনুসারে, বছরের যে কোনো দিনকে নারী অধিকার এবং আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য জাতিসংঘ দিবস হিসেবে ঘোষণা করার" আমন্ত্রণ জানায়। বেশিরভাগ দেশের সাথে মিল রেখে ৮ মার্চকে জাতিসংঘ কর্তৃক নারী অধিকার এবং বিশ্ব শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঐতিহ্যগতভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তখন থেকে জাতিসংঘ এবং বিশ্বের বেশিরভাগ অংশ এটি প্রতি বছর উদযাপন করে আসছে প্রতি বছর নারী অধিকারের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট থিম বা বিষয়কে কেন্দ্র করে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো “অধিকার, সমতা, ক্ষতায়ন, নারী ও কন্যার উন্নয়ন”। অন্যান্য দিবসের চেয়ে এ দিবসটি আলাদা গুরুত্ব বহন করে থাকে। যদিও দিবস পালনের ব্যাপারটি কেবল রাষ্ট্রীয়ভাবেই সীমাবন্ধ থাকে।
দিবসের দিনই কেবল কিছু মাত্র আলোচনা হয়ে থাকে এ নিয়ে তারপর আবার সেই পূর্বের অবস্থানে চলে যাই সবাই। এই দিবস পালনের জন্য প্রশ্ন দেখা দেয় যে পুরুষদের জন্য যেহেতু আলাদা দিবস নেই সেই ক্ষেত্রে নারীদের জন্য আলাদা দিবস কেন? এই প্রশ্নের উত্তরের জন্যই আমাদের জানতে হবে দিবস কেন পালন করা হয়? মোট কথা হলো একটি বিশেষ দিনকে স্মরণীয় বা ব্যবস্থাকে জনগণের সামনে নিয়ে এসে এর গুরুত্বকে অনুধাবণ করানো বা এর মাধ্যমে নতুন দিনের সূচনা করানোর জন্য সামাজিক, রাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে একটি দিনকে বেছে নিয়ে দিবস পালন করা হয়ে থাকে। যা বিশেষ অনুষ্ঠান মালার মাধ্যমে পালিত হয়ে থাকে রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক রীতিনীতি অনুযায়ি। বিশেষ করে যেসব বিষয়ে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বা আমরা সেভাবে গুরুত্ব দিতে পারি নাই তার জন্যই মূলত দিবসের এ আয়োজন। তার প্রেক্ষাপটেই আজকের নারী দিবসের এ আলোচনা।
নারী দিবসের আলোচনা করতে গেলেই বুঝা যায় নারী শব্দটি মনে হয়ে মানুষের চেয়ে ভিন্ন। আসলেই তাই, কারন আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষরা যেভাবে বেড়ে উঠে নারীরা একটু ভিন্নতায় তাদের জীবন সাজায়। প্রকৃত পক্ষে একটা সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষকে যে চোখে দেখা হয় নারীদের সে চোখেই আলাদা মূল্যায়ণ করা হয়। একসময় নারীরাও এ দিবসের প্রতি খুব একটা সোচ্চার ছিল না। ধীরে ধীরে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং তাদের অধিকার সচেতন হওয়ার ফলে জেগে উঠছে নারীরাও। তবে এতসব আয়োজনের পরও নারীরা তাদের প্রাপ্যতা কতটুকু অর্জন করতে পেরেছে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তবে হতাশ হওয়ার কোন কারন থাকতেই পারে আবার হাল ছেড়ে দেওয়ার কারন থাকতে নেই। তবে একথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, নারীরা অনেক কিছুই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় একটা ধারা পরিবর্তন করে আরেকটা ধারার সূচনায় অনেক সমস্যা তৈরি হবে এটা স্বাভাবিক।
পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই এ নারী দিবস পালনের এখনও অনেক তাৎপর্য বহন করে। আমরা শুধুমাত্র আমাদের দেশের দিকে তাকিয়ে না থেকে ভিন্ন দেশের দিকে নজর দিলে পার্থক্য সুস্পষ্ট পরিলক্ষিত হবে। এবছরের প্রতিপাদ্যের প্রথম শব্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ অধিকার’। শব্দটি ছোট হলেও এর গুরুত্ব অনেক বেশি। যখন অধিকার শব্দের সাথে যুক্ত হচ্ছে নারী শব্দ তখন এটি আরো ভার হয়েছে। কারন আদায়ের সাথে থাকে অধিকার প্রদান। কারন রাষ্ট্র ও সমাজ নারীকে অধিকার প্রদান করবে অন্যদিকে নারীরা তাদের অধিকার আদায় করবে। এই যে আদান প্রদান এখানেই ফাঁকি বা সমতার হীনমন্যতা রয়েছে। আদান প্রদানের বেলায় আমরা পক্ষ বিপক্ষ হয়ে উঠছি। যতক্ষণ পর্যন্ত পক্ষ বিপক্ষ মনোভাব দূর না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত মালিক পক্ষর সাথে এ খেলা চলবে কারন পুরুষ এখন মালিক পক্ষের ভূমিকায় রয়েছে। অন্যদিকে অধিকার আদায়ের জন্য আমরা নারীকে সেভাবে গড়ে তুলতে পারছি না। এখনও অনেক জায়গায় আমরা নারীকে ব্যবহারের পণ্য হিসেবেই দেখছি। আর আলোচ্য অংশের দ্বিতীয় যে শব্দটি এসেছে তাহলো ‘সমতা’। এই শব্দটি নারীর বেলায় উচ্চারণ হয় খুব কঠিন ভাবে কিন্তু সমাজ ব্যবস্থায় সমতা শব্দটি চরমভাবে অবহেলিত। যেটা নারীর বেলায় আরো বেশি সত্য। এই সমতা তখনই পরিপূর্ণভাবে অর্জন সম্ভব যখন এই পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় রাষ্ট্র, সমাজ ও ধর্মীয় রীতিনীতি সঠিকভাবে কাজে লাগবে। আর ক্ষমতায়নের বিষয়টি ক্রমান্বয়ে সামনের দিকে আসছে। সেই ক্ষেত্রে কেবল আইনের দ্বারা সকল ক্ষমতায়ন অর্জন সম্ভব নয়। কারণ আইন দিয়েই কেবল সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয় চাই আপনার আমার সচেতনতা। শুধু আইনের দিকে চেয়ে থাকবে নারীরা তাহলে ক্ষমতায়নের বিষয়টি অন্ধকারে থেকে যাবে।
রোকেয়া, সুফিয়া কামাল কিংবা প্রীতিলতার মতো সাহসি নারীর জন্ম নাহলে কেবলমাত্র ঘরে বসে থেকে ক্ষমতায়ন অর্জন করা সম্ভব না। তবে সমাজের উচিত হবে এইযে ক্ষমতায়নের কথা বলছি তার ধাপটা তৈরি করে দেওয়া। শেষে নারীর সাথে যে শব্দটিকে যুক্ত করা হয়েছে তা হলো কন্যা। এই কন্যাই হলো নারীর প্রাথমিক ধাপ। আসল বিষয়টি হলো এইযে কন্যার কথা আমরা বলছি তা থেকেই কিন্তু গঠন করার সময়। কন্যা যেন বুঝতে না যে আমি কন্যা বলেই পরিবার বা সমাজের অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত। তাহলে না শব্দটি এই কন্যার মাঝে চরমভাবে আঘাত করতে থাকবে। যা একসময় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে কন্যা থেকে যখন সে নারীতে পরিণত হবে। তখন সে সমাজ ব্যবস্থাকেই বারবার দায়ী করবে। সুতরাং নারীর ক্ষমতায়ন বা অধিকার যাই বলি না কেন তা সূচনা করতে কন্যা থেকেই। কন্যার পরিবর্তন মানেই নারীর পরিবর্তন কারন কন্যা থাকা অবস্থায় বিষয়টিকে যেভাবে রুপান্তর করা যায় পরবর্তী সময়ে সেটা আর সম্ভব হয় না। তবে সমাজের মানুষের একথা মনে রাখতে হবে যে, অধিকার, সমতা, ক্ষতায়ন, নারী ও কন্যার উন্নয়ন হলে পুরুষের কোন ক্ষতি নেই বরং সমাজ ব্যবস্থারই উন্নয়ন ঘটবে। কারন নারীকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে রেখে একলা চলো নীতি অনুসরণ করা কাম্য নয়। কারন মনে রাখতে হবে দুইয়ে দুইয়ে চার হয়। এই মূল মন্ত্রে অর্জিত হোক নারীর অগ্রগামিতা।
লেখক : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক।
পাঠকের মতামত:
- দুই দফা বেড়ে কমল স্বর্ণের দাম
- সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ৪ জনকে দেয়া হবে পাশাপাশি কবর
- খালের পানিতে গোসলে নেমে লাশ হয়ে ফিরলেন আবদুর রহমান
- লংগদু নানিয়ারচর সড়ক নির্মাণে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত
- কাপ্তাইয়ে ইটবোঝাই ট্রাক উল্টে ৩ জন যাত্রী গুরুতর আহত
- কক্সবাজারে পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়
- সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও বাড়ল
- ‘গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে এখনও ষড়যন্ত্র হচ্ছে’
- ‘জোড়াতালি দিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সম্ভব নয়’
- ববি ভিসির অপসারণ আন্দোলনে শিক্ষকরা
- জাল টাকা ও ছাপানোর সরঞ্জামসহ দুই যুবক আটক
- বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ববি কর্মকর্তার মৃত্যু
- সালথায় পুলিশের বিশেষ অভিযান, ঢাল-কাতরাসহ আটক ৪
- কানাইপুরে ইন্টারনেট কর্মীকে কোপানো রাজিবের গ্রেফতারে প্রতিবেশীদের স্বস্তি
- বোয়ালমারীতে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
- গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সাবেক আরএমও’র বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
- ‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে পদত্যাগ করবো’
- ওয়ালটনের এআই, আইওটিসহ অত্যাধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ নতুন মডেলের স্মার্ট ফ্রিজ উন্মোচন
- বাগেরহাটে বাণিজ্য মেলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন বিক্ষোভ
- সাতক্ষীরায় সাতনদী পত্রিকার সম্পাদক হাবিবুর রহমান জেল হাজতে
- চরভদ্রাসনে গণহত্যা দিবস পালিত
- গোপালগঞ্জে গাছের সাথে পিকআপের ধাক্কা, নিহত ৩
- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধ ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি কামনায় যশোরে মানববন্ধন
- রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, কাজের অগ্রগতি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- পাকিস্তানে ফের হামলার আশঙ্কা, মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ
- মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে প্রশিক্ষিত ধাত্রীর দরকার
- ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ১২
- ফরিদপুরে সেনা বাহিনীর হাতে এক ভুয়া মেজর আটক
- টুঙ্গিপাড়া কলেজের ভবন সংস্কার কাজে দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে দুদক
- নাটোরে শিশু জুঁই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জেলা জুড়ে প্রতিবাদের ঝড়
- এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে ১৫ লাখ শিক্ষার্থী
- ‘মানবিক করিডোরের সিদ্ধান্ত সব দলের সঙ্গে বসে নেওয়া উচিত ছিল’
- ‘মুজিব’ সিনেমায় তিশার অভিনয় নিয়ে যা বললেন ফারুকী
- ব্রি হাইব্রিড ধানে খাদ্য নিরাপত্তার হাতছানি
- মা পদক পাচ্ছেন ডলি জহুর
- দিনাজপুরে সাবেক এমপির বাড়ি থেকে ইয়াবাসহ ১০ জন আটক
- বাড়িয়াহাটে ৬ মিষ্টি বিক্রেতার কাছ থেকে দের লাখ টাকা খাজনা আদায়
- তারা মিয়া ফকির হত্যার ঘটনায় তিনজন গ্রেফতার
- ‘বাংলাদেশ এখন আইএমএফের ওপর নির্ভরশীল নয়’
- ‘সবাই সচেতন হলেই শিশুদের জন্ম সুরক্ষিত হবে’
- রাখাইনে মানবিক সহায়তায় শর্তসাপেক্ষে করিডোর দিতে রাজি সরকার
- চালের মোকামে ভরপুর জোগান, তবু বেড়েছে দাম
- ‘লুট করা টাকায় নাশকতার পরিকল্পনা করছে আ.লীগ’
- গাছপালাঘেরা পরিবেশে জন্ম নেওয়া শিশু স্বাস্থ্যবান হয়
- একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম ভরিতে বাড়লো ৫৩৪২ টাকা