পরিচ্ছন্ন বায়ু, নিরাপদ জীবন: বিশ্বের এবং বাংলাদেশের বাস্তবতা

ওয়াজেদুর রহমান কনক
আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস প্রতি বছর ৭ সেপ্টেম্বর পালিত হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এই দিবসকে অনুমোদন করে এবং ২০২০ সালে প্রথমবার এটি পালিত হয়। দিবসটির উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP) এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো বায়ুদূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিচ্ছন্ন বায়ুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা এবং টেকসই সমাধান নিয়ে দেশগুলোকে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করা। মূল প্রতিপাদ্য ঘুরে দাঁড়ায় স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ পৃথিবী নির্মাণের আহ্বানের চারপাশে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ মানুষ এমন পরিবেশে বসবাস করছে যেখানে বায়ুর মানদণ্ড নিরাপদ সীমার অনেক নিচে। প্রতিবছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ অকালমৃত্যুবরণ করে বায়ুদূষণের কারণে, যার মধ্যে ৪০ লাখ মানুষ বাইরের বায়ুদূষণ এবং বাকিরা ঘরের ভেতরের ধোঁয়া, বিশেষ করে কাঠ, কয়লা বা কেরোসিন ব্যবহারের কারণে মারা যায়। শিশুদের ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে মারাত্মক—প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ শিশু বায়ুদূষণজনিত রোগে প্রাণ হারায়।
বৈশ্বিকভাবে বায়ুদূষণ ক্রমবর্ধমান। ২০২২ সালে WHO-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মানুষের এক চতুর্থাংশ বসবাস করছে এমন এলাকায় যেখানে PM2.5-এর মাত্রা নিরাপদ সীমার পাঁচ থেকে দশ গুণ বেশি। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, বায়ুদূষণের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রতিবছর প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হচ্ছে, যা বৈশ্বিক জিডিপির ৬.১%। ২০২২ সালের তথ্য বলছে, অন্তত ২৫০ মিলিয়ন শিশু-কিশোর স্কুলের বাইরে রয়েছে এবং যারা স্কুলে আছে, তাদেরও বড় অংশ যথাযথ শিক্ষাগত দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট আরও উদ্বেগজনক। IQAir-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্বের দূষিত শহরের মধ্যে শীর্ষে। বিশেষ করে শীতকালে PM2.5-এর মাত্রা WHO-এর নির্দেশনার তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি হয়ে যায়। দেশের বড় শহরগুলোতে বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র ধূলিকণার প্রভাবে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদরোগসহ নানা স্বাস্থ্যজটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩৫.৯৯ মিলিয়ন হলেও জনসচেতনতা তুলনামূলকভাবে সীমিত, যা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং পরিবেশগত শিক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
দেশের শহর-গ্রাম বৈষম্যও নজরকাড়া। ঢাকায় সূক্ষ্ম ধূলিকণার মাত্রা সবচেয়ে বেশি—শীতকালীন PM2.5-এর গড় মান প্রায় ৯০ µg/m³, যেখানে নিরাপদ সীমা ৫ µg/m³ মাত্র। চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীতে মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম হলেও দেশের গ্রামীণ এলাকায় অনেক সময় এ মানের অর্ধেক বা কম হলেও দূষণের ধূমায় ভরা। শিল্পনগরী ও যানবাহন ভারি এলাকার পরিস্থিতি আরও শোচনীয়।
দিবসটি পালনের ধরন দেশভেদে ভিন্ন। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলো পরিচ্ছন্ন পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বায়ুমান পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করে। চীন, ভারত ও বাংলাদেশের মতো এশীয় দেশগুলোতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্কুলভিত্তিক প্রচারণা, শিল্পখাতে নির্গমন কমানো এবং সরকারি-বেসরকারি কর্মসূচি চালানো হয়। আফ্রিকার দেশগুলোতে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা আলোচনা সভা, সেমিনার, গণমাধ্যমভিত্তিক প্রচারণা এবং “শ্বাস-নিরাপদ নগর” প্রকল্পের মতো স্থানীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে।
নতুন তথ্য বলছে, বাংলাদেশের ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে মোট ৭৫% মানুষ বাসায় এবং বাইরে দূষণমুক্ত পরিবেশ পেতে ব্যর্থ। ২০১৯-২০২৪ সালের মধ্যে গাড়ির সংখ্যা ২৫% বেড়ে যাওয়ায় শহরাঞ্চলে যানবাহনের নির্গমন বৃদ্ধি পেয়েছে। শিল্পায়ন ও কয়লা-ভিত্তিক শক্তি উৎপাদনও বায়ুদূষণ বৃদ্ধির বড় কারণ। পরিবেশবাদী গবেষকরা সতর্ক করেছেন—যদি পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় শিশুদের শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি রোগের মাত্রা ৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।
আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস কেবল পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয় নয়; এটি জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি, শিক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেখানে নিরাপদ বাতাস নিশ্চিত করতে উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে স্থানীয় জনগণ স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে সক্ষম হচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নির্দেশ করে, পরিচ্ছন্ন বায়ু নিশ্চিত করতে কার্যকর নীতি, স্থানীয় উদ্যোগ, প্রযুক্তি ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সমানভাবে জরুরি। দিবসটি একটি শক্তিশালী বার্তা দেয়—পরিচ্ছন্ন বায়ু বিলাসিতা নয়, এটি মানুষের মৌলিক অধিকার, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এই দিবসকে অনুমোদন করে এবং ২০২০ সালে প্রথমবার এটি পালিত হয়। দিবসটির উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP) এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো বায়ুদূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিচ্ছন্ন বায়ুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা এবং টেকসই সমাধান নিয়ে দেশগুলোকে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করা। মূল প্রতিপাদ্য ঘুরে দাঁড়ায় স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ পৃথিবী নির্মাণের আহ্বানের চারপাশে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ মানুষই এমন পরিবেশে বসবাস করছে যেখানে বায়ু মানদণ্ড নিরাপদ সীমার অনেক নিচে। প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ অকালমৃত্যুবরণ করে বায়ুদূষণের কারণে, যার মধ্যে ৪০ লাখ মানুষ বাইরের বায়ুদূষণ এবং বাকিরা ঘরের ভেতরের ধোঁয়া, বিশেষ করে জ্বালানি কাঠ, কয়লা বা কেরোসিন ব্যবহারের কারণে মারা যায়। শিশুদের ওপর এর প্রভাব বিশেষভাবে মারাত্মক—প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ শিশু বায়ুদূষণজনিত রোগে প্রাণ হারায়।
পরিসংখ্যান বলছে, বৈশ্বিকভাবে বায়ুদূষণের ফলে রোগব্যাধি ও মৃত্যুর বোঝা বাড়ছে। ২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুদূষণ এখন কার্ডিওভাসকুলার রোগ, ফুসফুসের ক্যানসার, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসসহ বহু অসুস্থতার মূল কারণ। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বৈশ্বিক জিডিপির ৬.১ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল, বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং নেপাল—যেখানে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা (PM2.5) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত মাত্রার কয়েক গুণ বেশি।
বাংলাদেশের অবস্থাও বেশ সংকটজনক। আন্তর্জাতিক বায়ু মান সূচক (IQAir)-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্বে অন্যতম দূষিত শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়। গড় হিসেবে বাংলাদেশের PM2.5 মাত্রা WHO-এর নির্দেশনার তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি। রাজধানী ঢাকার শীত মৌসুমে সূক্ষ্ম ধূলিকণার মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে জনস্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করে। এ কারণে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগসহ নানা জটিলতা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
