রক্তাক্ত গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু : দায় কার?

দিলীপ কুমার চন্দ : ২০২৫ সালের ১৫ জুলাই, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক ঐক্য (এনসিপি)-এর ঘোষিত পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি। এনসিপি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বিচারহীনতা ও পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে এই পদযাত্রা আহ্বান করেছিল। তবে, পদযাত্রা শুরুর আগেই একাধিক এলাকায় প্রশাসনের বাধা, পুলিশি চেকপোস্ট, ও গোয়েন্দা নজরদারি দেখা যায়।
দুপুরের পর পদযাত্রা গোপালগঞ্জ সদর পৌর ভবনের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ করে শুরু হয় সহিংসতা। পুলিশের গুলি, কাঁদানে গ্যাস এবং পাল্টা প্রতিরোধে বিক্ষোভকারীদের লাঠিচার্জের ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ৭ জন সাধারণ মানুষ। আহত হয়েছেন ৪০ জনের বেশি।
নিহত ও আহতদের পরিচয়
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহতদের অধিকাংশই সাধারণ পথচারী বা পাশ্ববর্তী দোকানদার ছিলেন, যারা রাজনৈতিক এই ঘটনার সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। আহতদের মধ্যে একজন স্কুলছাত্রী ও এক বৃদ্ধও রয়েছেন, যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহতদের একজনের নাম মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪৫), যিনি ছিলেন একজন রিকশাচালক। তিনি বাজারে যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে পুলিশের গুলিতে মারা যান। সালমা আক্তার (১৬) নামের একজন ছাত্রী, কাঁদানে গ্যাসের আঘাতে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে, বর্তমানে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রশাসনের ভূমিকা ও প্রশ্নবিদ্ধ নীরবতা
ঘটনার পরপরই প্রশাসন দাবি করে, “এনসিপির পদযাত্রা ছিল অবৈধ এবং অনুমতি ব্যতীত সংগঠিত, তাই জননিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ব্যবস্থা নিয়েছে।” কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সাংবাদিকদের মতে, পুলিশের প্রতিক্রিয়া ছিল অতিমাত্রায় সহিংস ও অপ্রয়োজনীয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ হওয়ার পরও পুলিশ সাধারণ জনগণের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। এই চিত্র গণমাধ্যমে ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।
এনসিপি ও নাগরিক সমাজ কী বলছে?
এনসিপির মুখপাত্র ড. আরিফুল হক বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার মাধ্যমে সরকারের দমননীতি ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিলাম। কিন্তু সরকার আমাদের কণ্ঠ রোধ করতে সাধারণ মানুষকে নিশানা করেছে।”
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়,
“নিহতদের মাঝে যে সাধারণ নিরীহ পথচারীরা ছিলেন, এটি প্রমাণ করে যে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সহিংসতা ঘটিয়েছে।”
কে নেবে এই হত্যার দায়?
এই প্রশ্ন এখন সারা দেশে আলোড়ন তুলেছে।
সরকার বলছে, “বিক্ষোভ ছিল উসকানিমূলক”
পুলিশ বলছে, “আমরা আত্মরক্ষার জন্য বাধ্য হয়েছিলাম”
এনসিপি বলছে, “সরকার সাধারণ মানুষকে বলির পাঁঠা বানাচ্ছে”
তবে এ কথাও সত্য, প্রাণহানি যাদের হয়েছে, তারা রাষ্ট্রের নাগরিক। তারা কোনো রাজনৈতিক পক্ষের নয়, তারা এই দেশের সাধারণ মানুষ। সে কারণে প্রশ্নটা এখন খুব জোরালোভাবে উঠে আসছে— এই হত্যার দায় কে নেবে? কে দেবে নিহত পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ, ন্যায়বিচার আর দায়ীদের শাস্তি?
তদন্ত ও ভবিষ্যৎ করণীয়
ঘটনার পর সরকার একটি এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যা বিরোধী দলসহ নাগরিক সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না। তারা চাচ্ছে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের পর্যবেক্ষণ।
একজন সাবেক বিচারপতির মতে, “এটি একটি স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রীয় বর্বরতার উদাহরণ। যদি তদন্ত সুষ্ঠুভাবে না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে জনগণের রাষ্ট্রের প্রতি আস্থা আরও কমবে।”
গোপালগঞ্জের পদযাত্রা রক্তাক্ত হয়েছে। নিহত হয়েছেন নিরপরাধ সাধারণ মানুষ। এই মৃত্যু কোনো সংখ্যার খেলা নয়, বরং এটি রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা, মানবিকতা এবং ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। এ মুহূর্তে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই হচ্ছে রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।
এই মৃত্যুর দায় রাষ্ট্রের, কারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব।
(ডিসি/এএস/জুলাই ১৮, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সভা
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল
- বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদের বাসা থেকে সোয়া ২ কোটি টাকার চেক উদ্ধার
- ইসরায়েল পদক্ষেপ না নিলে সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য
- রাশিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প, দেশে দেশে সুনামি সতর্কতা
- গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় মামলা
- ফরিদপুরে রাতের অন্ধকারে একটি সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ভাঙচুর
- ‘শুল্ক কমানোর সবুজ সংকেত পেয়েছে বাংলাদেশ’
- বৃহস্পতিবার নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা
- ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জরুরি সংস্কার চায় বিএনপি’
- ‘জুলাই সনদের খসড়া বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচক’
- ‘সরকার অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করছে’
- লংগদুতে সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহত
- সাতক্ষীরা সদরের ডিবি সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু
- সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধি সভা অনুষ্ঠিত
- ফরিদপুরে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার, ইয়াবা উদ্ধার
- সিলেটে ডঃ আবদুল মজিদের সভাপতিত্বে স্বাধীনতা বিরোধীদের সভা অনুষ্ঠিত হয়
- কুড়িগ্রামে জুলাই সংগঠক জোবায়ের হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
- এশিয়ান কাপে বাংলাদেশের কঠিন প্রতিপক্ষ
- নতুন ভোটার হচ্ছেন ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার
- আগস্টের শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা
- শক্তিশালী হচ্ছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট, র্যাংকিংয়ে টানা উন্নতি
- বোয়ালমারীতে কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ
- পাংশায় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- সালথায় ৬০টি চায়না দুয়ারী জাল জব্দ, এক জেলের জরিমানা
- শীত আসতেই মুখ-হাত-পায়ে চামড়া উঠছে, কী করবেন?
- বেলকুচিতে জনমত জরিপে এগিয়ে বদিউজ্জামানের মোটরসাইকেল
- কমলনগরে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আটক
- হিমেল হাওয়ায় কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ
- ‘কোন মানুষ অর্থের কাছে চিকিৎসায় হেরে যাবে না, সবাই বাঁচবে’
- ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর
- প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি, বিএনপি নেতা চাঁদের নামে মামলা
- মা
- প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
- পারিবো না
- ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মৃত দুই কৃষক পরিবারকে তারেক রহমানের মানবিক সহায়তা প্রদান
- গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় মামলা
- রাশিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প, দেশে দেশে সুনামি সতর্কতা
- লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
- অতিরিক্ত ঠান্ডায় ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা
- লক্ষ্মীপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন
- রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করছে জান্তা
- নৌকার পক্ষে সমর্থন জানানেল এডভোকেট আব্দুল মতিন
- লক্ষ্মীপুরে দোকান ঘর বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা