E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বাংলাদেশকে গ্রাসের ষড়যন্ত্র: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দ্বিমুখী আগ্রাসন

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৮:০২:৩০
বাংলাদেশকে গ্রাসের ষড়যন্ত্র: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দ্বিমুখী আগ্রাসন

আবীর আহাদ


বাংলাদেশের ওপর এখন দ্বিমুখী আগ্রাসনের মেঘ ঘনিয়ে এসেছে! একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অন্যদিকে চীন। দুই শক্তির প্রতিযোগিতা ও শাসনাকাঙ্ক্ষা আজ বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্বকে নতুন করে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চট্টগ্রামকে সামরিক ঘাঁটিতে রূপান্তরের নীলনকশা আঁকছে। তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট-বাংলাদেশকে উপনিবেশে পরিণত করে ভারত, চীন ও গোটা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে সামরিক চক্রব্যূহে আবদ্ধ করা। ‘নিরাপত্তা’ আর ‘উন্নয়ন সহযোগিতা’র ছদ্মবেশে তারা আসলে বাংলাদেশকে এক অনন্তকালীন জিম্মি অবস্থায় ফেলে দিতে চায়। স্বাধীনতার নামে যুদ্ধ করেও যদি পরাধীনতার ঘুঁটি হতে হয়, তবে সেটাই হবে জাতির জন্য চরম লাঞ্ছনা।

অপরদিকে চীন নরম কূটনীতির নামে বাণিজ্যিক সম্প্রসারণবাদ চালাচ্ছে। তারা অবকাঠামো উন্নয়নের আড়ালে ঋণের জাল বিছিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দাসত্বে আবদ্ধ করতে চাইছে। শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটার বন্দরের মতো বাংলাদেশের সম্পদকেও গ্রাস করার ষড়যন্ত্র তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। অর্থাৎ একদিকে ঋণের ফাঁদ, অন্যদিকে সামরিক নিয়ন্ত্রণ- চীনও একই শৃঙ্খল পরাতে চাইছে, শুধু রঙ ভিন্ন।

কিন্তু এরা কারা? ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়: এই সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন, যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। মার্কিন সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানো হয়েছিল মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীনতার রক্তধারাকে থামিয়ে দিতে। আর চীন প্রকাশ্যে জাতিসংঘে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের জন্মকে অস্বীকার করেছিল। আজ যারা ‘উন্নয়নের বন্ধু’ সেজে আসে, তারা আসলে আমাদের স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার পুরোনো স্বপ্নই নতুন মুখোশে বাস্তবায়ন করছে।

বাংলাদেশের মাটি কারও ঘাঁটি নয়, বাংলাদেশ কারও ঋণক্রীত উপনিবেশ নয়। মুক্তিযুদ্ধের রক্তস্নাত ইতিহাস কোনো বিদেশি শক্তির করাল গ্রাসের কাছে বিক্রি হতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হোক বা চীন- তাদের উদ্দেশ্য একই: বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এটিকে ভূ-রাজনৈতিক খেলার বোর্ডে পরিণত করা।

এই মুহূর্তে প্রয়োজন এক অটল জাতীয় অবস্থান। জনগণকে বিভ্রান্তির আবরণ ছিঁড়ে সত্যকে চিনতে হবে। মিথ্যা উন্নয়নের হাতছানি, ভুঁইফোড় অবকাঠামোর প্রলোভন বা সামরিক সহযোগিতার নাম করে আগ্রাসী তৎপরতাকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে লাখো শহীদের রক্তে। সেই স্বাধীনতাকে হরণ করার সাহস যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা চীনের থাকে, তবে তাদের জানা উচিত, বাংলার মানুষ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে জানে। ইতিহাস আবারো সাক্ষী হবে, বাংলাদেশ কোনো পরাশক্তির পুতুল নয়, বাংলাদেশ নিজস্ব শক্তিতেই টিকে থাকবে।

লেখক :মুক্তিযোদ্ধা লেখক ও গবেষক।

পাঠকের মতামত:

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test