দিবসটি পালনের ধরন দেশভেদে ভিন্ন। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলো সাধারণত পরিচ্ছন্ন পরিবহনব্যবস্থা, সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বায়ুমান পর্যবেক্ষণ জোরদারের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করে। এশিয়ার দেশগুলোতে, বিশেষত চীন ও ভারতের মতো শিল্পনির্ভর রাষ্ট্রে, দিবস উপলক্ষে বড় আকারের জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি, স্কুলভিত্তিক প্রচারণা এবং শিল্পকারখানায় নির্গমন কমানোর অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়। আফ্রিকার দেশগুলোতে এই দিবসকে কেন্দ্র করে মূলত পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার, বিশেষ করে রান্নায় কাঠ ও কয়লার বিকল্প হিসেবে গ্যাস বা সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে ক্যাম্পেইন চালানো হয়। বাংলাদেশে এই দিনটিতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা আলোচনা সভা, সেমিনার, বায়ুদূষণ প্রতিরোধে প্রচারণা এবং গণমাধ্যমভিত্তিক ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে থাকে।
আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস শুধুমাত্র পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয় নয়, বরং জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি, এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। দেশভেদে পালন ভিন্ন হলেও সার্বজনীন বার্তা একই—পরিচ্ছন্ন বায়ু কোনো বিলাসিতা নয়, এটি মানুষের মৌলিক অধিকার। পৃথিবীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপদ শ্বাস-প্রশ্বাস নিশ্চিত করতে আজই বৈশ্বিক সহযোগিতা এবং স্থানীয় উদ্যোগ দুটোই সমানভাবে প্রয়োজন।
আপনি চাইলে আমি এই লেখাটিকে বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতির গভীর বিশ্লেষণ ও নীতিগত সুপারিশসহ দৈনিক পত্রিকার ফিচার আকারে সাজাতে পারি। চাই কি আমি সেই কাঠামোয় এগিয়ে দিই?
৭ সেপ্টেম্বর পালিত আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস ২০২০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটির মূল লক্ষ্য হলো বায়ুদূষণের ভয়াবহতা তুলে ধরা, পরিচ্ছন্ন বায়ুর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে এর সংযোগ দেখানো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ৯৯% মানুষ এমন পরিবেশে বসবাস করছে যেখানে বায়ুর মান নিরাপদ সীমার নিচে। প্রতিবছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ অকালমৃত্যুবরণ করছে বায়ুদূষণের কারণে, যার মধ্যে ৪০ লাখ মানুষ বাইরের বায়ুদূষণ এবং বাকিরা ঘরের ভেতরের ধোঁয়ার কারণে মারা যাচ্ছে। শিশুদের মধ্যে ৬ লাখের বেশি শিশু প্রতি বছর বায়ুদূষণজনিত রোগে প্রাণ হারায়।
বাংলাদেশে বায়ুদূষণের অবস্থা উদ্বেগজনক। IQAir-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্বের দূষিত শহরের মধ্যে শীর্ষে। শীতকালীন সময়ে PM2.5-এর মাত্রা WHO-এর নির্দেশনার তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি হয়ে যায়। এর ফলে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ ও অন্যান্য জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
দিবসটি পালনের ধরন দেশভেদে ভিন্ন। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলো পরিচ্ছন্ন পরিবহন, সবুজ প্রযুক্তি ও বায়ুমান পর্যবেক্ষণ জোরদারের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করে। চীন, ভারত ও বাংলাদেশে জনসচেতনতা, স্কুলভিত্তিক প্রচারণা এবং শিল্পে নির্গমন কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। আফ্রিকায় পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়। বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা আলোচনা সভা, সেমিনার ও গণমাধ্যমভিত্তিক প্রচারণার মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করে।
আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস কেবল পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয় নয়; এটি জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নির্দেশ করে—পরিচ্ছন্ন বায়ু নিশ্চিত করতে এখনই কার্যকর নীতি, স্থানীয় উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি।
