ড. ইউনূসের হাত হিন্দু’র রক্তে রঞ্জিত 

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক : দৈনিক জনকণ্ঠ হেডিং করেছে (২২ জুন) লালমনিরহাটে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে বাবা-ছেলে আটক। স্ত্রী বলেছেন, তিনি তার শ্বশুর ও স্বামীর সাথে দেখা করতে কারাগারে গেলে শ্বশুরের কাছে জানতে চান কি হয়েছিলো? শ্বশুড় জানান, মাত্র ১০ টাকার জন্যে এঘটনা। এক লোক ১০ টাকা কম দিতে চান, কিন্তু নাপিত ছাড়বেন না। এনিয়ে কথা কাটাকাটি, এরপর লোকটি শাসিয়ে যান, তিনি দেখে নেবেন। কিছুক্ষনের মধ্যেই তিনি দেখে নিয়েছেন, ব্যক্তিস্বার্থে নিজের ধর্মকে ব্যবহার করে হিন্দুর বারোটা বাজিয়েছেন। 

এমন কর্ম বাংলাদেশেই সম্ভব? এরআগে কুমিল্লায় একজন ইকবাল দূর্গাদেবীর চরণে কোরান রেখে নিজের ধর্ম নিজেই অবমাননা করেছিলো, মরেছিল হিন্দু, বাড়ীঘর পুড়েছিল হিন্দুর। কলকাতা থেকে একজন বিমল চক্রবর্তী লিখেছেন: আর কত সহ্য করবেন? আপনারা কি দেশত্যাগে বাধ্য হবেন? ভারত কখনোই আপনাদের জন্য যুদ্ধ করবে না তবে ৭১ এর মত ১কোটি হিন্দু দেশ ত্যাগ করে ভারতে অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিলে কি হবে জানিনা। একমাত্র ইজরায়েল মায়ানমারে ঘাঁটি করে হিন্দুদের জন্য কিছু করে দিতে পারে। আপনারা ইসরাইলের শরণাপন্ন হন না কেন?

লালমনিরহাট ঘটনায় স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। একই মসজিদের খতিব মোহাম্মদ জোবায়ের হোসেন বলেছেন, ‘এই দুই নাপিত নবীকে অসম্মান করে কথা বলেছে, এর প্রত্যক্ষদর্শী আছেন’। দুই হিন্দু নাপিতকে শায়েস্তা করতে আবার একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দুইজন ভূমিকা রাখলো। ইতিপূর্বে বহুবার হিন্দুদের ওপর আক্রমনের ক্ষেত্রে মসজিদের মাইক ব্যবহার হয়েছে। বিবিসি’র ভাষ্যমতে ঐ খতিব একজন সাক্ষী, অথচ তিনি নিজেই বলছেন, তিনি বা ইমাম কেউই প্রত্যক্ষদর্শী নন, তাঁরা অন্যদের কাছ শুনেছেন।

লালমনিরহাট থানার ওসি বলেছেন, আমি এমন মামলা দেবো যাতে ফাঁসি বা যাবতজ্জীবন কারাদন্ড হয়। হুজুরদের খুশি করতে ওসি প্রকাশ্যে ভাষণ দিয়ে নিজের হাতে আইন তুলে নিলেন। এই ওসি’র বিরুদ্ধে কি কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে? এই ওসি কি প্রশাসন সাম্প্রদায়িকীকরণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নন? দেশে এখন সরকার, প্রশাসন, বেশিরভাগ মানুষ সাম্প্রদায়িক দোষে দুষ্ট, তাই বারবার অসহায় হিন্দু নাপিত বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতিত হচ্ছে। সর্বশেষ কুমিল্লার মুরাদনগরে এক হিন্দু গৃহবধূকে দরজা ভেঙ্গে মব সৃষ্টি করে বিএনপি নেতা ধর্ষণ করেছে। মহিলা নিজে মামলা করেছেন।

নিপীড়ণের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি সংগঠন লালমনিরহাটে অপতথ্য ছড়িয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হিন্দু নাপিত পিতা-পুত্রের ওপর মব উস্কে দেয়া ও দেশজুড়ে মব-জাষ্টিসের প্রতিবাদে মঙ্গলবার প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। নিউইয়র্কে শনিবার ‘হিন্দু লাইফস মেটার্স’ প্রতিবাদ করেছে। খুলনা, বরিশাল, রংপুরে প্রতিবাদ হয়েছে। দেশ অস্থির। কেউ হয়তো বলতে পারেন, সিইসি নুরুল হুদাকেও মব পিটিয়েছে, জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে দিয়েছে? এটি রাজনৈতিক ঘটনা। হিন্দুদের ওপর নির্যাতন হয় সাম্প্রদায়িক কারণে। সরকার অস্বীকার করলেও বিশ্ব জানে ড. মোহাম্মদ ইউনূসের হাত হিন্দুর রক্তে রঞ্জিত। লালমনিরহাট ও খিলক্ষেত ঘটনা এর সর্বশেষ দৃষ্টান্ত।

(এসজি/এএস/জুন ২৯, ২০২৫)