জিয়াকে আমি যেভাবে দেখেছি

শিতাংশু গুহ
প্রেসিডেন্ট জিয়া নিহত হন ৩০ মে ১৯৮১। আমি তখন ঢাকায় দৈনিক সংবাদে। নাকি দৈনিক বাংলারবানীতে চলে এসেছি ঠিক মনে নেই? সারাদেশ সেদিন স্তব্দ হয়ে গিয়েছিলো, এমন নৃশংস মৃত্যু কারো কাম্য নয়, গুজব রয়েছে তাঁর লাশ পাওয়া যায়নি। এর পেছনে কারণ হচ্ছে তদীয় পত্নী বেগম জিয়াকেও লাশ দেখতে দেয়া হয়নি। জিয়া নৃশংসভাবে প্রচুর মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হত্যা করেছেন, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম সামরিক শাসক, মুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছেন, গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন, রাজাকার শাহ আজিজ-কে তল্পিবাহক প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। রাজাকারের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা প্রথম তার আমলেই শোভা পায়।
আজকে বাংলাদেশে মৌলবাদের যে উত্থান ঘটেছে এর জন্মদাতা জিয়াউর রহমান। তিনি ‘জেড ফোর্সের’ প্রধান থাকলেও মুক্তিযুদ্ধকালে মূলত গৃহবন্দী ছিলেন। জিয়ার ওপর মেজর রফিকের একটি বই আছে, পাঠক সেটি পড়ে দেখতে পারেন। জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক ছিলেন না, তিনি বঙ্গবন্ধু’র নামে স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠ করেছিলেন। এটি আমার নিজকানে শোনা কথা, আমি যা শুনেছি, তাই বলছি। খুব সম্ভবত: ২৮শে মার্চ ১৯৭১-এ চাঁদপুরে বসে আমরা এ ঘোষণা শুনি। অবশ্য তার এ ঘোষণা পাঠ জাতিকে উৎসাহিত করেছে। জিয়া জীবদ্দশায় কখনো বলেননি যে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। জিয়া শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ বলতেন, একদা বিখ্যাত সাপ্তাহিক বিচিত্রায় তার একটি বিশাল সাক্ষাতকার আছে। জিয়া ছিলেন ধূর্ত, বঙ্গবন্ধু হত্যায় তিনি জড়িত ছিলেন।
জিয়াউর রহমান দিবারাত্র একটি কালো চশমা পড়তেন, আমার বহু লেখায় আমি প্রশ্ন করেছি, কেউ কি আমায় খোলা চোখে জিয়ার একটি ছবি দেখাতে পারবেন? না পারলে নিজেকে প্রশ্ন করুন, কেন নেই? তাঁর করুন মৃত্যু তার কর্মফল। তার জানাজায় লক্ষলক্ষ মানুষ হয়েছিলো, এর সুফল হিসাবে বিচারপতি সাত্তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হ’ন, যদিও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। এরশাদ পরোক্ষভাবে জিয়া হত্যায় জড়িত ছিলেন, সব প্রকাশ হবার ভয়ে তাই তিনি চৌকষ সেনা অফিসার হিসাবে পরিচিত জেনারেল মনজুরকে বাঁচিয়ে রাখেননি, তাকে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্কে গুলি করে হত্যা করা হয়। জিয়ার আমলে বাংলাদেশে প্রথম গণভোট হয়, এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, গণভোটে জিয়া মোট ভোটের চেয়ে বেশি ভোট পান, যদিও তা পরে সংশোধিত করা হয়? জিয়ার আমলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিলো সামরিক কায়দায়।
বাংলাদেশে ভোট কারচুপি’র তিনি জনক। ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ নামক উদ্ভট দর্শনের প্রবক্তা তিনি। এ সম্পর্কে প্রফেসর ড: হুমায়ুন আজাদ সবচেয়ে মূল্যবান কথাটি বলেছেন, তিনি লিখেছেন, “সাম্প্রদায়িকতাকে ভদ্রোচিত করার জন্যে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের সূচনা”, হ্যাঁ, জিয়া বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রবক্তা। জিয়া ভক্তরা প্রায় সবাই সাম্প্রদায়িক, সাম্প্রদায়িকতা এদের মূল ছোটোনা। হয়তো এখন থেকে ১শ’ বছর পর বাংলাদেশের যে ইতিহাস লেখা হবে, তাতে জিয়া ‘মীরজাফর’ হিসাবে চিহ্নিত হবেন। জিয়ার সৃষ্টি বিএনপি, ক্ষমতায় থেকে জিয়া এ দল গঠন করেন, তবে প্রথমেই এটি বিএনপি ছিলোনা, কয়েকদফা নাম পরিবর্তন করে শেষমেশ একটি ভদ্রোচিত নাম ‘বিএনপি’ হয়েছে, ষড়যন্ত্রের মধ্যে জন্ম নেয়া দলটি আজো প্রাসাদ ষড়যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। পারলে এ দলটি এখন ক্ষমতায় থাকার কথা?