আপনি চাইলে আমি চাইলে এই ফিচারটিকে বাংলাদেশের বাস্তব পরিসংখ্যান, শহর-গ্রাম বিশ্লেষণ এবং নীতিগত সুপারিশসহ আরও বিস্তৃত আকারে সাজিয়ে দিতে পারি।
প্রতি বছর ৭ সেপ্টেম্বর পালিত আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস ২০২০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটির মূল লক্ষ্য হলো বায়ুদূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরি করা, পরিচ্ছন্ন বায়ুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা এবং স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে এর সংযোগ বোঝানো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বে ৯৯% মানুষ এমন পরিবেশে বসবাস করছে যেখানে বায়ুর মান নিরাপদ সীমার নিচে। প্রতিবছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ অকালমৃত্যুবরণ করে বায়ুদূষণের কারণে, যার মধ্যে ৪০ লাখ মানুষ বাইরের বায়ুদূষণ এবং বাকিরা ঘরের ভেতরের ধোঁয়ার কারণে মারা যায়। শিশুদের মধ্যে প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ শিশু বায়ুদূষণজনিত রোগে প্রাণ হারায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবস্থা আরও উদ্বেগজনক। IQAir-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্বের দূষিত শহরের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। শীতকালে PM2.5-এর মাত্রা WHO-এর নিরাপদ সীমার প্রায় ১৫ গুণে পৌঁছে যায়। এর ফলে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগসহ নানা স্বাস্থ্যজটিলতা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
দিবসটি পালনের ধরন দেশভেদে ভিন্ন। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলো পরিচ্ছন্ন পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বায়ুমান পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করে। চীন, ভারত ও বাংলাদেশের মতো এশীয় দেশগুলোতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্কুলভিত্তিক প্রচারণা, শিল্পখাতে নির্গমন কমানো এবং সরকারি-বেসরকারি কর্মসূচি চালানো হয়। আফ্রিকায় মূলত পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা আলোচনা সভা, সেমিনার এবং গণমাধ্যমভিত্তিক প্রচারণার মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করে।
আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস কেবল পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয় নয়; এটি জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নির্দেশ করে, পরিচ্ছন্ন বায়ু নিশ্চিত করতে কার্যকর নীতি, স্থানীয় উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সমানভাবে জরুরি।
৭ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস উদযাপিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ৯৯% মানুষ এমন এলাকায় বসবাস করছে যেখানে বায়ুর মান নিরাপদ সীমার নিচে। প্রতিবছর বায়ুদূষণের কারণে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ অকালমৃত্যুবরণ করে, যার মধ্যে ৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে বাইরের বায়ুদূষণ থেকে এবং বাকিদের মৃত্যু হয় ঘরের ভেতরের ধোঁয়া, বিশেষ করে কাঠ, কয়লা ও কেরোসিন ব্যবহারের কারণে। শিশুদের ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে মারাত্মক—প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ শিশু বায়ুদূষণজনিত রোগে প্রাণ হারায়।
দূষণের মাত্রা বৈশ্বিকভাবে ক্রমবর্ধমান। দক্ষিণ এশিয়া এবং সাব-সাহেলি আফ্রিকায় সূক্ষ্ম ধূলিকণার (PM2.5) মাত্রা WHO-এর নিরাপদ সীমার ৫–১৫ গুণ বেশি। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, বায়ুদূষণের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রতিবছর প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হচ্ছে, যা বৈশ্বিক জিডিপির ৬.১%। ২০২২ সালের তথ্য বলছে, অন্তত ২৫০ মিলিয়ন শিশু-কিশোর স্কুলের বাইরে এবং যারা স্কুলে আছে তাদেরও বড় অংশ যথাযথ শিক্ষাগত দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না।
বাংলাদেশেও অবস্থা আশঙ্কাজনক। IQAir-এর ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্বের দূষিত শহরের মধ্যে শীর্ষে। শীতকালে PM2.5-এর গড় মান WHO-এর নিরাপদ সীমার প্রায় ১৫ গুণে পৌঁছে যায়। ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩৫.৯৯ মিলিয়ন হলেও তথ্যবাছাই, সমালোচনামূলক পড়া এবং নিরাপদ ডিজিটাল ব্যবহার নিয়ে জনসচেতনতা তুলনামূলকভাবে সীমিত। এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় যে বায়ুদূষণ শুধু স্বাস্থ্য নয়, অর্থনীতি, শিক্ষা ও ডিজিটাল সক্ষমতার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন বায়ু দিবস কেবল সচেতনতার প্রতীক নয়; এটি সরকারের নীতি, স্থানীয় উদ্যোগ এবং বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন বায়ু নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার এক জোরালো বার্তা।
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।
পাঠকের মতামত:
- ভাঙ্গায় পঞ্চম বারের মতো সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী
- যশোরে পুকুরে ডুবে ৫ বছরের শিশুর মৃত্যু
- তিন কোটি টাকার সোনার বারসহ যুবক আটক
- যশোরে গাঁজাসহ নারী আটক, স্বামী পলাতক
- শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের মতবিনিময়
- শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ইসলামি শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির দাবিতে যশোরে মানববন্ধন
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু
- বাংলাদেশে আসছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল
- প্রবাসীদের জন্য ‘সুখবর’ দিলেন সিইসি
- ‘জাতীয় নির্বাচন কেমন হতে পারে, তার ‘টেস্ট’ ছিল ডাকসুর ভোট’
- পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ড. ইউনূসের চিঠি পৌঁছে দিলেন ধর্ম উপদেষ্টা
- গৌরনদীতে বিনামূল্যে ছাগল-ভেড়ার পিপিআর রোগের টিকা প্রদান কর্মসূচির উদ্ধোধন
- পাকা দেয়াল নির্মাণ করে বন্ধ করা হয়েছে চলাচলের পথ
- সুন্দরবনে দুটি নৌকা ও বিষসহ ৫ জেলে আটক
- হরতালের দ্বিতীয় দিনেও অচল মোংলা বন্দরসহ বাগেরহাট
- রাজৈরে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মহিনি বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
- জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভোট বর্জন
- ‘ভারত বিরোধিতার কারণে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছি’
- এমিরেটসের সর্বাধুনিক এয়ারবাস এ৩৫০ এর নতুন গন্তব্য চীনের হাংজু
- পরিচ্ছন্ন বায়ু, নিরাপদ জীবন: বিশ্বের এবং বাংলাদেশের বাস্তবতা
- ‘বেঙ্গল ফাইলস’ বাংলার একটি কালো অধ্যায়কে নুতন করে তুলে ধরেছে
- ‘চার্লি কার্ককে হত্যা, আমেরিকার জন্য অন্ধকার মুহূর্ত’
- ‘জোর করে কিছু চাপিয়ে দেবে না ঐকমত্য কমিশন’
- ‘পাঁচ বছর ধরে একটি প্রশ্ন প্রতিদিন শুনতে হয়েছে’
- ট্রাম্পের সহযোগী চার্লি কার্ক গুলিতে নিহত
- পীযূষ সিকদার’র কবিতা
- লক্ষ্মীপুরে ভূমিসেবা সপ্তাহ উপলক্ষে জনসচেতনতা মূলক সভা অনুষ্ঠিত
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু
- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী আজ
- শিক্ষার বিবর্তন : প্রাচীন থেকে আধুনিক যুগে অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতা
- মুলাদীতে পাইজালসহ পাঁচজন আটক
- আড্ডার উৎসবমুখর বর্ষবরণ
- পঞ্চগড়ে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
- সভাপতির বিরুদ্ধে সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ
- ৩১ বছর পর আবার মুক্তি পেলো সালমান-মৌসুমীর ‘অন্তরে অন্তরে’
- ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মহিলা দলের মিছিল
- কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন স্কুলছাত্রী নিহত
- দুঃসাহসী এক কিশোর মুক্তিযোদ্ধা ও কয়েকটি ভয়াবহ যুদ্ধের কথা
- স্ত্রীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার, অতিরিক্ত ডিআইজি সাময়িক বরখাস্ত
- ‘ক্ষমতা ছেড়ে দিন, এক বছরের মধ্যে পরিবর্তন করে দেবো’
- রাজবাড়ীতে ৯ মাস নয় ৩ মাসেই পচছে পেঁয়াজ
- কুমিল্লার নতুন মেয়র নৌকার রিফাত
- লক্ষ্মীপুরে ৯ জেলের অর্থদণ্ড, কারেন্ট জাল জব্দ
- সালথায় সাদা শাপলার সৌন্দর্যে মন কেড়েছে সবার
- চীন সফরে বাংলাদেশ সিডস ফর দ্য ফিউচার বিজয়ীরা