প্রেসিডেন্ট জিয়াকে আমি দেখেছি, খাল কেটে তিনি কুমীর এনেছেন, সাম্প্রদায়িকতা নামের সেই কুমীর এখন দেশকে গিলে খাচ্ছে। ‘খাল খনন’ ছিলো জিয়ার একমাত্র সফল কর্মসূচি, যার মাধ্যমে তিনি দুর্নীতিকে রাষ্ট্রীয়করণ করেছিলেন। জিয়া ছিলেন গণতন্ত্র হত্যাকারী, এবং জেনারেল আইয়ুব খানের প্রেতাত্মা। পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির তিনি জনক, আজকের এনসিপি বা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্য পাকিস্তান-প্রেম, ভারত-বিরোধিতা, স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি হিসাবে বিএনপি-কে পেছনে ফেলে দিয়েছে। পাঠক, জিয়ার আমলে বাংলাদেশের মানুষ ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতে পারতো না, বঙ্গবন্ধু’র নাম নেয়া বারণ ছিলো, এখনকার মত সবকিছুই ছিলো সরকার নিয়ন্ত্রিত। জিয়া বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরশাসক ছিলেন।
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।
পাঠকের মতামত:
- ‘৫ আগস্ট ঘিরে কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা নেই’
- ‘সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে ফ্যাসিস্ট মাথাচাড়া দিতে পারে’
- শ্রীনগরে অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে চলছে স্বাস্থ্য সেবা
- হাসিনাকে দেশে ফেরাতে আ.লীগের নতুন পরিকল্পনা
- ‘গাজীপুরে আসন বাড়বে, কমবে বাগেরহাটে’
- ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৮৬ জন
- ১০২ এসিল্যান্ড প্রত্যাহার
- জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি ঐক্য পরিষদের
- ‘তিন মাসে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন হয়েছে, এক বছরেও না হওয়ার কারণ দেখছিনা’
- পাংশায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ
- স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে শাহীন গ্রেপ্তার
- জামালপুরে দুই টিকিট কালোবাজারি আটক
- গোপালগঞ্জে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
- সোনাতলায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
- ফুলপুরে পরিষ্কার পরিছন্নতার বিশেষ অভিযান
- স্বাধীনতা ও জাতিসত্তা রক্ষার লড়াইয়ে চাই জাতীয় ঐক্য
- নিউ ইয়র্কে বন্দুক হামলার সময় কর্মরত ছিলেন না নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল
- সেরা দূরপাল্লার এয়ারলাইনের স্বীকৃতি পেলো এমিরেটস
- ডিসকভারির সাথে পার্টনারশিপে উদ্বোধন হলো অপো রেনো ১৪ সিরিজ ৫জি স্মার্টফোন
- কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে গেছে রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত সেতু
- কালা জাহাঙ্গীরের চরিত্রে অভিনয় করবেন না শাকিব
- ৪২ মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফিরছেন টেইলর
- ‘বিচার নিয়ে আমাদের আন্তরিকতায় সন্দেহ রাখবেন না’
- ‘তাবলিগের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে কমিটি হচ্ছে’
- ঝিনাইদহের জাকির হোসেনের ম্যাজিক তেল! পোড়া ক্ষতে কাজ করে জাদুর মতো
- শীত আসতেই মুখ-হাত-পায়ে চামড়া উঠছে, কী করবেন?
- কমলনগরে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আটক
- হিমেল হাওয়ায় কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ
- ‘কোন মানুষ অর্থের কাছে চিকিৎসায় হেরে যাবে না, সবাই বাঁচবে’
- ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর
- প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা
- মা
- প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
- পারিবো না
- ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মৃত দুই কৃষক পরিবারকে তারেক রহমানের মানবিক সহায়তা প্রদান
- অতিরিক্ত ঠান্ডায় ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা
- লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
- রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করছে জান্তা
- লক্ষ্মীপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
- নৌকার পক্ষে সমর্থন জানানেল এডভোকেট আব্দুল মতিন
- লক্ষ্মীপুরে দোকান ঘর বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা
- মহুয়া বনে
- বিজনেস সামিটের পর্দা নামছে আজ
- রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি: ১৭ নারীসহ ৫২ জন রিমান্ডে